চৈতন্যদেবের ভয়াবহ নারী বিদ্বেষী নীতি :
আপনারা অনেকেই জানেন যে চৈতন্যদেব তাঁর জীবনে দুটো বিয়ে করেছিলেন, প্রথমে লক্ষ্মী প্রিয়াকে, পরে বিষ্ণু প্রিয়াকে। লক্ষ্মী প্রিয়াকে বিয়ের কিছুদিন পরই চৈতন্যদেব, নদীয়া থেকে পূর্ববঙ্গে অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে এসেছিলেন হরি নাম প্রচার করতে, এই সময় লক্ষ্মী প্রিয়ার মৃত্যু হয়। এই মৃত্যু সম্পর্কে বলা হয় যে তিনি সর্প দংশনে মারা গেছেন, কিন্তু এটি একটি ডাহা মিথ্যা প্রচার। চৈতন্যদেবের চরিত্রকে সাফসুতরো রাখতে চৈতন্যদেবের অনুসারীরা এটা প্রচার করেছে, কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনায় আমি মনে করি লক্ষ্মী প্রিয়া আত্মহত্যা করেছে, যার কিছু ইঙ্গিত আছে চৈতন্যচরিতামৃত এবং চৈতন্যভাগবত গ্রন্থে।
এ প্রসঙ্গে চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থের ষোড়শ পরিচ্ছদে বলা আছে-
"এই মত বঙ্গে প্রভু করে নানা লীলা।
এথা নবদ্বীপে লক্ষ্মী বিরহে দুঃখী হৈলা।।
প্রভুর বিরহ-সর্প লক্ষ্মীরে দংশিল।
বিরহ সর্প বিষে তাঁর পরলোক হৈল।।"
-এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, লক্ষ্মী প্রিয়া যদি সর্প দংশনেই মারা যায়, তাহলে সেটা বর্ণনা করতে গিয়ে তার সাথে বিরহ শব্দটা জুড়ে দেওয়া হলো কেনো ? এখানে বিরহের প্রসঙ্গ আনায় এটা স্পষ্ট যে বিয়ের পর পরই লক্ষ্মীকে সময় না দিয়ে, তাকে ফেলে পূর্ববঙ্গে চলে যাওয়ায় লক্ষ্মী একাকীত্বে ভুগছিলো; কারণ, বিয়ের পর প্রত্যেক মেয়েই চায় তার স্বামীকে অন্তত কিছুদিন একান্তে কাছে পেতে, যাতে তার মনের ও দেহের জ্বালার নিরসন হয়। কিন্তু সেদিকে চৈতন্যদেব কোনো নজর না দিয়ে তাকে ফেলে পূর্ববঙ্গে চলে যায়, নিজের প্রতি স্বামীর এই অনাদর ও অবহেলাকে সহ্য করতে না পেরে, ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া না করে ভগ্ন স্বাস্থ্য নিয়ে লক্ষ্মী প্রিয়া আত্মহত্যা করে, এই বিষয়টিকে লুকানোর জন্য লক্ষ্মী প্রিয়ার মৃত্যুর ঘটনাকে সর্প দংশন বলে প্রচার করা হয়েছে, কিন্তু খুনী কাউকে খুন করার পর যেমন তার খুনের কিছু প্রমাণ রেখে যায়, তেমনি লক্ষ্মী প্রিয়ার মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সর্প দংশনের সাথে বিরহ শব্দটা জুড়ে দিয়ে কৃষ্ণদাস কবিরাজ তাঁর গ্রন্থে সেই প্রমাণটা রেখে গিয়েছেন।
তাহলে এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে যে, লক্ষ্মী প্রিয়া কিভাবে আত্মহত্যা করেছে ?
