Thursday 21 May 2020

শ্রীকৃষ্ণের গায়ত্রী মন্ত্র জপ করার কারণ কী ?


#Sourav_Das,

তোমার এই প্রশ্নের জবাব গীতার তৃতীয় অধ্যায়ের ২২-২৫ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ দিয়ে রেখেছেন, শুধু সেটাকে উপলব্ধি করার ক্ষমতা থাকতে হবে, তাহলেই বোঝা যাবে যে- শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর হয়েও কার উপাসনা বা কোন ঈশ্বরের উপাসনা করতেন।

কর্ম সবাইকেই করতে হয়; জগতের সৃষ্টি, পালন ও ধ্বংস করার জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর নামের ত্রিদেবকেও কর্ম করতে হয়। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের স্রষ্টা বিষ্ণুর পূর্ণশক্তি নিয়ে মানবরূপে পৃথিবীতে অবতীর্ণ শ্রীকৃষ্ণও এর ব্যতিক্রম নন, তাকেও কর্ম করতে হয়েছে, তিনিও কর্ম করেছেন, এর কারণ হিসেবে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন-

"হে পার্থ, ত্রিলোকে আমার করণীয় কিছু নাই। ত্রিলোকে আমারর পাওয়ার বা না পাওয়ার কিছু নাই, তবুও আমি কর্ম করিয়া যাইতেছি। আমি অনলস হইয়া কর্ম করিতেছি। যদি তাহা আমি না করিতাম, তবে নিশ্চয় মানবগণ আমারই পথ অনুসরণ করিতো। আমি যদি কর্ম না করি তবে এ সকল ব্যক্তি উচ্ছন্নে যাইবে এবং সকল ব্যক্তি আমার দোষেই বিনষ্ট হইবে। অজ্ঞ ব্যক্তিরা কর্মে আসক্ত থাকিয়া যেমন কর্ম করে. জ্ঞানীরা কর্মে আসক্ত না হইয়া লোকশিক্ষার জন্য সেইরূপভাবেই কর্ম করিয়া থাকেন।" - (গীতা, ৩/২২-২৫)

গীতার এই কথা থেকে স্পষ্ট যে- বিষ্ণুর পূর্ণশক্তিসম্পন্ন শ্রীকৃষ্ণের কোনো ঘটনা ঘটানোর জন্য কোনো কিছু করার দরকার নেই, তার ইচ্ছাই তা ঘটানোর জন্য পর্যাপ্ত, তবুও তিনি সশরীরের কর্ম করেছেন, লোকদেরকে কর্ম শিক্ষা দেওয়ার জন্য, নিজের কোনো কিছু পাওয়ার বা অর্জনের জন্য নয়, যেহেতু তাঁর পাওয়া বা না পাওয়ার কিছু নেই। উপাসনা বা প্রার্থনাও একটি কর্ম, যেটা মানুষের মোক্ষলাভের জন্য প্রধান কর্ম, এই কর্ম শিক্ষা দেওয়ার জন্যই তিনি নিজের কাছে নিজেই প্রার্থনা করেছেন, যেহেতু তাঁর উপরে আর কেউ নেই। 

আশা করছি- শ্রীকৃষ্ণ, কার কাছে কী উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেছেন, সেটা আমার পাঠককদেরকে বোঝাতে পেরেছি।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment