Thursday, 11 June 2020

গীতা ও মনুসংহিতায় উল্লেখিত বর্ণপ্রথা সম্পর্কে অপপ্রচারের জবাব


#Priyanka_Biswas,

আপনার সম্ভবত সেই আল্লার উপর আস্থা ও বিশ্বাস বা সেই আল্লাকে গ্রহন করতে আপনি মানসিকভাবে প্রস্তুত, যে আল্লা- নারীদেরকে ধর্ষণ করতে পুরুষদেরকে নির্দেশ দিয়েছে (কোরান, ৪/৩, ২৩/৫,৬); পুরুষদেরকে একাধিক নারীকে বিয়ে করতে নির্দেশ দিয়ে নারীদেরকে সতীনে সংসারের যন্ত্রনায় ফেলার ব্যবস্থা করেছে (Quran 4:3); পুরুষদেরকে নারীদেরকে কারণে-অকারণে তালাক দিয়ে রাস্তায় ছুঁড়ে ফেলে তাদের কাছ থেকে তাদের নিজের হাতে সাজানো সংসারের অধিকার কেড়ে নিতে বলেছে(কোরান, ৩৩/৪৯, ২/২৩৬, ২/২৩৭, ২/২৪১, ২/২২৯, ২/২৪০) ? কারণ, নারীদের জন্য সুন্দর ও সুখী জীবন যাপনের বিধান দাতা ঈশ্বরকে যখন আপনার ভালো লাগছে না, তখন আপনি যে মধুর সরোবর ছেড়ে নর্দমায় ডুব দিতে ইচ্ছুক, সেটা তো আপনার কথাতেই বোঝা যাচ্ছে।

শুনুন, সনাতন ধর্ম, মুসলমানদের কোরান ও হাদিসের মতো দুই বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় যে, খুব সহজে সেটা কেউ বুঝতে পারবে বা দু চার কথায় সেটা কেউ কাউকে বোঝাতে পারবে। সনাতন ধর্মের বিধি বিধানকে উপলব্ধি করার জন্য বাস্তবকে বোঝার যুক্তিযুক্ত জ্ঞান থাকা আবশ্যক, আপনি তো জ্ঞান (ঙ্গান) বানানই ঠিক মতো জানেন না, আপনি সনাতন ধর্মীয় জ্ঞান লাভ করবেন কিভাবে? নিজের যে জ্ঞান নেই, নিজে যেটা বোঝেন না, সেই বিষয়ে আপনি এসেছেন পাবলিক ফোরামে জ্ঞান দিতে ? জন্মসূত্রে একজন সনাতনী হয়ে সনাতন ধর্মের সমালোচনা করার সাহস আপনি পেয়েছেন কোথায় ? নাকি হিন্দুরা চাপাতিতে বিশ্বাস করে না ব'লে সেটাকে আপনি ভেবে নিয়েছেন হিন্দু সমাজের দুর্বলতা ব'লে ?

ভালো করে শুনুন, সনাতন ধর্ম হলো বাস্তবতার ধর্ম, তাই সনাতন ধর্ম সবসময় বাস্তবতাকে তুলে ধরে কথা বলে। ইসলামের মতো- মেয়েদের মাথা ভর্তি চুল দিয়ে, আবার সেই চুলকে ঢেকে রাখার জন্য নির্দেশ দেয় না। বা নির্দেশ দেয় না পুরুষদের লাম্পট্যকে প্রশমন করার জন্য নারীদেরকে বোরকা নামক বস্তার পর্দার মধ্যে থাকতে। সনাতন ধর্ম নির্দেশ দিয়েছে- পরের স্ত্রী ও কন্যাকে নিজের মায়ের মতো দেখবে, হিন্দুরা এই নির্দেশ মানে বলেই কোনো নারীকে কামনার দৃষ্টিতে দেখে না, তাই কোনো নারীর পর্দা করার প্রয়োজনও হয় না। এছাড়াও সনাতন ধর্মের নির্দেশ হলো- পিতার দিক থেকে সাত পুরুষ এবং মাতার দিক থেকে তিন পুরুষের মধ্যে বিবাহ করবে না, এই নির্দেশের ফলে কোনো হিন্দু ছেলে তার- মামাতো, মাসতুতো, কাকাতো, পিসতুতো বোনকে স্ত্রী রূপে কল্পনা করে কামনা দৃষ্টিতে দেখে না বা তাকে ভেবে স্বপ্নদোষ ঘটায় না, যার ফলে ভাই বোনদের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ক মুসলমানদের মতো কলুষিত হয় না।

একটা কথা বলুন তো, কোনো অফিসের যদি সবাই বস হয়, কোনো পিয়ন যদি না থাকে, কোনো ঝাড়ুদার যদি না থাকে তাহলে কি অফিস চলবে ? সমাজের সবাই যদি ডাক্তার হয়, সমাজ চলবে ? সমাজের সবাই যদি নাপিত হয় সমাজ চলবে ? বা সমাজে যদি মেথর না থাকে, সমাজ চলবে ? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর হলো- না, সবাই একপদমর্যাদার বা একই স্ট্যাটাসের হলে সমাজ চলবে না। সমাজের মতো বৃহৎ ব্যাপারের কথা না হয় বাদ দিন, আপনি আপনার পরিবারের কথা চিন্তা করুন তো, আপনার পরিবারের সবাই যদি নিজেকে সুপ্রিমো ভাবে এবং এই নির্দেশ যে আমি যা বলবো, সবাইকে তা মানতে হবে, তাহলে পরিবার চলবে কি না ? চলবে না তো ? সব সামাজিক সংগঠনে একজন করে প্রধান থাকে, তার আদেশ নির্দেশ অন্যদেরকে মেনে চলতে হয়, তাহলেই সবকিছু ঠিকঠাক চলে, সনাতন ধর্ম, যেটা পৃথিবীর একমাত্র ধর্ম, সেই ধর্মের ঈশ্বর সেই ব্যবস্থা ই করেছে, পূর্বজন্মের কর্মের ভিত্তিতে তিনি কাউকে মহান, কাউকে বড়, কাউকে ছোট, কাউকে রাজা, কাউকে সৈনিক, কাউকে ব্যবসায়ী এবং কাউকে চাকর বা সেবক রূপে সৃষ্টি করেছেন, যাতে সমাজ সুষ্ঠুভাবে চলে। একই কারণে তিনি মানব জাতিকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করে কাউকে নারী এবং কাউকে পুরুষ রূপে সৃষ্টি করেছে এবং পূর্বজন্মের পাপের ফলে কাউকে সৃষ্টি করেছেন নপুংসক রূপে।

আপনার ক্ষেদ হলো হিন্দু সমাজের বর্ণপ্রথা নিয়ে এবং আপনার ক্ষেদের মূল কারণ হলো- বর্ণপ্রথাকে আপনি জন্মসূত্রে ভেবে নিয়ে বসে আছেন। গীতার শ্লোক তুলে দিয়েছেন, আর খেয়াল করেন নি যে সেখানে বলা আছে- গুন ও কর্ম অনুসারে ঈশ্বর চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছেন ? ঈশ্বর কি বলেছেন যে, আমি জন্মসূত্রে চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছি ? কর্মসূত্রকে জন্মসূত্রে পরিণত করেছে আমার আপনার মতো মানুষ, এতে ঈশ্বরের দোষ কোথায় ? আপনার বিয়ের জন্য আপনার পিতা মাতা আপনাদের কাস্টেরই ছেলে খুঁজেছে বা খুঁজবে, এই দোষ আপনার পিতা মাতার, না ধর্মের ? সনাতন ধর্ম কি বলেছে যে ব্রাহ্মণের ছেলেই ব্রাহ্মণ হবে ? সনাতন ধর্ম তো বলেছে জ্ঞান ও আচরণে ব্রাহ্মণও চণ্ডাল হয়, আবার শুদ্রও ব্রাহ্মণ হয়। তার মানে সনাতন ধর্ম সব সময় গুন ও কর্মকেই প্রাধান্য দিয়েছে, তাহলে আপনার পিতা মাতা আপনার বিয়ের সময় আপনার কাস্টেরই ছেলে খুঁজেছে বা খুঁজবে কেনো ?

এখন আপনি জাত পাত নিয়ে খুব ফটর ফটর করছেন, কিন্তু আপনার ছেলে মেয়ের বিয়ের সময় আপনিও প্রথমত নিজের কাস্টেরই ছেলে বা মেয়ে খুঁজবেন, অবশ্য যদি এই প্রবন্ধ পড়ে আপনার হুঁশ ফিরে এবং আপনি সনাতন ধর্মে থাকেন। আর যদি দুর্ভাগ্যবশত আপনি নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মেরে সনাতন ধর্মের ঈশ্বরকে ত্যাগ করে মুহম্মদের দালাল আল্লাহকে আপন করে কোনো মুসলমানকে বিয়ে করেন, তাহলে তো কোনো কথা ই নেই, আপনার ছেলে বা মেয়ে আপনার ই মুসলমান দেবর বা ভাসুরের ছেলে মেয়েকে বিয়ে করে পারিবারিক দোচাদুচির আসর বসাবে। মুসলমান ছেলেরা নিজের মা আর নিজের বোন ছাড়া তো সবাইকে বিয়ে করতে পারে, একই ভাবে মুসলিম মেয়েরাও নিজের বাপ আর নিজের ভাই ছাড়া সবাইকে বিয়ে করতে পারবে, তাই আপনার মুসলিম ছেলে মেয়ে কাকে বিয়ে করে আপনার সাথে তার সম্পর্ককে যে নতুন কী নাম দেবে, সেটা আপনি নিজেই গবেষণা করতে করতে বেহুঁশ হয়ে যাবেন।

যা হোক, শ্রীকৃষ্ণ গীতায় যেহেতু বলেছেন যে- আমি গুন ও কর্ম অনুসারে সমাজে চারটি বর্ণ সৃষ্টি করেছি, সেহেতু মনুসংহিতায় রূপকের আশ্রয় নিয়ে বলা হয়েছে যে, পরমেশ্বর নিজের মুখ থেকে ব্রাহ্মণ, যেহেতু ব্রাহ্মণেরা জীবিকা অর্জন করে মুখের অর্থাৎ কথার মাধ্যমে; বাহু থেকে ক্ষত্রিয়, এখানে বাহু হলো শক্তির প্রতীক, তাই ক্ষত্রিয় মানে শক্তিশালী বা যোদ্ধা, যারা রাষ্ট্রকে শত্রুর আক্রমন থেকে রক্ষা করে; উরু থেকে বৈশ্য অর্থাৎ ব্যবসায়ী এবং পা থেকে শুদ্র অর্থাৎ চাকর শ্রেণীর সৃষ্টি করেছেন। এই পরমপুরুষের মুখ, বাহু, উরু ও পা থেকে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্রের সৃষ্টির ব্যাপারটি সম্পূর্ণ প্রতীকী। ঈশ্বর মানুষকে, তার পূর্বজন্মের কর্মের ফল অনুযায়ী বিভিন্ন আর্থ সামাজিক অবস্থায় সৃষ্টি করে থাকেন। কোনো মানুষ যে অবস্থায় যেখানেই জন্ম নিক না কেনো, সে যদি সেই অবস্থা থেকেই নিজের উত্তরণের চেষ্টা করে এবং সমাজের কল্যান সাধন করে, তাহলে সে এ জন্মে জন্ম পরিচয় ঘোচাতে না পারলেও কর্ম পরিচয়ে নিজেকে অনেক উন্নত করতে পারবে এবং এর ফলে পরের জন্মে সে অবশ্যই এই জন্মের চেয়ে উন্নততর আর্থ সামাজিক অবস্থায় জন্ম নিতে পারবে। যেমন এ জন্মে যদি কেউ চাষী অর্থাৎ বৈশ্যের ঘরে জন্ম নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করে নিজেকে শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত করে এবং নিষ্ঠার সাথে তার দায়িত্ব পালন করে, তাহলে পরের জন্মে সে আরো ভালো আর্থ সামাজিক অবস্থায় জন্ম নেবে, যেখানে তার পরিবার চাষী না হয়ে ধনী বা খ্যাতিমান হবে। আবার এ জন্মে যদি কেউ গরীরের ঘরে জন্ম নিয়েও রাজনীতির প্রতি অত্যন্ত অনুরাগী হয় সমাজের মঙ্গল চায়, তাহলে এ জন্মে তার অর্জন যা ই হোক না কেনো, পরের জন্মে সে যে কোনো রাজনীতিবিদের ঘরে জন্ম নিয়ে ভালো রাজনৈতিক সুবিধা পাবে এবং দেশ শাসনে অংশ নেবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

অনেকেই বর্ণপ্রথার জন্য সনাতন ধর্মের সমালোচনা করে বা দরিদ্র পরিবারে নিজের জন্ম বা নারী হিসেবে নিজের জন্মের জন্য ঈশ্বরকে দোষারোপ করে, এরা আসলে এই জীবনকেই সবকিছু বলে ধরে নিয়েছে, জীবন যে আত্মার ভ্রমণ এবং এই জীবনই যে শেষ নয়, সে সম্পর্কে এদের কোনো ধারণাই নেই। এই জীবনে যে মেয়ে নারী হিসেবে সুখ দুঃখ ভোগ করছে, পরবর্তী কোনো জন্মে সে অবশ্যই পুরুষ হয়ে জীবনের সুখ দুঃখ ভোগ করবে, একই ভাবে পুরুষরা নারী হিসেবে জন্ম নিয়ে ভোগ করবে নারীর সুখ দুঃখ। শুধু তাই নয়, বর্তমানে যারা মানুষ হিসেবে জীবনের সুখ দুঃখকে ভোগ করছে, তারা পৃথিবীর সকল ইতর শ্রেণীর প্রাণীর জীবনের সুখ দুঃখকে ভোগ করেই মানব জীবন পেয়েছে, এজন্যই মানব জীবনকে বলা হয় দুর্লভ মানব জীবন । এই দুর্লভ মানব জীবনকে কেউ যদি সঠিকপথে ব্যয় না করে, তাহলে সে আবার ইতর শ্রেণীর প্রাণী রূপে জন্ম নিয়ে মানবরূপে করার পাপের শাস্তি যে ভোগ করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এই জীবনকেই সবকিছুর মূল মনে করার কোনো কারণ নেই, এই জন্ম যেমন আগের জন্মগুলোর কর্মফল, তেমনি পরের জন্মও হবে এইজন্মসহ পূর্বজন্মগুলোর কর্মফলের ভিত্তিতে।

শাস্ত্রের ভিত্তিতে করা উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট যে সনাতন ধর্মের বর্ণপ্রথা জন্মগত নয়, কর্মগত; পূর্বজন্মের কর্মফলের ভিত্তিতে এ জন্মে, যার জন্ম যে পরিচয়েই হোক না কেনো, চেষ্টা ও পরিশ্রম দ্বারা সে এই জন্মেই যেমন তার উন্নতি ঘটাতে পারে, তেমনি পরের জন্মেও, এজন্মের চেয়ে তুলনামূলক উন্নততর বা ভালো পরিচয়ে জন্ম নিতে পারবে। তাই খারাপ পরিবেশে জন্মের জন্য ঈশ্বরকে দোষারোপ করা আসলে মূ্র্খামি; কারণ, কোনো মানুষ যে পরিচয়ে জন্মলাভ করে, সেটা তার নিজেরই কর্মফল।

একইভাবে সনাতন ধর্মের বর্ণপ্রথার সমালোচনা করাও আসলে সামাজিক বাস্তবতা সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞানের অভাব। প্রকৃতির সকল প্রাণীর সুষ্ঠুভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেমন একটি সঠিক খাদ্যশৃঙ্খল প্রয়োজন, তেমনি মানব সমাজের সকল কাজ সঠিকভাবে সম্পাদনের জন্যও সমাজে সকল শ্রেণীর মানুষের প্রয়োজন। এখানে যেমন প্রয়োজন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার দোকানদার, তেমনি প্রয়োজন মুচি মেথর জেলে। সমাজে কেউ অপ্রয়োজনীয় নয়, সমাজে সবাই প্রয়োজনীয়, তাই কেউ গুরুত্বহীন নয়, সবাই যার যার কাজে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি হয়তো মেথরকে খুব ঘৃণার চোখে দেখেন, কিন্তু যখন গ্রামের বাড়ির পায়খানা বা শহরের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয়, আর যদি তখন তারা আপনার কাজ পর্যাপ্ত টাকার বিনিময়েও করে দিতে না চায়, প্রয়োজনে আপনি তাদের হাত পা ধরতেও পিছপা হবেন না। আসলে এভাবেই যে যার স্থানে সমাজের সকল মানুষ গুরুত্বপূর্ণ। বর্ণপ্রথাকে অস্বীকার করা মানে সমাজের সকল মানুষকে এককাতারে এনে সমান করে ফেলা, যা বাস্তব নয়; কারণ, সবাই এক সমান হলে কেউ কারো কমান্ড ফলো করবে না, ফলে সমাজ বা রাষ্ট্রের কোনো কাজ সঠিকভাবে সম্পাদন হবে না, সর্বত্র বিশৃঙ্খলা শুরু হবে। ফলে সমাজ ও সভ্যতার উন্নতি দূরে থাক, সমাজ সভ্যতা ধ্বংস হবে। সমাজের এই বাস্তবতাকেই সনাতন ধর্ম প্রকাশ করেছে বর্ণপ্রথার মাধ্যমে, যা চিরন্তন এবং চিরসত্য।

ইসলামসহ ব্যক্তিমতের কিছু ধর্মে সকল মানুষকে সমান মর্যাদা দেওয়ার কথা বলা হলেও, আসলে সেটা শুধু কথার কথা। কোনো জাতি, গোষ্ঠী বা তথাকথিত ধর্মের সকল মানুষ কখনোই এক সমান বা একই মর্যাদার নয়। একারণেই একজন মুসলিম জেলে, বা মুসলিম নাপিত বা মুসলিম মেথরের সাথে একজন সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী বা চাকরিজীবী মুসলিম কখনোই ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আত্মীয়তা করবে না। শুধু মাত্র মসজিদেই সকল মুসলিমের নামায পড়ার সমান অধিকার, সেক্ষেত্রেও একজন মেথর মুসলিমের সাথে অন্যান্য মুসলিমরা এক সাথে বসে নামায পড়বে কি না সন্দেহ। হিন্দুদের জাতিভেদ বা বর্ণপ্রথা নিয়ে মুসলমানরা অনেক কথা বলে, কিন্তু একারণে হিন্দুরা হয়তো খুব বেশি হলে একে অপরের সাথে বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে আত্মীয়তা করে না, এর বাইরে যাওয়া আসা খাওয়া দাওয়া মন্দির ভিত্তিক বিভিন্ন পূজা পার্বনে অংশগ্রহন সবকিছুই চলে; কিন্তু ইসলামের জাতিভেদের কারণে মুসলমানরা মসজিদের মধ্যে ঢুকে একে অপরকে খুন পর্যন্ত করে ফেলে, তাহলে কাদের জাতিভেদ প্রথা ভয়ঙ্কর ?

ইসলামে জাতিভেদ নেই, এটা শুধু মুখের কথা, বাস্তবে এর কোনো ভিত্তি নেই। পক্ষান্তরে সমাজের সকল মানুষ যে জ্ঞান-বুদ্ধি, ক্ষমতা ও অর্থবিত্তে এক সমান নয়, এই বাস্তবতাকেই বর্ণপ্রথার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সনাতন ধর্মে; কারণ, সনাতন ধর্ম বাস্তবতার ধর্ম, তাই বাস্তবতাকে এটা সব সময় প্রকাশ করে মাত্র, ধর্মের নামে কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেয় না।

আশা করছি- এই প্রবন্ধ পড়ার পর প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস তার ভুল বুঝতে পারবে এবং ঈশ্বর সম্পর্কে বাজে কথা বলায় ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং বলবে জয় শ্রীকৃষ্ণ।

জয় হিন্দ।

No comments:

Post a Comment