Friday, 3 July 2020

শ্রাদ্ধ এবং বিবাহের ঝামেলা পোহানোর কি কোনো দরকার বা যুক্তি আছে ?


শ্রাদ্ধ এবং বিবাহের ঝামেলা পোহানোর কি কোনো দরকার বা যুক্তি আছে ?

#সুদীপা_ঘোষ,

আপনি যে মুসলমানদের দ্বারা ব্রেইনওয়াশড হয়েছেন, সেটা কি আপনার বাড়ির লোকজন জানে ?
শোনেন, যেকোনো কিছুর পেছনে ঝামেলা সহ্য করার একটা মূল্য আছে। কোনো বিষয়ে যত বেশি ঝামেলা আছে, সেটা তত বেশি টিকসই এবং সেটা তত বেশি মাহাত্ম্যপূর্ণ।

ছোটবেলা থেকেই নিজের জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে সনাতন ধর্মের নানা বিষয়কে আমি কুসংস্কার মনে করতাম এবং কিছু বিষয়কে তো মনে করতাম সাংঘাতিক ঝামেলাপূর্ণ, যার মধ্যে বিয়ে একটি, যার কারণে ছোটবেলা থেকেই আমি প্রকাশ্যে বলে বেড়াতাম যে- আমি এই সব ঝামেলার মধ্যে নেই সিভিল আইনে বিয়ে করে কোনো মন্দিরে গিয়ে মালা আর সিঁদুর পড়াবো, ব্যস এবং এই সব ভাবনা এক সময় আমাকে নাস্তিকে পরিণত করেছিলো এবং ১৯৯৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আমি নাস্তিক হিসেবে বহু কথা বলেছি বা লিখেছি, চেষ্টা করেছি অন্যদের মধ্যেও নাস্তিকতা ছড়াতে, কিন্তু ২০১৩ তে এসে বুঝতে পারি নাস্তিকতা সঠিক পথ নয়; আর ইসলাম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি এগুলো তো কোনো ধর্মই নয়, এগুলো এক একটি ব্যক্তিগত মতবাদ; মানুষের ধর্ম একটাই, সেটা সনাতন, আর এর কোনো বিধি বিধান অমূলক বা অযৌক্তিক বা কুসংস্কার নয়, সনাতন ধর্মের প্রত্যেকটি আচারের পেছনে রয়েছে বিজ্ঞান ভিত্তিক যুক্তিসঙ্গত কারণ। আমাদের দুর্ভাগ্য হচ্ছে- সেই বিজ্ঞানভিত্তিক যুক্তিসঙ্গত কারণগুলো হিন্দুদেরকে সহজ করে বোঝানোর মতো লোক নেই, যাদের উপর এই দায়িত্ব, সেই সাধু সন্ন্যাসীরা, ভাবে জ্ঞানী হলেও বাস্তবে মহামূর্খ; তাই হিন্দু সমাজকে এই বাস্তব বিষয়গুলো শেখানোর বা বোঝানোর দায়িত্ব আমি নিজের কাঁধে স্বেচ্ছায় তুলে নিয়ে নিষ্কামভাবে কর্ম করে যাচ্ছি, আমাকে ফল দেওয়ার দায়িত্ব ঈশ্বরের।

যা হোক, হিন্দু সমাজে কেউ মারা গেলে তার শ্রাদ্ধ পর্যন্ত যেমন সেই পরিবারকে নানা রকম ঝামেলা পোহাতে হয়, অনেক টাকা পয়সা খরচ করতে হয়, তেমনি হিন্দুমতে বিয়ে করতে গেলেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় এবং প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করতে হয়, কিন্তু এগুলো কি শুধুই ঝামেলা পোহানো এবং খরচ, এগুলোর কি কোনো সার্থকতা নেই ? মৃতের প্রসঙ্গে পরে আসছি, আগে জন্মের কারণ অর্থাৎ বিবাহের প্রসঙ্গটা বলি-

দাম্পত্য জীবনের সমস্যাগুলোর কারণগুলোকে উপলব্ধি করতে না পেরে ইসলামসহ অন্যান্য মতবাদগুলো বিবাহ ব্যবস্থাকে একেবারে শর্টকাট করে ফেলেছে। এই কারণে যেখানে একটি সনাতনী পদ্ধতির বিয়ের অনুষ্ঠান হতে তিনদিন সময় লাগে এবং তার প্রস্তুতিতে লাগে মোটামুটি একমাস, সেখানে মাত্র ঘন্টা দুয়েকের প্রস্তুতিতে মাত্র ৩ মিনিটে একটি ইসলামিক বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে। যে বিষয়টি যত সহজে কেউ পাবে, সেই বিষয়টি তত সহজে সে হারাবে। একারণে সরকারী চাকরি পাওয়া যেমন সহজ নয়, তেমনি সরকারী চাকরি কোনো কারণে যাওয়াও সহজ নয়। এই কারণেই বেসরকারী চাকরি কেউ যেমন হুট করেই পেয়ে যায়, তেমনি সেই চাকরি হুট করে চলেও যায়। এই একই কারণে ইসলামের বিয়ে যেমন কবুল বললেই হয়ে যায়, তেমনি তালাক বললেই তা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু সনাতনী পদ্ধতির বিয়েতে তিন দিন ধরে এত গিঁট মারা হয় যে, তা কখনো খোলাই সম্ভব নয়, তাই সনাতনী পদ্ধতির বিয়েতে বিচ্ছেদ বলে কিছু নেই। কারণ, একজন নারীর জীবনে তার সংসারই সব এবং সংসারই শেষ কথা, সেই সংসার যদি ভেঙ্গে যায়, সেই নারীর জীবনে কিছুই আর থাকে না, নারীর সকল অধিকার মূল্যহীন, তাই সনাতন ধর্ম নারীর সকল অধিকার এবং সুখকে নিশ্চিত করার জন্য বিবাহ বিচ্ছেদ প্রথার স্বীকৃতি দেয় নি, যেটা একজন হিন্দু নারীর জীবনকে করেছে সবচেয়ে সুখী এবং সবচেয়ে সৌন্দর্যময়।

সনাতনী পদ্ধতির বিয়েতে অনেক রীতি মানা হয়, মেয়ে দেখার সময় ছেলে তো মেয়েকে দেখেই, ছেলে, মেয়েকে অন্যভাবেই দেখতে পারে, সেটা কোনো ব্যাপার নয়, কিন্তু বিয়ের সময় সাত পাক ঘোরানোর পর মেয়েকে যখন ছেলের পাশে বসানো হয়, তখন পুরোহিত, ছেলে ও মেয়ের হাতকে একসাথে বেঁধে একটি গাড়ুর উপর রাখে, যার মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ে একে অপরের স্পর্শ প্রথমবার পায়। এরপর রাতের বেলার ছাদনাতলার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে বর ও কনেকে একটি ঘরে নেওয়া হয়, সেখানে বর ও কনেকে পাশাপাশি বসিয়ে পাতিলের মধ্যে দুটি শোলার টুকরা ছেড়ে দিয়ে সেই পাতিলের জলে পাক মেরে একটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, সেই ঢাকনা একবার ছেলে তুলে ছেলের দিকে পছন্দ মতো কোনো এক জায়গায় রাখে, সেই ঢাকনা মেয়েকে সেখান থেকে এনে আবার পাতিলের উপর রাখতে হয়, তারপর মেয়ে সেই ঢাকনা তুলে নিজের দিকে নিজের পছন্দমতো কোনো জায়গায় রাখে এবং ছেলেকে সেই ঢাকনা তুলে এনে পাতিলের উপর রাখতে হয়; এভাবে একবার ছেলে করে, একবার মেয়ে করে এবং এই প্রসেসের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের মধ্যের যে শারীরিক জড়তা, সেটা আস্তে আস্তে দূর হয়।

এই আনুষ্ঠানিকতা শেষে, বিয়ের রাতে ছেলে ও মেয়ে পাশাপাশি থাকার সুযোগ পেলেও তাদের মধ্যে যাতে কোনো শারীরিক সম্পর্ক না হয়, সেজন্য তাদের সাথে মেয়ে বা ছেলের জামাইবাবু টাইপের কেউ থাকে, এভাবে বিয়ের রাত পার হয়। বিয়ের পরদিন হয় বাসি বিয়ে, সেই অনুষ্ঠানে ছাদনাতলার সামনে একটি পিঁড়ির উপর মেয়েকে দাঁড় করিয়ে ঠিক তার পেছনে বরকে এমনভাবে দাঁড় করানো হয়, যাতে বরের পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল, কনের পায়ের পেছনের গোড়ালিকে স্পর্শ করে থাকে, এভাবে থাকার ফলে কনের শরীরের সাথে বরের শরীর পুরোপুরি স্পর্শ করে থাকে এবং একে অপরের শারীরিক উষ্ণতাও তারা অনুভব করে থাকে। এই সময় একটি বড় গামছা দিয়ে বর ও কনের মাথাকে এক সাথে ঢেকে দেওয়া হয়, তারপর তাদের মাথায় জল ঢেলে তাদের গা ভিজিয়ে দেওয়া হয়, ফলে একে অপরের শারীরিক স্পর্শ তারা আরও বেশি করে অনুভব করে। শুধু তাই নয়, এখানে বরকে কিছু মন্ত্র পাঠ করতে হয়, এই মন্ত্র পাঠ করার সময় বরকে, কনের সামনে দিয়ে ছাদনাতলার দিকে হাত জোড় করে রাখতে হয়, যা কনেকে অনেকটা জড়িয়ে ধরার মতো ব্যাপার। এভাবে বাসি বিয়ে শেষ হলে বর ও কনেকে নদী বা পুকুরে স্নান করে আসতে হয় এবং কনের বাড়িতে বিয়ের পর্ব শেষ হয়।

কনের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে বরের বাড়িতে বর কনে চলে এলেও সেই রাতে তারা এক সাথে থাকার অনুমতি পায় না। কনের সাথে কনের বাড়ি থেকে সাধারণত বয়স্ক কোনো নারী আসে, সেই রাতে কনে তার সাথেই থাকে। সাধারণত এর পরের দিনই হয় বৌভাত, বৌভাত শেষে বৌভাতের রাতেই হয় বাসররাত, সেই রাতে বর ও কনে একে অপরকে শারীরিকভাবে পায়।

বিয়ের গৌণ উদ্দেশ্য যা ই থাকুক, এর মূখ্য উদ্দেশ্য হলো এক নারী ও এক পুরুষের মধ্যের যৌনতা, এই যৌনতা যদি হঠাত করেই ঘটে সেটা হবে ধর্ষণ; কারণ, ছেলে ও মেয়ে যদি যৌনতার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকে, সেটা ধর্ষণ বৈ আর কিছুই নয়।

এবার দুজন অপরিচিত নারী ও পুরুষকে একই ঘরে একই বিছানায় তুলে দেওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সনাতনী রীতির বিয়ের ঘটনাগুলোর বিবর্তন খেয়াল করুন-

সাতপাক অর্থাত বিয়ের মূল পর্ব হয়ে যাওয়ার পর ছেলে তার হাতে মেয়ের হাত পাচ্ছে, অর্থাত একে অপরের হাত ধরার সুযোগ পাচ্ছে; এরপর ঘরে গিয়ে পাতিলের জলে শোলার টুকরো নিয়ে খেলার ছলে বর ও কনের শারীরিক জড়তা দূর হচ্ছে, তারপর রাতে তারা একসাথে একই বিছানায় পাশাপাশি থাকার সুযোগ পাচ্ছে, কিন্তু তখনও যেহেতু তারা যৌনতার জন্য প্রস্তুত নয়, সেহেতু সেটা যাতে না ঘটে সেজন্য তাদের সাথে একজন জামাইবাবুকে রাখা হচ্ছে। পরের দিন বাসিবিয়ের সময় একই পিঁড়ির উপর আগে পিছে দাঁড়িয়ে থাকায় বর ও কনে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, এসময় কনেকে দুই হাতের মধ্যে রেখে দেবতাদের উদ্দেশ্যে হাত জোড় করে মন্ত্রবলার পর্বে বর ও কনে আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। কিন্তু শুধু শারীরিকভাবে কাছাকাছি নয়, মানসিকভাবেও কাছাকাছি হওয়ার জন্য বর ও কনে আরও সময় দেয়া হয়, সেজন্য বাসি বিয়ের দিন বরের বাড়িতে কনেকে এনেও তাদেরকে বাসর করার সুযোগ দেওয়া হয় না; গত ২৪ ঘন্টা ধরে যা হলো, তা নিয়ে ভেবে তাদেরকে মানসিকভাবে আরো কাছে আসার জন্য একটা রাত সময় দেওয়া হয়।

আগেই বলেছি, কনের বিদায়ের সময়, কনের বাড়ি থেকে কনের সাথে কোনো বয়স্ক মহিলা বা কোনো কম বয়সী মেয়ে বরের বাড়িতে আসে, এর পেছনেও রয়েছে মনোবৈজ্ঞানিক যুক্তি। বরের বাড়িতে আসার পর এই বাড়িতে কনে একেবারে নতুন, বলতে গেলে তার কাছে সবাই অপরিচিত, এই সময় যাতে কনে চেনা পরিচিত কারো সাথে কথা বলে নিজের মনের ভাব হালকা করতে পারে বা সম্পূর্ণ একা অপরিচিত একটা বাড়িতে এসে যাতে নিজেকে অসহায় না ভাবে, সেজন্যই মূলত কনের সাথে তার চেনাজানা একজন বরের বাড়িতে এসে থাকে, যতদিন না অষ্টমঙ্গলের জন্য নতুন বউ বাপের বাড়িতে যায়। এই রকম একটি ছোটখাটো বিষয়কেও আমাদের শাস্ত্রকারগণ কতটা গুরুত্ব দিয়ে চিন্তা করেছেন, সেটা একবার ভেবে দেখুন।

যা হোক, কনে যেদিন বরের বাড়িতে আসে, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া, তার পরের দিনই বৌভাত হয় এবং বৌভাতের সারাদিন বর ও কনে পাশাপাশি থাকতে থাকতে নানা ধরণের কথা বার্তা বলতে বলতে একেবারে ফ্রি হয়ে যায়, তাদের মধ্যে আর কোনো জড়তা ই থাকে না, ফলে দিন শেষে তারা যখন বিছানায় যখন, তখন তাদের মধ্যে কোনো আড়ষ্টতা বা জড়তা থাকে না, ফলে খুব সহজেই অনেক আকাঙ্ক্ষিত বাসর রাতকে তারা উপভোগ করতে পারে, কোনো রকম ভয় বা জড়তা ছাড়াই, এই ভাবে সনাতনী বিবাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি নারী ও পুরুষের দাম্পত্য জীবনের শুভ সূচনা হয়, আর কথায় তো বলে- শুরুটা যার ভালো, বাকি অর্ধেক তার এমনিই ভালো যায়।

এভাবে একটি দাম্পত্য জীবনের শুভ সূচনার জন্য আমাদের শাস্ত্রকারগণ সনাতনী বিবাহ পদ্ধতির এসব নিয়ম কানুন বের করেছে। এগুলোকে কারো কারো কাছে ঝামেলার মনে হতে পারে, কিন্তু যারা এগুলোকে ঝামেলার মনে করে, তাদের একজন বাসর রাতে হয় ধর্ষিতা, অন্যজন ধর্ষক, যার প্রভাব পড়ে পুরো দাম্পত্য জীবনে, যার কারণে তালাক, বহু বিবাহ বা সতীনের সাথে সংসারও অসম্ভব নয়।

ইসলামি পদ্ধতির বিয়েতে বর তো কনের মুখও দেখতে পায় না, হাতের স্পর্শ তো বহু দূরের ব্যাপার। তিনবার কবুল বলার পর কনের দায়িত্ব যেমন শেষ, তেমনি সেটা অন্যের মারফত জানার পর বরের দায়িত্বও শেষ। এর পর তারা সেই রাতেই উপস্থিত হয় বাসর রাতে, যে রাতের মূখ্য কাজ যৌনতা, যে যৌনতার জন্য বর প্রস্তুত থাকলেও, প্রস্তুত থাকে না কনে, ফলে এ্যারেঞ্জ ম্যারেজের প্রায় সব ক্ষেত্রে কনে বাসর রাতেই হয় ধর্ষিতা, তারা বাসর রাত উপভোগ করে না, তারা বাসর রাতে হয় নির্যাতিতা, বিয়ের খাতিরে যেটাকে তারা দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে যায়; কিন্তু যারা প্রেম করে বিয়ে করে তাদের ব্যাপারটা এক্ষেত্রে আলাদা রকম হতে পারে, আগে থেকেই বোঝা পড়া থাকায়, তারা যৌনতার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে, তাই তারা বাসররাতকে উপভোগ করে, অনেক ক্ষেত্রে বাসর রাতের আগেও তারা বাসর করে ফেলে এবং এই বিবাহপূর্ব প্রেম যেহেতু সমাজে নানা সমস্যার সৃষ্টি করে, সেহেতু বিবাহ পূর্ব প্রেম সনাতন ধর্মে স্বীকৃত নয়, এজন্য এখানে আমি আলোচনা করেছি প্রেমের সম্পর্কবিহীন অপরিচিত দুজন নর নারীর বিবাহের ব্যাপারে।

যা হোক, এই সব ঝামেলা সহ্য করে কেউ যদি বিবাহ করে এবং বিয়ের দিন তারিখ সঠিকভাবে শাস্ত্রমোতাবেক নির্ধারণ করে এবং বিয়ের পর যদি নতুন বউ শাঁখা, সিঁদুর, খারু, পলা শ্রদ্ধাসহকারে ব্যবহার করে, তাহলে তার জীবনে বড় কোনো সমস্যা এসে তার সংসার জীবনকে উল্টে পাল্টে ফেলে দিতে পারবে না, একথা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়।

আর যদি আপনি এসব ঝামেলাকে সহ্য করতে না চান, শুধু তিনবার কবুল বলেও আপনি কোনো মুসলমানকে বিয়ে করতে পারেন, তারপর সেই রাতেই বাসরের মজা নিতে পারেন; কিন্তু তিনবার তালাক বলেই যে আপনার মুসলিম স্বামী আপনাকে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলতে পারে, ফলে নিমিষে আপনার সাধের সংসার আপনার হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে বা বিনা নোটিশে আপনার স্বামী আপনার সতীনকে আপনার নিজের হাতে সাজানো সংসারে আনতে পারে এবং উঠতে বসতে আপনাকে চড় থাপ্পড় খেতে হতে পারে, শর্টকার্টে বিয়ে করলে কিন্তু এসব সমস্যা বা ভয় থেকে আপনি কখনোই রেহাই পাবেন না।

সুতরাং ঝামেলা পোহালে যে জীবনে তার বাস্তব উপকারিতা আছে, সেটা কিন্তু উপরের আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত।

এবার যাওয়া যাক মৃতের শ্রাদ্ধ প্রসঙ্গে।

নাস্তিকদের কাছে জীবন হলো জন্ম থেকে মৃত্যু, তার আগেও কিছু নেই, পরেও কিছু নেই।
ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলমানের কাছে জীবন হলো জন্ম থেকে মৃত্যু প্লাস আখেরাতের দোযখ ও বেহেশত।
কিন্তু সনাতন ধর্মে জীবন হলো আত্মার ভ্রমণ এবং এই ভ্রমণ ৮৪ লক্ষ বার, এর মধ্যে শুধু মানুষ হিসেবেই জন্ম চার লক্ষ বারগীতায় (১/৪১) বলা হচ্ছে- কোনো মানুষের মৃত্যুর পর তার উদ্দেশ্যে যদি শ্রাদ্ধ করা না হয়, তাহলে সে নরকে পতিত হয়। সনাতন ধর্ম মতে কোনো মানুষের মৃত্যুর পর তার আত্মা প্রথমে যমলোকে যায়, সেখানে নির্দিষ্ট কাল কাটাবার পর কর্মফল অনুযায়ী নরকে বা স্বর্গে যায়। এরপর নরক বা স্বর্গ ভোগ শেষ হলে সামগ্রিক কর্মফল অনুযায়ী আবার সে পৃথিবীতে মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণীরূপে জন্মগ্রহন করে, এই চক্র চলতে থাকে, যতদিন না কোনো আত্মা, মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়ে ঈশ্বরকে লাভ অর্থাৎ মোক্ষপ্রাপ্ত করতে না পারে।

এখন #Sudipa_Ghosh এর এলার্জি যেহেতু সনাতন ধর্মানুযায়ী মৃত্যু পরবর্তী কর্মকাণ্ড বিশেষ করে শ্রাদ্ধ নিয়ে, সেহেতু সুদীপার মৃত্যুর পর তার ডেডবডি যাতে পরিবেশ দূষণ করতে না পারে, সেজন্য দ্রুত মাটিাচাপা দিতে হবে, তারপর তার দেহ ২৪ ঘণ্টা পর পচতে শুরু করবে এবং পচাগলা দেহ হতে লাখ লাখ পোকা মাকড়ের জন্ম হবে এবং সেই পোকা মাকড় সুদীপার দেহকে একটু একটু করে খাবে, শেষ সুদীপার শুধু হাড়গোড় পরে থাকবে এবং যেহেতু তার উদ্দেশ্যে শ্রাদ্ধ করা হবে না, সেহেতু সে মৃত্যুর পর ডাইরেক্ট নরকে যাবে এবং পরের জন্মে কোনো ইতর শ্রেনীর জীব রূপে জন্ম নিয়ে পূর্বজন্মের কর্মের ফল ভোগ করবে।

এখন দেখা যাক, সুদীপা যেসব বিষয় নিয়ে কটূক্তি করেছে, সেগুলো বাস্তব কি না ?

১ নংএ সুদীপা বলেছে- মরা চোখে তুলসী পাতাসহ কপালে চন্দন দিতে হবে।

-বিজ্ঞানমতে তুলসীর পাতা জীবানুনাশক বা পচনরোধক, আর পচনের দিক থেকে মানুষের সবচেয়ে দুর্বল অঙ্গ হলো চোখ, যেকারণে মৃত মানুষের চোখ সবচেয়ে দ্রুত পচে, মৃতদেহ সৎকার করতে যদি কোনো কারণে দেরি হয়, চোখ যাতে পচতে শুরু না করে, সেজন্যই মৃতদেহের চোখে তুলসীর পাতা দেওয়া হয়। আবার শুধু তুলসী ই নয়, চন্দনের U আকৃতির তিলক হলো বিষ্ণুর প্রতীক, মৃতব্যক্তি বিষ্ণুর সাথে বিষ্ণুলোকে স্থান পেয়ে জন্ম মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পাক, এই কামনায় মৃতদেহের কপালে চন্দনের তিলক দেওয়া হয়; কারো ভালো চাওয়া নিশ্চয় কোনো খারাপ কাজ নয়, মৃতের কপালে চন্দন দিয়ে মৃত মানুষের এই ভালোটাই চাওয়া হয়, এটা কি সমালোচনার কোনো বিষয় ?

২ নং সুদীপা বলেছে- মৃতমুখে মিষ্টিসহ জল দিতে হবে খাওয়ানোর জন্য এবং এরপর মুসলমানের কাটা ধোনচোষা মুখে সে একটা অট্টহাসি দিয়েছে।

- কিন্তু বাস্তবে মৃত্যুর পর কারো মুখে জল মিষ্টি দেওয়া হয় না, মৃত্যুর ঠিক পূর্বমূহুর্তে সাধারণত মুমূর্ষু ব্যক্তির মুখে গঙ্গাজল দেবার রীতি রয়েছে, ঠিক সেই মূহুর্তে ঐ ব্যক্তি যেন জলকষ্টে মারা না যায়, সেই জন্য। এটা নিয়ে অট্টহাসি একমাত্র আইএস সদস্যদের বর্বর স্ত্রীরাই দিতে পারে।

যা হোক, ৩ নং এ চুদীপা বলেছে- বল হরি হরি বল বলে ঢাকঢোল পিটিয়ে মরা নিয়ে যেতে হবে শ্মশানে।
মূর্খ গীমা (বর্ণ স্থানান্তর করে পড়ুন) শোন, মুসলমানরা কেউ মারা গেলে কেনো এলাকায় জুড়ে মাইকিং করে জানায়, জানিস ? যাতে মৃত লোকের ব্যাপারে এলাকার সবাই জানতে পারে এবং তাকে দাফন করার সময় সবাই তার জানাজায় উপস্থিত হতে পারে। প্রাচীনকালে তো আর মাইক ছিলো না, তখন কিভাবে কোনো ব্যক্তির মারা যাওয়ার ব্যাপারটা এলাকা জুড়ে জানানো হতো ? সেই সিস্টেমটাই ছিলো- বল হরি হরি বল ব'লে ঢাকঢোল পিটিয়ে মৃতদেহকে নিয়ে শ্মশানে যাওয়া, যাতে সবাই বিষয়টি জানতে পারে এবং সেই শবযাত্রায় শামিল হতে পারে, বুঝেছিস নির্বোধ ?

এরপর ৫ নং এ চুদিপা বলেছে- মরামুখে আগুন দিতে হবে ছেলে, ভাইপো, ভাগ্নাকে; এতে মেয়েদের অধিকার নেই, এমনকি শ্মশানে যাওয়া নিষেধ আছে।

মৃতদেহকে পোড়ানো নিয়ে মুসলমান তো বটেই, মুসলমান প্রভাবিত মূর্খগুলোরও চুলকানি আছে। কিন্তু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে শবদাহই শ্রেষ্ঠ সিস্টেম; কারণ, এতে জমির অপচয় হয় না এবং লাশকে শেয়ালের খাদ্য, কঙ্কাল বানানোর জন্য লাশ চুরি, যুবতী মেয়েদের লাশ তুলে ধর্ষণ, পচা গলা লাশকে হাজার হাজার পোকা মাকড় দ্বারা ভক্ষণসহ লাশের কোনো রকম অপব্যবহার হওয়ার বিন্দুমাত্র কোনো সম্ভাবনা নেই। এছাড়াও মানুষ সারাজীবন ধরে নানা কারণে দেবতাদের উদ্দেশ্যে নানারকম যজ্ঞ করে থাকে এবং যজ্ঞে সে নানারকম বস্তু অগ্নিতে আহুতি দেয়; চিতা হলো মানুষের জীবনের শেষ যজ্ঞ, যে যজ্ঞে কোনো ব্যক্তি নিজেকেই আহুতি দেয়, যাতে তার আত্মার চুড়ান্ত কল্যান বা তার মোক্ষ লাভ ঘটতে পারে। এসব বোঝার জন্য উন্নত চিন্তা ধারার মস্তিষ্কের প্রয়োজন, চুদিপার মতো মস্তিষ্ক, যে মস্তিষ্ক এক পুরুষের চার বিয়ের পক্ষে সাফাই গায়, সতীনের সংসারকে সাপোর্ট করে, সেই মস্তিষ্কের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়।

যা হোক, ৫ নং এ চুদিপা আরো বলেছে, মুখাগ্নিতে নাকি মেয়েদের অধিকার নেই, এমনকি শ্মশানে নাকি মেয়েদের যাওয়াও নিষেধ।

-কারো উপর যখন ইসলাম ভর করে, তখন তার যে শুধু চিন্তা-ভাবনা করার ক্ষমতাই লোপ পায়, তা ই নয়, তার পড়াশোনা করার ক্ষমতা লোপ পায় এবং জ্ঞানেরও অবনমন ঘটে। এই গীমা যদি পড়াশোনা করতো তাহলে জানতো যে পুরুষদের ক্ষেত্রে মুখাগ্নি করার প্রথম অধিকারী যথাক্রমে বড় থেকে ছোট পুত্ররা, তারপর পৌত্র এবং তার প্রপৌত্র। এরপর অধিকার পায় অবিবাহিত কন্যা, বাগ-দত্তা কন্যা, দত্তা কন্যা, মাতা, পুত্রবধূ, পৌত্রবধূ, অদত্তাপৌত্রী, দত্তা পৌত্রী, প্রপৌত্র বধূ, অদত্তা প্রপৌত্রী, বাগদত্তা প্রপৌত্রী, দত্তা পৌত্রী, অদত্তা প্রপৌত্রী, বাগদত্তা প্রপৌত্রী, দত্তা প্রপৌত্রী, পিতামহী, মাতামহী এবং স্ত্রী। এবং কোনো নারীর ক্ষেত্র মুখাগ্নির অধিকারী যথাক্রমে- বড় থেকে ছোট পুত্ররা, তারপর পৌত্র, প্রপৌত্র এবং তারপরেই কন্যা, বাগ দত্তা কন্যা, দত্তা কন্যা এবং পুত্রবধু। (রেফারেন্স- অথ হিন্দু ব্যবস্থাসর্ব্বস্ব সমগ্র, অষ্টম পরিচ্ছেদঃ)। এখানে বিশেষ উল্লেখ্য যে- বাগদত্তা কন্যা মানে যার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে এবং দত্তা কন্যা মানে বিবাহিত কন্যা।

তাহলে মেয়েদের মুখাগ্নিতে অধিকার থাকলো না কোথায় এবং মেয়েরা কিভাবে শ্মশানে যাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত ?

যা হোক, এরপর ৬ নং এ চুদিপা বলেছে- মড়া পোড়ানোর পর তার ছাই নিয়ে আবার হরিবোল হরিবোল করে ফিরতে হবে।

-অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া যেহেতু একটি ধর্মানুষ্ঠান, তাই এতে ধর্মীয় পরিবেশ বজায় রাখার জন্য হরিবোল বা নামসংকীর্তন করা যেতেই পারে, এতে সমালোচনার কী আছে ? যারে দেখতে নারি, তার চলন বাঁকা বলে যে একটা কথা আছে, সেটা মুসলমানদের কাটাধোন চোষা এই চুদিপার ক্ষেত্রে শতভাগ প্রযোজ্য।

এরপর আবারও ৬ এবং ৭ নং এ চুদিপা বলেছে- সেই পরিবার একমাস অশুচি থাকবে, এরপর দিয়েছে যোনীবিস্তার করা হাসির ইমো এবং তারপর বলেছে, কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করতে পারবে না। অশুচি বলে মিশতে পারবে না সমাজে কারো সঙ্গে।

-এ প্রসঙ্গে বলছি, সনাতন ধর্মের সকল ব্যবস্থা চুড়ান্ত বিবেচনায় নির্ধারণ করা। প্রাচীনকালে সাধারণভাবে মানুষের মৃত্যু খুব কমই হতো, বেশির ভাগই তো কলেরা, প্লেগ বা এই জাতীয় সংক্রামক মহামারী দ্বারা। এই কারণেই মৃতব্যক্তির বাড়ি এবং পরিবারের লোকজনকে সমাজের অন্যান্য লোকের থেকে আলাদা করে রাখার জন্য আমাদের শাস্ত্রকারগন এই অশুচি বা অশৌচ ব্যবস্থা্র চালু করেছিলেন, যাতে সকল বর্ণের জন্য ১০ দিন সমাজের অন্যান্য সদস্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হতো, যাতে মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন দ্বারা সমাজে রোগ ব্যাধি না ছড়ায় এবং এই ব্যবস্থা চালুর পর ভারতে কখনো কোনো মহামারী হয় নি, যেটা হয়েছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে। ভারতে ব্রিটিশ শাসন শুরু হওয়ার পর কয়েকবার মহামারী হয়েছিলো, কিন্তু সেগুলো ভারতীয়দের থেকে সংক্রমিত হয় নি, হয়েছিলো ইউরোপ থেকে আগত ব্যক্তিদের মাধ্যমে।

অশৌচকাল আসলে একটা কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা, করোনা ভাইরাসের মহামারীর কারণে যার সঙ্গে আমরা প্রায় সবাই কম বেশি পরিচিত। এই আধুনিক যুগে বিজ্ঞানের যেখানে এত উন্নতি, এই সময়ও রোগ ব্যাধি না ছড়ানোর জন্য মানুষকে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে, তাহলে সেই প্রাচীনকালে এটা কতটা দরকারী ছিলো, সেটা একবার চিন্তা করুন এবং সেই সাথে এটাও চিন্তা করুন মুনি ঋষিদের চিন্তা-ভাবনা কতটা বিজ্ঞানসম্মত ছিলো। মৃত্যুজনিত কারণে সনাতন ধর্মের অশৌচকাল বা কোয়ারেনটাইন ১০ দিন, ভুল শাস্ত্রব্যাখ্যার কারণে কোথাও কোথাও এটা ১৫ বা ৩০ দিন; আর করোনা ভাইরাসের কারণে কোয়ারেন্টাইন ১৪ দিন, হিসেবটা একটু মিলিয়ে নিন, তাহলেই বুঝতে পারবেন সনাতন ধর্মে বিজ্ঞান আসলে কোথায় এবং কিভাবে লুকিয়ে আছে ?

এরপর ৮ নং এ সুদীপা বলেছে- ১৪ দিন ঘি আর আলো চালে ভাত খেতে হবে, গঙ্গা ধারে অথবা গোয়ালে।

- সুদীপার এই কথা শোনার পর সে যে জন্মসূত্রে হিন্দু, এটা বিশ্বাস করতে কিন্তু আমার কষ্ট হচ্ছে। মৃত্যুজনিত কারণে অশৌচ অবস্থায় আলো চালের ভাত এবং নিরামিষ খেতে হয় মৃত ব্যক্তির প্রতি শ্রদ্ধাপ্রদর্শনের জন্য, যেহেতু সে এই পরিবারের সদস্য ছিলো এবং এই পরিবারের উন্নতির জন্য সে কঠোর পরিশ্রম করে গেছে, পরিবারের জীবিত সদস্যদের কাছ থেকে সে এইটুকু শ্রদ্ধা পেতেই পারে। যেকারণে কোনো ব্যক্তির কর্মের জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে মৃত্যুর পর কোনো লোক নানা ধরণের শ্রদ্ধা পায়। যা হোক, এই আলোচালের ভাত কেউ গঙ্গায় বা গোয়ালে খায় না। গঙ্গা বা নদীতে বা পুকুরে সেই মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে পিণ্ড প্রদান করতে হয়। আর এই সময় যেহেতু শোকপ্রকাশের জন্য মৃতব্যক্তির পরিবারের লোকজন বিছানায় পর্যন্ত শোয় না, তাই তাদের আধুনিক খাবারের ব্যবস্থা ডাইনিং টেবিল থাকলে, তারা তাতে না খেয়ে মেঝেতে বসে খাবে, আর যাদের সেই ব্যবস্থা নেই, তারা আগের মতোই মেঝেতে পিঁড়িতে বা আসনে বসে খাবে। মৃত ব্যক্তি, যার পরিশ্রমের উপর জীবিতদের ঠাটবাট, তাদের থেকে কি এইটুকু শ্রদ্ধাভক্তি পেতে পারে না ?

এরপর ৯ নং এ চুদিপা বলেছে- ১ লাখ খরচ করে পরিবারের শ্রাদ্ধ করতে হবে।

-শ্রাদ্ধ যে কী জন্য করতে হবে, সেটা তো উপরেই আলোচনা করেছি। চুদিপার যদি জন্মান্তরে বিশ্বাস না থাকে, তাহলে সে তার অবৈধ সন্তানদেরকে বলে যাবে, সে মারা গেলে যেন মাটিতে গর্ত খুঁড়ে পশুর মতো লাশ মাটি চাপা দেয়। মুসলমানদের মতো বেশি আদর যত্ন করে লাশ মাটিতে পুঁতে রাখলে কিন্তু কোনো মুসলমান দ্বারা মরার পরেও ধর্ষিতা হওয়ার আশঙ্কা; কারণ, মুসলমানরা এখন লাশকেও ধর্ষণ করা শুরু করেছে, সম্প্রতি ভারতের আসামে এইরকম একটি ঘটনা ঘটেছে, আর পাকিস্তানেও এর আগে এটা তো বহুবার ঘটেছে। আর চুদিপার সন্তানদেরকে অবৈধ বললাম একারণে যে, সনাতনী কালচারের প্রতি তার তো কোনো শ্রদ্ধা নেই, জন্মসূত্রে হিন্দু হলেও সে ব্যাপক ঝামেলা সহ্য করে সনাতনী মতে বিয়ে করবে না, সে কাগজে সই করে বিয়ে করবে বা তিনবার কবুল বলে বিয়ে করবে, এগুলো তো কোনো বিয়ে নয়, এগুলো পতিতাবৃত্তির চুক্তি, তো এই চুক্তিতে যে সন্তানের জন্ম হবে, সে বৈধ হবে কিভাবে ? এ প্রসঙ্গে চুদিপার কাছে জানতে চাই, শ্রাদ্ধে যে টাকা পয়সা খরচ হয়, সেটা কিন্তু নিজ সমাজের লোকজনই পায়, হজের মতো কিন্তু জনপ্রতি ৪/৫ লাখ টাকা বিদেশে পাচার হয় না, হজের নামে এই অপচয় প্রসঙ্গে আপনার মতামত কী ?

এরপর ১০ নং এ চুদিপা বলেছে- বাড়ির সকল পুরুষকে মাথা কামিয়ে নিতে হবে।

এর পেছনের মনোবৈজ্ঞানিক কারণ জানলে চুদিপা আর যোনীবিস্তার করা অট্ট হাসি দিতো না।
শ্রাদ্ধের আগের দিন মৃত ব্যক্তির পুত্র এবং পৌত্রদের মাথা কামিয়ে চুল ফেলে দিতে হয়, এটা একদিক থেকে সমাজের জন্য বিজ্ঞাপন যে আগামীকালই তাদের বাড়িতে শ্রাদ্ধ হতে যাচ্ছে, সেই অনুষ্ঠানে সমাজের সকলের সাহায্য-সহযোগিতা ও উপস্থিতি কাম্য। অন্য কারণ হলো- মৃত্যুর সময় থেকে পরবর্তী বেশ কিছুদিন প্রতিটি পরিবার থাকে গভীর শোকে আচ্ছন্ন, কিন্তু এই শোককে কাটিয়ে না উঠলে তো জীবনে এগিয়ে চলা যাবে না, তাই এই শোককে পরিত্যাগ করার প্রতীকী প্রকাশ হিসেবে মৃত ব্যক্তির ছেলে ও নাতীদের মাথার চুল কামিয়ে ফেলা হয়, এর পরের দিনই হয় শ্রাদ্ধ এবং শ্রাদ্ধ কর্ম শেষে ছেলে ও নাতীদের মাথায় নতুন চুল গজানোর সাথে সাথে সত্যিই তারা তাদের পরিবারের মৃত্যুজনিত শোককে কাটিয়ে উঠতে পারে। তাই শ্রাদ্ধের আগের দিন মাথার চুল কাটিয়ে ফেলা পুরোনো স্মৃতিকে পরিত্যাগ করার প্রতীকী প্রকাশ হলেও, নতুন চুল গজানোর সাথে সাথে পুরোনো শোককে যে কাটিয়ে উঠা যায়, নিশ্চয় এর পেছনে কোনো না কোনো মনোবৈজ্ঞানিক কারণ বিদ্যমান। কিন্তু হজের সময় হাজীরা যে চুল কামিয়ে ফেলে তার পেছনের যুক্তি কী ? এই প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলে রাখি- পিতা বা মাতার মৃত্যুর পর পরই ছেলেরা যে সাদা এক কাপড় পরে, গোঁফ দাড়ি না কেটে, হাতে কুশ আসন নিয়ে ঘোরা ফেরা করে বা রেগুলার কাজকর্ম করে, এটাও কিন্তু একটা বিজ্ঞপন, যাতে তাকে বা তাদেরকে ঐ অবস্থায় দেখে সমাজের লোকজন বুঝতে পারে যে- তার পিতা বা মাতা মারা গেছে। সুতরাং হিন্দু কালচারের কোনো কিছুই যে অমূলক বা অযৌক্তিক নয়, সেটা একটু চিন্তা-ভাবনা করলেই কিন্তু বুঝতে পারা যায়।

এরপর ১১ নং এ চুদিপা বলেছে- তিন দিন ধরে কীর্তন করতে হবে।

- কীর্তন করা একটি ধর্মীয় আচরণ, যার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করা হয়, তাহলে এতে সমস্যা কোথায় ? ।

এরপর ১২ ও ১৩ নং এ চুদিপা বলেছে- শেষ দিন ১৪ জন পুরোহিতকে খাওয়াতে হবে এবং পুরোহিতকে চাল ডাল গরু ছাগল দিতে হবে।

- পুরোহিত মানে কি জানেন ? অগ্রে বা পুরোভাগে থেকে যিনি মানুষের হিত বা কল্যান করেন, তাকে পুরোহিত বলে। তো যে বা যারা তাদের কর্মকাণ্ড দ্বারা আপনার হিত বা উপকার করছে, তাদেরকে তাদের পারিশ্রমিক আপনি দেবেন না ? মুসলমানরাও তো তাদের পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে মিলাদ মাহফিল উপলক্ষ্যে হুজুরদেরকে ডেকে এনে কোরান পাঠ করায়, তো মুসলমানরা কি সেই সব হুজুরদেরকে তাদের পারিশ্রমিক হিসেবে টাকা পয়সা দেয় না ? এটা নিয়ে কি আপনার প্রশ্ন তোলার বা এই বিষয়ে সমালোচনা করার ক্ষমতা আছে ? পুরুষ হলে সবার ক্ষেত্রে পুরুষ হন, অর্থাৎ সমালোচনা করতে চাইলে সবাইকে নিয়ে সমালোচনা করেন, কারো ক্ষেত্রে আপনি পুরুষ, আর কারো ক্ষেত্রে আপনি নপুংসক, এটা কিন্তু মানানসই নয়। প্লাস মাইনাসে যেমন মাইনাসই হয়, তেমনি পুরুষ ও নপুংসকে কিন্তু আপনি নপুংসকই হবেন, নারীও থাকতে পারবেন না।

শেষে সুদীপা বেশ ব্যঙ্গের সুরে বলেছে- আসেন ইহা পবিত্র ধর্ম গ্রহন করুন।

- এই ধর্ম কাউকে গ্রহন করতে হয় না, মানুষ জন্মসূত্রেই এই ধর্ম লাভ করে থাকে। আপনার মতো কিছু নির্বোধ এবং বিকৃত চিন্তাধারার মানুষ এই ধর্মের বাস্তবতাকে বুঝতে না পেরে এটা থেকে সরে যায় বা এর সমালোচনা করে।

এবার নিজের অবস্থানটা বুঝতে পেরেছন তো ? আশা করি বুঝেছেন। তাই এরপর থেকে সনাতন ধর্মের যখন সমালোচনা করবেন, তখন একটু ভেবে চিন্তে করবেন, না হলে এরকম আচাঁছা বাঁশ কিন্তু আপনার জন্য রেডি করা হবে, যা আপনার গুহ্যদ্বার নয়, আপনার যোনী দিয়ে ঢুকে গিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনাকে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেবে।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment