#সনাতন_ধর্ম,
গীতায় কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ ফিউচার টেন্সে বলেন নি যে, তিনি নেমে আসবেন ? তিনি বলেছেন, তিনি নেমে আসেন বা অবতীর্ণ হন, আর এটা তিনি বলেছেন, তার পূর্ববর্তী ৮ জন অবতারের স্মরণে। যদিও কল্কি অবতারের কথা বলা হয়, কিন্তু তিনি কলিযুগের জীবের উদ্ধারের জন্য আসবেন না, তিনি আসবেন কলিযুগের শেষে, অধর্মীদের বিনাশ করে সত্যযুগ শুরু করার জন্য।
শুধু ভারতের মহারাষ্ট্রের নিহত সাধুরাই নয়, যেসব হিন্দু মুসলমানদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে বা মরছে, তারা শ্রীকৃষ্ণ প্রদেয় শিক্ষাকে অন্তরে ধারণ করে তা বাস্তবায়ণ করে না বলেই মরছে। আমি আপনাকে বাঁচার পথ দেখালাম, অথচ আপনি আমার কথাকে অমান্য করলেন, তাহলে আপনার ক্ষতি বা মৃত্যুতে আমার কী করার আছে ? একই ভাবে- শ্রীকৃষ্ণের কথাকে অমান্য করার ফলে যারা মরছে বা নির্যাতিত হচ্ছে, তাদের সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণেরই বা কী করার আছে ?
শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, সব সময় তাঁকে স্মরণ করতে এবং যুদ্ধ করতে; অথচ গীতার মধ্যে আমরা ভক্তি ও মুক্তি খুঁজছি। বেশির ভাগ হিন্দু জানেই না যে, গীতা আসলে যুদ্ধের প্রাক্কালে অবতীর্ণ একটি যুদ্ধের জ্ঞানগ্রন্থ।
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ অধর্মীদের হত্যা করতে বলেছেন, অথচ বর্তমান সাধু সন্ন্যাসী ও হিন্দুরা, চৈতন্যদেবের - মেরেছো কলসীর কানা, তাই বলে কি প্রেম দেবো না- থিয়োরিতে বিশ্বাসী। এদেরকে রক্ষা করবে কে বা এরা রক্ষা পাবে কিভাবে ?
গীতায় শ্রীকৃষ্ণ নিরামিষ খেতে বলেন নি, অথচ বর্তমান হিন্দুরা গীতার সাত্ত্বিক আহারকে নিরামিষ ধরে নিয়ে নিরামিষ খাওয়াকে ধর্ম মনে করে এবং নিরামিষ খেতেই বেশি আগ্রহী। কিন্তু নিরামিষ আহার যে তিলে তিলে হিন্দুসমাজকে শেষ করে দিচ্ছে, সেদিকে কোনো নজর নেই এইসব দিব্যজ্ঞানীদের।
এছাড়াও যুবক কৃষ্ণের জীবনে যে যুবতী রাধার কোনো অস্তিত্বই নেই, সেই যুবতী রাধাকে শ্রীকৃষ্ণের পাশে দাঁড় করিয়ে লীলা কীর্তনের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণকে তারা লম্পট প্রমান করতেই বেশি আগ্রহী বা উৎসাহী। এদের বিনাশ ঠেকাবে কে ?
আমাদের এইসব মূর্খ ও দিকভ্রান্ত সাধু-সন্ন্যাসীরা তথা হিন্দুরা যদি অধর্মী বা বিধর্মীদের হাতে মরে, তাতে শ্রীকৃষ্ণের কী যায় আসে ? অবতারগণ এসেছিলেন বিভিন্ন লীলার মাধ্যমে লোকশিক্ষা দিতে, শ্রীকৃষ্ণের মাধ্যমে সেই শিক্ষা পূর্ণ হয়েছে, হিন্দুদের উচিত অবতারগণের সেই শিক্ষাকে অন্তরে ধারণ করে পথ চলা, তাহলে জীবনে কোনো সমস্যাই আসবে না। অথচ আমরা তা না করে গীতার বাণীর ভুল ব্যাখ্যাকে মনে ধারণ করে এই আশা নিয়ে বসে আছি যে- বিপদে পড়লে ঈশ্বর এসে আমায় উদ্ধার বা রক্ষা করবেন! এমনই মূর্খ আমাদের হিন্দুরা। হিন্দুদের মাথায় একটা বিষয় ঢুকে না কেনো যে, শ্রীকৃষ্ণ যদি অলৌকিকভাবে নিজেই সব কিছু করবেন, তাহলে তো অর্জুনকে যুদ্ধ করতে বলতেন না বা অর্জুনকে যুদ্ধের নিমিত্ত হতে বলতেন না। অর্জুনকে যুদ্ধ করতে বলে শ্রীকৃষ্ণ পেছনে ছিলেন, এর মানে হলো নিজের লড়াই নিজেকেই লড়তে হবে, আপনার উদ্দেশ্য যদি সৎ হয় এবং আপনার মনে যদি ধর্ম থাকে, শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর হিসেবে আড়ালে থেকে অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করবেন।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগে শ্রীকৃষ্ণ, বিদুরের স্ত্রীকে বলেছিলেন, যাদেরকে রক্ষা করার প্রয়োজন, তাদেরকে রক্ষা করা হবে, আর যাদেরকে প্রয়োজন নেই, তাদেরকে বিনাশ করা হবে। বর্তমান হিন্দু সমাজের এই সব সাধু সন্ন্যাসী, যারা- ধর্ম কী, সেটাই বোঝে না; ধর্মের আড়ালে যারা ধর্ষণসহ নানা রকম অনাচার করে; 'যিনি কৃষ্ণ তিনি চৈতন্য' ব'লে যারা শ্রীকৃষ্ণের সাথে কাউকে তুলনা করে এবং শ্রীকৃষ্ণের পাশে রাধাকে দাঁড় করিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র চরিত্রকে কলঙ্কিত করে, তাদেরকে রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই, তাই শ্রীকৃষ্ণ তাদেরকে রক্ষা করছেন না; এদের বিপরীতে- আমার মতো প্রকৃত কৃষ্ণভক্তদের তিনি ঠিক রক্ষা করে চলেছেন, তার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
আর আর্য সমাজীদের নিয়ে সমস্যা এই কারণে যে- আর্য সমাজীরাও গীতার বাণীর মর্ম উপলব্ধি করতে না পেরে তারা শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে, তাই আর্য সমাজীদেরকেও শ্রীকৃষ্ণ যে রক্ষা করবেন না, সেটা নিশ্চিত; এই কারণেই বাংলায় আর্য সমাজীরা এখন কঠিন বিরোধিতার মুখে পড়েছে, পড়ছে; ব্রাহ্মসমাজের মতো আর্য সমাজের বিলুপ্তিও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মহাভারত থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, যারা নিজেদেরকে রক্ষার চেষ্টা করে না, তারা কিছুতেই রক্ষা পায় না। গীতায় যে শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুনকে বলেছেন, আমি ওদেরকে মেরেই রেখেছি, তুমি শুধু নিষ্কামকর্মের মাধ্যমে নিমিত্ত হও, অর্থাৎ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডবদের জয় যেখানে শুরু থেকেই নির্ধারিত ছিলো, সেই যুদ্ধে পাণ্ডবদের বিজয়ী করার জন্যও বনবাস ও অজ্ঞাতবাসের ১৩ বছর ধরে নানারকম পরীক্ষার মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণ, পাণ্ডবদেরকে প্রস্তুত করেছিলেন। অথচ মূর্খ হিন্দুরা মনে করে বিপদে পড়লে ভগবান তাকে রক্ষা করবেন, তার কাজ শুধু চুপচাপ বসে হরিনাম জপ করা! এই মনোভাব এবং অশিক্ষার ফলেই মহারাষ্ট্রের সাধুরা মরেছে, তাদেরকে শ্রীকৃষ্ণ রক্ষা করবেন কেনো, কিভাবে ?
শ্রীকৃষ্ণ কি বলেছেন যে -তোমরা নিরামিষ আহার করে হীনদুর্বল হও এবং কাম ক্রোধ ত্যাগ করে নপুংসক হও ? ক্রোধ ছাড়া সমাজ রক্ষা হয় না এবং কাম ছাড়া বংশ রক্ষা হয় না। শ্রীকৃষ্ণ এই দুটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বলেছেন, যেন সেগুলোর দ্বারা সমাজে কোনো অস্থিরতার সৃষ্টি না হয়। অথচ সেই শিক্ষা না নিয়ে কাম ক্রোধ ত্যাগ করে নপুংসকের মতো সমাজের জনসংখ্যা কমিয়ে সমাজকে দুর্বল করে এবং নিরামিষ খেয়ে নিজেকে হীনদুর্বল করে কেউ কিভাবে কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে পারে ?
দিব্যজ্ঞান দ্বারা নিজেকে রক্ষা করা যায় না, নিজেকে রক্ষা করার জন্য কাণ্ডজ্ঞানের দরকার হয়, মহারাষ্ট্রের ঐ সাধুদের কি কাণ্ডজ্ঞান ছিলো যে তারা রক্ষা পাবে ? ভিডিওতে দেখেছি কয়েকজন লোক, একজন সাধুকে লাঠি দিয়ে মারছিলো, আর সাধু বাঁচার জন্য এদিক ওদিক ছুটছিলো, ঐ সাধুর গায়ে যদি শক্তি এবং মনে রাগ থাকতো, নিরামিষ খাওয়ার ফলে যেটা নেই, তাহলে সেই একজনের কাছ থেকে একটি লাঠি কেড়ে নিয়ে দু চারজনকে মারতে পারতো, আর তাহলেই সে রক্ষা পেতো। সাধুরা নাকি ব্রহ্মচর্যের মাধ্যমে বীর্য রক্ষা করে, তার ফল কী ? আসলে নিরামিষ খাবারের মাধ্যমে দেহে যে বীর্যের উৎপত্তি হয়, সেটাও দুর্বল, তাই সেই বীর্য দিয়ে যেমন সন্তানের জন্ম হয় না, জন্ম হলেও বাঁচে না বা বাঁচলেও হীন দুর্বল হয়, তেমনি সেই বীর্যকে দেহে ধারণ করেও কোনো লাভ হয় না। হিন্দু সমাজের প্রায় সকল সাধু সন্ন্যাসী ভুল পথে আছে এবং হিন্দু সমাজ রক্ষায় এদের বিন্দুমাত্র ভূমিকা নেই; রামকৃষ্ণ মিশন, সৎসঙ্গের সাধুরা তো সর্বধর্ম সমন্বয়ের মাধ্যমে সরাসরি হিন্দু সমাজের ক্ষতি করে চলেছে, এদেরকে রক্ষা করার কোনো প্রয়োজন নেই, তাই এরা মরছে এবং মরবে।
আশা করছি, উপরের আলোচনা থেকে ফটো পোস্টকারী, তার মন্তব্যের জবাব পেয়েছে।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
No comments:
Post a Comment