মালাউন প্রকৃতপক্ষে কারা ?
বাংলাদেশের হিন্দুদের উদ্দেশ্যে, ঘৃণা ও অবজ্ঞাসূচক বহুল প্রচলিত মুসলমানদের একটি গালি হচ্ছে মালাউন। এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে মালু। যখন কোনো মুসলমান, কোনো হিন্দুকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করতে চায়, তখন তারা তার উদ্দেশ্য এই গালি প্রয়োগ করে, আর বাংলাদেশের হিন্দুরা সংখ্যায় ও শক্তিতে কম ব’লে, শুধুমাত্র টিকে থাকার জন্য নীরবে এই গালি হজম করে। পূর্ববঙ্গে এই গালির প্রচলন করে মুসলিম লীগের লোকজন ১৯৪৬ সালে, হিন্দুদেরকে গালির মাধ্যমে সম্বোধন করার জন্য নোয়াখালির হিন্দু নিধন যজ্ঞের সময়, এরপর এই শব্দের বহুল প্রয়োগ ঘটে ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও এদেশীয় রাজাকারদের মাধ্যমে। সেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশ এবং যে দেশে রাজাকারের বাচ্চারা এখনও আছে, সেই দেশে মালাউন গালি থাকবে না, তাই কি হয় ? তাই মালাউন গালি বাংলাদেশে আছে; কারণ, এই দেশে পাকিস্তানীদের বীর্যে উৎপাদিত রাজাকারের বাচ্চারা এখনও আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মালাউন কারা ?
মালাউন একটি আরবি শব্দ, এর অর্থ হলো অভিশপ্ত। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মতো মুহম্মদের আল্লা যেমন তার সৃষ্ট সব জীবকে সমান চোখে দেখে না, তার সৃষ্ট কিছু জীবকে যেহেতু সে নিজেই ঘৃণা করে, যেমন-শুকর, কুকুর, বিড়াল, সাপ, বানর প্রভৃতি- সেহেতু সর্বশ্রেষ্ঠ জীব বলে পৃথিবীতে পরিচিত মানুষের মধ্যেও যারা মুহম্মদের সন্ত্রাসী আদর্শকে বিশ্বাস করে না, আল্লা তাদেরকেও ঘৃণা করে। এখানে একটি বিশাল প্রশ্ন এসেই যায়, মুহম্মদের আল্লা যদি প্রকৃতই সৃষ্টিকর্তা হয়েই থাকে, সে ই যদি পৃথিবীর সকল প্রাণীকে সৃষ্টি করে থাকে, তাহলে কিছু প্রাণীকে সে ঘৃণা করবে কেনো ? যে প্রাণীর যে বৈশিষ্ট্য, সেই বৈশিষ্ট্য সে তো নিজেই তার মধ্যে সৃষ্টি করে দিয়েছে। শুকর, কুকুরের বৈশিষ্ট্য মানুষের মল খাওয়া ও ময়লা আবর্জনার মধ্যে থাকা; এটা শুকর-কুকুরের দোষ ? না শুকর-কুকুর যে সৃষ্টি করেছে, সেই আল্লার দোষ ?
স্কুল জীবন থেকেই একটা আরবি বাক্য শুনে আসছি যে, “আশরাফুল মাখলুকাত”। এর অর্থ হলো “মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব”। এই বাক্যটা দেখে বা এই কথা শুনে যেকোনো মানুষের প্রথমেই মনে হবে, আরে বাহ, ইসলামে তো মানুষকে অনেক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে; নিশ্চয় ইসলাম অনেক গ্রেট ধর্ম। এই বাক্যটাও আসলে, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম’ বলার মতো একটা চরম ধোকাবাজি। কোরানের যে আয়াত থেকে এই আরবি বাক্যটা এসেছে, সেই আয়াতটি হলো, “যেসব লোক ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে তারা নিঃসন্দেহে অতীব উত্তম সৃষ্টি” (কোরান, ৯৮/৭)।
এখানে স্পষ্ট করে বলা হলো, যারা ঈমান এনেছে অর্থাৎ মুহম্মদ ও আল্লাতে বিশ্বাস এনেছে তারাই সৃষ্টির সেরা জীব এবং এই আয়াতের কথা অনুসারে যারা মুহম্মদ ও আল্লাতে বিশ্বাস আনেনি তারা নিকৃষ্ট সৃষ্টি। ঠিক এই কথা ই বলা আছে কোরান হাদিসের বহু জায়গায়, কিন্তু মুসলমানরা সেগুলোকে আড়াল করে রেখে ইসলামের আসল রূপ বুঝতে না দিয়ে সেই ১৪০০ বছর ধরে পৃথিবীর মানুষকে ধোকা দিয়ে আসছে।
আগেই উল্লেখ করেছি, মালাউন শব্দের অর্থ অভিশপ্ত। ইসলাম মতে, এই অভিশপ্তরা হচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, যারা মুহম্মদ ও আল্লাকে বিশ্বাস করে নি। এই সূত্রে পৃথিবীর ৮০% এরও বেশি মানুষ এখনও অভিশপ্ত, কারণ পৃথিবীর ৮০% এর বেশি মানুষ এখনও অমুসলিম, কাফের।
অভিশপ্ত প্রসঙ্গে কোরানে অমুসলিমদের সম্পর্কে কী বলা আছে, তা দেখে নিন নিচের কয়েকটি আয়াতে-
“মুশরিক লোকেরা নাপাক। অতএব এই বছরের পর তারা যেন মসজিদে হারামের নিকট না আসতে পারে।” - (কোরান- ৯/২৮)
মক্কা দখলের পর মুহম্মদ আল্লার রেফারেন্স দিয়ে এই কথা বলে। এখানে মুশরিক মানে মূর্তিপূজক, কোরান মতে যারা নাপাক অর্থাৎ অপবিত্র, যারা মক্কার কাবা ঘরের মধ্যে স্থাপিত ৩৬০টি দেব-দেবীর পূজা করতো। মক্কা দখলের পর মুহম্মদ নিজের হাতে সেই মূর্তিগুলো ভেঙ্গে কাবা মন্দিরকে মসজিদে রূপান্তরিত করে এবং তখনও যারা ইসলামকে স্বীকার করে নি, তাদেরকে কাবা ঘরের নিকট যাওয়া নিষিদ্ধ করে। একারণেই এখনও মক্কার সাথে সাথে মদীনাতেও কোনো অমুসলিমের প্রবেশ নিষেধ। ইসলাম অমসুলিমদেরকে কী পরিমান ঘৃণা করে সেটা একবার চিন্তা করুন। পৃথিবীর অন্য কোনো ধর্মের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে সকল ধরনের লোকের প্রবেশাধিকার নেই। ব্যতিক্রম একমাত্র ইসলাম। এই ইসলাম ই নাকি আবার মহান ধর্ম, এই ইসলাম নাকি আবার মানবতার কথা বলে! এই ইসলাম থেকেই উদ্ভুত জাকিরের পিস টিভি আবার নাকি মানবতার সমাধান!
যা হোক, ইসলাম অমুসলিমদেরকে যে মানুষ নয়, জন্তু জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট মনে করে, তার প্রমান পাবেন নিচের এই তিনটি আয়াতে-
“একথা একান্তই সত্য যে, বহু সংখ্যক মানুষ ও জ্বীন এমন আছে ,যাদেরকে আমি জাহান্নামের জন্যই পয়দা করেছি।.....তারা আসলে জন্তু জানোয়ারের মতো বরং তা হতেও অধিক বিভ্রান্ত”।- ( কোরান, ৭/ ১৭৯)
“নিশ্চয় আল্লাহতায়ালার নিকট যমীনের বুকে বিচরণ শীল জন্তু প্রাণীর মধ্যে নিকৃষ্টতম হচ্ছে সেই সব লোক যারা মহাসত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে, পরে তারা কোনো প্রকারেই তা কবুল করতে প্রস্তুত হয় নি”। - (কোরান, ৮/৫৫)
“আহলি কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে হতে যারা কুফরী করেছে, তারা নিকৃষ্টতম সৃষ্টি।”- ( কোরান, ৯৮/৬)
এই তিনটি আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হলো অমুসলিমরা পৃথিবীর নিকৃষ্ট অর্থাৎ ঘৃণ্য সৃষ্টি। তো এই ঘৃণ্য সৃষ্টি সম্পর্কে কোরানে আল্লা কী বলেছে, সেটা আর এক বার দেখে নিন,
“যারা কুফরীর আচরণ অবলম্বন করেছে এবং কুফরী অবস্থাতেই মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে, তাদের উপর আল্লাহ ফেরেশতা ও সমগ্র মানুষের অভিশাপ পড়বে।”- (কোরান, ২/১৬১)
এইখানে স্পষ্ট করে বলা হলো যে, যারা কুফরীর আচরণ অবলম্বন করেছে, অর্থাৎ ইসলামকে স্বীকার করে নি এবং ঐ অবস্থাতেই মৃত্যু বরণ করেছে তাদের উপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সমগ্র মানুষের অভিশাপ পড়বে, এককথায় এখানে বলা হচ্ছে অমুসলিমরা অভিশপ্ত। এখানে একটা বিষয় একটু স্ববিরোধী লাগছে যে, অমুসলিমদের উপর আল্লা এবং ফেরেশতাদের অভিশাপ পড়বে ঠিক আছে, কিন্তু পৃথিবীর সমগ্র মানুষের অভিশাপ অমুসলিমদের উপর পড়বে কেনো ? কেউ কি নিজেরাই নিজেদেরকে অভিশাপ দেয় ? মুসলমানদের অভিশাপ অমুসলমানদের উপর পড়তে পারে, কিন্তু মানুষের অভিশাপ অমুসলমানদের উপর পড়বে কেনো ? কেননা, এটা তো চিরসত্য যে, পৃথিবীতে যারা মানুষ- তারা মুসলমান নয়, আর যারা মানুষ নয়- তারা মুসলমান।
অভিশপ্ত সম্পর্কে কোরান যা বলেছে, তা ইসলামের তাত্ত্বিক কথাবার্তা। এই সব তাত্ত্বিক কথাবার্তায় পৃথিবীর অমুসলিমদের কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ, কোরানের সূত্র অনুযায়ী পৃথিবীর কিছুই চলে না আর কোরানের আল্লাও পৃথিবী চালায় না। যদি চালাতো, তাহলে কোরানের মাধ্যমে যে আল্লা ঘোষণা দিয়েছে, ইসলাম তার নিকট একমাত্র মনোনীত ধর্ম এবং ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাইলে সে মেনে নেবে না; তাহলে এই ঘোষণার ১৪০০ বছর পরেও পৃথিবীর ৮০% এরও বেশি লোক এখনও অমুসলিম অর্থাৎ অভিশপ্ত জনগোষ্ঠীর লোক থাকতো না। ইসলাম একটি চরম ও চুড়ান্ত মিথ্যা, তাই ইসলামের কোনো কিছু ছাড়াই পৃথিবীর যে কোনো লোক, সমাজ ও রাষ্ট্র বেশ সুন্দর ভাবে চলতে পারে। শুধু তাই নয়, যেখানে ইসলাম আছে সেথানেই পৃথিবীর যাবতীয় অশান্তি ও সমস্যা। তাই ইসলাম মানবতার সমাধান নয়, ইসলাম মানবতার যন্ত্রণা।
এবার অভিশপ্ত শব্দের প্র্যাকটিক্যাল প্রয়োগ ও তার অবস্থার দিকে নজর দেওয়া যাক। পৃথিবীতে যারা অভিশপ্ত, তাদের উপর নানারকম বিপর্যয় নেমে আসে, এই বিপর্যয় প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়, মনুষ্য সৃষ্ট বিপর্যয়। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মানুষের কোনো হাত থাকে না, তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় কে কোন ধর্মের লোক বা কোথায় মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, প্যাগোডা আছে- সেটা প্রকৃতি বিবেচনা করে না। অভিশপ্ত মানুষের উপর বিপর্যয় নেমে আসে তাদের নিজেদের কৃতকর্মের ফলে, যা সম্পূর্ণরূপেই মনুষ্য সৃষ্টি। এই সূত্রে পৃথিবীতে যারা- অপুষ্টি, দারিদ্র, দুর্ভিক্ষ ও অশিক্ষায় ভুগছে, নিজেদের মধ্যে রক্তপাত ও হানাহানিতে লিপ্ত, যাদের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই, যারা নিজেদের ধর্মস্থানেও সুরক্ষিত নয়, যারা ভুল বিশ্বাসে চালিত হয়ে দুর্লভ মানব জীবনকে তুচ্ছ জ্ঞান করে নিজের জীবনকে আত্মঘাতী হামলার মাধ্যমে শেষ করে দেয়, যাদের জীবনের উদ্দেশ্য পৃথিবীতে ভালোভাবে বাঁচা নয় শুধু বংশবৃদ্ধি করে নিজেদের সংখ্যা বাড়ানো আর যেন তেন ভাবে মরা- এই পৃথিবীতে অভিশপ্ত তারাই। এখন আপনারাই বিবেচনা করুন, পৃথিবীতে কারা অভিশপ্ত ? কাদের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই ? কারা নিজেদের মধ্যে হানাহানি-রক্তপাতে লিপ্ত ? উত্তর পাবেন শুধু একটাই, আর তা হলো মুসলমান। প্রকৃতপক্ষে মুসলমানরাই হলো পৃথবীর একমাত্র অভিশপ্ত জাতি, আর তাই মুসলমানরাই হচ্ছে প্রকৃত মালাউন।
এবার মালাউন প্রসঙ্গে তর্কযুদ্ধের কিছু রসদ আপনাদের দিই। যখনই কোনো মুসলমানের মুখে মালাউন শব্দ শুনবেন, সেটা আপনাকে বলুক বা অন্যকে বলুক, সঙ্গে সঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করবেন, বল, মালাউন যে বললি, মালাউন শব্দের অর্থ কী ?
আমি নিশ্চিত ৯৮% মুসলমান এই শব্দের কোনো অর্থ বলতে পারবে না এবং আপনার প্রশ্ন শুনে থতমত খেয়ে যাবে। অথবা খুব বেশি হলে বলতে পারে, মালাউন মানে হিন্দু। তখন বলবেন, তুই হিন্দুকে মালাউন বললি, এখন তোকে যদি কেউ ম্লেচ্ছ বা যবন বলে তোর কেমন লাগবে ? হিন্দুরা সংখ্যায় কম বলে তাদেরকে যা খুশি তাই বলবি ? দেখবেন, ও চুপ মেরে গেছে। এরপর তাকে বলবেন, তুই তো জানিস না, শোন, মালাউন একটি আরবি শব্দ; এর অর্থ অভিশপ্ত। তো পৃথিবীতে অভিশপ্ত কারা ? যারা অপুষ্টি, দারিদ্র, অনাহার, দুর্ভিক্ষ, অশিক্ষা, কুশিক্ষায় ভুগে তারাই অভিশপ্ত। আর যারা এসবে ভুগে না তারা অভিশপ্ত নয়। এখন বল পৃথিবীর চারটি প্রধান ধর্মের মানুষের মধ্যে কারা ভালো অবস্থায় আছে ? কারা বেশি উন্নতি করেছে, করছে আর কারা তুলনামূলক খারাপ অবস্থায় আছে ? দেখবেন, আপনার কথা শুনে ওর মুখ বন্ধ হয়ে গেছে, ও কিছু বলতে পারবে না, তখন আপনাকেই বলতে হবে, এবং বলবেন, পৃথিবীর সকল ধর্মের মানুষের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে মুসলমানরা। এখনও পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম দেশ গরীব, এখনও প্রতিদিন যত লোক পৃথিবীতে না খেয়ে থাকে তারদের সবাই প্রায় মুসলমান; আর যারা না খেয়ে মরে তারাও মুসলমান। এখন পৃথিবীতে যত সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে, আর তাতে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে বেশির ভাগই মুসলমান, যারা মারছে তারাও মুসলমান, আর এসব কারণে সারা পৃথিবীর লোক এখন মুসলমানদেরকে খারাপ নজরে দেখছে, অনেকে তো প্রকাশ্যে ঘৃনা করা শুরু করেছে; এখন বল, পৃথিবীতে অভিশপ্ত কারা ? আর কারা প্রকৃতপক্ষে মালাউন ?
সাধারণভাবে গালি দেওয়ার জন্য তো হিন্দুদেরকে তোরা মালাউন বলিস, আগে না জানলেও এখন তো জানলি- মালাউন মানে অভিশপ্ত। তাহলে বল হিন্দুরা কোন দিক থেকে অভিশপ্ত ? হিন্দুরা কি মুসলমানদের চেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ? হিন্দুদের সামাজিক আচার, রীতিনীতি কি তোদের চেয়ে খারাপ ? যখন যে কথা বলবি, তখন সেটার মানে বুঝে ভেবে চিন্তে বলবি, মালাউন বলে গালি দিচ্ছিস হিন্দুদেরকে, কিন্তু সেই গালি এসে পড়ছে তোদের উপরই। কারণ প্রকৃত মালাউন হিন্দুরা নয়, প্রকৃত মালাউন তোরা, মুসললমানরা।
যখন যুদ্ধে নামা ই তখন বেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নামা ই ভালো, তাই এত কথা বললাম। আমার মনে হয় না, বাস্তবে এত কথা বলার প্রয়োজন হবে। মালাউন শব্দের অর্থ এবং প্রকৃতপক্ষে মালাউন কারা, এটা সংক্ষেপে তুলে ধরতে পারলেই দেখবেন মুসলমানদের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে এবং আপনার জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে।
শেষে Sri Sujit নামের আমার এক পাঠক বন্ধুর একটি কমেন্ট দিয়ে লেখাটি শেষ করছি-
“মালাউন শব্দটি আরবি যার বাংলা অর্থ হলো অভিশপ্ত বা সৃস্টিকর্তা দ্বারা অভিশাপ প্রাপ্ত। ইসলাম ধর্ম মতে মুসলিমদের আদি পিতামাতা হলো হযরত আদম ও হাওয়া বিবি। আদম হাওয়া বেহেশতে থাকতো একদিন আদম হাওয়া বিবির গন্দম ফল খাওয়ার ফলে সৃস্টিকর্তা (আল্লা) দ্বারা অভিশাপ প্রাপ্ত হয়ে পৃথিবীতে আসে বেহেশ্ত থেকে বিতাড়িত হয়ে।তো এখন কথা হলো মুসলিমদের আদি পিতা মাতা যেহেতু আদম হাওয়া তো এখন সব মুসলিমরাই অভিশপ্ত বা(মালাউন)। শুকরের বাচ্চা মুসলিম, হিন্দুদেরকে মালাউন বলার আগে একবার ভেবেনিস মালাউন প্রকৃতপক্ষে কারা ?
জয় হিন্দ।
উপরে, আল্লা যে তার সৃষ্ট জীবদেরকে ঘৃণা করে, সেই কথা বলেছি, এখন কোরান হাদিস থেকে দেখে নিন সেগুলো :
বানর = “তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমালংঘন করেছিল। আমি বলেছিলামঃ তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও। - (কোরান, ২/৬৫)
বানার ও শুকর = ‘যাদের কতককে বানর ও শূকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন।’- ( কোরান, ৫/৬০)
কুকুর = কালো কুকুর মানেই শয়তান (Sahih Muslim 4:1032 )
কুকুর = ফেরেশতা ঢুকেন না সেই ঘরে, যে ঘরে কোনো কুকুর বা ছবি রয়েছে।- (বুখারি, ৪/৫৪/৫৩৯)
কুকুর = আব্দুল্লাহ বিন উমর বর্ণিত, হুযুর বলিয়াছেন কুকুরকে মারিয়া ফেলা উচিত। ( বুখারী, ৫৪/ ৫৪০)
সাপ = আয়শা হইতে বর্ণিত, হুযুর লেজ-কাটা সাপ মারিয়া ফেলিবার নির্দেশ দিয়াছেন এবং বলিয়াছেন যে, এই জাতীয় সাপ চক্ষুর জ্যোতি নষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়। – ( বুখারী, ৫৪/ ৫২৭)
সাপ = আয়শা হইতে বর্ণিত, হুযুর নির্দেশ দিয়াছেন - পিঠে দুইটি দীর্ঘ সাদা রেখাবিশিষ্ট সাপ মারিয়া ফেলো। কেননা এই জাতীয় সাপ চক্ষুর দৃষ্টি শক্তি নষ্ট করে ও গর্ভপাত ঘটায়। - ( বুখারী, ৫৪/ ৫২৮)
উপরে কোরান-হাদিসের রেফারেন্স এক সাথে দিয়েছি, কেউ কেউ বলতে পারে, হাদিসের কথা তো আর আল্লার কথা নয়, তাহলে তার দায় আল্লার ঘাড়ে বর্তাবে কেনো ? যারা এটা মনে করছে, তাদের জন্য বলছি, ইসলামের মুহম্মদ ও আল্লা একই ব্যক্তি, আল্লার রেফারেন্স দিয়ে মুহম্মদ সেই কথা কোরানের অনেক জায়গায় আকার ইঙ্গিতে বলেও গেছে, একটা মাত্র উদাহরণ দিচ্ছি-
“যে ব্যক্তি রসূলকে মেনে চললো, সে মূলত আল্লাহরই আনুগত্য করলো।” (কোরান, ৪/৮০)

No comments:
Post a Comment