Saturday 5 September 2020

কন্যা বিক্রির বিধান সনাতনে নেই, আছে ইসলামে :


কন্যা বিক্রির বিধান সনাতনে নেই, আছে ইসলামে :

Tanvir Ahmed Sharif নামের এই মহামূর্খ এবং মহাউন্মাদ সনাতন ধর্ম সম্পর্কে, মুসলমানদের জন্য হারাম ফেসবুকে, যা তা বলে বেড়ায়, যার না আছে কেনো ভিত্তি, না আছে কোনো সত্যতা। এইভাবে মিথ্যা আরোপ ক'রে সেগুলোর জবাব দিতে আমাদেরকে বাধ্য করে, এভাবে আমাদের সময় নষ্ট করাও কিন্তু তাকিয়াবাজ ইসলামের জিহাদেরই একটা অংশ; কেননা, যে সময় ব্যয় করে এই প্রবন্ধ আমাকে লিখতে হবে, সে সময় তো আমি অন্য কাজেও ব্যয় করতে পারতাম। সুতরাং আমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করাও কিন্তু মুসলমানদের একটি জিহাদ। 

যখন সমাজে অশুভ শক্তির উত্থান হয়, তখন তাকে দমন করতে সরকারকেও তার শক্তি এবং অর্থ ব্যয় করতে হয়। একইভাবে এই মিথ্যা প্রচারগুলোকেও আমি বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দিই না, দেবোও না, তাতে আমার যত সময় ব্যয় হয় হোক, আমার সময় নষ্ট করে মুসলমানরা যেমন আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তেমনি এই মিথ্যাচারের জবাব দিতে গিয়ে ইসলামের এমন নোংরামি বা গোপন তথ্যকে ফাঁস করবো যে, তারা আমার ও সনাতনী সমাজের যা ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে, তার অন্তত ৭ গুন আমি মুসলমান ও ইসলামের ক্ষতি করবো, তাই কথা না বাড়িয়ে শুরু করছি-

ছাগলা দাড়িওয়ালা এই Tanvir Ahmed Sharif প্রশ্ন করেছে- হিন্দু মেয়েকে দাসী, ২টি গরুর বিনিময়ে বিক্রি বাধ্যতামূলক কেন ? এর পক্ষে সে প্রথম রেফারেন্স দিয়েছে ঋগ্বেদের ৬/২৭/৮ নং শ্লোকের, দেখা যাক সত্যিই সেখানে কী বলা আছে ? এই মন্ত্রটি হলো-

"দ্বযাঁ অগ্নে রথিনো বিংশতিং গা বধূমন্তো মঘবা মহ্যং সংরাট্।

অভ্যবর্তী চায়মানো দদাতি দূণাশেয়ং দক্ষিণা পার্থবাণাম।।"

এর অর্থ হিসেবে হরফ প্রকাশনীর বেদ, যে বেদ প্রকাশ উদ্দেশ্যমূলক, সেখানেও বলা হয়েছে- "হে অগ্নি, চায়মানের পুত্র, ঐশ্বর্যশালী সম্রাট অভ্যবর্তী আমাক রথ ও রমনী সহকারে বিংশতি গোমিথুন প্রদান করেছেন পৃথুর বংশধরদের এ দান অক্ষয় অর্থাৎ কেউই এর বিলোপ করতে সমর্থ নয়।"

এখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে- অভ্যবর্তী নামের কোনো এক সম্রাট, কাউকে তার নিজের কন্যা দান করেছেন, সাথে দিয়েছেন একটি রথ এবং বিশ জোড়া গরু। এবং এই বিষয়টি, সনাতনী পদ্ধতির বিয়েতে কন্যাকে যে পর্যাপ্ত উপহার সামগ্রী দিয়ে শশুর বাড়ি পাঠাতে হয়, সেটাকে সম্পূর্ণ সমর্থন করছে। এখানে কন্যাদানের পরিবর্তে বরের কাছ থেকে কিছু নেওয়া, যেটা কন্যা বিক্রির সমতুল্য, সেরকম কোনো বিষয়ই নেই।

এরপর দেখা যাক মনুসংহিতার রেফারেন্সগুলোর কী অবস্থা।

মনুসংহিতাকে যদিও আমি সনাতন ধর্মের প্রামাণ্য কোনো গ্রন্থ বলে আমি মনে করি না, তারপরও যেহেতু হাজার হাজার বছর ধরে মনুসংহিতার অনেক বিধি বিধান সনাতনী সমাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে, সেহেতু মনুসংহিতার যা কিছু ভালো, বাস্তব এবং বিজ্ঞানসম্মত, সেগুলোকে আমি গ্রহন করার পক্ষে, কিন্তু যা কিছু অবাস্তব, সেগুলোকে আমি ঝেড়ে ফেলার পক্ষপাতী।

যা হোক, পাঁঠা Tanvir Ahmed Sharif এর দেওয়া মনুসংহিতার অনেকগুলো রেফারেন্সের মধ্যে প্রথমটি হলো- ৩/৫৩, অর্থাৎ তৃতীয় অধ্যায়ের ৫৩ নং শ্লোক, দেখে নিন সেই শ্লোকটি এবং তার অর্থ-

"আর্যে গোমিথুনং শুল্কং কেচিদাহু মৃষৈব তত।

অল্লোহপেব্যং মহান বাপি বিক্রয়স্তাবদেব সঃ।"

এর অর্থ- আর্য বিবাহে বরের কাছ থেকে যে একজোড়া গরু গ্রহণ করা হয় তা শুল্ক। মনুর মতে তা ঠিক নয়; কারণ, শুল্ক কমই হোক বা বেশি হোক, তা গ্রহণ করলেই তা বিক্রয়সিদ্ধ হয়।

অর্থাৎ পূর্ব থেকে হয়তো কন্যাদানের পরিবর্তে বরের কাছ থেকে কোনো অর্থসম্পদ নেবার প্রচলন ছিলো, যাকে বলে পণ। কিন্তু মনু তার বিরোধিতা করে তা নিষিদ্ধ করেছে এবং বলেছে এটা করলে তা কন্যাকে বিক্রির সমতুল্য হয়ে যায়।

শুধু এই শ্লোকেই নয়, কন্যাদানের পরিবর্তে বরের কাছ থেকে যে কিছু নেওয়া যাবে না, সে ব্যাপারে মনুসংহিতায় এর আগের একটি শ্লোকেও স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে, এভাবে- 

"কন্যার পিতা কন্যার জন্য বরের কাছ থেকে অতি অল্প পরিমাণও শুল্ক অর্থাৎ পণ গ্রহণ করবেন না। যেহেতু কন্যার জন্য লোভবশত শুল্ক গ্রহণ করলে মানুষ সন্তান বিক্রয়ী হয়।-(মনু, ৩/৫১)

অথচ এই সব শ্লোকে এই মূর্খ Tanvir Ahmed Sharif দেখতে পাচ্ছে, হিন্দুরা তাদের মেয়েদেরকে দাসী বা ২টি গরুর বিনিময়ে বাধ্যতামূলকভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে !!! এ মূর্খ, না পাগল ? লোকসমাজে একে রাখা তো বিপজ্জনক। কারণ, যার বোধবুদ্ধি নেই, সে কখন যে কী করে ফেলে তার তো কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। একে পাগলা গারদে রাখা হোক।

এরপর জঙ্গী Tanvir Ahmed Sharif এর রেফারেন্স হলো মনুসংহিতার ৯/৪, দেখা যাক সেই মন্ত্রটি এবং তার অর্থ-

"কালেহদাতা পিতা বাচ্যো বাচ্যশ্চানুপযন পতিঃ।

মৃতে ভর্তরি পুত্রস্থ বাচ্যো মাতুররক্ষিতা।

এর অর্থ- বিবাহযোগ্য সময়ে পিতা যদি কন্যাকে পাত্রস্থ না করেন, তাহলে তিনি লোকমধ্যে নিন্দনীয় হন এবং স্বামী মারা গেলে পুত্রেরা যদি তাদের মাতার রক্ষণাবেক্ষণ না করে, তাহলে তারাও অত্যন্ত নিন্দাভাজন হয়।

অথচ এই শ্লোকেও Tanvir Ahmed Sharif দেখতে পাচ্ছে হিন্দুরা তাদের মেয়েকে দাসী বা গরুর বিনিময়ে বিক্রি করছে ! এর কথা শুনে কবিতার একটি লাইন মনে পড়ে গেলো- বলো দেখি এ জগতে মূর্খ বলি কারে ? বোধশক্তি নাই যার মূর্খ বলি তারে।

এরপর হুরলোভী Tanvir Ahmed Sharif দাসী বা গরুর বিনিময়ে কন্যা বিক্রি করে দেবার বিধান পেয়েছে মনুসংহিতার ৩য় অধ্যায়ের ৯০ থেকে ৯৫ নং শ্লোকে, কিন্তু এই শ্লোকগুলোতে বলা হয়েছে-

"কুমারী কন্যা ঋতুমতী হলে তিন বছর পর্যন্ত গুনবান বরের জন্য অপেক্ষা করবে। এই সময়ের মধ্যে পিতা যদি তার বিবাহ না দেয়, তাহলে সে নিজেই নিজের পতি নির্বাচন করে নিতে পারবে। এতে ঐ কন্যার বা ঐ কন্যা যাকে বিয়ে করবে তার কোনো পাপ হবে না। কিন্তু এই ধরণের বিয়ের ক্ষেত্রে কন্যা কোনোরকম উপহার সামগ্রী পিতার বাড়ি থেকে নিতে পারবে না।"- (মনু-৩/৯০,৯১,৯২)

এরপর ৩/৯৩ এ বলা হয়েছে-

"ঋতুমতী কন্যাকে যে ব্যক্তি বিবাহ করবে, সেই ব্যক্তি কন্যার পিতাকে কোনোরকম শুল্ক দেবে না।"

কিন্তু এই শুল্ক বা পণের ব্যাপারে ৩/৫১ তেই বলা হয়েছে- "কন্যার পিতা কন্যার জন্য বরের কাছ থেকে অতি অল্প পরিমাণও শুল্ক অর্থাৎ পণ গ্রহণ করবেন না। যেহেতু কন্যার জন্য লোভবশত শুল্ক গ্রহণ করলে মানুষ সন্তান বিক্রয়ী হয়।"যে কথা আগেও বলেছি, তাই এই শ্লোকটি যে প্রক্ষিপ্ত তাতে কোনো সন্দেহ নয়। আর এই শ্লোক যদি প্রক্ষিপ্ত নাও হয়, তাহলে একই বিষয়ে দুই ধরণের কথা বলার জন্য মনুংসহিতা হিন্দু আইনের জন্য যে কোনো প্রামাণ্য গ্রন্থ নয়, যে কথা আমি অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, আমার সেই কথা ই প্রমাণ হয়।

যা হোক, এরপর ৩/৯৪ নং শ্লোকে বলা হয়েছে- ত্রিশ বছরের পুরুষ বারো বছরের কন্যাকে বিবাহ করবে।

আধুনিক যুগের বিচারে এটাকে বেমানান মনে হলেও, একটু গভীরে গিয়ে চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন যে পারিবারিক সম্মান রক্ষার জন্য এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। গড় বারো বছর বয়সের মধ্যেই প্রায় সব মেয়ের ঋতুস্রাব হয়ে যায়, আর এরপর সেই মেয়ের মনে প্রেম ও যৌনতার অনুভূতির সৃষ্টি হয়। এই প্রেম ও যৌনতা অনেক মেয়েকে বিপথে চালিত করে, ফলে বিয়ের পূর্বেই অনেক মেয়ে গর্ভধারণ করে ফেলে, আর এতে পরিবার ও সমাজে নানারকম অশান্তি, ঝামেলা ও জটিলতার সৃষ্টি হয়। প্রেম ও যৌনতাকে কন্ট্রোল করতে না পেরে অনেকে মেয়ে আবার পিতা মাতা ভাই বোন পরিবার আত্মীয় স্বজন ধর্ম সমাজ কারো কথা চিন্তা না করে প্রেমিকের সাথে বাড়ি থেকে পালায়, যা নিয়ে ঐ মেয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকজনের দুঃখ-কষ্টের কোনো সীমা থাকে না।

কুমারী কন্যা থেকে উদ্ভূত এই সব সমস্যারই সৃষ্টি হবে না, যদি সেই কন্যাকে বারো বছর বয়সেই বিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তখন সে প্রেম ও যৌনতার জন্য একজন বৈধ সঙ্গী পেয়ে যাবে, ফলে কোনো অবৈধ চিন্তা তার মাথায় আসবে না, তার দ্বারা পরিবার, সমাজ ও ধর্মের কোনো ক্ষতি হবে না।

এখন অনেকেই বলতে পারেন, বারো বছর পূর্ণ হলে কন্যাকে বিয়ে দিয়ে তাকে কি যৌনতার দিকে ঠেলে দেওয়া উচিত ?

এদেরকে আমি প্রশ্ন করছি, কেনো উচিত নয় ?

মানুষ, প্রকৃতিরই সৃষ্টি। আর প্রকৃতির সকল প্রাণীর নারী প্রজাতি ঋতুমতী হওয়া মাত্র যৌনক্রিয়া করে, তারপর বাচ্চার জন্ম দেয়। কুকুর, বিড়াল, গরু, ছাগল, ভেড়া এদের মতো গৃহপালিত জীবজন্তুর দিকে তাকালেই আমার কথার সত্যতার প্রমাণ পাবেন। প্রথম ঋতুতেই এদের যৌনক্রিয়া করতে বা বাচ্চার জন্ম দিতে তো কোনো সমস্যা হয় না ? তাহলে মানুষের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে কেনো ? মানুষ কি প্রকৃতির বাইরের সৃষ্টি ? আর আগেই তো বলেছি এভারেজ ১২ বছর বয়সের মধ্যেই প্রায় সব মেয়ে ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। আর ঋতুস্রাব হওয়া মানেই সেই মেয়ে যৌনতা ও সন্তানধারণের জন্য প্রস্তুত।

ঋতুস্রাবই প্রকৃতির যেকোনো নারী প্রজাতির প্রাণীর জন্য যৌনতার শুরু এবং গর্ভধারণের ইঙ্গিত, মানুষ যেহেতু্ প্রকৃতিরই সন্তান, সেহেতু মানুষও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই ১২ বছর পূর্ণ হলে কোনো নারীর বিয়েতে কোনো রকম সমস্যা থাকার কথা নয় বৈজ্ঞানিকভাবেও। একারণেই মেয়েদের বিয়ের বয়স ১২ বছর পূর্ণকে ধরা হয়েছে।

আবার অনেকে ভাবতে পারেন ১২ বছরের মেয়ের সাথে ৩০ বছরের পুরুষের বিয়ের ব্যাপারটা কিভাবে মানানসই। এখানে একটু প্রব্লেম আছে বলে আমারও মনে হচ্ছে। কারণ, সনাতনধর্মে ব্রহ্মচর্য আশ্রমের কাল হলো ২৫ বছর পর্যন্ত, এর মানে হলো ২৫ এর মধ্যে কোনো যুবককে শিক্ষা সমাপ্ত করে বিয়ের মাধ্যমে গার্হস্থ্য আশ্রমে প্রবেশ করতে হবে। তাই পুরুষের বিয়ের পারফেক্ট বয়স হলো ২৫, যে বয়সে কারো যৌনশক্তিসহ অন্যান্য ক্ষমতা একেবারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকে। এখন পুরুষের বিয়ের বয়স ২৫ এবং এবং নারীর ১২, এটা ধরে নিয়ে আমরা আলোচনা করে দেখি, ব্যাপারটা কেমন দাঁড়ায়-

বাংলাদেশে নন্দিত ও নিন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূণ আহমেদ তার কোনো একটি লেখায় বলেছেন- "যে নারীর বুদ্ধি তার স্বামীর চেয়ে বেশি, সেই নারীর সংসার কখনো সুখের হয় না।" একটু চোখ কান খুলে রেখে নিজের চারপাশ অবজার্ভেশনে রাখবেন, তাহলেই বুঝতে পারবেন এই কথার সত্যতা। আমার পরিচিত দুজন ব্যবসায়ী, বিয়ের পর তাদের স্ত্রীর মধ্যে মেধা দেখেছিলো বলে তাদেরকে নিজের খরচে এম.এ পাশ করিয়েছিলো। এম.এ পাশ করার পর চাকরি পেয়ে ঐ দুই মেয়েই তাদের স্বামীকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। আমি এক সময় এনজিওর ক্ষুদ্রঋণ প্রোগ্রামে চাকরি করতাম, এটা সেই সময়ের অভিজ্ঞতা। সম্প্রতি আরেকজন অশিক্ষিত, কিন্তু পশুখাদ্যের সফল ব্যবসায়ী আমাকে বললো, সে তার স্ত্রীকে এম.এ তে পড়াচ্ছে। পুরোনো অভিজ্ঞতা থেকে আমি ভাবলাম, বউ হারাতে তোর আর বেশি দেরি নেই।

এই ঘটনাগুলো আমাদেরকে এই শিক্ষা দেয় যে- কোনো সংসার তখনই আদর্শ সুখী সংসার হবে, যদি সেই সংসারের স্ত্রী, স্বামীর চেয়ে কম জ্ঞানী হয়। যদি ধন সম্পদ, সৌন্দর্য এবং জ্ঞানে কোনো পুরুষ, তার স্ত্রীর চেয়ে নিচে হয়, সেই পুরুষ কোনোদিনও সংসারে সুখ পাবে না। একারণে সংসারকে সুখী রাখতে হলে স্ত্রীর জ্ঞান বুদ্ধি এবং সৌন্দর্য হতে হবে পুরুষের চেয়ে কম। একারণেই পুরুষের শিক্ষা সম্পূর্ণ হলে অর্থাৎ তার বয়স ২৫ হলে, তার সাথে ১২ বছরের মেয়ের বিয়েতে কোনো সমস্যা নেই; কারণ, এই অর্ধেক বয়সী মেয়ে কোনোদিনই তার স্বামীর জ্ঞান বুদ্ধিকে ওভারটেক করে বড় বড় কথা বলে সংসারে অশান্তি আনতে পারবে না। সব সময় সে স্বামীর সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে সুখে সংসার করবে।

এখন এ প্রসঙ্গে কেউ কেউ বলতে পারেন, এটা হলো নারীর জ্ঞানবুদ্ধিকে দমন করে রাখার একটা অপকৌশল।

যারা এমন ভাবছে, তাদেরকে বলছি- আপনি কি জানেন, বেশিরভাগ শিক্ষিত মেয়ে, চাকরি বাকরি পেলেই পুরুষের সাথে আর সংসার করে না। তারা নারী ও ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলে একা একা থাকে বা সন্তান থাকলে তাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যায় ? কেউ কেউ তো বিয়েই করে না। তো যারা বিয়ে করে না, তারা তাদের যৌনতাকে কিভাবে দমন করে ? নিশ্চয় তারা যার তার সাথে শোয়। এবং এভাবে তাদের দ্বারা প্রকৃতপক্ষে সমাজের কোনো কল্যান হয় না, হয় অকল্যান। 

কোনো নারী যখন বেশি শিক্ষিত বা বেশি জ্ঞানী ও বেশি বুদ্ধিমতী হয়, তখন কোনো পুরুষকেই সে আর নিজের যোগ্য মনে করে না। তসলিমা নাসরিন তার একলেখায় বলেছে- "বাংলাদেশে এমন কোনো পুরুষ নেই যে তার মেধাকে ধারণ করতে পারে।" সিরিয়াস বুদ্ধিমতী তসলিমা নাসরিনের জীবনের দিকে তাকান, জীবনে ৩/৪টা বিয়ে করেছে, একটাও টিকে নি, এখন তার না আছে সংসার, না আছে সন্তান। যখন যাকে তার পছন্দ, তখন সেটাই তার স্বামী। একপুরুষকে যতক্ষণ তার ভালো লাগে, ততক্ষণ তার সাথে শোয়, যখনই তাক ভালো লাগে না, তখন তাকে ছুঁড়ে ফেলে অন্য কাউকে ধরে। এটা কোনো নারীর জীবন হলো ? 

আবার বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সেনসেশন বাউল শিল্পী মমতাজ, তেমন শিক্ষিত না হলেও কণ্ঠের জোরে যে পাড়ার মঞ্চ থেকে সংসদের চেয়ার পর্যন্ত দখল করেছে, গান গেয়ে বিস্ময়কর রকমের সফল এই মমতাজের কতগুলো স্বামী, জানেন ? মুহম্মদের বউয়ের মতো মমতাজের স্বামীও অগুনতি। অধিকাংশ- বেশি বুদ্ধিমতী এবং সফল নারীর জীবনই হয় এরকম, তারা একা একা সন্তানসহ বা সন্তানহীন নষ্টচরিত্রের জীবন কাটায়, তারা সমাজকে কলুষিত করে। তাদের কাছে সন্তান থাকলেও তারা সেই সন্তানকে সঠিকভাবে মানুষ করতে পারে না, পিতার আদরহীন সেই সন্তান বড় হয়ে হয় অমানুষ। নারীকে বেশি শিক্ষিত ও জ্ঞানী করার এই হলো সামাজিক কুফল। এসব বিবেচনা করে এখন আপনিই বলুন, ২৫ বছরের যুবকের সাথে ১২ বছরের মেয়ের বিয়ে দিয়ে তাকে সংসারের কাজে লাগিয়ে দিয়ে তাকে একটি সুখী সংসার প্রদান করা কি খুব অন্যায় ? সনাতন ধর্মের প্রায় সকল সিদ্ধান্ত নারীর সুখের জন্য। যে বা যারা এটাকে মানবে না, বা শুনে ভ্রু কুঁচকাবে, মনে রাখবেন, তারাই ক্ষতির শিকার হবে।

যা হোক, উপরের আলোচনা থেকে তো এটা প্রমাণিত যে হিন্দুরা- দাসী বা দুটি গরুর বিনিময়ে নিজেদের মেয়েদেরকে বিক্রি করে না, বাধ্যতামূলক বিক্রি করার তো কোনো প্রশ্নই নেই। মুসলমানরা যেহেতু সবকিছুই উল্টো করে বুঝে বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুই বোঝে না, তাই এইসব রেফারেন্সে তারা বাধ্যতামূলক কন্যা বিক্রির বিষয়টি খুঁজে পেতেই পারে। কিন্তু ইসলামের বিয়েতে কন্যাকে যে ডাইরেক্ট বিক্রি করে দেওয়া, এবার আলোচনা করবো সেই বিষয় নিয়ে-

অনেকেই জানেন ইসলামের বিয়েতে দেনমোহর বলে একটা ব্যাপার থাকে। এই দেনমোহর আর কিছুই নয়, কন্যার দাম। এই দেনমোহর অনেক ক্ষেত্রে কন্যার পিতা পেয়ে থাকে, আর যেক্ষেত্রে কন্যা নিজেই নিজের মালিক, সেক্ষেত্রে কন্যা পেয়ে থাকে। বিয়ের পর, বর যদি কন্যার দেনমোহর পরিশোধ না করে, তাহলে তার, স্ত্রীকে স্পর্শ করারও অধিকার নেই। আর যখনই বর, কন্যার দেনমোহর পরিশোধ করে, তখনই সেই পুরুষ, তার স্ত্রীর দেহকে ভোগ করার অধিকারী হয়। ব্যাপারটা এখানে সিম্পল, টাকা দাও, ভোগ করো, ঠিক যেন পতিতালয়। এখানে ভালোবাসার কোনো স্থান নেই। টাকা দিবা না তো টাচও করতে পারবা না। অনেক মুসলিম নারী আবার বেশ গর্ব করে বলে, দেনমোহর নারীর অধিকার। অধিকার তো বটেই, দেহ ভোগ করতে দিয়েছি, তার বিনিময়ে টাকা নেবো না ? নিচে দেখুন দেনমোহর সম্পর্কিত কোরানের একটি আয়াত, যার দ্বারা ইসলাম, নারীদেরকে বেশ্যায় পরিণত করেছে- 

"অতঃপর দাম্পত্য জবনের যে মধু তাদের দ্বারা লাভ করো, তার বিনিময়ে তাদের মোহরানা ফরয হিসেবে আদায় করো।"-(কোরান, ৪/২৪)

মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব শরিয়া শাসিত মুসলিম দেশে বিবাহে ইচ্ছুক পুরুষদেরকে বিয়ের আগে কন্যার পিতাকে মোহরানার টাকা পরিশোধ করে তারপর কন্যাকে বিয়ে করতে হয়, যেটা মেয়েকে কেনা ই।

যেকোনো অনৈতিক আইন, সামাজিক অস্থিরতার সৃষ্টি করবেই করবে। এই দেনমোহর প্রথার সুযোগ নিয়ে অনেক মুসলিম মেয়ে বিয়ের ব্যবসা খুলে বসে। তারা নিজেদের দৈহিক সৌন্দর্য এবং পতিতা মনমানসিকতা নিয়ে উচ্চমাত্রার দেনমোহরে ধনীলোকদেরকে বিয়ে করে এবং বাসর রাতেই সেই টাকা আদায় করে নেয় এবং তার কিছুদিন পরেই সেই পুরুষকে তালাক দিয়ে দেয়। এরপর সে আবার আরেকজনকে বিয়ে করে। এই কু প্রথার সুযোগ নিয়ে ২২ বছর বয়সের মধ্যে এক মুসলিম মেয়ে ২৪টি বিয়ে করেছে, যার প্রমান ফটোপোস্টে দেখতে পাচ্ছেন, এটা ঐ মেয়ে একাই ঘটাতে পারে নি, নিশ্চয় এর সাথে তার পরিবারের লোকজনও জড়িত। কিন্তু এই ধরণের কোনো সুযোগ সনাতনী মেয়েদের জন্য নেই। তাই হিন্দু মেয়েদের দ্বারা কোনো হিন্দু যুবকের প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগও নেই। যেহেতু হিন্দুরা, বিয়ের নামে তাদের কন্যাকে বিক্রি করে না এবং কন্যাকে দিয়ে বিয়ের বাণিজ্য করায় না।

আমার পরিচিত এক মুসলিম যুবক, পারিবারিকভাবেই এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে লাখ টাকা দেনমোহরে, তার মধ্যে দুই বা তিনলাখ টাকা ছিলো উসুল। ইসলামের আইন বলে কথা, কোনো মুসলমান কি তা অগ্রাহ্য করতে পারে ? তাই বিয়ের পরপরই সেই ছেলের বাপ, উসুলের ৩ লাখ টাকা মেয়ের পরিবারকে দিয়ে দেয়। এভাবে সে বউকে কিনে সংসার শুরু করে, কিন্তু অল্প কিছুদিন পরই সে জানতে পারে এটা তার বউয়ের তিন নং বিয়ে, এর আগেও তার দুবার বিয়ে হয়েছিলো এবং উভয়ক্ষেত্রেই দেনমোহের টাকা পয়সা আদায় করে নিয়ে তাদেরকে ডিভোর্স দিয়েছে। তাই এই বিয়ের ক্ষেত্রেও মেয়ে এবং মেয়ের পরিবারের উদ্দেশ্য ছিলো অন্যরকম। এরপর একদিন সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি লাগিয়ে মেয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়, আর আসে না। খবর দেয়, সে আর সংসার করবে না। এরপর বিভিন্ন প্যাঁচে ও চাপে পড়ে ছেলের বাপকে দেনমোহরের বাকি টাকা পরিশোধ করে ছেলেকে ঐ মেয়ের খপ্পড় থেকে মুক্ত করে। মুসলিম ছেলেদের দুর্ভাগ্য এখানেই, টাকা দিয়ে বউকে কিনেও, সেই বউকে ধরে রাখতে পারে না, মুসলিম মেয়ে বা মুসলিম সমাজের নোংরা মনোবৃত্তির কারণে।

এই ভাবে যেখানে মুসলিম সমাজে, দেনমোহরের নামে বিয়ের সময় মুসলিম মেয়েদেরকে বিক্রি করে দেওয়া হয় এবং কেউ কেউ আবার বার বার বিক্রিত হয়, সেই মুসলমানরা আবার বলছে- হিন্দুরা কন্যাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে বিক্রি করে দেয় এবং তার প্রমাণে এমন সব রেফারেন্স হাজির করছে, যাদের কোনো ভিত্তিই নেই।

এই অপচেষ্টা আর কিছুই নয়, অন্যের বদনাম করে নিজেদের দুর্নামকে ঢাকা দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা আর কি।

জয় হিন্দ।

জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment