Wednesday 26 August 2020

ভগবান হতে তাঁর ভক্তরা বড় ?



ভগবান হতে তাঁর ভক্তরা বড় ?

Bijoy Chandra Nath

এই যে আপনি বলেছন না যে- "চৈতন্য মহাপ্রভু কৃষ্ণের থেকেও ঊর্ধ্বে", এই কথা শুধু আপনি না, কেউ যদি আমার সামনে বলে, তাকে এমন চড় মারবো যে সে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে শুধু পড়েই যাবে না, তার দু চারটি দাঁতও খুলে যেতে পারে।

চৈতন্যদেব, শ্রীকৃষ্ণের চেয়েও বড়, তাই না ? তাহলে চৈতন্যদেবকে পুরীর মন্দিরের পাণ্ডারা খুন করতে পারে কিভাবে ? অবতারদের শক্তি সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে আপনার ? চৈতন্যদেব অবতার হলে তাকে কেউ কি খুন করতে পারতো ? শ্রীকৃষ্ণের জীবনী পড়েছেন ? তাঁর শক্তি সম্পর্কে কোন ধারণা আছে আপনার ? অন্যান্য শক্তির ঘটনার কথা না হয় বাদই দিলাম, বালক বয়সে কংসের মতো একজন যোদ্ধাকে মল্লযুদ্ধে পরাজিত করে শ্রীকৃষ্ণ তাকে হত্যা করেছিলেন। চৈতন্যদেব যদি, শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে বড় হয়, তাহলে তো পুরীর মন্দিরের কয়েকজন পাণ্ডা কেনো, পুরীর সমস্ত লোক মিলেও তো চৈতন্যদেবকে হত্যা করতে পারতো না। কারণ, দুর্যোধন একবার শ্রীকৃষ্ণকে বন্দী করার চেষ্টা করেছিলো, সমগ্রকে সৈন্যকে কাজে লাগিয়েও দুর্যোধন, শ্রীকৃষ্ণকে বন্দী করতে পারে নি। শ্রীকৃষ্ণ বুক ফুলিয়ে হস্তিনাপুরের রাজপ্রাসাদ থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। আর সেই কৃষ্ণের চেয়ে বড় আপনার চৈতন্যদেব পুরীর মন্দির থেকেই বের হতে পারে না, উধাও হয়ে যায় ! চৈতন্যদেব, কৃষ্ণের চেয়ে কত বড়, সেটা বুঝতে পারছেন ?

আপনি বলেছেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছিলেন, তার থেকে তার ভক্তরাই হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ। আপনি এই কথা বলেছেন ভাগবতের রেফারেন্সের ভিত্তিতে। ভাগবত- কখন, কে রচনা করেছে, তার কোনো ধারণা আছে আপনার ? বিষ্ণুপুরাণের ১০ জন অবতার, ভাগবতে এসে হয়েছে বাইশ জন, তাদের মধ্যে একজন গৌতম বুদ্ধ, যে বুদ্ধের জন্ম, শ্রীকৃষ্ণ বা ব্যাসদেবের সময়ের অন্তত প্রায় ২৭০০ বছর পর, তাহলে- ভাগবত যদি ব্যাসদেবের হাতে রচিত হয়, সেই ভাগবতে গৌতম বুদ্ধে কথা উল্লেখ থাকে কিভাবে ? 

ভাগবতের প্রথম স্কন্ধের প্রথম অধ্যায়ে বলা আছে- "মহামুনি নারায়ণ কর্তৃক বিরচিত এই পরম রমণীয় ভাগবত শাস্ত্র শ্রবণেচ্ছু পুণ্যবান ব্যক্তিগণ শ্রবণমাত্রেই ঈশ্বরকে হৃদয়ে ধারণ করতে সমর্থ হন।" আরেক জায়গায় বলা আছে, "শ্রীমদ্ভাগবত শুকমুখ হতে নির্গত হয়েছে অখণ্ডিতভাবে।" আবার ভাগবতের দ্বিতীয় অধ্যায়ের বর্ণনা অনুযায়ী, লোমহর্ষণপুত্র উগ্রশবা বা সূত মুনিদের নিকট তা বর্ণনা করছেন এবং সে বর্ণনার শুরুতেই বলেছেন- "সেই সর্বভূতাত্মা মহামুনি শুকদেবকে প্রণাম করছি।" ভাগবত যদি সরাসরি বেদব্যাসের হাতে রচিত হয়, তাহলে এই অসঙ্গতিগুলো কি থাকতে পারে ? বেদব্যাস কি তার পুত্র শুকদেবকে প্রণাম করতে যাবে ?

আমার ধারণা গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাবের পর, গৌতমবুদ্ধকে সনাতন ধর্মের একজন অবতার প্রমাণ করার জন্য কেউ বেদব্যাসের নাম দিয়ে এই ভাগবত রচনা করেছে। যে ভাগবতের অনেক ক্ষেত্রেই শ্রীকৃষ্ণ প্রায় লম্পট হিসেবে উপস্থাপিত। সেই ভাগবতের রেফারেন্স দিয়ে আপনি বলছেন, শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে চৈতন্যদেব বড়! শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্তের পূজাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ! শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্তরাই বড়!

কোনো কথা বলার আগে সেটার বাস্তবতাও বিবেচনা করতে হয়। শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্তরাই যদি বড় হয়, তারাই যদি শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে বেশি পূজ্য হয়, তাহলে যে কেউ তো নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত বলে দাবী করতে পারে এবং অন্যদের কাছে পূজাও চাইতে পারে। তাহলে কে কাকে পূজা করবে ? আবার একজন কাউকে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত বলে ধরে নিয়ে তার পূজা করতে পারে, কিন্তু অন্যজন হয়তো তাকেই বড় ভক্ত বলে মনে না ক'রে, অন্য কাউকে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত মনে করতে পারে। এভাবে কে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত, সেটা নির্ণয়ে তো সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। যেমন- আপনি চৈতন্যদেবকে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত মনে করেন, কিন্তু আমি তো চৈতন্যদেবকে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত বলে মনে করি না, আপনি আমার চিন্তা বা সিদ্ধান্তকে ঠেকাবেন কিভাবে বা আমিই আপনার চিন্তা বা সিদ্ধান্তকে ঠেকাবো কিভাবে ? কোনো ধর্মীয় তত্ত্বকে এভাবে জনগনের নিজস্ব সিদ্ধান্তের উপর ছেড়ে দেওয়া যায় না, সেটা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আর যা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, সেটা কখনো বাস্তব ব্যাপার নয়, একারণেই -ভগবানের থেকে তার ভক্তরা বড়- এমন কথা সম্পূর্ণ অবাস্তব, ভিত্তিহীন এবং সমাজের বিশৃঙ্খলার জনক।

কেউ যখন কারো ভক্ত হয়, সে তখন তাকে আদর্শ হিসেবে মানে এবং সর্বান্তকরণে তার মতো হওয়ার চেষ্টা করে। চৈতন্যদেবের মধ্যে কি এমন কোনো গুন ছিলো, যা কৃষ্ণের আদর্শকে ধারণ করে ? করে না। তাহলে চৈতন্যদেব কিভাবে শ্রীকৃষ্ণের বড় ভক্ত হয় ? আমার তো মনে হয়, আমিই বর্তমানে শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে বড় ভক্ত; কারণ, যারাই শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে কটূক্তি করে, তাদের সকলের কথার জবাবই শুধু আমি দিই না, শ্রীকৃষ্ণের তথাকথিত কলুষিত চরিত্র, যার স্রষ্টা ও প্রচারক বৈষ্ণবরা, শ্রীকৃষ্ণের সেই কলুষিত ভাবমূর্তিকে সাফসুতরো করার জন্য অনবরত শাস্ত্র ঘেঁটে প্রকৃত সত্যকে সবার সামনে তুলে ধরছি, যাতে শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে কোনো খারাপ ধারণা সমাজে না থাকে এবং আমার জানা মতে এই কাজ আমার আগে কখনো কেউ আমার মতো ক'রে করে নি। এই প্রেক্ষাপটে আমি যদি নিজেকে শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে বড় ভক্ত বলে দাবী করি, সেটা কি অযৌক্তিক হবে ? হবে না। তাহলে শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে বড় ভক্ত হিসেবে আমি যদি আপনার কাছে পূজা দাবী করি, আপনি কি আমার পূজা করবেন ? করবেন না। কারণ, আপনি আমাকে শ্রীকৃষ্ণের সবচেয়ে বড় ভক্ত বলে মনে করেন না। এই কথাই তো আমি বলছি- একেকজনের ভাবনা একেকরকম, তাই শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্তরা বড় বা শ্রেষ্ঠ, এটা একেবারে বোগাস একটা কথা, যে বোগাস কথা পরিকল্পনা করে ঢোকানো হয়েছে পিতৃপরিচয়হীন ভাগবতে।

শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্ত শ্রেষ্ঠ, এই কথা ভাগবতের যেখানে বলা হয়েছে, সেই একাদশ স্কন্ধে গিয়ে দেখা যাক, এই কথাটা প্রক্ষিপ্ত হতে পারে কি না ?

এখানে শ্রীকৃষ্ণ উদ্ভবকে বলেছেন, "ভক্তির পরম কারণ ভক্তিযোগ তোমাকে আমি বলবো। সর্বদা আমার অমৃতময়ী কথায় শ্রদ্ধা, নিত্য আমার নামকীর্তন, আমার পূজায় নিষ্ঠা, সর্বদা আমার স্তুতি দ্বারা স্তব, আমার পরিচর্যায় সর্বদা আমার সমাদর, অষ্টাঙ্গে অভিবাদন, আমার পূজা হতে আমার ভক্তের অধিক পূজা, সর্বভূতে আমার স্ফুরণ লক্ষ্য করা, আমার উদ্দেশ্যে শারীর চেষ্টা, বাক্য দ্বারা আমার গুনকীর্তন করা, আমাতে মন অর্পণ, সর্বকাম পরিত্যাগ, আমার ভজনের জন্য ভজনবিরোধী অর্থের পরিত্যাগ, ভোগসাধন অনিবেদিত চন্দনাদি ও সুখ অর্থাৎ পুত্র লালনাদি পরিত্যাগ, ইষ্ট বা যজ্ঞ ও দান, পূর্ত অর্থাৎ কূপ, পুষ্করিণী প্রভৃতি খনন, দান, হোম, ব্রত ও তপস্যা আমার জন্য করলে এই সকল আমার ভক্তির কারণ হয়।" 

এখন এই প্যারা হতে- আমার পূজা হতে আমার ভক্তের অধিক পূজা- বাক্যটি তুলে দিয়ে পড়ুন, দেখুন তো শ্রীকৃষ্ণের কথার ভাব ঠিক থাকে কি না ? এই অনুচ্ছেদের মধ্যে- আমার পূজা হতে আমার ভক্তের অধিক পূজা- ঢুকিয়ে দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের কথাগুলোকেই তো মূল্যহীন করে ফেলা হয়েছে। কারণ, শ্রীকৃষ্ণের চেয়ে তার ভক্তকেই যদি শ্রেষ্ঠ আমি মনে করি, তাহলে শ্রীকৃষ্ণ যে বলেছেন, 

"আমার অমৃতময়ী কথায় শ্রদ্ধা, নিত্য আমার নামকীর্তন, আমার পূজায় নিষ্ঠা, সর্বদা আমার স্তুতি দ্বারা স্তব, আমার পরিচর্যায় সর্বদা আমার সমাদর, অষ্টাঙ্গে অভিবাদন, সর্বভূতে আমার স্ফুরণ লক্ষ্য করা, আমার উদ্দেশ্যে শারীর চেষ্টা, বাক্য দ্বারা আমার গুনকীর্তন করা, আমাতে মন অর্পণ"- এসবে আমার প্রয়োজন কী ? আমি শ্রীকৃষ্ণের যে ভক্তের পূজা করবো, আমি তার কথাই শুনবো, তার প্রতিই আমার সকল মনোযোগ নিবিষ্ট করবো। কিন্তু গীতায় বলা হচ্ছে- শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া অন্য কেউ কারো জন্য কিছু করতে পারে না, শ্রীকৃষ্ণ ছাড়া অন্য কোনো দেব-দেবী আপনাকে মুক্তি দিতেও সক্ষম নয়, তাহলে গীতার সাথে ভাগবতের এই বাণী- আমার পূজা হতে আমার ভক্তের অধিক পূজা-এর মিল কোথায় ?

তাছাড়া এই অনুচ্ছেদে- "সর্বকাম পরিত্যাগ, আমার ভজনের জন্য ভজনবিরোধী অর্থের পরিত্যাগ, ভোগসাধন অনিবেদিত চন্দনাদি ও সুখ অর্থাৎ পুত্র লালনাদি পরিত্যাগ।" কথাগুলোও শ্রীকৃষ্ণের আদর্শের সাথে বেমানান। কারণ, "সর্বকাম পরিত্যাগ" এর কথা যদি তিনি ভাগবতে বলেন, তাহলে শ্রীকৃষ্ণ গীতার ৭/১১ নং শ্লোকে কেনো বলেছেন যে- 'আমিই প্রাণীগণের ধর্মের অবিরোধী কাম' ? এরপর- আমার ভজনের জন্য ভজনবিরোধী অর্থের পরিত্যাগ- বিষয়টি আমার নিজেরই মাথাতেই ঢোকেনি যে এখানে ভাগবত রচয়িতা আসলে কী বলতে চেয়েছেন, অর্থ পরিত্যাগের তো কোনো প্রশ্নই আসে না; কারণ, অর্থই সকল শক্তির মূল। এরপর - "পুত্র লালনাদি পরিত্যাগ" ও শ্রীকৃষ্ণের আদর্শের বিরোধী; কারণ, শ্রীকৃষ্ণের পুত্র ও স্ত্রী ছিলো, তিনি তাদেরকে পরিত্যাগ করেন নি।

শুধু তাই নয়, ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণ যদি - আমার পূজা হতে আমার ভক্তের অধিক পূজা- জাতীয় কোনো কথা বলে থাকেন, তাহলে গীতার ভক্তিযোগেও এরকম কোনো ইঙ্গিত নিশ্চয় থাকা দরকার, কিন্তু গীতাতে কি সেরকম কোনো কিছু বলা আছে ? নেই। বরং গীতায় ভক্তিযোগ অধ্যায়ের দ্বিতীয় শ্লোকে বলা আছে- "হে পার্থ, যাঁহারা আমাতে মন নিবিষ্ট করিয়া নিত্যযুক্ত হইয়া আমাকেই পরম শ্রদ্ধার সহিত উপাসনা করেন, তাঁহারাই আমার মতে শ্রেষ্ঠ সাধক।"

ভক্তিযোগ প্রসঙ্গেই যেহেতু ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণ, উদ্ভবকে ঐসব কথা বলেছেন, যার মধ্যে আপনারা পান বা বিশ্বাস করেন- শ্রীকৃষ্ণের পূজা হতে তার ভক্তের পূজা শ্রেষ্ঠ- তাহলে, গীতার ভক্তিযোগ অধ্যায়ে এরকম কোনো কথা থাকবে না কেনো ? গীতার ভক্তিযোগে এরকম কোনো কথা নেই, কারণ, ভাগবতের ঐ কথা আসলে মিথ্যা বা ভিত্তিহীন। ভাগবত যেহেতু বেদব্যাসের হাতে রচিত নয়, তাই কেউ শ্রীকৃষ্ণের নামে যা তা লিখে তা ধর্মগ্রন্থ হিসেবে চালানোর চেষ্টা করেছে এবং অনেক তথ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণকে ছোট করার অপচেষ্টা করেছে। কারণ, এটা তো বাস্তব যে, আপনার মতো যারা ভাবগতের ঐ কথাকে বিশ্বাস করে, তারা শ্রীকৃষ্ণকে বড় নয়, চৈতন্যদেবকেই বড় মনে করে এবং তার আরাধানা করে। অথচ চৈতন্যভাগবত এবং চৈতন্যচরিতামৃত সাক্ষ্য দিচ্ছে যে- চৈতন্যদেব, সবসময় তার ভক্ত শিষ্যদেরকে কৃষ্ণ নাম করতে নির্দেশ দিয়েছেন, এমনকি তিনি নিজেও সব সময় কৃষ্ণ নামে উন্মাদ ছিলেন।

এই কমেন্টের শেষে আপনি বলেছেন, শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্যরূপে আবির্ভূত হন কলি যুগে, হরিনাম সংকীর্ত্তন প্রচার করার জন্য।

এ প্রসঙ্গে আপনাকে জিজ্ঞেস করছি- অবতার রূপে পৃথিবীতে কে আবির্ভূত হন- শ্রীকৃষ্ণ, না বিষ্ণু ? শাস্ত্র মতে- বিষ্ণু পৃথিবীতে অবতার রূপে আবির্ভূত হন এবং শ্রীকৃষ্ণ নিজেও বিষ্ণুর একজন পূর্ণ অবতার। সকল অবতারই যেহেতু বিষ্ণুর স্বরূপ, সেহেতু এক অবতার কখনো অন্য অবতারের ভক্ত হয় না। চৈতন্যদেবকে যেহেতু আপনারা অবতার মনে করেন, তাহলে চৈতন্যদেব কিভাবে বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার শ্রীকৃষ্ণের এমন অন্ধ উন্মাদ ভক্ত হয় ?

যদিও শ্রীকৃষ্ণ গীতার ১০ম অধ্যায়ের ৪১ নং শ্লোকে বলেছেন- 'এই পৃথিবীতে যাহা কিছু ঐশ্বর্যযুক্ত, শ্রী সম্পন্ন, অথবা শক্তিসম্পন্ন দেখ, তাহাই আমার শক্তির অংশ হতে উদ্ভূত বলিয়া জানিবে'।

-কিন্তু এটা, শ্রীকৃষ্ণই যে আবার পৃথিবীতে অবতার রূপে অবতীর্ণ হন, সেই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে না। গীতার ১০/৪১ নং শ্লোকের ভিত্তিতে চৈতন্যদেবকে যদি শ্রীকৃষ্ণের অবতার হিসেবে স্বীকার করা হয়, তাহলে পৃথিবীতে অন্তত কয়েক হাজার অবতার পাওয়া যাবে, যারা চৈতন্যদেবের চেয়ে জ্ঞানে গুনে শ্রেষ্ঠ, জনপ্রিয় বা শক্তিসম্পন্ন। তাই বৈষ্ণব প্রভাবিতরা যে বলে- চৈতন্যদেব হলেন অবতারের অবতারী, সেটা শুধু ভিত্তিহীন নয়, শাস্ত্রমতে একেবারে বোগাস কথা।

এতক্ষণ কী বললাম, আশা করি বুঝতে পেরেছেন, তাই ভবিষ্যতে আমার কোনো পোস্টে কমেন্ট করার আগে আরেকটু ভেবে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি।

জয় হিন্দ।

জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment