Thursday 21 May 2020

গীতা পাঠ করে কী কী ফল হয় ?


#Sopno_Moy_Bikash,

গীতা পাঠ করে কী কী ফল হয়, এ ব্যাপারে গীতা মাহাত্ম্যে বলা আছে, সেখানে এরকম কিছু বলা নেই। তবে গীতা মাহাত্ম্যে এটা বলা হয়েছে যে, গীতা পাঠের বা শ্রবণের সময় অমনোযোগী হওয়া উচিত নয়।

মানুষ প্রথমে যা কিছুই করুক না কেনো, তাতে কিছু না কিছু ভুল ত্রুটি হবেই, প্র্যাকটিস করতে করতেই মানুষ পারফেক্ট করে, তাই গীতা পড়তে গিয়ে ভুল করলে পাপ হবে এমন অবাস্তব কথার কোনো ভিত্তি নেই, বরং এই
ভয়ে গীতা থেকে দূরে থাকলেই মানুষের পাপ হবে।

গীতা মাহাত্ম্যের ৬০ নং শ্লোকে বলা হয়েছে,

"যিনি গীতা পুস্তক সঙ্গে করিয়া প্রাণ ত্যাগ করেন, তিনি বৈকুষ্ঠে যাইয়া বিষ্ণুর সহিত আনন্দ ভোগ করেন।"

এই শ্লোকের ভুল ব্যাখ্যার ফলে মানুষ মৃতদেহের বুকের উপর গীতা রাখে, গীতাসহ শ্মশানে নিয়ে যায় এবং শ্মশানে গীতা ফেলে আসে, যার কোনো ভিত্তি নেই।

খেয়াল করো, গীতা মাহাত্ম্যে বলা হয়েছে- "যিনি গীতা পুস্তক সঙ্গে করিয়া প্রাণ ত্যাগ করেন", এর মানে হচ্ছে যে ব্যক্তি মারা যাচ্ছে, তাকে নিজেকে গীতা পুস্তক সঙ্গে নিয়ে প্রাণ ত্যাগ করতে হবে, সে মারা গেলে অন্য কেউ যদি তার বুকের উপর গীতা রাখে তাহলে কিন্তু হবে না। কিন্তু এই ব্যাপারটা তখনই ঘটবে, যখন কোনো ব্যক্তির নিত্যদিনের সঙ্গী হবে গীতা, অর্থাৎ যার গীতার সঙ্গে বসবাস হবে নিত্যদিনের, যে ব্যক্তি প্রতিদিন গীতা পড়বে, গীতা নিয়ে লোকজন বা ভক্তবৃন্দের সাথে আলোচনা করবে, যে গীতার জ্ঞানকে হৃদয়ে বা বুকে ধারণ করবে, সেই ব্যক্তিই এই সৌভাগ্য লাভ করবে।

এককথায়- গীতা মাহাত্ম্যের এই শ্লোকের সরল মানে হচ্ছে- গীতার জ্ঞান সঙ্গে নিয়ে কোনো ব্যক্তি যদি মারা যায়, সে বৈকৃণ্ঠে গিয়ে বিষ্ণুর সহিত সাক্ষাত পাবে।

তাই কোনো ব্যক্তি মারা গেলে যদিও তার বুকের উপর গীতা দেওয়ার কোনো মানে নেই, তবুও মৃত ব্যক্তির বাড়িতে ধর্মীয় পরিবেশ তৈরী করার জন্য মৃত ব্যক্তির বুকের উপর গীতা দেওয়া যেতে পারে এবং শ্মশান পর্যন্ত সেই গীতা নিয়ে যাওয়া যেতে পারে, কিন্তু শ্মশানকার্য শেষে সেই গীতা শ্মশানে রেখে বা ফেলে আসার কোনো মানে নেই; কারণ, শ্মশানে পড়ে থেকে গীতাটি রোদ বৃষ্টি ঝড়ে আস্তে আস্তে ছিঁড়ে ছিঁড়ে নষ্ট হয়, এভাবে গীতার অবমাননা করার জন্য পুন্য নয়, পাপই হয়। তাই কোনোভাবেই শ্মশানে অনাদরে অবহেলায় গীতা রেখে আসা যাবে না, শ্মশানের যাবতীয় কাজ শেষে গীতাটি আবার বাড়িতে নিয়ে আসতে হবে।

শ্মশানে নিয়ে যাওয়া গীতা যদি বাড়িতে আনতে কারো দ্বিধা থাকে, তাহলে কোনো মন্দিরে বা কোনো গীতা স্কুলে দান করে দিতে পারেন, তবে শ্মশান নিয়ে যাওয়া গীতা যদি বাড়িতে আনতে আপনি ইতস্তত বোধ করেন, সেটাই হবে আপনার পাপ; কারণ, গীতা মাহাত্ম্যের ৩৪ নং শ্লোক অনুযায়ী গীতা স্পর্শ ও পাঠ করেই মানুষ যেকোনো পাপ ও অশুচি থেকে মুক্ত হয়, তাই আপনি যদি শ্মশানে নিয়ে যাওয়া গীতাকে অশুচি মনে করে বাড়িতে না আনেন, সেটাই হবে আপনার বড় পাপ।

যা হোক, এই পোস্ট যারা পড়ছেন, তারা তো মূল ব্যাপারটি জেনেই গেলেন, তারা কখনো গীতাকে শ্মশানে রেখে আসার পাপ করবেন না, শুধু তাই নয়, কেউ যদি শ্মশানে গীতা রেখে আসে আপনারা গিয়ে সেই গীতা বাড়িতে নিয়ে আসবেন বা কোনো মন্দিরে বা কোনো গীতা স্কুলে দান করে দেবেন; কারণ, সেই গীতা যদি কেউ পড়ে, তাহলে তার পুন্যের ভাগ আপনি পাবেন, এই জন্যই গীতা দানে সবাইকে উৎসাহিত করা হয়েছে গীতা মাহাত্ম্যের কয়েকটি শ্লোকে।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment