Monday 25 May 2020

কফিতে যদি আপনার আপত্তি না থাকে, তাহলে গো-মুত্র নিয়ে নাক সিটকান কেনো ?


কফিতে যদি আপনার আপত্তি না থাকে, তাহলে গো-মুত্র নিয়ে নাক সিটকান কেনো ?

মুসলমানদের মতো এই অল্পজ্ঞানী, গো মূত্র নিয়ে এমনভাবে সমালোচনা করেছে, যেন মূত্র মানেই খারাপ কিছু! কিন্তু গোমূত্র যে অন্যান্য প্রাণীর মূত্রের মতো সাধারণ কিছু নয় এবং অনেক প্রাণীর মলকেও যে আমরা খুব স্ট্যটাসের সাথে খাই, সেটা এই প্রবন্ধের মাধ্যমে আমি প্রমান করে দেবো; সেই সাথে এটাও প্রমান পাবেন যে, যে মুসলমানরা হিন্দুদের প্রসঙ্গে গোমূত্র নিয়ে সমালোচনা করে, তারাও উটের মূত্র খায় বা হাদিসে উটের মূত্র খাওয়ার বিধান আছে, যে উটের মূত্রের কোনো উপকারিতা নেই ই, বরং উটের মূত্রের ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে পানীয় হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে; কিন্তু গোমূত্র সম্পর্কে এমন কোনো কথা, উন্নত বিশ্বের কোনো একক বিজ্ঞানী তো দূরের কথা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও বলতে পারে নি, এর বিরুদ্ধে কথা বলে শুধু এর মতো কিছু নির্বোধ এবং মুসলমানরা।

হিন্দু শাস্ত্রে পঞ্চগব্য বলে একটা ব্যাপার আছে, এটা গরু থেকে প্রাপ্ত পাঁচ প্রকার জিনিস, এর মধ্যে- দুধ, দুধ থেকে তৈরি ঘি, মাখন এবং গোবর ও মূত্র। গো থেকে প্রা্প্ত এই পাঁচ প্রকার জিনিস হিন্দুদের বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার হয়। এগুলোর মধ্যে দুধ, ঘি এবং দই নিয়ে কারো কোনো কথা নেই, কিন্তু মুসলমান এবং মুসলমানদের মতো কিছু হিন্দুর যত মাথা ব্যথা গরুর এই গোবর এবং মূত্র নিয়ে!

হিন্দুশাস্ত্রে এই পঞ্চগব্যকে উপকারী বলা হয়েছে, সুতরাং এটা যে উপকারী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, মুনি ঋষিদের বলা এমন কোনো বিষয় নেই যা আজ পর্যন্ত কেউ বোগাস বা মিথ্যা প্রমাণিত করতে পেরেছে, মুনি ঋষিরা যা যা বলে গেছেন, তা সকল ক্ষেত্রে সর্বৈব সত্য, সুতরাং পঞ্চগব্যের উপকারিতার ব্যাপারটিও যে সত্য, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

সম্প্রতি ভারতে- গরুর গোবর ও মূত্র নিয়ে আরএসএস ব্যাপক গবেষণা ভিত্তিক কাজ শুরু করেছে এবং তারা এর বিভিন্ন উপকারী দিক খুঁজে পেয়েছে, কিন্তু তারা যখন এই বিষয়গুলো জনসমকক্ষে প্রকাশ করছে, তখন কিছু মানুষ সেগুলোর সমালোচনা করছে এই জন্য যে, যেহেতু তারা হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করে, সেহেতু তারা হিন্দুদের পূজনীয় গরু সম্পর্কে এ্মন কথা বলবেই, এতে আর আশ্চর্য হওয়ার কী আছে ? কিন্তু এটা মনে রাখা দরকার যে, শুধু ভারতেই নয়, ইউরোপ আমেরিকাতেও গোমূত্র সুপারস্টোরে বিক্রি হচ্ছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ তা কিনে খাচ্ছে, যারা খাচ্ছে, তারা কিন্তু উপকার পাচ্ছে বলেই খাচ্ছে। গোমূত্র যদি এতই খারাপ কিছু হতো তাহলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞানীরা এতদিনে এর ক্ষতিকারক দিকগুলো আবিষ্কার করে বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিতো, কিন্তু কেউ এর খারাপ দিক সম্পর্কে এখনও কিছু বলে নি বা বলছে না, এর মানে হচ্ছে এতে খারাপ কিছু নেই।

আমি যেহেতু কেমিস্ট বা বিজ্ঞানী নই, সেহেতু গো মূত্রের মধ্যে কী কী উপাদান আছে, অন্যের সহায়তা ছাড়া সেটা জানা বা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়; আর যার উপাদান সম্পর্কেই জানি না, সেই উপাদানগুলো খারাপ না ভালো সেটা বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু গরুর গোবর ও গো মূত্র যে অন্যান্য প্রাণীর মল ও মূত্রের মতো সাধারণ কিছু নয় এবং তা কিছু ক্ষেত্রে ব্যাপক উপকারী, সেটা আমি কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি-

যা কিছু মানুষের পক্ষে ক্ষতিকর বা খারাপ, তারই দুর্গন্ধ বের হয় এবং এই দুর্গন্ধগুলোই নির্দেশ করে কোন জিনিসগুলো থেকে মানুষকে দূরে থাকতে হবে; কিন্তু গরুর গোবরের কোনো দুর্গন্ধ নেই, এতে প্রমানিত হয় গোবর মানুষের জন্য খারাপ কিছু নয়। তাছাড়াও গোবর এন্টিসেপ্টিক বা এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, গোবরের নিজের তো কোনো দুর্গন্ধ নেই ই, আবার বাড়ির আশে পাশের কোনো দুর্গন্ধযুক্ত স্থান যদি গোবর মিশ্রিত জল দিয়ে ধুয়ে দেওয়া হয় বা সেই স্থানে গোবর মিশ্রিত জল পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিঁটিয়ে বা ঢেলে দেওয়া হয়, সেই স্থানে আর কোনো দুর্গন্ধ থাকে না বা থাকবে না; যারা গ্রামে বড় হয়েছেন বা এখনও গ্রামে থাকেন, আমি যা বললাম সেই দৃশ্যটা তাদের কাছে অপরিচিত নয়, তাই সেটা বুঝতেও তাদের কষ্ট হওয়ার কথা নয়। এই ধরণের ক্ষেত্রে, অনুন্নত গ্রামগুলোতে, যেখানে মানুষ চট বা পলিথিন দিয়ে ঘেরা কাঁচা প্রস্রাবখানা ব্যবহার করে, সেই সব প্রস্রাবখানার দুর্গন্ধও দূর করা হয় গোবর মিশ্রিত জল দিয়ে। এখন ভাবুন, গোবর কতখানি শক্তিশালী এ্যান্টিবায়োটিক।

গরু এবং গরু জাতীয় প্রাণী মহিষ ছাড়া, প্রকৃতির সমস্ত প্রাণীর মল পরিত্যাজ্য; গোবরকে মানুষ, মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে, হাত দিয়ে গোবর শেনে ঘুঁটে বা ক্যাঁড়া তৈরি করে শুকিয়ে মানুষ তা জ্বালানি তৈরি করে এবং ব্যবহার করে; এসব ঘটনা থেকে এটা প্রমানিত হয়ে যে, গরুর গোবর কোনোভাবেই মানুষের জন্য ক্ষতিকারক কিছু নয়, আর যা কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়, তা অবশ্যই উপকারী। তো এই উপকারী বস্তুকে ধর্মীয়ভাবে এ্যাকসেপ্ট করে যদি তার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাভক্তিকে জাগিয়ে তোলা হয়, তাহলে তাতে ক্ষতি কী ? আর তাতে নাক সিটকানোরই বা কী আছে ?

এবার নজর দিই গো মূত্রের দিকে। মূত্রের কথা শুনলেই মানুষের মনে একটা খারাপ কিছুর ভাবনা উঠে আসে; এর কারণ, তার বাস্তব অভিজ্ঞতা। কারণ, তাকে দিনে কয়েকবার ঐ দমবন্ধ পরস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় এবং সে খুব ভালো করেই জানে যে প্রস্রাবের দুর্গন্ধ কেমন। যারা সব সময় ই নিজের টয়লেট ইউজ করে অথবা যাদেরকে অন্যের সাথ টয়লেট শেয়ার করতে হয় না, তারা এই ব্যাপারটা একটু কম ফিল করে, কিন্তু যাদেরকে বাধ্য হয়ে অন্যের সাথে টয়লেট শেয়ার করতে হয় বা মাঝে মাঝে পাবলিক টয়লেটে যেতে হয়, তাদেরকে সব সময় ঐ দমবন্ধ পরিস্থিতর মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতেই হয়, এই অভিজ্ঞতাগুলোই মানুষকে মূত্রের ব্যাপারে এত সেন্সিটিভ করে তুলেছে; তাই মূত্র শব্দ শুনলেই তাদের নাক সিটকানি চলে আসে। কিন্তু গরুর গোবরের মতো গরুর মূত্রও যে অন্যান্য প্রাণীর মূত্রের মতো সাধারণ মূত্র নয়, তার কয়েকটি বাস্তব দৃষ্টান্ত দিচ্ছি-

কোনো স্যানিটারী টয়লেটে যদি কোনো মানুষ প্রস্রাব করার পর জল দিয়ে ধুয়ে না দেয়, তাহলে দু চার মিনিট পরেই সেই টয়লেটে অন্য কেউ ঢুকলেই আগের জনের প্রস্রাবের গন্ধ পাবেই, এই ভাবে যদি দুই চার জন ঐ টয়লেটে প্রস্রাব করে এবং তাতে জল না ঢেলে, তাহলে কেউ সেখানে নাক খোলা রেখে ঢুকতেই পারবে না, মানুষের মূত্র এমনই ক্ষতিকারক একটি বর্জ্য; একই অবস্থা হয় গ্রামের বাজারের পাশের কোনো এলাকা, যে খোলা স্থান, মানুষ পাবলিক ওপেন টয়লেট হিসেবে ব্যবহার করে; যদিও সেই স্থান খোলামেলা, তারপরও সেই স্থানের পাশ দিয়ে গেলেই প্রস্রাবের দুর্গন্ধ মানুষের নাকে এসে লাগবেই।

এর বিপরীতে, যাদের বাড়িতে গরু আছে, বা যাদের গরুর খামার আছে, তারা একটু ভাবুন তো, গরু তো সারাদিনে বহু বার মূত্র ত্যাগ করে এবং একবার যে পরিমান মূত্র ত্যাগ করে তা প্রায় গরমের দিনে স্বাভাবিকভাবে মানুষের দুই/তিন দিনের মূত্র ত্যাগের সমান, তারপরও গরুর গোয়ালে বা খামারে কোনো দুর্গন্ধ হয় কি না ?

হয় না ।

গরুর মূত্র থেকে কোনো দুর্গন্ধ বের হয় না, এ থেকেই প্রমাণ হয় যে গরুর মূত্রে মানুষের মূত্রের মতো কোনো ক্ষতিকর পদার্থ নেই; আর যে পদার্থ মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়, সেই পদার্থে অবশ্যই কোনো না কোনো উপকার লুকিয়ে আছে। তো উন্নত বিশ্বের বিজ্ঞানীদের কাজ ছিলো গো মূত্রের এই উপকারিতার দিকগুলো তুলে ধরা, কিন্তু মূত্র শব্দ নিয়ে এলার্জির কারণে তারা এই দিকটা নিয়ে ভাবেই নি। কিন্তু আমাদের মুনি ঋষিরা সেই প্রাচীন কালেই গো মূত্রের উপকারিতার কথা জানতে পেরে একে মানুষের জন্য উপকারী বলে গেছেন, সেই কথা যখন আরএসএস এর গবেষকরা বলছে, তখন এর গভীরতাকে উপলব্ধি করতে না পেরে,  কিছু বলদা নাক সিটকাচ্ছে, এতে তাদের কী প্রকাশ পাচ্ছে- বিজ্ঞতা, না মূর্খতা ?

গোমূত্র নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আন্তর্জাতিক মানের কোনো গবেষণা না হলেও ভারতের জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গোমূত্র নিয়ে গবেষণা করেছে এবং যে রেজাল্ট তারা পেয়েছে, তাতে তারা বিস্মিত।

মুনি ঋষিদের লেখা আয়ুর্বেদ শাস্ত্র যা পৃথিবীর প্রথম চিকিৎসা বিজ্ঞান, তাতে গোমূত্রের ব্যাপক উপকারিতার কথা উল্লেখ থাকায়, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেটা নিয়ে কাজ করার চিন্তাভাবনা করেন এবং তারা গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-মাস স্পেকটোমেট্রি বা জিসি-এমএস পদ্ধতিতে গোমূত্রের নমুনা বিশ্লেষণ করেন । এতে তারা গরুর মূত্রে ৫,১০০ রকম মিশ্র পদার্থ পেয়েছেন, যেগুলির মধ্যে ৩৮৮টি চিকিৎসাগতভাবে অমূল্য ; অর্থাৎ, এগুলির ব্যবহারে মানুষের দুরারোগ্য অসুখ সারানো সম্ভব। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে ৪০০টি গরুর মূত্র পরীক্ষা করা হয়েছে, ১ লিটার মূত্রে মিলেছে ৩ থেকে ১০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সোনার গুঁড়ো, যাকে বলে গোল্ড সল্ট, যা জলে মিশে যায় সহজেই।

হিন্দুরা বিনা কারণে গরুকে পূজা করে না আর আমি এমনি এমনি ই জোর দিয়ে বলি নি যে, মুনি ঋষিরা যা বলে গেছেন, তা কখনো মিথ্যা হতে পারে না। মুনি ঋষিদের দিব্যজ্ঞান ও মেধা সম্পর্কে এটা মনে রাখবেন যে, সারা পৃথিবীর লোক যখন পড়াশোনাই শুরু করে নি, তখন আমাদের মুনি ঋষিরা বেদ লিখে গিয়েছেন এবং সেই বেদ এখন পর্যন্ত অভ্রান্ত এবং বলা হয় যে বেদ অপৌরুষের, অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি বেদ লিখে নি, এটা ঈশ্বরের বাণী, তার কারণ হলো এটাই; কারণ, ঐ সময়ে পৃথিবীতে যে জ্ঞান ছিলো সেই জ্ঞানকে ভিত্তি করে বেদের মতো গ্রন্থ লিখা সম্ভব ছিলো না। তাই ঈশ্বরের প্রত্যক্ষ ইচ্ছায় যে বেদ রচিত হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

গো মূত্র নিয়ে জুনাগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার উপর রিপোর্টের সত্যতাকে যাচাই করতে হলে ক্লিক করতে পারেন নিচের এই লিঙ্কে-

http://www.times24.net/Other/26705/%E2%80%98%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%9B%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E2%80%99

আর এই রিপোর্টটি পাবেন এই প্রবন্ধের শেষে।

এই প্রবন্ধের শিরোনামেই কফির কথা বলেছি, এবার দেখুন সেই কফি কিভাবে আর কিসের থেকে তৈরি হয়, আর সেই কফিতে চুমুক দিয়ে গোবর বা গো মূত্রের সমালোচনা করা কারো পক্ষে শোভা পায় কি না ?

বড় আকৃতির কফির ফল থেকে কফির বীজ পাওয়া যায়, সেই বীজ চূর্ণ করে কফি তৈরি করা হয়; কিন্তু এতে ভালো মানের স্বাদযুক্ত কফি পাওয়া যায় না বলে কফি প্রস্তুতকারকরা একটি বিশেষ পদ্ধতির আশ্রয় নেয়, সেটা হলো- সিভেট নামের একটি বিড়াল আকৃতির প্রাণীকে তারা প্রথমে ঐ কফি ফল খাওয়ায়, তারপর সেই প্রাণী যখন মলত্যাগ করে, তার মধ্যে থেকে কফির বীজ সংগ্রহ করে। কারণ, কফির বীজ সিভেট হজম করতে পারে না। এই ভাবে বনজঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো সিভেট এর মল থেকে যেমন কফির বীজ সংগ্রহ করে কফি বানানো হয়, তেমনি সিভেট পালন করেও তার মল থেকে কফির বীজ সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু সিভেটের মলের কফি সর্বোৎকৃষ্ট মানের হয় না। এই সর্বোৎকৃষ্ট মানের কফি দিতে পারে হাতি, আর হাতি থেকে একই সাথে প্রচুর পরিমান কফির বীজও পাওয়া যায়, কারণ হাতি এক সাথে প্রচুর পরিমান কফি ফল খেতে পারে এবং সিভেটের মতো হাতিও কফির বীজ হজম করতে পারে না, তাছাড়া হাতি একই সময়ে অনেক পরিমান মল ত্যাগও করে, ফলে কফি উৎপাদনকারীদের প্রথম পছন্দ এখন হাতি এবং তার কফির বীজ সমৃদ্ধ মল। এতে যেমন হাতির খাবারের সংস্থান হয়, তেমনি হাতির মল ব্যবহার করে তারা বাণিজ্যিকভাবে লাভবানও হয়। এখন বুঝতে পারছেন তো, কফি খাওয়া মানে হাতির বা সিভেটের গু খাওয়া ? আর হাতি বা সিভেটের মল কিন্তু মোটেই সুগন্ধী যুক্ত নয় এবং গরুর গোবরের মতো সামাজিকভাবে উপকারীও নয়। সেই মল খাচ্ছেন আর গো মূত্রের সমালোচনা করছেন, আপনি বাইনচোদ না মাদারচোদ ? বাইনচোদ আর মাদারচোদ শব্দের অর্থ জানেন তো ? না জানলে জেনে নিয়েন; কারণ, এখানে এর ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব নয়।

কফি প্রস্তত করা নিয়ে যা বললাম, তাতে যদি কারো সন্দেহ থাকে, তাহলে দেখে নিন নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে-

http://www.natunsomoy.com/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%20%E0%A6%AE%E0%A6%B2%20%E0%A6%A5%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%87%20%E0%A6%A4%E0%A7%88%E0%A6%B0%E0%A6%BF%20%E0%A6%B9%E0%A7%9F%20%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A7%9F%E0%A7%87%20%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BF%20%E0%A6%95%E0%A6%AB%E0%A6%BF/38235

মুসলমানরা হিন্দুদের গোমূত্র পান নিয়ে নানা ধরণের কটূক্তি করে, কিন্তু ইসলামে তাদেরও যে উটের মূত্র পান করার নির্দেশ আছে, সেটা মনে হয় তারা জানে না। বোখারির ১/৪/২৩৪ নং হাদিসে আছে, কিছু লোক মদীনায় এসে মুহম্মদের কাছে ইসলাম গ্রহন করে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে, তখন মুহম্মদ তাদেরকে নির্দেশ দেয় উটের দুধ ও মূত্র পান করতে। সেই হিসেবে অসুস্থ হয়ে পড়লেই মুসলমানদের জন্য উটের মূত্র পান করা ফরজ। কিন্তু এই উটের মূত্রকে ক্ষতিকর বিবেচনা করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা একে পান করতে নিষেধ করেছে, এমনকি উটের দুধ পর্যন্ত পান করতে তারা নিষেধ করেছে। আমার এই কথার সত্যতাকে যাচাই করতে পারেন নিচের এই লিঙ্কে ক্লিক করে-

https://www.usnews.com/news/articles/2015/06/10/stop-drinking-camel-urine-world-health-organization-says

আশা করছি উপরের এই আলোচনার মাধ্যমে গোমূত্র নিয়ে পিনাকীসহ মুসলমানদের নাক সিটকানির জবাব দিতে পেরেছি, সেই সাথে গোমূত্র নিয়ে হিন্দুদের হীন্মন্যতারও একটা ঔষধ দিতে পেরেছি। তাই বলে আমি আমার বন্ধুদেরকে গোমূত্র খেতে বলছি না বা খেতে উৎসাহিত করছি না; কারণ, লোকাচার বলে একটা কথা আছে।

মেক্সিকোর লোকেরা নির্বিচারে সকল প্রকার পোকা মাকড় খায়, তাই বলে তাদের দেখাদেখি সারা পৃথিবীর লোকজন পোকামাকড় খাবে এমন নয়, আবার বাংলাদেশের সাঁওতালরা সব রকমের বন্য জীবজন্তু মেরে খায়, কিন্তু অন্য বাঙ্গালীরা তা খায় না। এর মানে হলো, লোকাচারে যেটা প্রচলিত, লোকজন সেটাই করে। যেহেতু বাঙ্গালি হিন্দু সমাজে গোমূত্র প্রচলিত নয়, তাই গোমূত্র খেলে উপকারের চেয়ে আমাদের অপকারই বেশি হবে; কারণ, কোনো জিনিসকে কতটা ইজিভাবে আমরা গ্রহন করি, তার উপর ভিত্তি করে সেই বস্তু মানব দেহে শোষিত হয়। এই বিবেচনায় যতই উপকারীই হোক, গোমূত্র যদি বাঙ্গালি হিন্দুরা খায়, তাহলে সেটা মানব দেহে শোষিত হবে না এবং উপকারের পরিবর্তে অপকারই হবে; কারণ, বংশ পরম্পরায় গোমূত্র আমরা ঔষধ হিসেবে বা পানীয় হিসেবে খাই নি। তাই গো মূত্র খেতে আমি কাউকে বলছি না, কিন্তু গোমূত্র নিয়ে কিছু কুলাঙ্গার হিন্দু এবং নির্বোধ জাতীয় মুসলমানদের অযথা চুলকানীর জবাব দেওয়ার জন্যই এই প্রবন্ধটা লিখলাম মাত্র।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
-----------------------

নিচে দেখে নিন গো মূত্র সম্পর্কে জুনাগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষনার উপর রিপোর্টটি :

টাইমস ২৪ ডটনেট ডেস্ক: সিংহের জন্য গির অরণ্যের নামডাক আছে ঠিকই কিন্তু এখানকার গরুদের দাম আক্ষরিক অর্থেই, সোনায় কষা যায়। টানা ৪ বছরের বিপুল গবেষণার পর জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, গির এলাকার গরুর মূত্রে সোনা পাওয়া গিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে ৪০০টি গরুর মূত্র পরীক্ষা করা হয়েছে, ১ লিটার মূত্রে মিলেছে ৩ থেকে ১০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত সোনার গুঁড়ো, যাকে বলে গোল্ড সল্ট, যা জলে মিশে যায় সহজেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রধান বি এ গোলাকিয়া জানিয়েছেন, গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফি-মাস স্পেকটোমেট্রি বা জিসি-এমএস পদ্ধতিতে গোমূত্রের নমুনা বিশ্লেষণ করেন তারা।

এতদিন শুধু প্রাচীন গ্রন্থ ও আয়ুর্বেদেই গোমূত্রে সোনা মেলার উল্লেখ ছিল। কিন্তু তার কোনো বিশদ বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ না থাকায় তারা গির এলাকার গরুদের মূত্র পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। ৪০০ গরুর মূত্র পরীক্ষা করে সত্যি সত্যিই পুরাণে উল্লিখিত সোনার সন্ধান মিলেছে।

বৈজ্ঞানিকরা জানাচ্ছেন, এই সোনা নিষ্কাশন করে রাসায়নিক পদ্ধতিতে তাকে কঠিন রূপ দেয়া সম্ভব। উট, মহিষ, ভেড়া ও ছাগলের মূত্র পরীক্ষাও করেছেন তারা কিন্তু তাতে সোনার খোঁজ মেলেনি। তা ছাড়া গির এলাকার গরুদের মূত্রে ৫,১০০ রকম মিশ্র পদার্থ মিলেছে, যেগুলির মধ্যে ৩৮৮টি চিকিৎসাগতভাবে অমূল্য, অর্থাৎ, এগুলির ব্যবহারে দুরারোগ্য অসুখ সারানো সম্ভব। জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈজ্ঞানিকরা এবার অন্যান্য ৩৯রকম দিশি গরুর মূত্র পরীক্ষা করবেন।

No comments:

Post a Comment