এ ব্যাপারে কিছু ইঙ্গিত আছে বৃন্দাবন দাসের লেখা চৈতন্যভাগবত গ্রন্থে, তিনি তার গ্রন্থে লক্ষ্মী প্রিয়ার মৃত্যু প্রসঙ্গে সর্প দংশন জাতীয় কিছু বলেন নি, বৃন্দাবন দাস এ সম্পর্কে তাঁর গ্রন্থের আদি খণ্ডের দশম অধ্যায়ে বলেছেন-
"এথা নবদ্বীপে লক্ষ্মী প্রভুর বিরহে।
অন্তরে দুঃখিতা দেবী কারে নাহি কহে ।।
নিরবধি করে দেবী আইর সেবন।
প্রভু গিয়াছেন হৈতে নাহিক ভোজন।।
নামেরে সে মাত্র অন্ন পরিগ্রহ করে।
ঈশ্বর বিচ্ছেদে বড় দুঃখিতা অন্তরে।।
একেশ্বর সর্বরাত্রি করেন ক্রন্দন।
চিত্তে স্বাস্থ্য লক্ষ্মী না পায়েন কোন ক্ষণ।।
ঈশ্বর বিচ্ছেদ লক্ষ্মী না পারি সহিতে।
ইচ্ছা করিলেন প্রভুর সমীপে যাইতে।।
নিজ প্রতিকৃতি দেহ থুই পৃথিবীতে।
চলিলেন প্রভু পাশে অতি অলক্ষিতে।।
প্রভু পাদপদ্ম লক্ষ্মী করিয়া হৃদয়।
ধ্যানে গঙ্গা তীরে দেবী করিলা বিজয়।।"
- খেয়াল করুন, কৃষ্ণদাস কবিরাজ, তার চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে বললেন সর্প দংশনে লক্ষ্মী প্রিয়া মারা গেছেন, কিন্তু বৃন্দাবন দাস তার চৈতন্যভাগবত গ্রন্থে সর্প দংশনের কোনো উল্লেখই করেন নি, তিনি বললেন- প্রভুর বিরহে অনাহারে ভগ্ন স্বাস্থ্য ও ভগ্ন মন নিয়ে গঙ্গা তীরে লক্ষ্মী নিজেকে শেষ করে দিয়েছে, এ থেকে তো এটাই প্রমাণিত হয় যে লক্ষ্মী প্রিয়া গঙ্গার জলে ডুবে আত্মহত্যা করেছেন এবং এর মূল কারণ স্বামীর বিরহ।
এখানে আমার প্রশ্ন হচ্ছে- নববিবাহিতা স্ত্রীকে এভাবে একা রেখে গিয়ে তাকে যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে তার মৃত্যুর কারণ হওয়া কি চৈতন্যদেবের উচিত হয়েছে ? যেহেতু তিনি বিয়ে করেছেন, সেহেতু দীর্ঘদিনের সফরে গেলে তাকে সাথে নিয়ে যাওয়া বা সাথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হলে মাঝে মাঝে তার নিজের বাড়ি ফেরা কি তার উচিত ছিলো না ? অবশ্য চৈতন্যদেব বাড়ি ফিরেই বা কী করতেন ? পুরুষকে তার স্ত্রীর কাছে আসতে হয় প্রধানত দৈহিক কামনা মেটানোর জন্য, দ্বিতীয় সংসার ঠিকমতো চলছে কিনা, তা দেখার জন্য; চৈতন্যদেবের কি তার কোনো প্রয়োজন ছিলো ? আমার তো মনে হয়, না। যদি চৈতন্যদেবের দৈহিক চাহিদা মেটানোর কোনো প্রয়োজন না ই ছিলো, তাহলে এখানে আমা্র প্রশ্ন হচ্ছে তিনি বিয়ে করতে গেলেন কেনো ? আর বিয়ে করেই বা তাদেরকে সময় দিলেন না কেনো ? চৈতন্য অনুসারীরা প্রচার করে যে তিনি অবতার বা কলিযুগের ভগবান, তাহলে তিনি কি জানতেন না যে তার বিয়ে করার কোনো প্রয়োজন নেই, চৈতন্যদেব যদি ভগবান হতেন, তাহলে অবশ্যই তিনি তার ভবিষ্যত জানতেন, তাহলে তিনি কেনো একজন নয়, দুই জন নারীর জীবনকে ব্যর্থ বা ধ্বংস করে দিলেন ? অবতার বা ভগবান তো দূরের কথা, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেও কি চৈতন্যদেবের সেটা উচিত হয়েছে ?
উপরে লক্ষ্মী প্রিয়ার কথা বললাম, তিনি কোন শোকে মারা গেছেন বা আত্মহত্যা করেছেন সেটাও বর্ণনা করার চেষ্টা করলাম। এছাড়াও এটা বহুল প্রচলিত যে, চৈতন্যদেব, লক্ষ্মী প্রিয়া মারা যাওয়ার কিছু দিন পরেই নবদ্বীপ ফেরেন এবং পুনরায় বিষ্ণু প্রিয়াকে বিয়ে করেন। কিন্তু তিনি বিষ্ণু প্রিয়ার সাথে কী আচরণটা করলেন ? তিনি রাতের আঁধারে ঘুমন্ত স্ত্রীকে বিছানায় একা ফেলে, সন্ন্যাস নেওয়ার নামে তার কাছ থেকে পালিয়ে গেলেন। এই কারণে চৈতন্যদেবকে বিয়ে করে বিষ্ণু প্রিয়ার জীবনও ব্যর্থ বা ধ্বংস হলো। চৈতন্যদেব কর্তৃক পরিত্যক্ত হওয়ার পর বিষ্ণুপ্রিয়ার জীবনে কী ঘটেছিলো সে ব্যাপারে চৈতন্যচরিতামৃত এবং চৈতন্যভাগবত গ্রন্থে কোনো কিছুই বলা নেই। তবে আমার মনে হয়- বিষ্ণু প্রিয়া, লক্ষ্মী প্রিয়ার মতো বিদ্রোহিনী ছিলেন না, তিনি নীরবে সব কষ্ট সয়ে প্রাকৃতিকভাবেই ইহলীলা সমাপ্ত করেছেন।
বিষ্ণুপ্রিয়া প্রসঙ্গেও চৈতন্যদেব সম্পর্কে এই প্রশ্নগুলো তোলা যায় যে, তাঁর উদ্দেশ্যই যদি ছিলো সন্ন্যাস গ্রহণ, তাহলে তিনি তো লক্ষ্মী প্রিয়ার থেকে মুক্তি পেয়েই গিয়েছিলেন, তাহলে আবার বিষ্ণু প্রিয়াকে বিয়ে করতে গেলেন কেনো ? আর বিয়েই যদি করলেন, তাহলে চোরের মতো চুপি চুপি তার কাছ থেকে রাতের আঁধারে পালিয়ে গেলেন কেনো ? কোনো মানুষ তার স্ত্রীর কাছ থেকে পালাতে পারে দুটি কারণে- স্ত্রীর ভরণ পোষণ এবং তার যৌন চাহিদা মেটাতে না পারলে; চৈতন্য ভক্তদের কাছে আমার প্রশ্ন, চৈতন্যদেবের মধ্যে কোন গুনের অভাব ছিলো বলে আপনার মনে হয় ? সবচেয়ে বড় কথা মানুষকে দায়িত্ব নিলে তা পালন করতেই হয়, চৈতন্যদেব সজ্ঞানে জেনে শুনে একটি নয় দুটি বিয়ে করেছিলেন, বিবাহ করা মানে বিশেষ ভাবে তাকে বহন করা বা তার দায়িত্ব পালন করা, চৈতন্যদেব তার দুজন স্ত্রীর প্রতিই কোন দায়িত্ব পালন করেছিলেন ?
এছাড়াও আমরা জানি, চৈতন্যদেবের বড়ভাই, আগেই সন্ন্যাস নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন, চৈতন্যদেবের পিতাও মারা গিয়েছিলেন, চৈতন্যদেবের মাকে দেখা শোনা করার মতো চৈতন্যদেব ছাড়া আর কেউ ছিলো না; তাহলে চৈতন্যদেব কিভাবে তার মায়ের দায়িত্ব পালন না করে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ? একদিকে মা, অন্যদিকে স্ত্রী, এই দুই দুইজন নারী, যারা সামাজিকভাবে অর্থ এবং দৈহিক শক্তিতে পুরুষের তুলনায় কিছুটা অসহায়, তাদের দায়িত্ব পালন না করে চৈতন্যদেব তাদেরকে কার ভরসায় রেখে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ?
মুসলমানরা ধর্মের নামে গু পর্যন্ত খেতে পারে, যেমন ২০১৪/১৫ সালে ইরাক সিরিয়ায় অনেক মুসলিম নারী গিয়েছিলো জিহাদীদের যৌনসেবা দেওয়ার জন্য, এরকম মনোবৃত্তিকে আমি ধর্মের নামে গু খাওয়াই বলি; চৈতন্যদেবের প্রভাবে প্রভাবিত বৈষ্ণব সমাজ মুসলমানদের চেয়ে কম যায় না, এরা ধর্মের নামে মল-মূত্র না খেলেও আবর্জনা খায়, তাই যেই তারা জানতে পারে যে চৈতন্যদেব সন্ন্যাস গ্রহণের জন্য বাড়ি এবং তার স্ত্রী ও মাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো, অমনি চৈতন্যদেবের সকল দোষ তাদের কাছে গুনে পরিণত হয়। কিন্তু মা ও স্ত্রীদের প্রতি দায়িত্বে অবহেলা করে চৈতন্যদেব যে মহা অপরাধ করেছে, এটা অন্ধ চৈতন্যভক্তদের চোখেই পড়ে না।
চৈতন্যদেবের এই অপরাধকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার আগে একবার ভাবুন তো, আপনার পিতা মারা গেছে এবং আপনার মাকে দেখাশোনার আপনি ছাড়া কেউ নেই, এই অবস্থায় আপনি নিজে সদ্য বিবাহিত স্ত্রী ও মাকে ফেলে সন্ন্যাস গ্রহণের নামে বাড়ি থেকে চলে গেলেন, লোকজন আপনার সম্পর্কে কী বলবে বা কী ভাববে ? প্রথমেই তো সবাই বলবে, সন্ন্যাসই যদি নিবি, তাহলে বিয়ে করতে গেলি কেনো ? এভাবে একটি মেয়ের জীবন নষ্ট করার মানে কী ? আরও বলবে, এখন তোর মা ও বউকেই বা কে দেখবে ? ঠিক এই প্রশ্নগুলো চৈতন্যদেব সম্পর্কে সবসময় তোলা যায় বা তোলা যাবে। এমন কোনো চৈতন্যভক্ত নেই যে, এসব প্রশ্নের তারা যুক্তিসঙ্গত উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
মা ও স্ত্রীর প্রতি দায়িত্বে অবহেলা করায় চৈতন্যদেব নিজে অধার্মিক, এমন অধার্মিককে তো মানুষ হিসেবেই গণ্য করা উচিত নয়, অথচ বৈষ্ণবসমাজের সাথে সাথে অবৈষ্ণবসমাজও বর্তমানে তাকে অবতার বা ভগবান হিসেবে পূজা করে আসছে, এটা শুধু পাপ নয়, মহাপাপ। বাঙ্গালি হিন্দু সমাজের দুর্গতির মূল কারণ আসলে এটাই, পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণকে ছেড়ে বা পাশে রেখে চৈতন্যদেবকেই ভগবান জ্ঞানে পূজা করা।
এই পোস্টের নাম দিয়েছি চৈতন্যদেবের নারী বিদ্বেষী নীতি এবং যে ঘটনা লিখবো বলে এই প্রবন্ধটি লিখতে শুরু করেছিলাম এবার সেদিকে নজর দিই; ঘটনাটা জানার পর বুঝতে পারবেন, চৈতন্যদেব কী ভয়াবহ পরিমান নারী বিদ্বেষী ছিলেন এবং প্রকৃত বৈরাগী বা বৈষ্ণব কাদের বলে ?
এই ঘটনাটির বর্ণনা পাবেন চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থের অন্ত্যলীলার দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে। মূল কাহিনী গদ্যাকারে বর্ণনার মাঝে মাঝে আমি চৈতন্যচরিতামৃত থেকেও দুচারটি চরণ তুলে দিয়ে আমি আমার কথার সত্যতার প্রমাণ দেবো।
পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ার নিকটবর্তী উত্তর ২৪ পরগণার হালিশহরের জমিদার শ্রেণীর লোক ছিলেন শতানন্দ আচার্য্য, তার পুত্র ছিলেন ভগবান আচার্য্য। ইনি চৈতন্যদেবের সংস্পর্শে এসে ঘর সংসার ফেলে বা ভুলে, নীলাচলে গিয়ে চৈতন্যদেবের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং তার পাশাপাশিই থাকতে শুরু করেন। অন্যদিকে শিখি মাহাতি ছিলেন পুরীর শ্রীজগন্নাথদেবের মন্দিরের হিসাব রক্ষক, ইনি ছিলেন চৈতন্যদেবের একান্ত ভক্ত, এই শিখি মাহাতির বোন মাধবীও ছিলেন চৈতন্যদেবের একনিষ্ঠ ভক্ত, এই ঘটনার সূত্রপাত এই মাধবীকে নিয়ে, ঘটনার সময় যিনি ছিলেন বৃদ্ধা। এই কাহিনীর প্রধান চরিত্র হলেন হরিদাস, ইনি সিন্ধুকূল নিবাসী এবং ইনি ছোট হরিদাস নামেও খ্যাত।
তো একদিন ভগবান আচার্য্য,
"প্রভুকে কৈলা নিমন্ত্রণ।
ঘরে ভাত করি করে বিবিধ ব্যঞ্জন।।
ছোট হরিদাস নাম প্রভুর কীর্তনীয়া।
তাঁহারে কহেন আচার্য্য ডাকিয়া আনিয়া।
মোর নামে শিখি মাহিতীর ভগ্নিস্থানে গিয়া।
ওরাইয়া চাল এক মান আনহ মাগিয়া।।
মাহিতীর ভগিনী সেই নাম মাধবী দেবী।
বৃদ্ধা তপিস্বিনী আর পরম বৈষ্ণবী।।"
-তো এই বৃদ্ধা তপস্বিনী আর পরম বৈষ্ণবী মাধবী শুধু নয়, নারীদের ব্যাপারেই চৈতন্যদেবের কী মনোভাব ছিলো, দেখুন সেটা নিচে-
"মধ্যাহ্নে আসিয়া প্রভু ভোজনে বসিলা।
শাল্যন্ন দেখি প্রভু আচার্য্যে পুছিলা্।।
উত্তম অন্ন এ তণ্ডুল কাঁহাতে পাইলা।
আচার্য্য কহে মাধবী দেবী পাশে মাগিয়া আনিলা।।
প্রভু কহে কোন যাই মাগিয়া আনিল।
ছোট হরিদাসের নাম আচার্য্য করিল।।
অন্ন প্রশংসিয়া প্রভু ভোজন করিলা।
নিজ গৃহে আসি গোবিন্দেরে আজ্ঞা দিলা।।
আজ হইতে এই মোর আজ্ঞা পালিবা।
ছোট হরিদাসে ইহা আসিতে না দিবা।।
তারপর-
দ্বার মানা হৈল হরিদাস দুঃখী হৈল মনে।
কি লাগিয়া দ্বার মানা কেহ নাহি জানে।।
তিন দিন হরিদাস করে উপবাস।।
স্বরূপাদি আসিয়া পুছিলা মহাপ্রভুর পাশ।।
কোন অপরাধ প্রভু কৈল হরিদাস।
কি লাগিয়া দ্বার মানা করে উপবাস।।
অর্থাৎ, এই ঘটনাটির সারস্ংক্ষেপ হলো- চৈতন্যদেবের এক শিষ্য ভগবান আচার্য্য, একদিন নিজ বাড়িতে চৈতন্যদেবকে নিমন্ত্রণ করে, কিন্তু রান্না করতে গিয়ে দেখে চাল কম, তাই সে, চৈতন্যদেবের আরেক ভক্ত-শিষ্য ছোট হরিদাসকে বলে, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের হিসেব রক্ষক শিখি মাহাতির বোন মাধবী দেবীর কাছে গিয়ে আমার নাম করে কিছু চাল নিয়ে এসো, ছোট হরিদাস এই আজ্ঞা পালন করে। রান্না বান্না শেষ হলে দুপুর বেলা চৈতন্যদেব খেতে বসে জিজ্ঞেস করে এমন সুন্দর চাল সে কোথায় পেলো। ভগবান আচার্য্য বলে, শিখি মাহাতির বোন মাধবী দেবীর কাছ থেকে আনিয়েছি। চৈতন্যদেব বলে- সেই চাল কে এনেছে ? ভগবান আচার্য্য বলে- ছোট হরিদাস।
এরপর চৈতন্যদেব অন্নের প্রশংসা করে আহার সেরে নিজ আস্তানায় যায় এবং গোবিন্দ নামের একজনকে আদেশ দেয় যে, ছোট হরিদাস যেন এই গৃহে ঢুকতে না পারে। কিন্তু ছোট হরিদাসসহ কেউ বুঝতে পারে না আসলে ছোট হরিদাসের অপরাধটা কী। ছোট হরিদাস তিন দিন ধরে উপবাস করছে, তার তো চৈতন্যদেবের বাড়িতে ঢোকা নিষেধ, সে ঢুকতে পারছে না। অন্যরা চৈতন্যদেবের কা্ছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, প্রভু, হরিদাসের অপরাধটা কী ? কেনো তার এই শাস্তি ?
এরপর-
"প্রভু কহে বৈরাগী করে প্রকৃতি সম্ভাষণ।
দেখিতে না পারি আমি তাঁহার বদন।।
দুর্ব্বার ইন্দ্রিয় করে বিষয় গ্রহণ।
দারবী প্রকৃতি হরে মহামুনির মন।।"
অর্থাৎ- চৈতন্যদেব এখানে বলেছেন, বৈরাগী বা বৈষ্ণব হয়ে প্রকৃতি অর্থাৎ কোনো নারীকে সম্ভাষণ করা বা ডাকা যাবে না, যে এমন করে আমি তার মুখ দেখতে চাই না। প্রচণ্ড শক্তিশালী ইন্দ্রিয় বিষয় বাসনায় মত্ত থাকে, দারবী অর্থাৎ কাষ্ঠনির্মিত নারী মূর্তিও মহামুনির মন হরণ করতে পারে। তাই নারীকে সম্ভাষণ করে চাল চেয়ে আনায় ছোট হরিদাসের কোনো ক্ষমা নেই।
এ প্রসঙ্গে চৈতন্যদেব আরো বলে,
"ক্ষুদ্র জীবসব মর্কট বৈরাগ্য করিয়া।
ইন্দ্রিয় চরাঞা বুলে প্রকৃতি সম্ভাষিয়া।"
যা হোক, এরপর আরেক দিন-
"আর দিন সবে মিলি প্রভুর চরণে।
হরিদাস লাগি কিছু কৈল নিবেদনে।।
অল্প অপরাধ প্রভু করহ প্রসাদ।
এবে শিক্ষা হৈল, না করিবে অপরাধ।।
প্রভু কহে মোর বশ নহে মোর মন। (ইনি নাকি আবার ভগবান, মন যার বশে থাকে না।)
প্রকৃতি সম্ভাষী বৈরাগী না করে দর্শন।।
নিজ কার্য্যে যাহ সবে, ছাড় বৃথা কথা।
পুনঃ যদি কহ আমা না দেখিবে হেথা।
এত শুনি সবে নিজ কর্ণে হস্ত দিয়া।
নিজ নিজ কার্য্যে সব চলিল উঠিয়া।।"
খেয়াল করুন, এখানে চৈতন্যদেব বললেন, হরিদাসের ক্ষমা প্রসঙ্গে কেউ যদি তাকে কিছু বলে, "পুনঃ যদি কহ আমা না দেখিবে হেথা" বলে সবাইকে হুমকি দিয়ে বললো এখান থেকে সে চলে যাবে; এইরকম ঘটনা এখানেই শেষ নয়, চৈতন্যদেবের গুরুস্থানীয় পরমানন্দ পুরী বা পুরী গোঁসাঞ্রি একবার তাঁর কাছে এলে চৈতন্যদেব জিজ্ঞেস করলেন,
"কেনে কৈলে আগমন।
'হরিদাসে প্রসাদ লাগি' কৈলে নিবেদন।।
শুনি মহাপ্রভু কহে শুনহ গোঁসাঞ্রি।
সব বৈষ্ণব লঞ্রা তুমি রহ এই ঠাঞ্রি।।
মোরে আজ্ঞা দেহ মুই যাঙ আলালনাথ।
একলা রহিব তাঁহা গোবিন্দমাত্র সাথ।।
এত বলি প্রভু গোবিন্দেরে বোলাইলা।
পুরীকে নমস্কার করি উঠিয়া চলিলা।।"
-এরপর কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না দেখে, সবাই মিলে হরিদাসকে সান্ত্বনা দেয় যে- প্রভু যা করছে তা তোমার ভালোর জন্যই করছে। তুমি স্নান ভোজন ত্যাগ করে বসে থেকো না; কারণ, তুমি যদি হঠকারী করে এসব করতে থাকো, প্রভুও হঠকারী করবে, তুমি স্নানভোজন করো, প্রভুর রাগ এমনিতেই যাবে। এরপর চৈতন্যদেব যদি কখনো তার গৃহ থেকে বের হয়ে জগন্নাথ দর্শনে যান, হরিদাস দূরে দূরে দাঁড়িয়ে চৈতন্যদেবকে ফলো করতে থাকে, ভয়ে কাছে যায় না। এক নারীর কাছে থেকে চাল চেয়ে আনায়, হরিদাসের প্রতি চৈতন্যদেবের এই আচরণ দেখে চৈতন্যদেবের শিষ্যরা বাস্তবে স্ত্রীর মুখ দেখা তো দূরের কথা, স্বপ্নেও সে কথা ভাবা ছেড়ে দিয়েছিলো, যে ঘটনার কথা কৃষ্ণদাস কবিরাজ তাঁর গ্রন্থে বলেছেন, এভাবে-
"দেখি ত্রাস উপজিল সব ভক্তগণে।
স্বপ্নেহ ছাড়িল সবে স্ত্রী সম্ভাষণে।।
এই মত হরিদাসের এক বৎসর গেল।
তবু মহাপ্রভুর মনে প্রসাদ নহিল।।
রাত্রি অবশেষ প্রভুরে দণ্ডবৎ হইয়া।
প্রয়াগেতে গেল, কারে কিছু না বলিয়া।।
প্রভুপাদ প্রাপ্তি লাগি সংকল্প করিল।
ত্রিবেণী প্রবেশ করি প্রাণ ছাড়িল।।"
তারপর হরিদাসকে কোথাও না দেখে সবাই অনুমান করলো যে হরিদাস বোধহয় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে, কিন্তু কিছু দিন পর-
"প্রয়াগ হৈতে এক বৈষ্ণব নবদ্বীপ আইলা।
হরিদাসের বার্ত্তা তেঁহো সবারে কহিলা।।
যৈছে সঙ্কল্প তৈছে ত্রিবেণী প্রবেশিলা।
শুনি শ্রীবাসাদি মনে বিস্ময় হইলা।।
তারপর শ্রীবাস যখন এই কথা চৈতন্যদেবকে জানালেন, তখন চৈতন্যদেব-
"শুনি প্রভু হাসি কহে সুপ্রসন্ন চিত্ত।
প্রকৃতি দর্শন কৈলে এই প্রায়শ্চিত্ত।।
অর্থাৎ বৈরাগী হয়ে কোনো বৈষ্ণব যদি কোনো নারীর মুখ দর্শন করে, তাহলে জলে ডুবে আত্মহত্যা করাই তার প্রায়শ্চিত্ত। এসব কথা বলছে বৈষ্ণবদের প্রাণের গ্রন্থ শ্রীশ্রীচৈতন্যভাগবত, আর এসব না পড়ে বা না বুঝে বর্তমানের বৈষ্ণব বা বৈরাগীরা শুধু নারীর মুখদর্শনই নয় নারীদেরকে বিয়ে করে নারীর সাথে রাত্রিযাপন করছে, নারী সম্ভোগ করে ছেলে মেয়ের জন্মও দিচ্ছে, যারা একটু বেশি মাত্রার বৈষ্ণব, তারা তো আবার গেরুয়া বসন প'রে, গলায় মালা, নাকে তিলক কেটে গুরু সেজে সস্ত্রীক শিষ্যদের বাড়িতে মাঝে মাঝে টিপও মারে বা মারছে। চৈতন্যদেবের এই ভয়াবহ নারী বিদ্বেষী নীতির কথা, আমার মনে হয় একজন চৈতন্যভক্তও জানে না, জানে না কোনো বৈষ্ণব নারীও, জানলে যে চৈতন্যদেব নারীদেরকে এত ঘৃণা করতো, সেই নারী সমাজ চৈতন্যদেবকে অবতার বা ভগবান মনে করে নিজের উদ্ধারের জন্য তার কাছে কান্নাকাটি করতো না।
উপরে বর্ণিত- এক নারীর কাছ থেকে চাল চেয়ে আনায় ছোট হরিদাসের প্রতি চৈতন্যদেবের ব্যবহার এবং তার ফলে ছোট হরিদাসের পরিণতির কথা চিন্তা করুন আর ভাবুন কেনো চৈতন্যদেব - সংসার সমুদ্রে তার মা এবং স্ত্রীকে একাকী ফেলে চলে গিয়েছিলো ? আর সেই সাথে এটাও ভাবুন, যে সব চৈতন্যভক্ত, সংসারে আছে, বিয়ে করছে, স্ত্রীর সাথে রাত্রি যাপন করছে, ছেলে মেয়ের জন্ম দিচ্ছে, তারা কতটুকু বৈষ্ণব বা বৈরাগী।
এ প্রসঙ্গে আমার মনে হচ্ছে- কোনো কোনো ইসকন ভক্ত, যারা চৈতন্যদেবের কট্টর অনুসারী, তারা যে তাদের মায়ের হাতের রান্না খায় না, সেটা তো খুবই সাধারণ বিষয়, তাদের উচিত তাদের মা্য়ের সাথে কথা না বলা বা মায়ের মুখ না দেখা, তারা যে তাদের বাড়ি যায় এবং মায়ের সাথে কথা বলে বা মায়ের মুখ দেখে, সেটা তাদের মায়ের প্রতি তাদের দয়া, যদিও সেটা বৈষ্ণব শাস্ত্র বিরোধী।
চৈতন্যদেবের নারী বিদ্বেষী ভাবের আরেকটি কাহিনী আছে শ্রীবাসের শাশুড়ির সঙ্গে, এই ঘটনাটির বর্ণনা পাবেন বৃন্দাবন দাস রচিত শ্রীশ্রীচৈতন্যভাগবতের মধ্যখণ্ডের ষোড়শ অধ্যায়ে, ঘটনাটি এরকম :
চৈতন্যদেব প্রায় দিন তার বিভিন্ন ভক্তের বাড়িতে পাগলের মতো নৃত্য করতো আর হরিনাম করতো, কিন্তু সেই অনুষ্ঠানে শুধু পুরুষরা থাকতে পারতো, কোনো নারী সেখানে থাকতে পারতো না বা নারীদের চৈতন্যদেবের গান-কীর্তন-নাচের অনুষ্ঠানে থাকা নিষেধ ছিলো। কিন্তু চৈতন্যদেব কিভাবে নাচে ও গায়, এটা দেখার লোভ শ্রীবাসের শাশুড়ি সামলাতে না পেরে শ্রীবাসের বাড়িতে অনুষ্ঠিত গান কীর্তনের দিনে শ্রীবাসের শাশুড়ি সবার অলক্ষ্যে ঘরের মধ্যে লুকিয়ে থেকে চৈতন্যদেবের নাচ গান দেখছিলো, তারপর-
"একদিন নাচে প্রভু শ্রীবাসের বাড়ী।
ঘরে ছিলো লুকাইয়া শ্রীবাস শাশুড়ি।।
ঠাকুর পণ্ডিত আদি কেহো নাহি জানে।
ডোলমুণ্ডে দিয়া আছে ঘরের এক কোণে।।
--------
নাচিতে নাচিতে প্রভু বলে ঘনে-ঘন।
"উল্লাস আমার আজি নহে কি কারণ?"
-----------
পুনঃপুন নাচি বলে সুখ নাহি পাই।
কে বা জানি লুকাইয়া আছে কোনো ঠাঁই ?
সর্ব বাড়ি বিচার করিল জনে জনে।
শ্রীবাস চাহিল ঘর সকল আপনে।।
"ভিন্ন কেহো নাহি" বলি করয়ে কীর্ত্তন।
উল্লাসে নাচয়ে প্রভু শ্রীশচীনন্দন।।
আর-বার রহি বোলে "সুখ নাহি পাই।
আজি বা আমারে কৃষ্ণ-অনুগ্রহ নাই।"
-----------
আর বার ঠাকুর পণ্ডিত ঘরে গিয়া।
দেখে নিজ শাশুড়ী আছয়ে লুকাইয়া।।
---------
বিশেষ প্রভুর বাক্যে কম্পিত শরীর।
আজ্ঞা দিয়া চুলে ধরি করিলা বাহির।।
কেহো নাহি জানে ইহা, আপনি সে জানে।
উল্লসিত বিশ্বম্ভর নাচে ততক্ষণে।।
অর্থাৎ শ্রীবাসের শাশুড়ি ঘরের মধ্যে লুকিয়ে লুকিয়ে চৈতন্যদেবের নাচ গান দেখায়, নাচ-গানে চৈতন্যদেবের ভাব আসছিলো না, তাই তার ইচ্ছায় সারা বাড়ি তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখা হয় যে কোথাও কোনো সমস্যা বা কোথাও কেউ লুকিয়ে আছে কি না, এই খুঁজতে গিয়েই শ্রীবাস নিজেই আবিষ্কার করে তার শাশুড়িকে যে ঘরের কোণে লুকিয়ে থেকে চৈতন্যদেবের নাচ-গান দেখছিলো। এই অপরাধে শ্রীবাস, চৈতন্যদেবের নির্দেশে তার শাশুড়ির চুল ধরে টেনে ঘর থেকে বের করে এবং তাকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দেয় এবং তারপর চৈতন্যদেব আবার স্বাভাবিক ছন্দে নাচ-গান শুরু করে।
চৈতন্যদেব কী পরিমাণ ভয়াবহ নারী বিদ্বেষী ছিলো এটাই তার প্রমাণ, তার কীর্তনস্থলে এক নারীর উপস্থিতিও তার মধ্যে এলার্জির সৃষ্টি করেছিলো, যার কারণে সে নামকীর্তনে ভাব পাচ্ছিলো না। যার যে বিষয়ে ভয়াবহ বিদ্বেষ, সেই বিষয়ে দীর্ঘকাল তার মনে বিদ্বেষভাব পোষণ করার ফলে প্রকৃতিও সেই বিষয়ে তাকে সচেতন করে, মূলত এই কারণেই শ্রীবাসের শাশুড়ির অজ্ঞাত উপস্থিতির ফলে চৈতন্যদেব নাচ-গানে কোনো মজা পাচ্ছিলো না।
চৈতন্যদেবের এইসব ভয়াবহ নারী বিদ্বেষী নীতির কথা জানতে পেরে আমার মনে হচ্ছে- তাঁর জন্ম কোনো নারীর গর্ভ থেকে হয় নি, জন্মের পর সে কোনো নারীর দুধ পান করে নি, কোনো নারী তাকে লালন পালন ক'রে বড় করে নি, যার জন্ম হয়েছে কোনো ইতর বন্য প্রাণীর গর্ভ থেকে।
যদিও আমার জন্ম বৈষ্ণব ঘরেই, কিন্তু বৈষ্ণব শাস্ত্রের অসারত্বকে বুঝতে পেরে আমি বহু আগেই বৈষ্ণবমতবাদকে ত্যাগ করেছি এবং এটা আমি আমার পরিচিত লোকজনের কাছে নিঃসঙ্কোচে মুখ ফুটে বলতেও পারি, কিন্তু চৈতন্যদেবের এই নারী নীতিকে জানার পর এটা ভেবে আমার গর্ব হচ্ছে যে আমি সত্যই চৈতন্যের অনুসারী নই, তাই আমি বৈষ্ণব নই, আমি শ্রীকৃষ্ণের অনুসারী সনাতনী, হ্যাঁ, আমি শুধুমাত্র সনাতনী।
শেষে আরেকটা কথা না বললেই নয়, যে চৈতন্যদেব নারীর মুখ দেখতে চান নি, নারীকে সম্ভাষণ করায় ছোট হরিদাসকে যিনি কখনো ক্ষমা করেন নি, যার জলে ডুবে মরাকে তিনি বলেছেন প্রকৃতি দর্শনের প্রায়শ্চিত্ত, তার নাচ গান লুকিয়ে লুকিয়ে দেখায় একস নারীকে যে চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলো, সেই চৈতন্যদেব আবার শ্রীকৃষ্ণের পাশে নারীরূপী রাধাকে স্বীকার করে তার ভজনা করে গেছেন, এটা পাগল, না ভণ্ড ?
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
No comments:
Post a Comment