Thursday, 4 June 2020

পরমেশ্বর মানে কী ?


পরমেশ্বর মানে কী ?

যা কিছু ধ্বংস হয়, তাকে বাংলায় বলে নশ্বর। আর নশ্বরের বিপরীত শব্দ হলো ঈশ্বর, মানে যার ধ্বংস, বিলুপ্তি বা শেষ নেই। অর্খাৎ ঈশ্বর হলো এমন একটি সত্ত্বা যার কোনো বিনাশ নেই। এই ঈশ্বর শব্দরে সাথে পরম যুক্ত হয়ে হয়েছে পরমেশ্বর।

অন্যদিকে বিজ্ঞানের ভাষায় মৌলিক ও যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে বলে অনু, যার মধ্যে ওই পদার্থের সব গুণাবলি বিদ্যমান থাকে। অণুকে ভাঙলে পরমাণু পাওয়া যায় এবং পরমাণু হল মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যাকে আর ভাঙ্গা যায় না। এই পরমানু, পরম ও অনু, এই দুটি শব্দ দ্বারা গঠিত; এর মধ্যে পরম শব্দের অর্থ- খুব, অত্যন্ত, শ্রেষ্ঠ; সুতরাং পরম শব্দের অর্থ শ্রেষ্ঠ এবং ঈশ্বর শব্দের অর্থ বিনাশহীন সত্ত্বা, এইভাবে পরমেশ্বর শব্দের একটি অর্থ হলো "শ্রেষ্ঠ অবিনাশী সত্ত্বা"।

হিন্দু শাস্ত্রের একটি বাণী হলো - "সর্বং খল্বিদং ব্রহ্ম", এর মানে সবকিছুর মধ্যেই ব্রহ্ম বিদ্যমান। ব্রহ্ম মানে ঈশ্বর বা পরমেশ্বর। পরমাণু হলো পদার্থের শেষ অবস্থা, পদার্থের এই শেষ অবস্থার মধ্যে পরমেশ্বর (পরম+ ঈশ্বর) আছে বলেই এর নাম পরমাণু (পরম+অণু)। পরমাণু যেমন বিনাশহীন বা অবিনাশী সত্ত্বা, তেমনি পরমেশ্বরও অবিনাশী সত্ত্বা; তবে পরমাণু হলো ঈশ্বরের সবচেয়ে ক্ষুদ্র রূপ এবং পরমেশ্বর হলো ঈশ্বরের সবচেয়ে বৃহৎ রূপ, যা সমগ্র সৃষ্টিকে বেষ্টন করে আছে; এই কথাই বলা আছে, গীতার একাদশ অধ্যায়ের ৩৮ নং শ্লোকে, এভাবে-

"ত্বয়া ততং বিশ্বমনন্তরূপ"

এর অর্থ- এই জগত তোমার দ্বারাই পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে।

সুতরাং পরমেশ্বর দ্বারা "শ্রেষ্ঠ অবিনাশী সত্ত্বা"কে বোঝানোর পাশাপাশি, সমগ্র জগৎকে সৃষ্টিকারী এবং সমগ্র জগৎকে ধারণকারী শক্তিকেও যে বোঝায়, আশা করছি, তা আমার পাঠক বন্ধুদেরকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment