Thursday 1 October 2020

পরিণত বয়সে- বীর্যপাত, বীর্যের ক্ষয় নয়, বীর্যের ব্যালান্স


পরিণত বয়সে- বীর্যপাত, বীর্যের ক্ষয় নয়, বীর্যের ব্যালান্স :

বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি ফটোপোস্টের বক্তব্যগুলো একটি গোষ্ঠী লাগাতারভাবে প্রচার করে যাচ্ছে। এদের সাথে আমি সম্পূর্ণভাবে একমত না হলেও, এটা আমি বলছি না যে অবৈধ যৌনসঙ্গ বা শুধুমাত্র দৈহিক সুখলাভের জন্য বীর্যক্ষয় করা উচিত। তবে এর কিছু বাস্তবতা আছে, যে বাস্তবতা না মানলে পুরুষেরা নানারকম সমস্যায় পড়বে, তাতে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে এবং অন্যান্য উন্নতি ব্যাহত হবে।

ছোটবেলা থেকেই নানাজনের কাছে নানাভাবে শুনতে শুনতে এটা আমাদের মাথায় সেট হয়ে যায় যে, বীর্যক্ষয়ে দেহের ভয়াবহ ক্ষতি হয়, পড়াশোনা হয় না, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এতকিছু এতবার জানা বা শোনার পরও ছেলেরা যখন নিজেকে আটকাতে পারে না, হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যক্ষয় করে ফেলে, তখন তাকে গ্রাস করে এক ভয়াবহ বিষণ্নতা, এক অপরাধবোধ, যা তাকে প্রায় মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ করে তোলে এবং সে বার বার প্রতিজ্ঞা করে যে এই কাজ সে আর কখনো করবে না, কিন্তু তার শরীর কয়েকদিন পরেই তাকে আবার সেই কাজ করতে বাধ্য করে। সে আবারও সেই একই কাজ করে এবং একইভাবে অনুতপ্ত হয় এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়, যা তাকে শারীরিকভাবেও বিপর্যস্ত করে। এই ঘটনা একজন ছেলের জীবনে বার বার ঘটতে থাকে এবং এ সম্পর্কে ভুল শিক্ষার ফলে সে বার বার নিজের ক্ষতি করতে থাকে।

বাস্তবে কোনো পুরুষের পক্ষে বীর্যকে রক্ষা করা সম্ভব নয়, যে এটা রক্ষা করতে পারবে- হয় সে নপুংসক, নয়তো সাধক ব্রহ্মচারী মহাপুরুষ, বাস্তবে যারা সমাজের কোনো উপকারে লাগে না।

ছোটবেলা থেকেই আমি পড়ার পাগল, আমার আশেপাশের এমন কোনো বই পুস্তক বা পেপার পত্রিকা থাকবে না, যেগুলো আমার পড়ার বাইরে, তো ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়ার পর একবার গেলাম চট্টগ্রামে, সেখানে আমার কাজিন আগে থেকেই চাকরি করতো। আমার কাজিন ছিলো বি.এ পাশ, তারও বিভিন্ন প্রকার বই পুস্তক পড়ার অভ্যাস ছিলো। তো তার বইয়ের তাকে দেখলাম যৌনতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে একটি বই। যৌনতা তো পুরুষের কাছে এমনিই আকর্ষণের বিষয়, যার ব্যতিক্রম আমিও নই, আরও কারো পক্ষে হওয়াও সম্ভব নয়, আগেই বলেছি- যৌনতা যদি কারো কাছে ভালো না লাগে, হয় সে নপুংসক, নয় তো সাধক ব্রহ্মচারী, বাস্তবে সমাজের যাদের কোনো ভূমিকাই নেই।

যা হোক, বই পড়া শুরু করলাম এবং তার বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুক্তিসঙ্গত আলোচনা বেশ ভালোই লাগলো, সেই বইয়ে লেখক বলেছেন, অনেক মানুষ বাল্যকালের অর্জিত ধারণায় মনে করে যে বীর্যক্ষয় করলে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি হয়, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যদি এটি সত্য হতো, তাহলে বিবাহিত পুরুষরা তো মাটির সাথে মিশে যেতো। কারণ, একজন বিবাহিত যুবক প্রায় প্রতিদিনই বীর্যক্ষয় করে, কোনো কোনো দিন একাধিকবারও করে। যুক্তিটি আমার মনে খাটলো এবং চিন্তা করে দেখলাম সত্যি তাই তো।

বয়ঃসন্ধিকালে পুরুষের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপত্তি হয়, যা একজন বালককে পুরুষের রূপান্তরিত করে, এই টেস্টোস্টেরন হরমোনই পুরুষের দেহে বীর্যের উৎপন্ন করে। পুরুষের প্রজনন তন্ত্রের মধ্যে বীর্যথলি নামক একটি প্রত্যঙ্গ আছে, সেই বীর্যথলি যখন ভরে উঠে, তখন পুরুষেরা ভীষণ উত্তেজনা বোধ করে, তখন নিজেকে শান্ত করার জন্য ঐ পুরুষকে বীর্যপাত ঘটাতে হয়, যদি কেউ কোনো সংস্কার বশত হস্তমৈথুনের মাধ্যমে বীর্যপাত না ঘটায়, ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে তার বীর্যপাত ঘটে যায়, একজন সক্ষম ও সুস্থ পুরুষের এ থেকে কোনো পরিত্রাণ নেই, বলা যায় এটাই তার নিয়তি।

তবে যে ছেলে রেগুলার বিভিন্ন প্রকার যোগ ব্যায়াম করে বা যেভাবেই হোক কঠিন শারীরিক পরিশ্রম করে, সে তার এই বীর্যের উৎপাতকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়; কারণ যোগ ব্যায়াম বা যেকোনো প্রকার শারীরিক পরিশ্রম করার ফলে দেহের ধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়। কিন্তু সাধারণভাবে কারো পক্ষে বীর্যের উৎপাতকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, যদি কেউ হস্তমৈথুন না করে তার স্বপ্নদোষ ঘ'টে তার বীর্যপাত হবেই।

যদি কোনো অবিবাহিত যুবক এই প্রতিজ্ঞা করে বসে যে সে কখনো বীর্যপাত করবে না, তাহলে তার ঘুম ঠিকমতো হবে না, আর ঘুম ঠিকমতো না হলে তার প্রতিদিনের সমস্ত কাজ, যেমন- চাকরি বা পড়াশোনা বা যেখানে কঠিন মনোযোগ দিতে হয়, সেসব কাজে সে খারাপ করতে থাকবে, এভাবে সে আস্তে আস্তে নিজের ক্ষতি নিজে করতে থাকবে, ফলে তার জীবনের সার্বিক উন্নতি ব্যাহত হবে।

অপরিণত বয়সে, যেমন- বালক বা কিশোর অবস্থায় বীর্যক্ষয় অবশ্যই শরীরের জন্য ক্ষতিকর; কারণ, এই সময় মানুষের দেহ গঠন হতে থাকে, তাই এই সময় বীর্যক্ষয়ে দেহের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু যুবক বা পরিণত বয়সে বীর্যক্ষয়ে বাস্তবে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না, বরং এই সময়ে বীর্যক্ষয় না হলেই শরীরে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। যারা বিবাহিত, তারা তো বীর্যক্ষয় করে বা করবেই, এটা সাধারণ বিষয়। কিন্তু যারা অবিবাহিত, তারা যদি দেহে যৌনতার কারণে প্রচণ্ড উত্তেজনা বোধ করে, তখন তাদেরকে বীর্যপাত করতেই হবে, না হলে তারা নানারকম শারীরিক এবং মানসিক চাপে পড়বে, যা তাদের ক্ষতি করবেই করবে।

সনাতন ধর্মের চার আশ্রমের প্রথমটি, যাকে বলে ব্রহ্মচর্য, যে সময়ে মানুষ শিক্ষা গ্রহন করে, সেই সময়ে অপ্রয়োজনে শুধু দৈহিক সুখলাভের জন্য বীর্যক্ষয় অবশ্যই খারাপ এবং তা দেহের জন্য ক্ষতিকারক, কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে- সে বীর্যপাত না করে সুখ পাচ্ছে না, নানারকম সমস্যায় ভুগছে, তখন সে বীর্যপাত করতে পারে, এতে তার কোনো শারীরিক ক্ষতি তো হবেই না, উল্টো ভালো ঘুম হবে এবং এর ফলে বিভিন্ন কাজে ভালো করে মনোযোগ দিতে পারবে।

বীর্য রক্ষার ব্যাপারটা সারা পৃথিবীর মধ্যে শুধু ভারতীয় সাধু সন্ন্যাসীদের মধ্যেই প্রচলিত, যারা বিয়ে করে সংসার করে না। কিন্তু এতে বাস্তবে ভারতের কী উপকার হয়েছে ? নিজেদের বীর্য রক্ষা করে তারা জগতের কোন কল্যানটা করেছে ? ম্যাক্সিমাম মুনি ঋষিগণ বিয়ে করেছিলেন, সংসার করেছিলেন, সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, ফলে এটা প্রমাণিত যে গার্হস্থ্য আশ্রমে প্রবেশ করে আপনি বীর্যকে কাজে লাগাতে পারেন, তাতে সনাতন ধর্মে কোনো সমস্যা নেই। বরং সমস্যা এটাই যদি আপনি আপনার বীর্যকে কাজে না লাগিয়ে সন্তানের জন্ম না দেন। কারণ, তাতে সনাতনী সমাজের জনসংখ্যা কমে সনাতনী সমাজ শক্তিহীন হবে, আপনার বংশ তো বিলুপ্ত হবেই, আর সন্তানের জন্ম না দিয়ে সনাতনী সমাজের ক্ষতি করায় আপনার পারলৌকিক কোনো গতি তো হবেই না, সেটা পরের ব্যাপার।

তাই বীর্যধারণ বা বীর্যরক্ষার ব্যাপারটা জীবনের একটা সময়ের জন্য প্রযোজ্য, যখন আপনার শরীর গঠন হচ্ছে, আপনি শিক্ষা জীবনে আছেন, কিন্তু যৌবনে আপনাকে বিয়ে করতেই হবে, তখন বীর্য রক্ষা কোনো বিষয় নয়, তখন বিষয় হলো বীর্যকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত সন্তানের জন্মদান। কিন্তু সঠিক সময়ে বিয়ে না হলে, বীর্যের উৎপাতের কারণে যদি আপনার ঘুম ঠিক মতো না হয় বা কোনো কাজে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে না পারেন তখন আপনি বীর্যপাত করতে পারেন, এটা কোনো ভাবেই বীর্যের ক্ষয় নয়, বীর্যের ব্যালান্স।

ইন্টারমিডিয়েট বা উচ্চমাধ্যমিক পড়াকালীন আমি ভারত সেবাশ্রম সংঘের একটি আশ্রমে বেশ কিছুদিন ছিলাম, সেখানে নিরামিষ খাইয়ে ছেলেদের হীন দুর্বল করার পাশাপাশি, তাদের বীর্যরক্ষার ব্যাপারে বেশ উৎসাহ দেওয়া হয়। এসব নিয়ে ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের বেশকিছু বই আছে, সেগুলো পড়তে দেওয়া হয়। যদিও আমি ক্লাস নাইন থেকেই বিভিন্ন প্রকার যোগ ব্যায়াম, ক্যারাটে, বক্সিং এসবের চর্চা করি এবং যৌনতার দিক থেকে একজন সক্ষম ও সুস্থ পুরুষ হিসেবে প্রয়োজনে মাঝে মাঝে বীর্যপাতকে কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারি না এবং বাল্যকালে অর্জিত ধারণা মোতাবেক অপরাধবোধে ভুগি, তার উপর আবার আশ্রমে গিয়ে ঐসব বই পুস্তক পড়ে বিষয়টি নিয়ে খুবই সিরিয়াস হয়ে গেলাম যে না আর কোনোভাবেই বীর্যপাত করবো না, দেখি কী হয় ? 

এর জন্য যৌন উত্তেজক কোনো কিছু দেখি না, সেই রকম আলোচনা শুনি না, এর মধ্যে আমার শরীরচর্চা কিন্তু চলছেই, তারপরও সপ্তাহ দুয়েক যেতেই খেয়াল করলাম ঘুমের ঘোরে উত্তেজনা বোধ হচ্ছে, নানা রকম সেক্সুয়াল স্বপ্ন দেখছি, উত্তেজনার জেরে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে, প্রস্রাব করে এসে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করছি, এইভাবে নানারকম মানসিক অশান্তি ও শারীরিক সমস্যা নিয়ে চলছি, লক্ষ্য একটাই বীর্যপাত আর ঘটতে দেবো না, কিন্তু ২৮ দিনের দিন ঘটনা ঘটেই গেলো, ঘুমের মধ্যে আমার বীর্যপাত হয়ে গেলো এবং তারপর আবার শরীর ও মনে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে পেলাম। তবু এই বাস্তব ব্যাপারকে বাল্যকালে অর্জিত বিশ্বাস এবং আশ্রমের শিক্ষার জন্য আমি মন থেকে মেনে নিতে পারছিলাম না যে প্রয়োজনে বীর্যপাতে শরীরের কোনো সমস্যা হয় না, এটা মাঝে মাঝে প্রয়োজনে করা যেতে পারে। কিন্তু এই ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পূর্ণ আমি ঝেড়ে ফেলতে পারি ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দেওয়ার পর যখন আমি চট্টগ্রামে গিয়ে ঐ বইটি পড়ি। 

তারপর থেকে বিয়ে করার পূর্ব পর্যন্ত এটা নিয়ে আমি আর কখনোই হীনন্মন্যতায় ভুগি নি, যখন প্রয়োজন হয়েছে, তখন করেছি এবং এভাবেই আমি যথেষ্ট সুস্থ শরীর ও সুস্থ মন নিয়ে বেঁচে আছি। রেগুলার ব্যায়াম করার ফলে প্রায় সালমান খান টাইপের একটি শরীরসহ, সব সময়ই আমার শরীরে সাধারণ মানুষের তুলনায় দ্বিগুন শক্তি ছিলো এবং এখনও আছে, যে শক্তিদ্বারা কাউকে এক থাপ্পড় দিয়ে তার ত্রিভুবন ঘুরিয়ে দিতে পারি, অন্যান্য আঘাতের কথা আর না ই বা বললাম এবং এই দৈহিক শক্তি ও ফিটনেস আমি নিরঙ্কুশ বীর্যধারণ করে করি নি, প্রয়োজনে বীর্যপাত করেছি, সেটা তো খুলেই বললাম, তাহলে বীর্যপাতে এই অপকার হয়, ঐ অপকার হয়, এসব বলে কি যুব সমাজের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে তাদেরকে অপরাধবোধে ভুগিয়ে তাদের শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করার কি কোনো দরকার আছে ? শত কেনো, হাজার চেষ্টা করলেও তো কোনো যুবক নিজেকে বীর্যপাত করার থেকে আটকাতে পারবে না।

হিন্দু সমাজে বৈষ্ণব নামধারী একশ্রেণীর ধর্ম ব্যবসায়ী বা গুরু আছে, এদের বেশির ভাগই বাড়িতে কেউ নিরামিষ খায় না, কিন্তু শিষ্যের বাড়িতে গেলে বা কোথাও কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলে নিরামিষ ছাড়া কিছু খায় না বা এমনভাব দেখায় যে যদি কোনো আমিষ খায় বা আমিষের স্পর্শ লাগে এদের ভয়াবহ সর্বনাশ হয়ে যাবে। বাস্তবে এটা একপ্রকার ভণ্ডামী। বাস্তবে বৈষ্ণব সমাজ যেহেতু নপুংসকতার পূজারীর সমাজ এবং ভণ্ডামীর সমাজ, যে নপুংসকতা ও ভণ্ডামী বৈষ্ণব সমাজের প্রভাবে সনাতনী সমাজেও বিস্তার লাভ করেছে বা করছে, তাই বৈষ্ণব মতবাদের প্রভাবে অনেক হিন্দু নিজেরা অঢেল মাছ মাংস খেলেও বা তাকে সমর্থন করলেও তাদের কানমন্ত্র গুরুরা বা সনাতন ধর্মপ্রচারকেরা মাছ মাংস খাক, সেটা তারা মেনে নিতে পারে না। নিরামিষ না খেলে বৈষ্ণব সমাজে বা বৈষ্ণব প্রভাবিত হিন্দু সমাজে তারা কোনো মূল্য পাবে না, এটা ধরে নিয়ে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও তারা নিরামিষ খেয়ে নিজেদের বাজার ঠিক রাখে, আর যারা আমিষ খাওয়া থেকে নিজেকে কণ্ট্রোল করতে না পারে, তারা বাড়িতে মাছ মাংস খায়, আর বাইরে গিয়ে আমিষ না খাওয়ার এবং নিরামিষ খাওয়ার ভণ্ডামী করে।

এই একইভাবে যৌনতার ব্যাপারে কিছু যুবক এমন ভাব দেখায় যে, তারা ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানে না, যৌনতার ব্যাপারে তারা যেন নির্মল এবং সাধুসন্ত মহাপুরুষ। তাই খুব কম যুবকই আছে, যারা তাদের যৌনজীবনকে খোলাখুলি সবার কাছে স্বীকার করার সাহস রাখে, যেমন আমি এই প্রবন্ধে করলাম; কারণ, আমি ভণ্ড নই, আমি যা, তাই প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করি না বা তা প্রকাশ করার সাহস আমার আছে। এই একই কারণে মাছ মাংস খেয়েও আমি সনাতন ধর্মের প্রচার করি, আর এটা করতে গিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেমন গীতাপাঠ করি, তেমনি সনাতন ধর্ম বিষয়ে বক্তৃতাও দিই। বৈষ্ণবগুরুদের মতো বিয়ে সংসার করে সন্তানের জন্ম দিয়েও আমি যেমন নিজেকে বৈষ্ণব বলে প্রচার করি না; কারণ, বৈষ্ণব মতবাদে বিয়ে সংসার সন্তানের জন্মদান বলে কিছু নেই; তেমনি ধর্মপ্রচার করতে হলেই তাকে নিরামিষ খেয়ে নপুংসক হতে হবে, এই ধারণাও আমি মানি না। আমি জানি সনাতন ধর্মের প্রকৃত সত্য কী, তাই সেটাই মানি, আর সেটাই কাজে প্রকাশ করি। 

কারণ, আমার উদ্দেশ্যে জনগনের মন মতো কথা ও কাজ করে অনুসারীর সংখ্যা বাড়ানো নয়, আমার উদ্দেশ্যে সনাতন ধর্মের প্রকৃত সত্যকে সবার সামনে তুলে ধরা; কারণ, মিথ্যাই সবচেয়ে বড় দুর্বলতা, আর মহাভারতের কথা অনুযায়ী, যেখানে মিথ্যা আছে, সেখানে ধর্ম থাকে না। একারণে দশ জন যদি আমার লেখা পড়ে এবং তাদের মধ্যে থেকে একজন যদি আমার কথাকে মানে, সেটাই আমার সফলতা বলে মনে করি। কারণ, একটি বনে একটি বাঘই গুরুত্বপূর্ণ, ১০টি শেয়াল নয়। তাছাড়া আমি এই বাস্তবতাতেও বিশ্বাস করি যে- আজকে প্রকৃত সত্যকে হয়তো অনেকের কাছে তিতা লাগছে; কারণ, সত্য সব সময় তিতাই হয়; কিন্তু একদিন অধিকাংশ লোক আমার সেই সত্যকে মেনে নেবেই, কেননা সত্যের জয় যে অবশ্যম্ভাবী।

যা হোক, দেহের চাহিদাকে অবজ্ঞা করে কোনো পুরুষ যদি দেহের উপর দমন পীড়ন চালায়, সে শুধু নিজের ক্ষতিই করবে না, তার দ্বারা সমাজেরও ক্ষতি হতে পারে বা হয়। ইসলাম এমনিতেই ধর্ষকদের মতবাদ; কারণ, গনিমতের মালের নামে অমুসলিম নারীদেরকে ধরে এনে ধর্ষণ করে বা কোনো অমুসলিম এলাকাকে গায়ের জোরে দখল করার পর সেখানে তিন দিন ব্যাপী বিজয় উৎসব পালনের নামে ধর্ষণের উৎসব করে মুহম্মদ এবং তার অনুসারীরা মুসলমানদের জিনে যে ধর্ষণের বীজ ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে, তার কারণে মুসলমানদের মধ্যে ধর্ষণের একধরণের বাতিক আছে, তাই কারণে অকারণে এরা সুযোগ পেলেই ধর্ষণ করে ফেলে, আর এতে কে বাচ্চা বা কে বুড়ি সেটার কোনো হিসেবে করে না।

এছাড়াও আরেকটি কারণে মুসলমানদের মধ্যে ধর্ষণ প্রবণতা বেশি, সেটা হলো- ইসলামে হস্তমৈথুন করা নিষেধ। একারণে ধর্মের ভয়ে যেসব মুসলমান হস্তমৈথুন করতে পারে না, তাদের দেহের উত্তেজনা সহ্য করতে না পেরে ধর্ষণ করে ফেলে, এই ধর্ষকরা হলো ইসলামিক লেবাসধারী- মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং মাদ্রাসার শিক্ষকরা; আর এদের শিকার মসজিদ মাদ্রাসায় কোরান পড়তে আসা কম বয়সী শিক্ষার্থীরা। দেহের উত্তেজনা নিরসনে হিন্দু যুবকদের মধ্যে যদি বীর্যপাতের স্বাধীনতা না থাকে, তাহলে হিন্দু যুবকদেরও মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটবে এবং তারাও ধর্ষণের মতো ঘটনা মাঝে মাঝে ঘটিয়ে ফেলবে। তাই পরিণত বয়সে বীর্যের ব্যালান্স নিয়ে সমাজে ভুল তথ্য ছাড়ানো অনুচিত।

যারা বীর্যরক্ষা, বীর্যরক্ষা ব'লে চিল্লায়, তারাও যে বীর্য রক্ষা করতে পারে না, সেটা আমি নিশ্চিত; আর যদি তারা সেটা পারে, তাহলে তারা যে নপুংসক, সেটাও আমি নিশ্চিত। কারণ, এটা সাধারণ শারীরিক প্রক্রিয়া, পায়খানা প্রস্রাবকে যেমন আপনি আটকে রাখতে পারবেন না, তেমনি বীর্যকেও আপনি কখনো আটকে রাখতে পারবেন না, যদি আপনি এ ব্যাপারে সুস্থ স্বাভাবিক হন।

ফটোপোস্টে যাকে দেখছেন, সেই স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব, বীর্যরক্ষা করে জগতের কী কল্যাণ করেছেন ? তার কথা মতো বীর্যক্ষয় যদি সকল দুঃখের ও দুগর্তির আকর হয় এবং বীর্যক্ষয়ে যদি দৈহিক মানসিক ও আত্মিক সকল সর্বপ্রকার অধঃপতন হয়, তাহলে তো তিনি জীবনে একদিনও বীর্যক্ষয় করেন নি বলে ধরে নিচ্ছি। এতে তিনি জগতের কোন উপকারটা করেছেন ? তাঁর বীর্যরক্ষার ফলে কি তিনি নিজের দেহে বা মনে এমন আধ্যাত্মিক শক্তির সঞ্চার করতে পেরেছেন, যার দ্বারা হিন্দুরা মুসলমানদের অত্যাচার নির্যাতন থেকে রক্ষা পেয়েছে ? অথচ এই বীর্য দ্বারা যদি তিনি এক বা একাধিক সন্তানের জন্ম দিতেন, তারা হিন্দু সমাজের জন্য শক্তি হতো।

শুধু এই স্বরূপানন্দ ই নন, যাঁরাই বীর্যরক্ষার ভণ্ডামি করেছেন, যেমন- চৈতন্যদেব, রামকৃষ্ণদেব, বিবেকানন্দ, প্রণবানন্দ, জগদ্বন্ধু, মহানামব্রত ব্রহ্মচারী, বালক ব্রহ্মচারী, রামঠাকুরসহ অসংখ্য স্ত্রী-সংসার-সন্তানহীন মানুষ, যাদেরকে আমরা মহাপুরুষ বলে মনে করি এবং শ্রদ্ধা করি, তারা কি বাস্তবে বীর্যরক্ষা করে সমাজ সংসারের কোনো উপকার করতে পেরেছেন ? এদের বিপরীতে অন্তত এই দিক থেকে হরিচাঁদ এবং অনুকূলকে আমি শ্রেষ্ঠ মনে করি। তাঁরা বীর্যরক্ষার ভণ্ডামি না করে বিয়ে করেছেন, সংসারের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করেছেন এবং সন্তানের জন্ম দিয়ে সমাজের উপকার করেছেন। মূলত এই একটি সঠিক কাজ করার জন্যই দেখুন, থিয়োরিগতভাবে ভুল হলেও মতুয়া সমাজ এবং সৎসঙ্গের কেমন রমরমা, আর অন্যরা নিভু নিভু করছে।

যারা বীর্য রক্ষার পক্ষে এত সাফাই গায়, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি- আপনাদের জন্ম কি আপনার পিতার বীর্যরক্ষার ফলেই হয়েছিলো, না তার নিরন্তর বীর্যপাতের ফলে হয়েছিলো ? কোনো কোনো সন্তানের জন্ম হয়তো একবার সঙ্গমের ফলেই হয়, কিন্তু বেশির ভাগ সন্তানকে জন্ম দিতে গিয়ে তাদের পিতামাতাকে মাসের পর মাস বছরের পর বছর ধরে সঙ্গম করতে হয়। তাই দুই একটি ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমার আপনার জন্ম কিন্তু আমাদের পিতা মাতার নিরন্তর সঙ্গমের ফলেই হয়েছে, যেখানে পিতারা বহু বীর্যক্ষয় করেছে। আর বীর্যক্ষয় যদি এতই খারাপ বা এতই ভয়াবহ হয়, তাহলে কেউ জীবনে একবারই বা তা করবো কেনো ? এই একবারও যদি আপনার পিতা বীর্যক্ষয় না করতো, তাহলে আপনার কি জন্ম হতো ? আর আপনাদের কথা অনুযায়ী যদি জগতের সকল পুরুষ বীর্যক্ষয় বন্ধ করে দেয়, তাহলে সৃষ্টি প্রক্রিয়া তো বন্ধ হয়ে যাবে, তাহলে সমাজ সভ্যতা কয়দিন টিকে থাকবে ? 

বীর্যক্ষয় সম্পর্কিত এই ধরণের ভাবনা আসলে একটি নপুংসক ভাবনা, যার সূচনা মধ্যযুগে চৈতন্যদেব থেকে।

চৈতন্যদেব তো বিবাহ করেছিলেনই, যদি তিনি কমপক্ষে একটি সন্তানের জন্ম দিতেন এবং সেই সন্তান যদি পুত্র হতো, তাহলে হয়তো বৈষ্ণব মতবাদের বর্তমান চেহারাটাই শুধু অন্যরকম হতো না, চৈতন্যদেবকেও হয়তো পুরীর মন্দিরের পাণ্ডাদের হাতে খুন হতে হতো না। আর বর্তমানে- দুই দুইটি মেয়ের জীবন নষ্ট করার জন্য এবং নিজে সন্তানের জন্ম না দিয়ে হিন্দু সমাজের জনসংখ্যা কমানোর জন্য এবং নিজেদের আদর্শে হিন্দু যুবকদের সংসার বিরাগী করে ঐ সন্তানদের পিতা মাতার স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করার জন্য- যারা চৈতন্যদেবের সমালোচনা করছে, তারাও সমালোচনা করতে পারতো না। যেসব তথাকথিত মহাপুরুষ, বীর্যরক্ষার তাগিদে সন্তানের জন্ম দেয় নি, তাদের আদর্শ একদিন না একদিন মুখ থুবড়ে পড়বেই, যেহেতু সেই আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা কোনো উত্তরাধিকারের জন্ম দিয়ে যায় নি। এই বিবেচনায় সৎসঙ্গ এবং হরিচাঁদের মতুয়া সমাজকে কিন্তু আমার অনেক বেশি টেকসই মনে হচ্ছে।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো- যারাই বীর্যরক্ষার তাগিদে বিয়ে করে নি, সন্তানের জন্ম দেয় নি, তারাই আবার অন্যের বীর্যপাতের ফলে জন্ম নেওয়া মানুষদেরকে নিজেদেরে ভক্ত-অনুসারী বা শিষ্য বানাতে ব্যস্ত, তাদেরই আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বীর্যপাত যদি এত খারাপ হয় বা বীর্যপাত যদি পাপ হয়, তাহলে বীর্যপাতের ফলে জন্ম নেওয়া কোনো সন্তান কিভাবে পাপমুক্ত হয়, যে তাকে নিজেদের ভক্ত অনুরাগী বানানোর জন্য এত টানাটানি করতে হবে ?

বীর্যরক্ষার তাগিদে যাদের ঘুম হয় না, সেই সব মহারাজ-ব্রহ্মচারী-সাধু-সন্ন্যাসীরা বাস্তবে হিন্দু সমাজের ক্ষতি করে চলেছে- হিন্দু সমাজের জনসংখ্যা কমিয়ে এবং বীর্যরক্ষার নামে হিন্দু যুবকদেরকে সংসার থেকে দূরে রেখে। সমাজ টিকে থাকে জনসংখ্যার উপরে, আপনি যদি সেই সমাজকেই টিকিয়ে রাখতে কোনো ভূমিকা পালন না করেন, তাহলে আপনি কিভাবে সমাজের উন্নতি করলেন ? অখণ্ড ভারতের যে যে অংশে মুসলমানরা বর্তমানে নিজেদের শাসন কায়েম করেছে, সেটা তারা করেছে নিজেদের বীর্যকে কাজে লাগিয়ে সন্তানের জন্ম দিয়ে সেইসব সন্তানদের মাধ্যমে ঐসব এলাকার ভূমি দখল ক'রে; আর এদের বিপরীতে আমাদের হিন্দু ধর্মগুরুরা ব্যস্ত বীর্যরক্ষার নামে সন্তান জন্ম না দিতে ! হিন্দু সমাজ যদি কোনোদিন বিলুপ্ত হয়, এইসব নপুংসক মহারাজ-ব্রহ্মচারী-সাধু-সন্ন্যাসীদের আদর্শের কারণেই হবে।

আমি বাস্তব কথা বলি বলে- অনেকেরই আমার কথা ভালো লাগে না। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। বিনা পয়সায় প্রকৃত সত্য ও বাস্তবতার জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছি, যা যে কাউকে ভালোভাবে রাখতে ও সুন্দরভাবে বাঁচাতে সক্ষম, যার ন্যূনতম বোধবুদ্ধি আছে, সে আমার কথাকে মেনে নিয়ে নিজের উপকার ঘটাবে, আর যার সেই ন্যূনতম বোধ বুদ্ধি নেই, সে ধ্বংস হবে; তাতে কার ই বা কী করার আছে ? এজন্যই বোধহয় শ্রীকৃষ্ণ গীতার একটি শ্লোকে অর্জুনকে বলেছিলো- আমার যা বলার তোমাকে বললাম, এখন তোমার যা ইচ্ছা হয় তা করো।

বাস্তবে বীর্যরক্ষার আন্দোলনকারীদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে বিয়ে থেকে দূরে রাখা। আর এটার চেয়ে ক্ষতিকারক কোনো বিষয় সমাজে নেই। কারণ, একজন পুরুষ বিয়ে না করলে একজন মেয়ের গতি হয় না, একটি পরিবার সৃষ্টি হয় না, যে পরিবার সমাজ বা রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কোনো পুরুষ বিয়ে না করলে তার বংশ বিলুপ্ত হয় এবং বংশের বিলুপ্তির মাধ্যমে সমাজের জনসংখ্যা কমে সমাজ অস্তিত্বের সংকটে পড়ে। তাই বীর্যরক্ষার আন্দোলনকারীদের কোনোরকম পাত্তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং এদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই দমন করতে হবে; কারণ, এরা সমাজের ক্ষতি করছে। পরিণত বয়সে বীর্য রক্ষা নয়, বীর্যকে সঠিক পন্থাতে কাজে লাগালেই হয় বা হবে সমাজের প্রকৃত কল্যান।

জয় হিন্দ।

No comments:

Post a Comment