Friday, 22 May 2020

আর্যদের মতো মূর্খদের সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় যা বলেছেন


আর্যদের মতো মূর্খদের সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণ গীতায় যা বলেছেন :

আর্যরা শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর হিসেবে মানে না, শ্রীকৃষ্ণকে তারা একজন ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করে এবং খুব বেশি হলে তারা শ্রীকৃষ্ণকে একজন যোগী পুরুষ হিসেবে সম্মান দেয়। কিন্তু শ্রীকৃষ্ণই যে ঈশ্বর তার প্রমাণ গীতার বহু শ্লোকে আছে, আছে শ্রীকৃষ্ণের জীবনের বহু অলৌকিক ঘটনায়, তবু আর্যদের চোখে সেগুলো ধরা পড়ে না, এজন্যই আমি আর্যদেরকে বলি- মূর্খ।

শ্রীকৃষ্ণ, মাতৃগর্ভের মাধ্যমে মানবরূপে জন্ম নিয়েছিলেন, এজন্য প্রাথমিকভাবে তিনি অবশ্যই মানুষ; কিন্তু জন্মের পর থেকেই সময়ের সাথে সাথে তিনি নানা লীলার মাধ্যমে নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে প্রমাণ করেছেন, এজন্যই- দু'চারজন স্টুপিড আর্য ছাড়া প্রায় সব সনাতন ধর্মাবলম্বী তাঁকে ঈশ্বর হিসেবে মানে এবং তার পূজা প্রার্থনা করে।
Arpon Arya নামের এক মূর্খের বক্তব্যের দুটি স্ক্রিনশট এই পোস্টের সাথে যুক্ত করে দিয়েছি, সেখানে দেখুন, সে
বলেছে-

"আমি গীতা পড়ে জেনেছি যে কৃষ্ণ একজন মানুষ ছিলেন। কৃষ্ণ স্বয়ং তাকে মানুষ বলে দাবী করেছে।"

এর রেফারেন্স হিসেবে সে গীতার ৭/২৪ নং শ্লোকের কথা বলেছে এবং যার ব্যাখ্যা সে উল্টো করে বুঝেছে।

গীতার সেই ৭/২৪ নং শ্লোকটি হলো-

"অব্যক্তং ব্যক্তিমাপন্নং মন্যন্তে মামবুদ্ধয়ঃ
পরং ভাবমজানন্তো মমাব্যয়মনুত্তমম্।"

-জগদীশ চন্দ্র ঘোষের গীতায় এর অর্থ লিখা আছে,

"অল্পবুদ্ধি ব্যক্তিগণ আমার নিত্য সর্বোৎকৃষ্ট পরম স্বরূপ না জানায় অব্যক্ত আমাকে প্রাকৃত ব্যক্তিভাবাপন্ন মনে করে।"

এর আরো সরল অর্থ হলো- অল্পবুদ্ধি ব্যক্তিগণ আমার পরমভাব না জানিয়া অব্যক্তরূপ আমি ব্যক্তিরপে জন্ম লইয়া থাকি, এরূপ বিবেচনা করে।

ইসকনের গীতায় এর অর্থ লিখা আছে- বুদ্ধিহীন মানুষেরা, যারা আমাকে জানে না, মনে করে যে, আমি পূর্বে অব্যক্ত নির্বিশেষ ছিলাম, এখন ব্যক্তিত্ব পরিগ্রহ করেছি। তাদের অজ্ঞতার ফলে তারা আমার অব্যয় সর্বোত্তম পরম ভাব সম্পর্কে অবগত নয়।

অথচ Arpon Arya নামের এই মূর্খ, গীতার এই শ্লোক থেকে অর্থ বুঝেছে- সেই পরমাত্মা এই যে, যাহাকে লোক না জানিয়া কৃষ্ণকে পরমাত্মা বলে ভূল বা মান্য করে।

এরপর সে মন্তব্যে বলেছে - শ্রীকৃষ্ণ নিজে সেই ঈশ্বর নন তিনি সেই অক্ষরপুরুষকে আত্মস্বরূপে বলেছেন সেহেতু কৃষ্ণকে ঈশ্বর মান্য করা মহাভূল।

এই অজ্ঞান মূর্খদের উদ্দেশ্যেই শ্রীকৃষ্ণ গীতার ঐ ৭/২৪ নং শ্লোক বলেছেন, তাতে যে কোনোই সন্দেহ নেই, আশা করছি আমার পাঠক বন্ধুদের কাছে সেটা্ ক্লিয়ার হয়েছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, এর পরের ২৫ নং শ্লোকের শেষ চরণে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, "মূঢ়োয়হয়ং নাভিজানাতি লোকো মামজমব্যয়ম্।"

এর অর্থ হলো- মূঢ় এই সকল লোক জন্মমরণরহিত আমাকে পরমেশ্বর বলিয়া জানিতে পারে না।

যারা শ্রীকৃষ্ণকে পরমেশ্বর বলে মানে না, তারা যে মূর্খ সে কথা শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলে গেছেন, তাই সে বিষয়ে আমার কোনোই সন্দেহ নেই, আর একারণেই আর্যদেরকে আমি মনে করি মূর্খ।

এই পোস্টের সাথে ফটো হিসেবে যে দুটি স্ক্রিনশট যুক্ত করেছি, সেগুলো আমি সংগ্রহ করেছি, Arpon Arya এর কৃষ্ণ বিরোধী একটি পোস্টের কমেন্ট থেকে। কমেন্টের তর্ক বিতর্কে শান্ত হীরা নামের একজন Arpon Aryaকে জিজ্ঞেস করে, কৃষ্ণকে সে যদি ঈশ্বর না ই মানে, তাহলে সে কাকে ঈশ্বর বলে মনে করে ?

এর জবাবে Arpon Arya বলে- বেদ যাকে ঈশ্বর বলেছে সে আমার ঈশ্বর। ওম তাহার নাম।

এই ওমের পরিচয় দিতে গিয়ে সে বলেছে- ওম খং ব্রহ্ম। ব্রহ্ম স্বয়ং নিজেই ওম। ওম ব্রহ্মেরই নাম।

এখন দেখা যাক, ওম এর ব্যাপারে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ গীতায় কী বলেছেন ?

Arpon Arya বলেছে- ওমকে সে ঈশ্বর হিসেবে মানে এবং ওম ই ব্রহ্ম। অতএব ব্রহ্ম থেকে শুরু করি, দেখি ব্রহ্ম কে ?

শ্রীকৃষ্ণ গীতার ১৪/২৭ নং শ্লোকে বলেছেন,

“ব্রহ্মণো হি প্রতিষ্ঠাহমমৃতস্যাব্যয়স্য চ।
শাশ্বতস্য চ ধর্মস্য সুখস্যৈকান্তিকস্য চ।।”

এর অর্থ: আমিই নির্বিশেষ ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা বা আশ্রয়। অব্যয় অমৃতের, শাশ্বত ধর্মের এবং ঐকান্তিক সুখের আমিই আশ্রয়।

সুতরাং শ্রীকৃষ্ণই যে ব্রহ্ম, সেটা কিন্তু শ্রীকৃষ্ণের কথাতেই গীতা থেকে প্রমাণিত।

এবার দেখা যাক ওঁ অর্থাৎ ওম সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণ কী বলেছেন ?
গীতার ১০ম অধ্যায়ের ২৫ নং শ্লোকের প্রথম চরণে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"মহর্ষীণাং ভৃগুরহং গিরামস্মেকমক্ষরম।"

এর অর্থ- মহর্ষিদের আমি ভৃগু, বাক্য সমুহের মধ্যে আমি এক অক্ষর অর্থাৎ ওঁ-কার।

দ্যাখ রে আর্য পদবী ধারী মূর্খ, তুই যে ওঁ কে ব্রহ্ম বা ঈশ্বর মনে করিস, সেই ওঁ বা ব্রহ্মই যে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ, সেটা গীতা থেকেই প্রমাণ করে দিলাম।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment