Thursday 1 October 2020

"সমস্ত মানুষ সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।"- গীতার এই শ্লোকে আসলে কী বলা হয়েছে ?


"সমস্ত মানুষ সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।"- গীতার এই শ্লোকে আসলে কী বলা হয়েছে ?

ফটোপোস্টে গীতার যে বানীটি উ্রল্লেখ করা হয়েছে, সেটা রয়েছে গীতার ৪র্থ অধ্যায়ের ১১ নং শ্লোকে এবং এই শ্লোকটি হলো-

"যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্।

মম বর্ত্মানুবর্তন্তে মনুষ্যাঃ পার্থ সর্বশঃ।।"

এবং এর অর্থ হলো- যারা যেভাবে আমার প্রতি আত্মসমর্পণ করে, আমি তাদেরক সেভাবেই পুরস্কৃত করি। হে পার্থ, সমস্ত মানুষ সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।"

"সমস্ত মানুষ সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।" এর আরও সরল মানে হচ্ছে মানুষের আকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে যারা মানুষের মতো আচরণ করে বা করবে, তারা শ্রীকৃষ্ণ নির্দেশিত পথ অনুসরণ করতে বাধ্য এবং সেই পথেই তারা শ্রীকৃ্ষ্ণকে লাভ করতে পারে বা পারবে।

এই শ্লোকটি নিয়ে আমার এক পাঠক বন্ধু যে প্রশ্নটি করেছে, তা তো ফটোপোস্টে দেখতেই পাচ্ছেন, তারপরও সেই প্রশ্নটি আমি আবারও উল্লেখ করছি-

"তাহলে পৃথিবীতে অন্যান্য ধর্মের মানুষও কি তারই পথ অনুসরণ করে ?"

পৃথিবীতে অন্যান্য ধর্ম বলে কিছু নেই, পৃথিবীতে ধর্ম একটাই আর সেটা হলো সনাতন ধর্ম, যাকে সনাতন মানব ধর্মও বলা হয়, যার বর্তমান প্রচলিত নাম হিন্দু ধর্ম। প্রচলিত ভাষায়- পৃথিবীতে ইসলাম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি, শিখ, বৈষ্ণব ও জৈনসহ যে প্রায় ৪২০০ ধর্ম চালু আছে, এগুলো আসলে ধর্ম নয়, এগুলো ব্যক্তিগত মতবাদ; কারণ, কোনো না কোনো ব্যক্তির মতামতের উপর ভিত্তি করে এই থিয়োরিগুলো গড়ে উঠেছে। আর ব্যক্তিগত মতবাদকে ইংরেজিতে বলে ইজম (Ism), তাই Religion বলতে যা বোঝায়- তা ইসলাম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, ইহুদি, শিখ, জৈনসহ প্রায় ৪২০০ ধর্মের একটিও নয়, রেলিজিয়ন বলতে বোঝায় শুধু একটি ধর্মকেই এবং সেটা সনাতন ধর্ম, যা আর্য ও সিন্ধু সভ্যতার মুনি ঋষিদের দ্বারা প্রবর্তিত।

এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, গীতায় বলা হয়েছে, "মনুষ্যগন সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।" এর সম্পূরক প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কি পৃথিবীর অন্যান্য ধর্মের মানুষ শ্রীকৃষ্ণের পথই অনুসরণ করে ?

একটু আগেই আমি বলেছি, পৃথিবীতে ধর্ম একটাই, আর সেটা হলো সনাতন, বাকিগুলো ইজম বা ব্যক্তিগত মত ও পথ। এই ব্যক্তিগত পথ বা মতের অনুসারীরা ধর্মের নামে যা বিশ্বাস ও পালন করে, সেটা মানুষের জীবন যাপনের জন্য সম্পূর্ণ নয়, তাই দৈনন্দিন জীবন যাপনের কোনো না কোনো পর্যায়ে সনাতনের বিধি বিধান তারা পালন করতে বাধ্য। একটা উদাহরণ দিই- ইসলামে গান বাজনা করা ও শোনা নিষেধ, কিন্তু পৃথিবীতে এমন একজন মানুষ পাওয়া যাবে না যে গান বাজনা করতে বা শুনতে পছন্দ করে না, এককথায় টোটালি গান বাজনা শুনতে অপছন্দ করে এমন একজন মানুষও পৃথিবীতে নেই। এই গান বাজনা করা ও শোনা সনাতন ধর্মের অঙ্গ। কিন্তু ইসলামের কিছু অনুসারী আছে, যারা জঙ্গী বলে পরিচিত, তারা গান বাজনা শোনে না বা শুনতে চায় না, এমনকি অন্যেরা গান বাজনা করলে বা শুনলে সেটাও তারা সহ্য করতে পারে না, তাই তারা গানের অনুষ্ঠানে গিয়ে আত্মঘাতী হামলা করে নিজেকে উড়িয়ে দেয় পরকালে আল্লার পতিতালয় বেহেশতে গিয়ে ৭২ হুরকে দোচার আশায়, মানুষের আকৃতি নিয়ে জন্ম নিলেও এরা যে কোনোভাবেই মানুষ নয়, সেটা আপনারা আর একটু পরেই তথ্য প্রমানসহ বুঝতে পারবেন।

আজকের পোস্টের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, গীতায় যে বলা হয়েছে, মনুষ্যগন সর্বতোভাবে আমারই পথ অনুসরণ করে, তাহলে অন্যান্য ধর্মের মানুষও কি কৃষ্ণকে অনুসরণ করে ?- এই বিষয়টি।

সনাতন ছাড়া পৃথিবীতে যে অন্য কোনো ধর্ম নেই, সেটা তো একটু আগেই বললাম, এবার বুঝিয়ে বলছি যে পৃথিবীতে যারা মানুষ হিসেবে নিজেকে ভাবে তারা অবশ্যই শ্রীকৃষ্ণের পথ অনুসর করে বা করতে বাধ্য।

হিন্দু শাস্ত্রের একটি বাণী হলো- 

"পরদ্রব্য লোষ্ট্রবৎ" 

অর্থাৎ, পরের সম্পদকে মাটির ঢেলা বিবেচনা করবে 

এবং 

“মাতৃবৎ পরদারেষু, কন্যাবৎ পরকন্যাষু” 

অর্থাৎ, পরের স্ত্রীকে নিজের মা এবং পরের কন্যাকে নিজের কন্যার মতো দেখবে।

-পৃথিবীতে নারী ও সম্পত্তি ই হলো সকল অপরাধের মূল, অন্যের অধিকারে থাকা এই দুটো বিষয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ হিন্দু শাস্ত্রে একেবারে জিরো করে দেওয়া হয়েছে এবং এই দুটি বিষয় যারা মেনে চলে তারাই পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে পরিচিত এবং এটাই আসলে মানুষের ধর্ম। যারা এই মানবধর্মকে মেনে চলে তারা শ্রীকৃষ্ণ নির্দেশিত পথেই চলে এবং এই কথাই বলা হয়েছে গীতার ঐ শ্লোকে।

হিন্দু শাস্ত্র বলেছে, পরের সম্পদকে মাটির ঢেলা বিবেচনা করবে এবং পরের স্ত্রী ও কন্যাকে, নিজের মা ও নিজের কন্যার মতো দেখবে, কিন্তু এ ব্যাপারে ইসলাম কী বলে দেখূন-

"অতএব তোমরা যা কিছু ধন মাল লাভ করেছো, তা খাও, তা হালাল এবং তা পবিত্র।"- ( কোরান, ৮/৬৯)

-এখানে যুদ্ধলব্ধ ধন সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে, ইসলামের পরিভাষায় যাকে বলে গনিমতে মাল। এই গনিমতে মাল মানে পরাজিতদের যাবতীয় স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি এবং তাদের অধীনে থাকা নারী ও শিশু। মুসলমানদের সাথে যদি কখনো অমুসলিমদের যুদ্ধ হয় এবং সেই যুদ্ধে অমুসলিমরা পরাজিত হয়, তাহলে অমুসলিমদের যাবতীয় ধন সম্পদ এবং তাদের স্ত্রী কন্যাদেরকে মুসলমানরা দখল করে ভোগ করতে পারবে, সেই কথাই বলা হয়েছে কোরানের ঐ আয়াতে।

মুসলমানরা বর্তমানে কোরানে গনিমতের মালের কনসেপ্ট নিয়ে বিব্রত, তারা মুখে কখনো এই সব আয়াতের কথা তো বলেই না, পারলে কোরান থেকে ঐসব আয়াত ডিলিট করে দেয়, এই ধরণের মুসলমানরা বলতে পারে বা বলবে, কোরানের ঐ আয়াতে ধন সম্পত্তির সাথে যে নারীদের কথা বলা হয়েছে, তার প্রমান কী ? ওখানে কি নারীদের কথা উল্লেখ আছে ? এই ধরণের মুসলমানের মুখে শুয়োরের গু ভরে দিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখার জন্য দিলাম নিচের এই আয়াত-

"তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের উপর অধিকার অর্জন করেছে সেইরূপ নারী ব্যতীত অন্য কোনো সধবা নারী তোমাদের জন্য বৈধ নয়।"- (কোরান, ৪/২৪)

তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের উপর অধিকার অর্জন করেছে, এর মানে হলো যুদ্ধ করে যাদেরকে ধরে আনা হয়েছে, আর এই আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, "সেই নারী ব্যতীত", তার মানে যুদ্ধলব্ধ মালের মধ্যে নারীরাও থাকতো, এখানে তাদের কথা ই বলা হয়েছে।

এই হলো কোরান তথা ইসলামের বিধান, যেখানে স্পষ্টাক্ষরে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে অপরের স্ত্রী ও কন্যাকে ধর্ষণ করতে, এটা কোনো ঐশ্বরিক গ্রন্থ হতে পারে, না এটা কোনো ধর্ম হতে পারে ? আর যারা এই কোরান ও ইসলাম মেনে চলে তারা কি কখনো মানুষ হতে পারে ? নেভার, কখনো নয়। কোরান অনুসারে যে ব্যক্তি অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করার মনোভাব পোষণ করে না এবং অমুসলিমদের ধন সম্পত্তিকে লুঠ করে খাওয়ার এবং অমুসলিমদের স্ত্রী ও কন্যাকে দখল করে ভোগ করার বা ধর্ষণ করার মানসিকতা পোষণ করে না, সে আসলে মুসলমানই নয়। এখন ভাবুন, এই যদি হয় মুসলমানের চরিত্র, তারা কিভাবে মানুষ হবে ? তারা কখনো মানুষ নয়, এই কারণে মুসলমানদেরকে কখনো আমি মানুষই মনে করি না, তারা মানুষের আকৃতিতে এক একটি হিংস্র, জংলী জানোয়ার। 

মুসলমানের ঘরে জন্ম নেওয়া যে ব্যক্তি, অমুসলিমদের ঘরে জন্ম নেওয়া কাউকে মানুষ হিসেবে মনে করে, অমুসলিমদের স্ত্রী ও কন্যাদেরকে নিজের মা ও কন্যার দৃষ্টিতে দেখে, ইসলামের সূত্র মতে, তারা মুসলমানই নয়; আর যারা মুসলমান নয়, তারাই মানুষ। পৃথিবীতে মানুষের আকৃতি নিয়ে জন্ম নেওয়া প্রজাতি দুটি ভাগে বিভক্ত; এক. Human, দুই. Musolman, তাই যারা মুসলমান, তারা যেমন মানুষ নয়, তেমনি যারা মানুষ, তারা কখনো মুসলমান নয়। আর যারা মানুষ, তারা জন্মসূত্রে যে মতবাদে বিশ্বাসীর ঘরে জন্ম নিক না কেনো বা যে মতবাদেই বিশ্বাসী হোক না কেনো, তারা সনাতন মানব ধর্মের নির্দেশিত পথেই চলে এবং শ্রীকৃষ্ণকে লাভের পথে এগিয়ে যায়, যে কথা বলা হয়েছে গীতার ঐ শ্লোকে এভাবে- 

"হে পার্থ, সমস্ত মানুষ সর্বতোভাবে আমার পথই অনুসরণ করে।"

এই বিষয়টি বুঝতে হলে, এটা খুব ভালো করে বুঝতে হবে যে, মানুষের আকৃতিতে জন্ম নেওয়া যে সব প্রাণী- অপরের সম্পদ এবং অপরের স্ত্রী কন্যার দিকে নজর দেয় না, তারাই আসলে মানুষ; আর যারা এর বিপরীত কাজ করে তারা অমানুষ। গীতার এই শ্লোকে এই সব মানুষদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, মুসলমান নামের ইসলামী জঙ্গী জানোয়ার অমানুষদের সম্পর্কে নয় এবং মানবতার সূত্র অনুযায়ী যারা মানূষ, তারা জ্ঞাতে হোক বা অজ্ঞাতে হোক, অবশ্যই সনাতন ধর্মের বিধি বিধান মেনে চলে শ্রীকৃষ্ণ নির্দেশিত পথেই চলেছে এবং এভাবে তারা আস্তে আস্তে শ্রীকৃষ্ণকে লাভ করার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।

আশা করছি, আমি আমার পাঠক বন্ধুদেরকে গীতার ৪/১১ নং শ্লোকটির সঠিক বক্তব্যটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।

জয় হিন্দ।

জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment