Friday, 3 July 2020

দৈনিক বেদ পাঠ : একটি ইসলামি তাকিয়া সিরিজ এবং আর্যদের সম্পর্কে কিছু কথা


দৈনিক বেদ পাঠ : একটি ইসলামি তাকিয়া সিরিজ এবং আর্যদের সম্পর্কে কিছু কথা

তাকিয়া হলো- মিথ্যা প্রচার করে অমুসলিমদের তাদের ধর্ম বিশ্বাসের ব্যাপারে বিভ্রান্ত করে তাদেরকে ইসলামের দিকে টানা, এটা ইসলামের স্বীকৃত একটি পদ্ধতি; সুতরাং ধর্ম প্রচারের জন্য মিথ্যা বলা ইসলামে পাপ নয়। অন্যদিকে মহাভারতের একটি বাণী হলো- যা ধর্ম তাতে মিথ্যে নেই, আর যা মিথ্যে তাতে ধর্ম নেই। তাই মুসলমানদের তাকিয়ার কারণে এটা প্রমাণিত যে ইসলাম কোনো ধর্ম নয়।

Saim Shahariar নামের দাড়ি টুপিওয়ালা এই মিথ্যার প্রতীক, ঋগ্বেদের ১/১৪৯/১ রেফারেন্স দিয়ে বলেছে, সেখানে নাকি লিখা আছে- সূর্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ঘোড়ার পীঠে চড়ে মহাকাশ ভ্রমণে বিজি আছে। কিন্তু এই মন্ত্রটিতে লেখা আছে-

"মহঃ স রায় এষতে পতির্দন্নিন ইনস্য বসুনঃ পদ আ। উপ ধ্রজন্তমদ্রয়ো বিধন্নিৎ।"

কোলকাতার হরফ প্রকাশনী, যার মালিক একজন মুসলমান, যার বেদ প্রকাশনা উদ্দেশ্যমূলক, সেই হরফ প্রকাশনীর বেদেও এর অর্থ লিখা আছে-

"মহাধনের স্বামী অগ্নি অভীষ্ট প্রদান করে আমাদের অভিমুখে আসছেন। প্রভুর অগ্নি ধনাস্পদ বেদি আশ্রয় করছেন। প্রস্তর হস্ত যজমানগণ আগত অগ্নির সেবা করছেন।"

- এখানে কি সূর্য এ ঘোড়া সম্পর্কে কিছু বলা আছে ?

নেই।

তাহলে মুসলমানরা এগুলো পায় কোথা থেকে ?

এছাড়াও অগ্নিবীর কর্তৃক প্রকাশিত ড. তুলসীরাম কর্তৃক ইংরেজিতে অনুবাদিত বেদ থেকে এই মন্ত্রের একটি স্ক্রিনশট পোস্টের সাথে যুক্ত করে দিয়েছি, সেখানেও দেখেন, এই মন্ত্রের অনুবাদে সূর্য ও ঘোড়া সম্পর্কে কিছুই বলা নেই।

যারা রেফারেন্স ছাড়া কথা বলে, তাদের কমেন্টকে যেমন আমি বলি রাস্তার বেওয়ারিশ কুকুরের ঘেউ ঘেউ, তেমনি যারা রেফারেন্সের নামে মিথ্যা বলে তাদেরকে কিন্তু আমি সরাসরি বলি মাদারড্যাস । মাদারড্যাস মানে কি সেটা আমার পাঠকরা নিশ্চয় জানেন বা বুঝতে পেরেছেন, না বুঝলে একটা ইঙ্গিত দিচ্ছি, মাদারড্যাস মানে হলো সেই গালি, যার মাধ্যমে গালিপ্রাপ্ত ব্যক্তি তার মায়ের সাথে ইয়ে করে।

যা হোক, আমি একটা কথা প্রায় বলি যে ধর্ম নিয়ে চুলকানো মুসলমানদের স্বভাব। আপনি যদি অমুসলিম হন এবং কোনো মুসলমানের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটান, সে ধর্ম নিয়ে আপনাকে চুলকাবেই এবং আপনাকে ইসলামের নর্দমায় নামানোর চেষ্টা করবেই করবে। তো আমিও সেই ডাক্তার, যে আমার সনাতন ধর্ম নিয়ে চুলকাবে, তাকে মলম আমি লাগাবোই লাগাবো, মানে তার পাছায় থুতু আমি দিবোই।

তো এই মুসলমান সূর্য প্রসঙ্গে হিন্দুধর্মকে চুলকানোর চেষ্টা করেছে, এখন দেখুন হাদিস-কোরানে সূর্য সম্পর্কে কী কী বলা আছে ?

কোরানের ৫৫/৫ আয়াতে বলা আছে, চন্দ্র ও সূর্য হিসাব মতো চলে। এই হিসাব হলো, চন্দ্র রাতের বেলা এবং সূর্য দিনের বেলা। তবে চন্দ্র রাতের বেলা পরিভ্রমন করে কোথায় যায়, সে ব্যাপারে ইসলাম কিছু বলতে না পারলে, সূর্য কোথায় যায়, কী করে, সেসব কথা কিন্তু বলা আছে কোরানের 13:2, 21:33, 31:29, 36:38-40, 18:86-90 এইসব আয়াতে এবং SahihBukhari 4:54:421 Sahih Muslim 1:297 এর এইসব হাদিসে। সূর্য সারাদিন পরিভ্রমন করে অস্ত যাওয়ার পর রাতের বেলা আল্লাহর আরশের নিচে সেজদা দিতে থাকে এবং পরদিন সকালে আবার উদিত হওয়ার জন্য প্রার্থনা করতে থাকে, আল্লা যদি অর্ডার দেয় তাহলে পরদিন সূর্য উদিত হয়।

মুমিনগন, এই ব্যাপারে বিজ্ঞান কী বলে ? সূর্য কি কখনো অস্ত যায় ? সূর্য যদি অস্ত যেত তাহলে সারা পৃথিবীতে একসাথে অন্ধকার নেমে আসতো, আবার উদয় হওয়ার পর এক সাথে আলোকিত হয়ে যেতো। কিন্তু এই রকম ঘটনা কী পৃথিবীতে ঘটে ? কোরান খুব বিজ্ঞানময় গ্রন্থ তাই না ? এত বিজ্ঞান যে, কোরান থেকে বিজ্ঞান উপচে উপচে পড়ছে! এই রকম উদ্ভট বিজ্ঞানের প্রবক্তা যে মুহম্মদ, তার কথায় বিশ্বাস করে আপনারা জীবনটাকে মাটি করে দিচ্ছেন, সত্যিই আপনাদের মূর্খতা দেখলে করুণা হয়।

এরপর কোরানের ১৮/৮৫ আয়াতে বলা আছে, " জুলকারনাইন যখন সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌঁছলো, তখন সূর্যকে কর্দমময় জলপ্রণালী মধ্যে অস্তমিত হইতেছে অবস্থায় পাইলো।"

বোঝেন অবস্থা, কোরান সূর্যকে ডুবাচ্ছে কাদার মধ্যে! এই কোরান নাকি লিখেছে আবার মহাজ্ঞানী আল্লা, যে আল্লার মহাবিশ্ব দূরে থাক, সৌজগত সম্পর্কেও কোনো জ্ঞান ছিলো না। শুধু এখানেই শেষ নয়, কোরানের ১৮/৯০ আয়াতে বলা হচ্ছে, " জুলকারনাইন যখন সূর্যের উদয় ভূমি পর্যন্ত পৌঁছলো, তখন তাকে এক সম্প্রদায়ের উপরে প্রকাশ পাইতেছে অবস্থায় পাইলো।"

এই দুই আয়াতের মূল ব্যাপার হচ্ছে, জুলকারনাইন নামের এক মুসলমান ভূ-বিজ্ঞানী (!) পৃথিবীর শেষ প্রান্ত কোথায় তা দেখা জন্য পশ্চিমে যাত্রা করে, তখন সে এক জায়গায় গিয়ে সূর্যকে কর্দমাক্ত জলাশয়ে ডুবতে দেখে এবং তারপর সে সূর্যের উদয় স্থান দেখার জন্য পূর্ব দিকে যাত্রা করে এবং সেখানে এক সম্প্রদায়ের উপর উদিত হতে দেখে। এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে ইসলাম মতে, পৃথিবী একটি গোলাকার সমতল সিডি ডিস্ক, যার প্রান্ত আছে এবং পূর্ব দিকে সূর্য উদয় হয়ে সারাদিন ধরে পৃথিবীর বুকে আলো প্রদান করে, সন্ধ্যায় কদর্মাক্ত জলাশয়ে ডুবে যায় এবং আল্লার আরশে নিচে গিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে পরদিন উদয় হওয়ার পারমিশন পাওয়ার জন্য। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, আল্লা থাকে পৃথিবীর নিচে, তাহলে মুহম্মদ যে আল্লার সাথে দেখা করার জন্য বোরাকে চড়ে উর্ধ্ব আকাশে গমন করেছিলো, তার কারণটা কী ?

আশা করছি উপরের এই আলোচনা থেকে বেদ নিয়ে মুসলমানদের চুলকানীর জবাবটা আমার বন্ধুদের মুখে তুলে দিতে পেরেছি।

এই প্রসঙ্গে আর্যদের উদ্দেশ্যে একটা কথা না বললেই নয়, মুসলমানরা যথন বেদ নিয়ে এসব কটূক্তি করে তখন আপনারা থাকেন কোথায় ? কেনো আপনারা এসব কটূক্তির জবাব দিয়ে পোস্ট করেন না ? আপনাদের সব ঘেউ ঘেউ কি শুধু আমার পোস্টে এসে ? আপনাদের উদ্দেশ্য কি হিন্দুধর্মকে রক্ষা করা না, না ইসলামের কাল্পনিক আল্লার মতো একটি সর্বশক্তিমান ঈশ্বর হিন্দুদের জন্য কল্পনা করে, ইসলামের সাথে সনাতন ধর্মের সাদৃশ্য এনে সনাতনকে ইসলামে বিলীন করা ?

আপনাদের চিন্তাভাবনা ও কাজ দেখে অনেকে কিন্তু এখন এটাই ভাবা শুরু করেছে; কারণ, আপনারা মুসলমানদের কটূক্তির কোনো জবাব দেন না, আর যখনই শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর প্রমাণ করে আমি পোস্ট দিই এবং সকল হিন্দুকে শ্রীকৃষ্ণের এক ছাতার তলায় এনে সনাতনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করি, তখনই শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্বকে খারিজ করে আপনারা ইসলামের আল্লার মতো এক কাল্পনিক ঈশ্বরকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কেনো ?

সনাতন ধর্ম কোনো বিশ্বাসের ধর্ম নয়, বাস্তবতার ধর্ম। একজন হিন্দুকে চুড়ান্তভাবে কোনো কিছুই বিশ্বাস করার দরকার নেই; কারণ, দেব-দেবীরা যে প্রাকৃতিক এবং মানুষের মানসিক বা দৈহিক শক্তির প্রতীক, সেগুলো তাদের এ্যাকশনে যেমন বোঝা যায়, তেমনি শ্রীকৃষ্ণ যে সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর, তার প্রমাণ তিনি নিজে পৃথিবীতে এসে তার লীলা এবং কথার মাধ্যমে দিয়ে গেছেন, এর বাইরে আপনার কোনো এক কাল্পনিক ঈশ্বরের প্রয়োজনটা কী ?
তথাকথিত ধর্মের নামে যেসব ব্যক্তিগত মতবাদ কোনো এক কাল্পনিক ঈশ্বর এবং তা্র প্রেরিত পুরুষের উপর টিকে আছে, সে সব মতবাদ এক সময় পৃথিবীতে ছিলো না এবং ভবিষ্যতে এক সময় পৃথিবীতে তা থাকবেও না। তাই সনাতন ধর্মকে বিশ্বাস থেকে বের করে এনে বাস্তবতার আলোকে ব্যাখ্যা করলে সকল হিন্দু যখন ঈশ্বর হিসেবে এক কৃষ্ণকে মনে ধারণ করবে, তখনই- চৈতন্য, হরিচাঁদ, অনুকূলের মতো সকল নকল ভগবানের দিন শেষ হয়ে যাবে এবং হিন্দু সমাজ পুনরায় শক্তিশালী হবে, আমি সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি, এটা বোঝার মতো জ্ঞান বুদ্ধি কি আপনাদের আছে ?

ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দ যেমন বলেছেন- হিন্দুর কল্যানই ভারতের কল্যান; তেমনি অনেক পাঠক আমাকে জানায় যে- আমার সফলতাই নাকি হিন্দু সমাজের সফলতা; পাঠকবন্ধুরা আমার উপর এতটা ভরসা করলেও, আমি জানি অতটা যোগ্যতা ও ক্ষমতা পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ এখনও আমাকে দেন নি; এখন তিনি আমাকে যে শক্তি দিয়েছেন, সেই শক্তি দিয়েই যেমন সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, তেমনি যখনই তিনি আমাকে আরো বেশি অর্থ ও ক্ষমতা আমাকে দেবেন, আমি যে সেটা সম্পূর্ণভাবে হিন্দুসমাজের কল্যানের জন্যই ব্যয় করবো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

শেষে আর্যদের উদ্দেশ্যে বলছি- আপনারা আমার প্রতিবন্ধক না হয়ে সহায় হোন, টিকে যাবেন; কারণ, হিন্দু সমাজের এমন কোনো শক্তি নেই যারা আমার ঈশ্বরপ্রদত্ত জ্ঞানের মোকাবেলা করতে পারে বা আমার চলার গতিকে রোধ করতে পারে। আর এটাও মনে রাখুন- সনাতন ধর্ম সম্পর্কে আমি যা বলবো, সেটাই শেষ কথা; তাই আমার বিরুদ্ধে যারা বলবে- তারা হয় ভ্রান্ত, না হয় বিভ্রান্ত।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
"ও সহানা ভবতুঃ" ( ঈশ্বর আমাদেরকে রক্ষা করুন)

No comments:

Post a Comment