Monday 10 August 2020

শ্রীকৃষ্ণ যদি ঈশ্বর হন, তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে তার কাজ কী ?


শ্রীকৃষ্ণ যদি ঈশ্বর হন, তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে তার কাজ কী ?

কেউ কেউ প্রশ্ন করে, শ্রীকৃষ্ণ যদি ঈশ্বর হয়, তাহলে তার যুদ্ধ লাগিয়ে কুরুক্ষেত্রেই ঐ বিধ্বংস ঘটানোর দরকার কী ? শ্রীকৃষ্ণ যেহেতু ঈশ্বর, সে চাইলেই তো মূহুর্তের মধ্যে পাপীদেরকে মেরে ফেলতে পারতো বা কোনো মহামারী সৃষ্টি করে সবাইকে বিনাশ করতে পারতো ? 

কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শেষ দিকে ঠিক এই ধরণের প্রশ্নই শ্রীকৃষ্ণকে করেছিলো বলরাম, যে কেনো সে ঐ ধরণের বিধ্বংস বা হিংসা ঘটালো ? শ্রীকৃষ্ণ উত্তর দিয়েছিলেন, “মানুষ যে জিনিসের মূল্য পরিশোধ করে না, তার মূল্যই সে বুঝতে পারে না। আজ ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ অনেক রক্ত দিয়েছে, এই ধর্মবোধ, পৃথিবী থেকে সহজে বিনাশ হবে না।” ঐ ধরণের বিধ্বংসের দরকার এজন্যই ছিলো যে, প্রকৃতির নিয়ম মেনেই তাকে অধর্মের বিনাশ ঘটাতে হবে। আর যুদ্ধের কারণ হিসেবে শ্রীকৃষ্ণ যা বলেছেন, তার সহজরূপ হলো- ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য যদি লোকজন ত্যাগ স্বীকার না করে, তাহলে তার কোনো মূল্য লোকজনের কাছ থাকবে না বা তারা তার কোনো মূল্য দেবে না। যেমন- বিনা পয়সায় অর্জিত বস্তুর মূল্য কারো কাছে থাকে না বা কেউ তার মূল্য দেয় না। এজন্যই কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ধর্ম প্রতিষ্ঠার রক্তমূল্য, শ্রীকৃষ্ণ, লোকজনের কাছ থেকে নিয়েছেন।

আবার, যুদ্ধ শেষে দ্রৌপদীও, শ্রীকৃষ্ণকে সেই একই ধরণের প্রশ্ন করেছিলো-  তিনি তো ঈশ্বর, তাহলে কেনো তিনি মানুষের মন পরিবর্তন না করে এই বিধ্বংস ঘটালেন ?

শ্রীকৃষ্ণ উত্তর দিয়েছিলেন, জন্ম নেওয়ার পর মানুষ স্বতন্ত্র হয়ে যায়, কোনো অলৌকিক শক্তি তার ইচ্ছার উপর দিয়ে আর কিছু করতে পারে না। তাই একবার যাকে যে অবস্থায় সৃষ্টি করা হয়েছে, সেইভাবেই তাকে তার কাজ করতে দিতে হয় এবং এভাবেই সে এক সময় ধ্বংস প্রাপ্ত হয়, এজন্যই এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

সুতরাং, শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ঈশ্বর হয়েও যুদ্ধ যে এমনি এমনি ঘটান নি, বাস্তব কারণেই যুদ্ধ ঘটিয়েছেন, আশা করছি, আমার পাঠক বন্ধুদের কাছে তা ক্লিয়ার হয়েছে।

জয় হিন্দ।

জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment