হিন্দু সমাজের ক্ষত লাভ জিহাদকে, অঙ্কুরেই বিনাশ করবেন যেভাবে :
কথায় বলে, "প্রেম ততক্ষণই টিকে থাকে, যতক্ষণ তা গোপন থাকে।" লাভজিহাদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি করে সত্য। কোনো হিন্দু মেয়ে যখন কোনো মুসলমান ছেলের প্রেমে পড়ে, তখন সে বিষয়টি এমনভাবে চাপা দিয়ে রাখে যে, তার বাড়ির বা আত্মীয়-স্বজনদের কারো পক্ষে বিষয়টি জানা সম্ভব হয় না। শুধু তাই নয়, সে এমন সন্ন্যাসিনী হয়ে থাকে যে, মাছই সে চেনেই না; সেই মাছ ভাজা, না কাঁচা, তাকে উল্টো না সিধে করে খেতে হয়, সেটা সে জানবে কি করে ? এমনই ভাব করে সে ধোকা দেয় সবাইকে। তারপর যেই তার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হয় বা পেটে একটি মুসলমানের বাচ্চাকে ঢুকে যায়, তখন আর তার কোনো পথ বা সময় থাকে না। সেই মেয়েটি তখন পিতা-মাতা-ভাই-বোন-আত্মীয়-স্বজন সবাইকে কাঁদিয়ে, সবার মুখে চুন কালি মাখিয়ে, সমাজের কাছে নিজের পরিবার-বংশকে ছোট করে, সর্বোপরি হিন্দু সমাজের সবাইকে একটা মনোকষ্ট দিয়ে, হিন্দুসমাজ ও হিন্দুধর্মের একটা ক্ষত সৃষ্টি করে, বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয় বা বলা ভালো হিন্দুধর্মও সমাজের একটা চিরস্থায়ী ক্ষতি করে চলে যায়।
শেকড়-বাকড় মেলে মাটিতে গেড়ে বসা একটি গাছকে উপড়ে ফেলা যত কঠিন, তার চেয়ে সহজ ছোট একটি গাছকে উপড়ে ফেলা এবং তার চেয়েও সহজ অঙ্কুরেই তাকে বিনাশ করে ফেলা। লাভ জিহাদের ক্ষেত্রেও এটি চির সত্য। হঠাৎ করে কেউ প্রেমে পড়ে না, প্রেমে পড়তে সময় লাগে। লাভ জিহাদের ক্ষেত্রে এই সময় আরো বেশি লাগে এবং পরিবার, ধর্ম ও সমাজ ছেড়ে চলে যাবার জন্য সিদ্ধান্ত নিতে, একটি মেয়ের আরও বেশি সময় লাগে। কারণ, লাভ জিহাদের এই পুরো ব্যাপারটায় একটি ছেলে বা মেয়েকে প্রচুর অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগতে হয় এবং প্রতিটা ক্ষেত্রেই তাকে তার প্রেমের স্বপক্ষে জিততে হয়। সুতরাং তার লাভ জিহাদের ব্যাপারটি চুড়ান্ত রূপ পাবার আগেই, যদি কোনোভাবে তার তার বাবা বা ভাই অর্থাৎ পরিবারের কারো কাছে তা ফাঁস করে দেওয়া যায়, তাহলে তা অঙ্কুরেই বিনাশ হতে বাধ্য। এতে কাজ না হলে পুরো গ্রামে বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচার করতে হবে এবং লাভ জিহাদের শিকার পরিবারটির আত্মীয় -স্বজনের কাছেও খবর পৌঁছাতে হবে। এই ব্যাপক প্রচারের ফলে লোক লজ্জার ভয়েই হোক বা পরিবারের প্রেসারেই হোক বা আত্মীয়-স্বজনের তৎপরতার ফলেই হোক, লাভ জিহদীর খপ্পর থেকে ঐ মেয়েটি সরে আসতে বাধ্য হবে।
এখানে একটি বিষয় খুবই গুরুত্বসহকারে মনে রাখতে হবে, লাভ জিহাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র মেয়েটির মাকে সবকিছু জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করলে চলবে না। কারণ, বেশির ভাগ মায়েরা বিশ্বাস করে, তার মেয়ে এমন কাজ করতেই পারে না। এরপরও যদি মা বিষয়টি জানতে পারে, তখন মা এটা বিশ্বাস করতে শুরু করে যে, তার মেয়ে এমন ভুল কাজ করবে না এবং অবশ্যই সময়মতো সে সরে আসবে, এজন্য সে বিষয়টি একদম চাপা দিয়ে রাখে। এভাবে লাভজিহাদের বিষয়টি আস্তে আস্তে জটিল ও গাঢ় হয়। এছাড়াও মায়েদের মনে আর একটি বিষয় কাজ করে; সেজন্য তারা মেয়েদের এই কলংকের বিষয়টি প্রকাশ করতে চায় না, এই ভেবে যে, লোক জানাজানি হলে পরে তার মেয়ের বিয়ে দিতে অসুবিধা হবে। এজন্য, মেয়ে যত শক্তি নিয়ে কোনো মুসলমান ছেলের সাথে প্রেম করে, হিন্দু মায়েরা ঠিক তত শক্তি দিয়েই বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করে, এমনকি নিজের স্বামীকেও তারা বিষয়টি জানতে দেয় না। কিন্তু আমাদের এই স্বল্পবুদ্ধি সম্পন্ন হিন্দু মায়েরা এটা বোঝে না যে, এই চাপা দেওয়ার ব্যাপারটিই, এক সময় চাপা কান্না হয়ে তার বুক ফেটে বাড়াবে; তখন আর মেয়ের বিয়ে দেওয়ার দরকাই হবে না। মায়েদের এই ভুলের খেসারত, একসময়, পুরো পরিবারকেই শুধু নয়, পুরো হিন্দু সমাজকেই দীর্ঘদিন ধরে তিলে তিলে দিতে হয়। তাই মেয়ের মাকে বিষয়টি না জানিয়ে, মেয়েটির বাপ এবং এক্ষেত্রে সবচেয়ে এ্যাকটিভ পার্সন, মেয়ের বড় ভাইকে বিষয়টি জানালে হাতে হাতে ১০০% ফল পাওয়া যাবে।
বর্তমানে ফেসবুক একটি অত্যন্ত শক্তিশালী মাধ্যম। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের ঘটনা, ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি এ্যাডাল্ট মেয়েকে তার বাবা মা, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দিচ্ছিলো । এই বিয়েকে মেনে নিতে না পেরে নিজের ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে সে একটি স্ট্যাটাস দেয়। এরপরই শুরু হয় খেলা। শত শত লোক, কেউ ফোন করে, কেউ স্বশরীরে এসে মেয়েটির পাশে দাঁড়ায়, মেয়েটির বাবা-মার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে এবং তাদেরকে এই বিয়ের সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ করতে বাধ্য করে। সুতরাং আপনার আশেপাশে যদি কোনো লাভ জিহাদের ঘটনা আপনি টের পান, পরিবারকে জানানোর পাশাপাশি ফেসবুকে তা প্রকাশ করে সবাইকে জানিয়ে দিন। কাউকে না কাউকে এই বিষয়টি হার্ট করবে এবং কেউ না কেউ এই ক্ষত সারাতে উদ্যোগী হবে। না হলে আমার ইনবক্সে সেন্ড করুন। তারপর সারা বাংলাকে তা জানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। এতে কোনো না কোনো একজনের নজরে তা পড়বে এবং সে এই সমস্যাটি সমধান করে হিন্দু সমাজের একটি ক্ষতকে সারিয়ে তুলবেই, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
সমাজকে যেমন একবারে একদিনে বদলানো যায় না, অল্প অল্প করে একটু একটু করে তা বদলাতে হয়, তেমনি সমাজের ক্ষতগুলোকেও একটি একটি করে সারাতে হয়। সমাজের ক্ষত সৃষ্টিকারীদের আমরা ঘৃণা করতে পারি, তাদের দূরে সরিয়ে দিতে পারি বা নিজেরা তাদের থেকে দূরে সরে যেতে পারি, কিন্তু এটা কোনো সমাধান নয়। নিজের দেহের ক্ষত না সারালে আমরা যেমন কষ্ট পাই, তেমনি সমাজের ক্ষত না সারালেও তা আমাদের চিরস্থায়ী যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্যই সমাজের এই ক্ষতগুলো সারানোর উদ্যোগ কাউকে না কাউকে নিতেই হবে; যদি আমরা একটি সুস্থ হিন্দু সমাজ চাই এবং আমার মনে হয়, এই ধরণের সুস্থ সমাজের স্বপ্ন আমরা প্রত্যেকেই দেখি।
আমাদের অনেক হিন্দুরই এরকম মনোভাব, কী হবে ওসব ভেবে ? তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, গরুকে ঠিকমতো খড়-ভূষি দিলে যেমন গরু বেশি বেশি দুধ দেয়, ঠিক তেমনি সমাজকেও আপনি যদি বেশি বেশি দেন, সমাজ আপনাকে ঠিক তেমনি বেশি বেশি রিটার্ন দেবে। কিন্তু সমাজকে আপনি কিভাবে দেবেন ?
আপনার প্রতিবেশি বা পাড়ার একটি হিন্দু মেয়ে, একটি মুসলিম ছেলের সাথে প্রেম করছে, আপনি জানার পরও তা নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নিলেন না বা মেয়েটির পরিবারকে বিষয়টি নিয়ে সচেতন করলেন না, সময়মতো মেয়েটি মুসলমান ছেলেটির সাথে পালিয়ে গেলো। আপনি ভাবছেন, তাতে আপনার ক্ষতি কী ? গেছে তো ওর, মান-সম্মান যা গেছে ওর গেছে। কিন্তু আপনিও নিশ্চয় নিঃসন্তান বা হিজড়া নয়, নিশ্চয় আপনারও ভাই বা বোনের ছেলে মেয়ে আছে। তাদের বেলায় যখন এরকম ঘটবে, তখন আপনি কী ভাববেন আর কী বলবেন ? বাজারে গেলে কি আপনাকে এরকম শুনতে হবে না, যে অমুক হিন্দু মেয়ে একটি মুসলমান ছেলের সাথে পালিয়ে গেছে। এটা শুনে আপনার আনন্দ লাগবে না কষ্ট লাগবে? এ কষ্ট শুধু আপনার একার নয়, সমাজের সবার। কিন্তু সমাজের একজন সদস্য হিসেবে, এই কষ্টের কারণ দূর করতে আপনার কি কিছুই দায়িত্ব ছিলো না ? ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাজ পড়লে, সাধারণত ২/১ জনের মাথাতেই পড়ে; কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির দাপট কিন্তু সবাইকেই সহ্য করতে হয়।
সময়ের ব্যবধানে সমাজের একটি ক্ষত যখন সয়ে যায়, তখন সেই ক্ষত আরেকটি ক্ষত তৈরি করার পথ করে দিয়ে যায়। এজন্য সমাজের কোনো ক্ষতকেই সময়ের মলম লাগিয়ে সারানো চলবে না, সব ক্ষতকেই সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালী এ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে নিজেরাই সারিয়ে তুলতে হবে। প্রতিবেশির ঘরে আগুন লাগলে, নিজের ঘরেও আগুন লাগার সম্ভাবনা থাকে। তাই নিজের ঘরে যাতে আগুন না লাগে, সেজন্য প্রতিবেশির ঘরের আগুন, সাথে সাথে নেভানো আমাদের কর্তব্য। এই প্রতিবেশি আর কেউ নয়, বৃহৎ অর্থে এই প্রতিবেশিই আপনার সমাজ। এজন্য হিন্দু সমাজের প্রত্যেকটি ব্যক্তিকে চোখ-কান খোলা রেখে, হিন্দু সমাজের প্রত্যেকটি সমস্যা সম্পর্কে সজাগ থাকা দরকার এবং তা সমাধানের জন্য নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করা দরকার। তাহলেই তৈরি হবে একটি সুস্থ সুন্দর হিন্দু সমাজ এবং হিন্দুরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সুখে শান্তিতে বাস করে যেতে পারবে সেই সমাজে।
বাংলায় এমন একটি সুস্থ-সুন্দর হিন্দু সমাজ তৈরি করা এবং মৃত্যুর পূর্বে তা দেখে যাওয়াই আমার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। ঈশ্বর আমাকে সহায়তা করুন।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রী রাম। জয় শ্রী কৃষ্ণ।
No comments:
Post a Comment