#Tufan_Khan এর তাকিয়াবাজি এবং আর্য সমাজীদের কাছে একটি অনুরোধ:
ইসলাম প্রচারের স্বার্থে মিথ্যা বলাকে ইসলামি পরিভাষায় বলা হয় তাকিয়া। এই তাকিয়াবাজি ইসলাম মতে কোনো অন্যায় নয়, বরং তাকিয়ার মাধ্যমে যদি কোনো অমুসলিমকে বিভ্রান্ত করে ইসলামের নর্দমায় নামানো যায়, সেটা অনেক ছোয়াবের কাজ। ইসলাম কেমন মহান ধর্ম (!) সেটা একবার চিন্তা করুন, যার প্রচারের ভিত্তি হলো মিথ্যা।
যা হোক, তুফান খানকি, হিন্দুদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য বেদ থেকে কিছু রেফারেন্স দিয়েছে, দেখা যাক, সেগুলোতে সত্যিই সেরকম কিছু বলা আছে কি না ?
এই খানকি প্রথমেই যে রেফারেন্স দিয়েছে, সেটা হলো যজুর্বেদ ১৭/৩৮। যজুর্বেদের যে দুটি অংশ, শুক্ল ও কৃষ্ণ, সেটা সম্ভবত এই খানকি জানেই না, আর জানবে কিভাবে, সে কি বেদ দেখে এই রেফারেন্সগুলো দিয়েছে ? সে তো জাকির নায়েকের কোনো বক্তৃতা থেকে এটা তুলে দিয়েছে, যে জাকির ৫ মিনিটে ২৫টি মিথ্যা বলে! যা হোক, রেফারেন্সের বিন্যাস দেখে আমি ধরে নিচ্ছি যে এটা শুক্ল যজুর্বেদ থেকে নেওয়া; কারণ, কৃষ্ণ যজুর্বেদ থেকে নেওয়া হলে এটার রেফারেন্স ১/১/১ এরকম তিন সংখ্যার হতো; কারণ কৃষ্ণ যজুর্বেদ- কাণ্ড>প্রপাঠক>মন্ত্র- এভাবে সাজানো।
তুফান খানকির মতে, যজুর্বেদের ১৭/৩৮ নং মন্ত্রে নাকি লিখা আছে,
"শত্রুদের পরিবারকে হত্যা কর, তাদের জমি ধ্বংস কর।"
-প্রকৃতপক্ষে যজুর্বেদের এই মন্ত্রে, হরফ প্রকাশনীর বেদ, যে বেদ মুসলমান দ্বারা প্রকাশিত এবং যার প্রকাশ উদ্দেশ্যহীন নয়, সেই বেদেও লিখা আছে,
"হে সমানজাত দেবগণ, সে ইন্দ্রের বীরকর্মের অনুগমন কর; যে ইন্দ্র অসুরকূলের ভেত্তা, বাক্যের বেত্তা, যিনি বজ্রবাহু, যুদ্ধে জয় শীল ও বলে শত্রুর হিংসক।"-(যজুর্বেদ, পৃষ্ঠা ১০৭, হরফ প্রকাশণী)
-এখানে কি "শত্রুদের পরিবারকে হত্যা কর, তাদের জমি ধ্বংস কর।" এমন কোনো কথা আছে ?
তবে তুলসী রাম শর্মার ইংরেজি বেদের এই মন্ত্রের অনুবাদে এরকম একটি লাইন আছে- destroys the enemy and wins the battle, যার মানে হলো- 'শত্রুদের ধ্বংস করো এবং যুদ্ধে জয় লাভ করো।' যেটা যুদ্ধের একটি কমন ফ্যাক্টর। কিন্তু তুফান খানকি যেটা বলেছে-"শত্রুদের পরিবারকে হত্যা কর, তাদের জমি ধ্বংস কর।" এটা কিন্তু বিশাল একটা ষড়যন্ত্র; কারণ, হিন্দুর যুদ্ধনীতিতে সামনে দাঁড়ানো অস্ত্রধারী শত্রু ছাড়া অন্য কাউকে, যেমন সেই শত্রুর পরিবারের কাউকে হত্যা করার কোনো নিয়ম নেই, এমনকি শত্রু যদি অস্ত্র ফেলে দিয়ে আত্মসমর্পণ করে বা পলায়ণ করে, তাকেও হত্যা করা নিষেধ, নারী ও শিশুদেরকে তো সর্ব অবস্থাতেই হত্যা করা নিষেধ; আর জমির ফসলের ক্ষতি করা তো সরাসরি পাপ; তাই শত্রুর পরিবারের কাউকে হত্যা করা বা শত্রুর জমির ফসল নষ্ট করে শত্রুকে দুর্বল করা ইসলামি নীতি, হিন্দুর নীতি নয়। কারণ, মুহম্মদ তার জীবনে বহুবার শত্রুকে দুর্বল করতে তাদের ফসলের জমি নষ্ট করেছে, আর বিনা কারণে কাউকে হত্যা তো মুহম্মদের কাছে ছিলো ছেলে খেলার ব্যাপার। তাই এসব ইসলামিক কালচার, হিন্দুর বলে প্রচার করা আসলে হিন্দু সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমি মনে করি।
যা হোক, বেদের এই মন্ত্র প্রসঙ্গে আর্যসমাজীদের উদ্দেশ্যে কিছু না বলে পারছি না-
আপনারা তো পুরাণ মানেন না, পুরাণের কোনো কাহিনীকে বিশ্বাস করেন না, যারা পুরাণ মানে তাদেরকে পৌরাণিক বলে গালি দেন; তাহলে আপনাদেরই লোক ড. তুলসী রাম শর্মার ইংরেজিতে অনুবাদ করা বেদের এই মন্ত্রটি, যেটা আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি, পুরাণের কোনোরকম সাহায্য ছাড়া এটার একটা ব্যাখ্যা দিয়েন তো, দেখতে চাই আপনাদের পাছার কাপড় কত শক্ত করে বাঁধা। নিচে দেখে নিন মন্ত্রটি-
Friends, countrymen, children of mother earth, with all your might and main, follow this Indra, commander of the army, hand in hand. Join him in battle and display your valour and heroism with him who is a master of tactical code of signals and reconnaissance of enemy territory, wields the thunderbolt in hand, breaks through the enemy lines, routs the forces, destroys the enemy and wins the battle.
যা হোক, ঘরের শত্রুকে ছেড়ে আবার বাহিরের শত্রুর দিকে নজর দিই-
তুফান খানকি আবার যজুর্বেদ ৭/৩৮ রেফারেন্স টেনে বলেছে, এখানে নাকি লিখা আছে,
"যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস। এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরণ করি।"
-তুফানের তো দেখছি সত্যিই খানকি মানে বেশ্যার মতো আচরণ। ইসলামের ইতিহাস থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, মুহম্মদ এবং মুহম্মদের অনুসারীরা ইসলামের একেবারে প্রাথমিক যুগে খুবই দরিদ্র ছিলো, এই দারিদ্রতা কাটাতেই মুহম্মদ, গনিমতে মাল অর্থাৎ অমুসলিমদের ধন সম্পদ লুঠ করে খাওয়াকে বৈধতা দেয় এবং তার সাহাবীদেরকে বিভিন্ন দিকে বিভিন্ন অজুহাতে যুদ্ধে পাঠায় গনিমতে মাল সংগ্রহের জন্য। নিজেদের এই লুঠপাট করে খাওয়ার নীতি ইসলামে তো হালালই, হিন্দুধর্মেও এটা বৈধ প্রমাণ করার চেষ্টা ক'রে, নিজের লুঠপাটকে বৈধ করার চেষ্টা করছে এই মুসলমান, এজন্যই সে বেদে খুঁজে পেয়েছে এই রকম বাণী- "যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস। এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরণ করি।"
কিন্তু বাস্তবে বেদের এই মন্ত্রে লিখা আছে-
"হে ইন্দ্র, তৃপ্তি ও সংগ্রামের জন্য মরুদগণের সঙ্গে জলবর্ষী তুমি স্বধাযুক্ত সোম পান করো ও জঠরে মধুস্বাদের কল্লোল সিঞ্চন কর। হে ইন্দ্র, প্রতিপদ প্রভৃতি তিথিতে অভিযুত সোমের তুমি রাজা। হে সোম, তুমি পাত্রে গৃহীত হয়েছো। মরুদযুক্ত ইন্দ্রের জন্য তোমায় গ্রহণ করছি। এ তোমার স্থান, মরুদযুক্ত ইন্দ্রের জন্য স্থাপন করেছি।" -(পৃষ্ঠা ৪৬, হরফ প্রকাশনী)
ভাল করে দেখুন তো, এই মন্ত্রে কোথাও-"যুদ্ধই তোমাদের উন্নতির উৎস। এজন্যই তোমাদেরকে আমি যুদ্ধে প্রেরণ করি।"- এরকম কথা কোথাও লিখা আছে কি না ?
যা হোক, এরপর তুফান খানকির মতে- যজুর্বেদের ১৮/৭৪ নং মন্ত্রে নাকি লিখা আছে,
"হে সেনাপ্রধান, আমাদের আশা পূর্ণ করো। হে ধন সম্পদের বাদশা, তোমার সহায়তায় আমরা যেন সম্পদশালী হতে পারি এবং যুদ্ধে জয় লাভ করে প্রচুর সম্পদের মালিক হতে পারি।"
-এটা তো বেদের নয়, মুসলমানদের মনের কথা, তাই এর মধ্যে "বাদশাহ" এর মতো ইসলামি শব্দ ঢুকে পড়েছে।
যা হোক, দেখে নিন, এই মন্ত্রে আসলে কী বলা হয়েছে ?
"নির্মল গগনে স্থিত আদিত্য যেমন জল থেকে বেদরূপ কিরণের দ্বারা সোম পান করে, সেরূপ এ সত্য থেকে জানা যায়- অন্নের বিপান শুদ্ধ অতএব পয় ইন্দ্রের বীর্যপ্রদ অমৃত হোক।"-(পৃষ্ঠা ১২৬, হরফ প্রকাশনী।)
মুসলমানদের দেওয়া বেদের রেফারেন্সগুলো যে সর্বৈব মিথ্যা, উপরের আলোচনা থেকে, আশা করছি, আমার পাঠক বন্ধুদেরকে সেটা বোঝাতে পেরেছি। তাই সবার কাছে আমার অনুরোধ- মুসলমানদের প্রচারে কেউ কখনো বিভ্রান্ত হবেন না; কারণ, মুসলিমরা যা বলে তা সব সময়ই ৯০% মিথ্যা, কোনো কোনোটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট মিথ্যা।
জয় হিন্দ।
No comments:
Post a Comment