ধর্মান্তর এবং মাজার সংস্কৃতি :
সম্প্রতি, চট্টগ্রামে ধর্মান্তর মহামারী আকার ধারণ করেছে। পৃথিবীর সবদেশে, সবজায়গাতেই- সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী থেকে সংখ্যাগুরু জনগোষ্ঠীর ধর্মবিশ্বাসে অনুপ্রবেশের দু একটি ঘটনা ঘটেই থাকে, কিন্তু চট্টগ্রামে এই প্রবণতা সবচেয়ে বেশী; গত কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রামে হিন্দুদের ইসলামে ধর্মান্তর একটা মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছেছে, কিন্তু এর পেছনে আসলে মূল কারণটা কী ?
গুলশানের হলি আর্টিজান রেঁস্তোরায় জঙ্গী হামলায় যখন দেখা গেলো যে, সেই হামলাটি চালিয়েছে কোনো মাদ্রাসার ছাত্ররা নয়, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া ইংলিশ মিডিয়ামের স্মার্ট স্টুডেন্টরা; তখন তো অনেকেই বিস্ময়ে হতবাক, এটা কিভাবে সম্ভব ? কিন্তু ছোটোবেলা থেকেই যারা ইসলামের শিক্ষা পেয়ে কুরবানীর মতো নৃশংস দৃশ্য দেখতে গরু ছাগল জবাই করতে অভ্যস্ত, তাদের পক্ষে জঙ্গী হয়ে যেমন অবলীলায় কারো গলা কাটা বা কাউকে চাপাতি বা তরোয়াল দিয়ে কোপানো অসম্ভব নয়, তেমনি আপনার ছেলে মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকেই মন্দিরে নিয়ে গিয়ে প্রার্থনা করানোর পরিবর্তে যদি মাজারে নিয়ে গিয়ে প্রার্থনা করা শেখান, তাহলে বড় হয়ে সে যদি ইসলামে কনভার্ট হয়ে যায়, তাহলে তার দোষ কী বা সেই দোষ কার ?
আমি চট্টগ্রামের লোক নই, তাই সেখানরকার কালচার দেখার খুব একটা সুযোগ আমার হয় নি; কিন্তু আমার অনেক ফেসবুক বন্ধু আমাকে জানিয়েছে যে, হিন্দু ছেলে-মেয়েদের অনেককেই, পরীক্ষার আগে বা বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন মাজারে নিয়ে গিয়ে প্রার্থনা করানো হয়।
বাচ্চারা যখন ছোট থাকে, তখন তারা বাপ মা বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের আচার আচরণ দেখে শেখে, এই সময়ই তাদের মধ্যে সেই পরিবারের ধর্মবিশ্বাস ঢুকে যায়; ছোটবেলার এই ধর্মবিশ্বাস যার যত পোক্ত, পরবর্তীতে তার ধর্মান্তর হওয়ার সম্ভাবনা তত কম। হিন্দু ধর্মবিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের প্রত্যেকটা ছেলে মেয়েকে ছোট থেকেই হিন্দু ধর্মীয় বিশ্বাসের শিক্ষা দিতে হবে, যদি সেটা আমরা দিতে না পারি বা সেই শিক্ষায যদি কোনো কমতি থাকে এবং হিন্দু হিসেবে সেই ছেলে মেয়ে যদি গর্ব করতে না পারে, তাহলে পরবর্তীতে সে খ্রিষ্টান বা মুসলিম উম্মাহর ধর্মান্তরের চক্রান্তে পড়ে বিভ্রান্ত হবে এবং হিন্দুধর্ম ও সমাজ ত্যাগ করে আস্তে আস্তে হিন্দু সমাজকে বিলুপ্তির পথে নিয়ে যাবে।
পীর-মাজারের সংস্কৃতি হলো ইসলামিক সংস্কৃতি। যখন আপনি নিজে কোনো কারণে মাজারে যাচ্ছেন বা ছেলে মেয়েদের নিয়ে যাচ্ছেন, তখন আপনার ছেলে মেয়ে এই শিক্ষা পাচ্ছে যে, মাজারই তার ধর্মস্থান এবং পীর ই তার ধর্মগুরু বা পরিত্রাতা। ছেলে মেয়েরা যখন মাজার সংস্কৃতির সংস্পর্শে বড় হচ্ছে, যখন তারা স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনা করার সুযোগ পাচ্ছে, তখন ধর্ম নিয়ে তারা দ্বিধায় ভুগছে এবং যেহেতু তারা ছোটবেলা থেকেই হিন্দু ধর্মের শিক্ষা পায় নি এবং যেহেতু আমাদের চারপাশে ইসলামের সস্তা প্রচার অব্যাহত, সেহেতু তাদের কাছে একসময় মনে হচ্ছে যে, একমাত্র ইসলামই শ্রেষ্ঠধর্ম এবং এরপর তারা লাভজিহাদ বা মুসলমান কর্তৃক ব্রেইন ওয়াশে কনভার্ট হয়ে যাচ্ছে।
মানুষের মস্তিষ্ক্যে বিশ্বাসের একটা প্রকোষ্ঠ বা কুঠুরি আছে; সেই কুঠুরি কখনো খালি থাকে না; যেকোনো বাচ্চাকে ছোটবেলাতেই যদি তার সেই কুঠুরি ধর্মবিশ্বাস দিয়ে পূর্ণ করে দেওয়া যায় এবং মাঝে মাঝে তা রিচার্জের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে তার মাথায় অন্য কোনো ধর্মবিশ্বাস ঢোকার চান্সই পাবে না; এই রুলস ফলো করে মুসলমানরা, তাই মুসলমানরা কোনো কিছুতেই অন্যধর্মে তেমন কনভার্ট হয় না, যারা ইসলামকে সহ্য করতে পারে না, তারা ইসলাম ত্যাগ করে স্বনামে বহাল থেকে নাস্তিক হয়ে যায়; আর যারা নিজেদের মুসলমান ভাবে, তারা নানা মুখী জাল বিস্তার করে ইসলামের ফাঁদে শিকার করে অন্যদের।
আমাদের হিন্দু সমাজের প্রধান সমস্যা হলো- বাচ্চাদেরকে আমরা ছোটবেলাতেই তার বিশ্বাসের কুঠুরিকে ধর্ম বিশ্বাস দিয়ে পূর্ণ করে দিই না; ফলে তার বিশ্বাসের কুঠুরি বেশ খানিকটা খালি থাকে, সেই শূন্যস্থানে তখন প্রথমে স্থান পায় মানবতাবাদ এবং তারপর ইসলাম বা খ্রিষ্টান মতবাদ।
আমি এই কথাগুলো বলছি, আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে; যেহেতু ছোটবেলায় আমাকে হিন্দু ধর্মের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় নি এবং স্কুলের হিন্দু ধর্মের পাঠ্যপুস্তকগুলোও আমার মনের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারতো না, সেহেতু আমার বিশ্বাসের কুঠুরি ছিলো অনেকখানি খালি; এই অবস্থায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম ক্লাসমেটেদের নানা ধর্মীয় বিষয়ে চুলকানির জবাব দিতে গিয়ে হতাম ক্ষতবিক্ষত এবং হিন্দুধর্মকে মনে হতো বোগাস বা ফাউল এবং তখনও যেহেতু লাভজিহাদের ফাঁদে পড়ে হিন্দুধর্ম ত্যাগ করার মতো কোনো সুযোগ আসে নি এবং যেহেতু ইসলাম ও মুসলমানদের মধ্যেও ভালো কিছু খুঁজে পেতাম না, সেহেতু নিজেকে রক্ষার জন্যই আশ্রয় নিই মানবতাবাদের এবং নিজেকে পরিচয় দিতাম মানবধর্মী হিসেবে; এই পর্যায়ে আমি ছিলাম মানবতাদের একান্ত সেবক, বলতে পারেন একজন মহামানব; ধর্মীয় পরিচয় কাউকে দিতেও এবং কারো ধর্মীয় পরিচয় জিজ্ঞেস করতেও লজ্জা বোধ করতাম; এভাবে বেশ কয়েকবছর চলার পর, আমি আশ্চর্য হয়ে খেয়াল করলাম, আমার কোনো মুসলিম ফ্রেণ্ড মানবতাবাদের কথা বলছে না, আমি শুধু একাই মানবতাবাদের কথা বলছি, আর হিন্দু ধর্ম ও সমাজের ক্ষতি করছি; কিন্তু ছোটবেলা থেকে দেখতে দেখতে বড় হয়ে আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা বলে, হিন্দু সমাজের কালচার, মুসলিম সমাজের কালচার থেকে শতগুনে শ্রেষ্ঠ; তখনই আমি নিজেকে প্রশ্ন করলাম, তাহলে কেনো আমি মানবতাবাদের কথা বলে নিজের শ্রেষ্ঠ কালচারের ক্ষতি করছি ? এর পরেই আমার ভেতরে ঘটে একটা পরিবর্তন, যার রূপ আপনারা দেখেছেন, দেখছেন এবং যার ফল কিছুটা পাচ্ছেন।
আমি জন্ম নিয়েছিলাম হিন্দু হিসেবে, তারপর ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে আশ্রয় নিলাম মানবতাবাদের, এরপর যেকোনো প্যাঁচে পড়ে ইসলাম বা খ্রিষ্টান ইজমে চলে যাওয়া আমার জন্য কোনো কঠিন ব্যাপার ছিলো না, কিন্তু আমি নিজেকে রক্ষা করেছি এবং এরপর রক্ষা করেছি অনেককে, যার সাক্ষী আপনারা, কিন্তু সবার পক্ষে কি সেই অবস্থান থেকে নিজেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব ? সম্ভব নয়। ১০০ জন ছেলেমেয়ের মধ্যে দুচার জনের পক্ষে কখনোই ইসলামের সস্তা মনভুলানো প্রচার ও খ্রিষ্টানদের অর্থকে অবহেলা করা সম্ভব নয়। তাহলে এই অবস্থা থেকে বাঁচার উপায় কী ?
বাঁচার উপায় একটাই, বাচ্চাদের বিশ্বাসের কুঠুরিকে ছোটবেলাতেই পূর্ণ করে দিতে হবে এবং মাঝে মাঝে তা রিচার্জের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিশ্বাসের কুঠুরির ব্যাটারিকে সব সময় হান্ড্রেড পার্সেন্ট ফুল চার্জে রাখতে হবে, তাহলে তার মাথায় অন্য কোনো বাজে মতবাদ ঢোকার চান্সই পাবে না।
চট্টগ্রামের ছেলে মেয়েরা ব্যাপক হারে ইসলামে কনভার্ট হওয়ার মূল কারণ হলো হিন্দু পরিবারগুলোতে হিন্দু ধর্মীয় কালচারের অভাব এবং হিন্দু কালচারে মাজার সংস্কৃতির প্রভাব। আপনি নিজেই যদি ছেলে মেয়েদেরকে মাজার সংস্কৃতি নামক ইসলামিক কালচারের প্রভাবে বড় করে তোলেন, আর পরিণত বয়সে গিয়ে পৌঁছার পর ধর্মবিশ্বাসের দ্বন্দ্বে ভুগে হিন্দুত্বত্যাগ করে তারা যদি নিজেকে মুসলমান হিসেবে মনে করে, তাহলে তাদেরকে কোনো দোষ দেওয়া যায় কী ? যে যা রোপন করবে, তাকে তো সেই ফল ভোগ করতেই হবে। মনে রাখবেন, জোর করে কাউকে কোনো বিশ্বাসে আটকে রাখা যায় না, প্রত্যেকটি মানুষ সেই বিশ্বাসই মনে লালন করে, যে বিশ্বাস নিয়ে সে গর্ববোধ করে। বাচ্চারা যখন ছোট থাকে, তখন তাদেরকে শাসন করা যায়, পরিনত বয়সের একটি মানুষকে শাসন করা যায় না, পরিণত বয়সের একটি মানুষ যদি তার জন্মগত ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে দ্বিধায় ভুগে, তাহলে সেই দোষ তার সমাজের, যে সমাজ তাকে সঠিক শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলতে পারে নি।
বর্তমান হিন্দু সমাজে, হিন্দু নামধারী বহু মানবতাবাদীর আবির্ভাব ঘটেছে, এদের কথা ও কাজে হিন্দু সমাজ প্রতিনিয়ত ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে, কিন্তু এদের মানবতাবাদী হয়ে উঠার জন্য দায়ী কি এরা ? হিন্দু সমাজ যে এদেরকে হিন্দু হিসেবে গড়ে তুলতে পারে নি, তার দায় হিন্দু সমাজের; আর এই মানবতাবাদীরা যদি কখনো হিন্দুধর্ম ও সমাজ ত্যাগ করে, তারও দায় হিন্দু সমাজের।
আমি অনেক ভেবে দেখেছি, যারা প্রকৃত হিন্দু নয়, তারাই হিন্দু সমাজের সকল সমস্যার মূল কারণ। এরাই সামান্য স্বার্থের জন্য ধর্মত্যাগ করে সমগ্র হিন্দু সমাজকে হেয় করে; মুসলিম সমাজের একটু প্রশংসা পাওয়ার জন্য হিন্দুধর্ম ও সমাজ নিয়ে বাজে মন্তব্য করে, মুসলিম সমাজের মধ্যে থেকে যারা এই ধরণের আচরণ করে তাদেরকে বলে মোনাফেক, এদের বিরুদ্ধে ইসলামের স্পষ্ট নির্দেশ হলো, এদেরকে হত্যা করতে হবে, কিন্তু যেহেতু হিন্দু সমাজ এই ধরণের খুন খারাবিতে বিশ্বাস করে না, তাই হিন্দু সমাজে এই ধরণের আগাছা একবার বাড়লে তা আর উপড়ে ফেলার সুযোগ তেমন একটা নেই। একারণে হিন্দু সমাজে আগাছা যাতে জন্মাতেই না পারে, সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সেই লক্ষ্যেই আমাদেরকে একযোগে কাজ করতে। এক একজন হিন্দু ছেলে মেয়েকে প্রকৃত হিন্দু হিসেবে গড়ে তুলে তাকে হিন্দু সমাজের সম্পদে পরিণত করতে হবে; একারণে প্রতিটি হিন্দুকে ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগতভাবে যার যার অবস্থানে থেকে কাজ করতে হবে, ছোটবেলা থেকেই হিন্দু ছেলে মেয়েকে হিন্দু মন্দির ও দেব-দেবীদের সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলে সুস্পষ্ট জ্ঞান দিতে হবে, স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তারা মুসলমানদের যে যে প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে, সে ব্যাপারে ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে শিক্ষা দিতে হবে, এছাড়াও কোনো বাজে মতবাদ যাতে তাদের মাথায় ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে তাদের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো ছেলে মেয়েকে শুধু মানুষ হওয়ার শিক্ষা না দিয়ে তাদেরকে প্রকৃত হিন্দু হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে এবং এটা বোঝাতে হবে যে, হিন্দুত্ববাদ আর মানবতাবাদ আলাদা কিছু নয়; এককথায় হিন্দু পরিবারে বিশুদ্ধ হিন্দুধর্মীয় কালচারের চর্চা করতে হবে। মনে রাখবেন, যখনই আপনার পরিবারে আপনি ভিন্নধর্মীয় কালচারের অনুপ্রবেশ ঘটাবেন, তখন আপনি নিজেই নিজের সর্বনাশের বীজ বপন করলেন, এই বীজ থেকে চারাগাছ গজিয়ে যখন তা মহীরুহ আকার ধারণ করে আদালতে দাঁড়িয়ে বলবে, আমি আমার বাপ মাকে চিনি না, এরা কাফের, এভাবে আপনাকেই যখন আপনার মেয়ে ছোবল মারবে, তখন এই দোষটা কী তার ?
মানুষ বা সমাজ পায় তার ভুলের শাস্তি, হিন্দু সমাজ আজ যে শাস্তি পাচ্ছে, সেই ভুল একান্তই হিন্দু সমাজের; এই শাস্তি আমরা যদি আর না পেতে চাই, তাহলে আজ থেকেই হিন্দু ছেলে মেয়েদেরকে, মাজার-দরগার মতো বিজাতীয় সংস্কৃতির সংস্পর্শে না নিয়ে গিয়ে হিন্দু ধর্মের শিক্ষা দেওয়া শুরু করি, আশা করা যায়, ভবিষ্যতে আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আর কান্নার পরিমান কিছু কমবে।
এই পোস্টে শুধু ফোকাস করলাম চট্টগ্রামের মাজার এবং সেই এলাকার হিন্দুদের নিয়ে; কিন্তু সিলেটের মাজার এবং সেই এলাকার হিন্দুদের জন্যও আমার একই বক্তব্য, এছাড়াও আমার একই বক্তব্য সমগ্র বাংলাসহ ভারত উপমহাদেশের সকল মাজার এবং সেই সব মাজারের প্রতি হিন্দুদের পজিটিভ মনোভাবের জন্য।
যেসব হিন্দু, মাজারে যায়, তারা জানে না যে, সেই সব মাজারে যাদের কবর আছে, তারা প্রত্যেকে এক একজন হিন্দু হত্যাকারী, জিহাদের নামে কাফের হত্যার কুরানিক নির্দেশনা অনুসারে, ইসলাম গ্রহন না করার অপরাধে তারা হত্যা করেছে হাজার হাজার হিন্দুকে, সেই ইতিহাস যাতে বর্তমানের হিন্দুরা জানতে না পারে, সেজন্য সেগুলো ইতিহাস থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে, আর সেসব ইতিহাস না জানার কারণে হিন্দুরা মাজারে যাচ্ছে আর নিজের অজান্তেই তাদের পূর্ব পুরুষদের রক্তের সাথে বেঈমানী করছে। একটা কথা মনে রাখবেন, ইসলামের আবির্ভাবের পর থেকে মুসলমানদের মূল উদ্দেশ্য হলো- শুধু হিন্দু ধর্মকেই নয়, পৃথিবীর সকল ধর্মকে বিলুপ্ত করে সারা বিশ্বে ইসলামকে কায়েম করা, এজন্য তারা শুরু থেকেই সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে একের পর এক দেশ বা এলাকা দখল করেছে, যারা এই কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে, বৃদ্ধ বয়সে তারাই পীর হিসেবে আখ্যায়িত হয়েছে এবং মরে যাওয়ার পর তাদের কবরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে দরগা বা মাজার। ইতিহাস না জানার কারণে, হিন্দুর রক্তের উপর গড়ে উঠা সেই দরগা বা মাজারে গিয়ে আপনি হয়তো কোনো ভুল বা অপরাধ করেন নি, কিন্তু আমার এই লেখা পড়ে আজ সেটা জানার পরও আপনি যদি কোনো মাজার বা দরগায় যান, সেটা হবে আপনার পূর্ব পুরুষ হিন্দুর সাথে একটা চরম বিশ্বাসঘাতকতা।
আপনি হয়তো জানেন না যে, ইসলাম কোনো হিন্দুকে বেঁচে থাকারই অধিকার দেয় নি, আমার কথায় বিশ্বাস না হলে নিচের এই আয়াতটা পড়ুন আর তার অর্থ বোঝার চেষ্টা করুন,
“ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম চাইলে কখনো তা গ্রহণ করা হবে না”- (কোরান, ৩/৮৫)
“মুশরিক(মূ্র্তিপূজারী)দের হত্যা কর যেখানেই তাদের পাও এবং তাদের ধরো, ঘেরাও করো এবং তাদের প্রতিটি ঘাঁটিতে তাদের খবরাখবর নেওয়ার জন্য শক্ত হয়ে বসো। অতঃপর তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়(এককথায় ইসলাম গ্রহন করে), তাহলে তাদেরকে তাদের পথ ছেড়ে দাও।( কোরান- ৯/৫)
কোরানে সরাসরি হিন্দুদেরকে ইসলাম গ্রহন না করলে হত্যা করার নির্দেশ থাকলেও, বর্তমানে মুসলমানদের পক্ষে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব না হওয়ায়, তারা শান্তির ছদ্মবেশে ইসলাম প্রচার শুরু করেছে এবং পীরের মাজার দরগায় সব ধর্মের লোক যেতে পারে ব’লে প্রচার করে হিন্দুদেরকে ধোকা দিয়ে আস্তে আস্তে তাদেরকে ব্রেইনওয়াশ করে ইসলামে দীক্ষিত করার চেষ্টা করছে; আর এই ধোকা খেয়ে হিন্দুরা মাজারে যাচ্ছে আর নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারার ব্যবস্থা করছে।
একটা কথা কেনো বোঝেন না, যে ইসলাম হিন্দুদেরকে বেঁচে থাকারই অধিকার দেয় নি, যে মুসলমানরা হাজার হাজার বা লাখে লাখে হিন্দু হত্যা করে নিজেরা গাজী উপাধি পেয়েছে এবং তাদের কবরকে কেন্দ্র করেই যেসব মাজার গড়ে উঠেছে, সেই মাজারে আপনি কিসের জন্য বা কোন কল্যানের আশায় প্রার্থনা করতে যান বা যাচ্ছেন ? আপনি কোনো মাজারে যাচ্ছেন মা্নে- হয় নিজে ইসলামের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন বা নিজের ছেলে মেয়েদেরকে ইসলামের দিকে ঠেল দিচ্ছেন। নিজের ধর্ম সংস্কৃতিকে ভুলে বা অবহেলা করে যারা শত্রুজাতির ধর্ম সংস্কৃতির গুনগান গায় বা পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদেরক কি মানুষ হিসেবে গণ্য করা যায় ? বিচারের ভার ছেড়ে দিলাম আপনার বিবেকের উপর।
জয় হিন্দ।
No comments:
Post a Comment