Saturday 22 August 2020

“শিব তার নিজের ছেলে গনেশকে চিনতে পারেনি গর্দান কেটে ফেলেছিলেন তাহলে তিনি তার সৃষ্টিকে কি করে চিনবেন? ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য ? ”


"শিব তার নিজের ছেলে গনেশকে চিনতে পারে নি, গর্দান কেটে ফেলেছিলেন, তাহলে তিনি তার সৃষ্টিকে কি করে চিনবেন ? ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য ?" 

এই মন্তব্যসহ আরও কিছু প্রশ্ন প্রথম পেয়েছিলাম Md Alhaz Hosain নামের এক মুসলমানের কাছ থেকে। মুসলমানদের স্বভাবই তো হলো একজনের কমেন্টকে কপি পেস্ট করে বারবার চালানো; কারণ, নতুন কিছু লিখতে গেলেও মেধার দরকার, সেটা ওরা পাবে কোথায় ? যা হোক, ঐ একই ধরণের কমেন্ট আপনারা মুসলমানদের কাছ থেকে আরো পাবেন, সেগুলোর জবাব জেনে নিন এই প্রবন্ধ থেকে, তার আগে দেখে নিন পুরো কটূক্তিটি-

“ শিব ৬০,০০০ বিবাহ করেছিল সে মারা যাবার পর তার লিঙ্গকে পূজা করা হয় একজন শিষ্টাচার হিন্দু কোন যুক্তিকতায় তার স্ত্রীর দুধ দিয়ে শিবের গোপন অঙ্গ ধৌত করে? এটা কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য? এমন কুরুচিপূর্ন আদেশ সৃষ্টিকর্তা দিতে পারেন কি? শিব তার নিজের ছেলে গনেশকে চিনতে পারেনি গর্দান কেটে ফেলেছিলেন তাহলে তিনি তার সৃষ্টিকে কি করে চিনবেন? ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য? দেবদাসীর ও যোগিনীর মত পতিতা চরিত্রের সাথে ভগবান ও ব্রাহ্মনগণ কি করে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত হন? যদি তারা প্রকৃতার্থে ভগবান হয়ে থাকেন?"

শান্তির দূতেরা হলো সিলগালা মানসিক প্রতিবন্ধী, যতই রেফারেন্স দেওয়া হোক এরা কিছুই বিশ্বাস করবে না; কারণ এদের বিশ্বাস কোরান হাদিসের বাইরে কোনো জ্ঞান নেই এবং কোরান হাদিস ই শেষ কথা। তাই প্রশ্নগুলো ওদের হলেও এগুলোর জবাব দিচ্ছি আমার হিন্দু বন্ধুদের উদ্দেশ্যে, যাতে তারা হিন্দু ধর্ম নিয়ে হীনম্মন্যতায় না ভোগে বা হীনম্মন্যতা থাকলেও যেন তা কেটে যায় এবং তর্কযুদ্ধে মুসলমানদের সাথে সমানে সমান লড়তে পারে এবং জয়ী হতে পারে। উপরে প্রশ্নগুলো দেখেছেন, এবার নিচে দেখুন আমার জবাব-

সে লিখেছে, “শিব ৬০,০০০ বিবাহ করেছিল সে মারা যাবার পর তার লিঙ্গকে পূজা করা হয় একজন শিষ্টাচার হিন্দু কোন যুক্তিকতায় তার স্ত্রীর দুধ দিয়ে শিবের গোপন অঙ্গ ধৌত করে? এটা কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য? এমন কুরুচিপূর্ন আদেশ সৃষ্টিকর্তা দিতে পারেন কি?”

শিব যে ৬০ হাজার বিয়ে করেছে তার কোনো রেফারেন্স নেই, সুতরাং এটা কুকুরের ঘেউ ঘেউ। তারপরও বলছি, শিবের স্ত্রী একজনই, সে সতী, এই সতীই মারা গেলে পরের জন্মে পার্বতী রূপে জন্ম নেয় এবং আবার শিবের সাথে তার বিয়ে হয়, পার্বতীরই অপর রূপের নাম দুর্গা, কালি, উমা, অন্নপূর্ণা ইত্যাদি। শুধু এই বিষয় নিয়েই “শিবের নাকি ৬০ হাজার স্ত্রী” নামে আমার একটি পোস্ট আছে।

এর বিপরীতে দেখা যাক ইসলামের ইতিহাসে কার কয়টি স্ত্রী ?

হযরত সুলমানের ছিলো ১০০ স্ত্রী, এই ১০০ স্ত্রীর সাথে সে একরাতেই সেক্স করেছিলো ১০০ট পুত্র লাভের আশায়। কিন্তু ভুলবশত ইনশাল্লা বলে সেক্স শুরু না করায় একটি পুত্রও হয় নি। সেই হাদিসে জোর দিয়ে বলা হয়েছে ইনশাল্লা বলে সেক্স করলেই পুত্র সন্তান হবে (Sahih Bukhari 4/52/74)। এই কথা সত্য হলে মুসলমানদের জনসংখ্যার ৯০% হতো পুরুষ। কারণ, খুব কম পুরুষ ই আছে যারা কন্যা সন্তান কামনা করে। সুতরাং এই হাদিসটির মাধ্যমেও মুহম্মদের কথা যে মিথ্যা তা প্রমানিত।

সুলাইমান ছাড়াও ইসলামের মহানবী মুহম্মদের তো ১১ টা পূর্ণকালীন, আর ১৩ টা স্বল্পকালীন মানে তালাকপ্রাপ্তা, এর মধ্যে জন যৌনদাসী বা রক্ষিতাও ছিলো। মহানবী বলে কথা, তার স্ত্রীর সাথে সাথে যৌনদাসী না থাকলে হয় ? মুহম্মদের নাতী হাসান আবার মুহম্মদকে টেক্কা দিয়েছিলো, তার ছিলো ৩০০ স্ত্রী। অবশ্য এই ৩০০ জন এক সাথে ছিলো না, এক সাথে স্ত্রী রাখা যাবে কোরানের এই বিধান মতে, হাসান বিয়ে করতো, যত দিন ভালো লাগতো ভোগ করতো তারপর তালাক দিয়ে আবার বিয়ে করতো। এর জন্য হাসানের নাম হয়ে গিয়েছিলো বিয়ের খলিফা। হাসানের এই লাম্পট্যের জন্যই হাসানের ২য় স্ত্রী জায়েদা, মুয়াবিয়ার সাথে ষড়যন্ত্র করে হাসানকে বিষ খাইয়ে মারে।

এরপর সে শিব সম্পর্ক আরো লিখেছে, “মারা যাবার পর তার লিঙ্গকে পূজা করা হয় একজন শিষ্টাচার হিন্দু কোন যুক্তিকতায় তার স্ত্রীর দুধ দিয়ে শিবের গোপন অঙ্গ ধৌত করে?”

শিব নাকি মারা গেছে ! শিব একটি পৌরাণিক চরিত্র। তার না আছে জন্ম, না আছে মৃত্যু। শিব মারা যাওয়ার পর নাকি তার লিঙ্গের পূজা শুরু হয়েছে ? মুসলমানরা একটি “যৌনানুভূতি আক্রান্ত” জাতি, তাই সব কিছুতেই তারা যৌনতাকে খুঁজে পায়। লিঙ্গ মানে প্রতীক বা চিহ্ন। পুংলিঙ্গ মানে যেমন পুরুষের প্রতীক, স্ত্রী লিঙ্গ মানে যেমন নারীদের প্রতীক, তেমনি শিবলিঙ্গ মানে শিবের প্রতীক। প্রাচীন কালে শিবের জটিল মূর্তি তৈরি করা সম্ভব না হওয়ায় অপেক্ষাকৃত নির্মান পদ্ধতি সহজ বলে শিবলিঙ্গ তৈরি করা হয় এবং যেহেতু এর মধ্যে লিঙ্গ শব্দটি আছে এবং লিঙ্গ শব্দটির আরেক অর্থ যেহেতু পুরুষাঙ্গ, সেহেতু কালক্রমে মানুষের অবচেতন মনের ভুলেই মানুষ মনে করে যে এটি শিবের লিঙ্গ !

এরপর সে যে কথা বলেছে, “একজন শিষ্টাচার হিন্দু কোন যুক্তিকতায় তার স্ত্রীর দুধ দিয়ে শিবের গোপন অঙ্গ ধৌত করে?”- মনে হয়, এই বলদ ভেবেছে যে, বিয়ের পর তার মা যেভাবে গোপনে বাসর রাত উদযাপন করে তার বাপের লিঙ্গকে পূজা করে তার জন্ম দিয়েছে, ঠিক সেভাবেই শিবলিঙ্গের পূজা হিন্দুরা করে। আরে বলদা, আশে পাশে দেখেও তো মানুষ অনেক কিছু জানতে পারে ? তুই কানা নাকি ? শিবলিঙ্গের পূজা কি গোপনে করা হয় ? এ তো প্রকাশ্যেই করা হয়। কেউ কি কখনো এমন দেখেছে যে, কোনো লোক তার স্ত্রীর দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গ ধুয়ে দিচ্ছে?

এরপর সে লিখেছে, “শিব তার নিজের ছেলে গনেশকে চিনতে পারেনি গর্দান কেটে ফেলেছিলেন তাহলে তিনি তার সৃষ্টিকে কি করে চিনবেন? ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য ? ”

এবার এই প্রসঙ্গে আসি, গণেশের জন্ম নিয়ে বিভিন্ন পুরানে বিভিন্ন কথা বলা আছে, যেখানে গনেশকে চিনতে না পেরে শিব তার মাথা কেটে ফেলেছিলো বলে বলা আছে সেটা শিবপুরাণ, দেখে নিন আসলে সেই ঘটনাটা কী:

পৌরাণিক কাহিনী মতে,  শিব একবার বাধ্য হয়ে সূর্যকে হত্যা করে, তখন সূর্যের পিতা কশ্যপ, শিবকে অভিশাপ দেয়, সে নিজেও একদিন তার নিজ পুত্রকে হত্যা করতে বাধ্য হবে। এরপর, পার্বতী, তার প্রথম পুত্র কার্তিককে, জন্মের পরপরই, ঘটনাচক্রে ছয় কৃতিকার কাছে রেখে আসতে বাধ্য হলে তার মাতৃত্বের শুন্যতা সৃষ্টি হয় এবং সেই শুন্যতা পূরণে, মনের মাধুরী মিশিয়ে কাদামাটি দিয়ে পার্বতী একটি মূর্তি গড়ে এবং সেই মূর্তিতে প্রাণ সঞ্চার ক’রে একটি পুত্রের জন্ম দেয়। পার্বতী এই পুত্রের নাম দেয় বিনায়ক এবং তাকে নির্দেশ দেয় বাড়ির দরজায় পাহারা দিতে, যাতে পার্বতীর সাধনার সময় কেউ বাড়িতে ঢুকে তাকে বিরক্ত না করে; বিনায়ক সেই দায়িত্ব পালন করার সময় শিব সেখানে আসে এবং বাড়িতে ঢুকতে চায়, তখন বিনায়ক, শিবকে বাধা দেয় এবং তার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে, বিনায়কের এই রূঢ় আচরণ এবং মাতৃ আদেশ পালনের অহংকারের কারণে, শিব, বিনায়কের মুণ্ডুচ্ছেদ করে তাকে হত্যা করে। এরপরই পার্বতী সেখানে আসে, এবং তার পুত্রকে জীবিত করে না দিলে সংসারকে লণ্ডভণ্ড করে দেবার হুমকি দেয়। শেষ পর্যন্ত ত্রিদেব মিলে বিনায়ককে জীবিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং শিব বলে, তার গজরাজ নামে একজন ভক্ত আছে, সে যদি স্বেচ্ছায় তার মাথা দিতে রাজী হয়, তাহলে সেই মাথা লাগিয়ে বিনায়ককে জীবিত করা যাবে, এরপর দেবতারা সেই গজরাজের কাছে যায় এবং তাকে সব খুলে বলতেই সে রাজী হয়ে যায় এই কারণে যে, সে মহাদেবের একজন ভক্ত এবং পূর্বে কোনো এক সময় মহাদেবের কাছাকাছি থাকার একটা প্রার্থনা সে জানিয়েছিলো, সেই সময় মহাদেব তাকে, ভবিষ্যতে, কোনো এক সময় তার এই প্রার্থনা পূরণ হবে বলে বর দিয়েছিলো, তার কাটা মস্তকের মাধ্যমে তার সেই ইচ্ছা পূরণ হচ্ছে ব’লে, হাতি তার মাথা দিতে রাজী হয়ে যায়, এরপর বিষ্ণুসুদর্শন চক্র দ্বারা সেই হাতির মাথা কেটে এনে দিলে শিব সেই মাথা লাগিয়ে বিনায়ককে জীবিত করে এবং তার নতুন নাম দেওয়া হয় গণেশ

যা হোক, মুসলমানরা বলবে এটা একটা গাঁজাখোরি গল্প। ধরে নিলাম এই গল্প গাঁজাখোরি, তাহলে মুহম্মদের মেরাজের গল্পটা কী ? সারারাত উম্মে হানির সাথে রাত কাটিয়ে ভোরে পাবলিকের কাছে ধরা পরার পর মুহম্মদ বলে দিলো যে সে নারী মস্তক সম্বলিত এক ঘোড়া, বোরাকের পিঠে চড়ে সাত আসমান ডিঙ্গিয়ে আল্লার সাথে দেখা করে দোযখ বেহেশত দেখে এসেছে, এটা গাঁজাখোরি গল্প নয় ? এছাড়াও ইসলামের আরো বহু গল্প আছে যেগুলো আজগুবি, যেমন- আঙ্গুলের ইশারায় মুহম্মদের চাঁদ ভাগ করা; এত বড় ঘটনা, অথচ পৃথিবীর আর কেউ এই ঘটনা দেখলো না ! যেন চাঁদ মুহম্মদের ঘরে লটকানো বাতি, যেটা মুহম্মদের ঘরেই শুধু উঠে, আলো দেয় আর ডুবে। ইসলামের এসব ঘটনা যদি মুসলমানদের কাছে গাঁজাখোরি মনে না হয়, তাহলে দেব-দেবীদের পৌরাণিক ঘটনা, সেটা যেমনই হোক না কেনো, তা হিন্দুদের কাছে গাঁজাখোরি বলে মনে হবে কেনো ?

যা হোক, শিবপুরানের এই গল্পে এটা স্পষ্ট যে শিব, গণেশকে জানতো যে সে কে এবং তার অহংকারকে বিনাশ করার জন্যই তার গলা কেটে ফেলেছিলো। তাহলে গলা কাটার আগে শিব গণেশকে চিনতো কি না চিনতো সেই প্রশ্ন আসবে কেনো ?

এই প্রসঙ্গে সে আরো প্রশ্ন তুলেছে, “ভুলে যাওয়া কি সৃষ্টিকর্তার বৈশিষ্ট্য ?”

শিব পুরানের এই কাহিনী থেকেই স্পষ্ট যে এখানে ভুলে যাওয়ার কোনো ব্যাপারই নেই; কারণ, জেনে বুঝেই শিব গনেশের মাথা কেটে ফেলেছিলো। শুধু তাই নয়, যার মাথা কাটা হয়েছে তার নামও তখন গনেশ ছিলো না। কিন্তু মুসলমানদের মহাশক্তিশালী, মহাজ্ঞানী আল্লা যে মাঝে মাঝে কোরান ভুলে যেতো সেই প্রমান কোরানেই আছে, দেখে নিন সেই আয়াতগুলো-

“আমি যে আয়াত বাতিল করি কিংবা ভুলিয়ে দিই, তার স্থানে তা অপেক্ষা উত্তম জিনিস পেশ করি, কিংবা অন্তত অনুরূপ জিনিস এনে দিই।– (কোরান, ২/১০৬)

এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে ইসলামের আল্লা মত বদলাতো। আল্লা যদি সর্বজ্ঞানী হয় তাহলে তার অতীত ভবিষ্যৎ সবই জানা থাকবে, তাহলে তাকে মত বদলাতে হবে কেনো ? এই মত বদলাতে হতো বলেই আল্লাকে আয়াত বাতিল করতে হতো অথবা আয়াত ভুলিয়ে দিতে হতো। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কোরান তো আল্লার ই বাণী, তাহলে আল্লা কাকে আয়াত ভুলিয়ে দিতো ? না আল্লা নিজেই ভুলে যেতো ? নিচে দেখুন এরকম আরও একটি আয়াত-

“আমি যখন এক আয়াতের স্থানে অন্য আয়াত অবতীর্ণ করি, আর আল্লা ভালোই জানেন যে তিনি কী অবতীর্ণ করেন।”- (কোরান, ১৬/১০১)

সেই একই প্রশ্ন, সর্বজ্ঞানী আল্লাকে এক আয়াতের স্থানে অন্য আয়াত অবতীর্ণ করতে হবে কেনো ? এই আয়াতের ২য় বাক্যে আবার বলা হচ্ছে, “আর আল্লা ভালোই জানেন যে তিনি কী অবতীর্ণ করেন।” এই কথাটা কে বলেছে, মুহম্মদ না আল্লা ?

এই হলো ইসলামের সর্বজ্ঞানী আল্লা, যার কথার কোনো ঠিক নেই, একেক সময় একেক কথা বলে। এর বিপরীতে হিন্দুদের ঈশ্বর শ্রীকৃষ্ণ, যিনি এক কথা দুবার বলেন নি, কোনো সিদ্ধান্ত কোনো দিন চেঞ্জ করেন নি। এখন আপনি ই ভাবুন প্রকৃত সৃষ্টিকর্তা কে ?

এরপর সে বলেছে, “দেবদাসীর ও যোগিনীর মত পতিতা চরিত্রের সাথে ভগবান ও ব্রাহ্মনগণ কি করে অশ্লীলকর্মে লিপ্ত হন? যদি তারা প্রকৃতার্থে ভগবান হয়ে থাকেন ? “ 

দেবদাসী ও যোগিনী বলে যে দুটি চরিত্রের কথা সে এখানে উল্লেখ করেছে, আসলে তারা এক। কোথাও তাদেরকে বলে দেবদাসী, আবার কোথাও যোগিনী। কোনো বিষয় সম্পর্কে ভালো করে না জেনেই হুটহাট করে মন্তব্য করা যে মুসলমানদের স্বভাব, এটা তার একটা প্রমান। যা হোক, এই দেবদাসীদের সাথে নাকি ভগবান অশ্লীল কর্মে লিপ্ত হয়েছে! কোন ভগবান, কখন এই কাজ করলো তার যেহেতু কোনো রেফারেন্স নেই তাই এটাকে কুকুরের ঘেউ ঘেউ বলে বিবেচনা করছি। কিন্তু দেবদাসীদের সাথে যে ব্রাহ্মণরা যৌনকর্মে লিপ্ত হতো তার প্রমান ইতিহাসে আছে, ইতিহাসে এটাও আছে যে এটা ভারতের কিছু কিছু এলাকায় বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে প্রচলিত ছিলো, কিন্তু কোথাও কি এই প্রমান আছে যে এটা হিন্দু ধর্মের কোনো প্রথা ? না, নেই। কারণ, হিন্দু ধর্মের কোনো প্রামাণ্য গ্রন্থে দেবদাসী প্রথার উল্লেখ নেই, তাহলে এই প্রথার জন্য হিন্দুধর্মকে দায়ী করা হবে কেনো ? 

দেবদাসী একটি সামাজিক প্রথা, কিছু দুষ্ট লোক নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই প্রথার সৃষ্টি করেছিলো; এতে কিছু মেয়ে হয়তো যৌন শোষণের শিকার হতো কিন্তু তারা ধর্ষিতা হতো না। কারণ, ঐ মেয়েরা স্বেচ্ছায় বা পরিবারের ইচ্ছায়, নিজের এবং পরিবারের মঙ্গল হবে এই বিশ্বাসে নিজেদেরকে মন্দিরের সেবায় উৎসর্গ করতো, সেখানে কোন জোর-জবরদস্তির ব্যাপার ছিলো না। কিন্তু ইসলামে গনিমতের মালের নামে যে মেয়েগুলোকে ধরে এনে ধর্ষণের পর যৌনদাসী বানিয়ে বাজারে বিক্রি করা হতো, সেটা কী ? এটা তো ছিলো পুরাই জবরদস্তি। বছরের আয়েশার কথা না হয় বাদই দিলাম, ৮০০ কুরাইজার গণহত্যার দিনের রাতে রিহানাকে এবং খয়বরের যুদ্ধের পর সেই দিন রাতেই তো মুহম্মদ সাফিয়াকে ভোগ করেছিলো, এটা কি ধর্ষণ ছিলো না ? বাপ-ভাই-স্বামীসহ গোত্রের সকল পুরুষকে হত্যাকারী মুহম্মদকে কি সেই রাতেই সাফিয়া আর রিহানা স্বেচ্ছায় সব খুলে দিয়েছিলো ? মুসলমানরা বলবে, হ্যাঁ, সাফিয়া নিজের ইচ্ছাতেই মুহম্মদের শয্যাসঙ্গিনী হয়েছিলো, তাহলে নিচের ই হাদিসটি এলো কোথা থেকে- 

“আবু আয়ুব খাইবারের যুদ্ধের পর রাতের বেলা হজরত মহম্মদ আর সোফিয়ার তাবু পাহারা দিয়েছিল, পরদিন সকালে মহম্মদের সঙ্গে তার দেখা হলে তিনি মহম্মদকে বলেন "রাসুল, আমি আপনার জন্য সারারাত খুব চিন্তায় ছিলাম ৷ আপনি সাফিয়ার বাবাকে হত্যা করেছেন, স্বামীকে হত্যা করেছেন, পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছেন, আর আপনি সাফিয়ার সঙ্গে সারারাত এক তাবুতে কাটালেন ?! "- (Sira 517 , Ibn Ishaq 766) . 

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে-  পৃথিবী পরিবর্তনশীল, সমাজও পরিবর্তনশীল, হিন্দু সমাজ সেই পরিবর্তনকে স্বীকার করে, এই পরিবর্তনকে স্বীকার করেই দেবদাসী প্রথা আজ নিষিদ্ধ। কিন্তু ইসলামের বিধানের কি কোনো কিছুর পরিবর্তন আছে ? আজও ইসলামের এজেন্টরা ইরাক সিরিয়ায় নারীদেরকে ধর্ষণ করছে (ধর্ষণ করার আগে তারা নাকি নামাজও পড়ে নেয়), ধর্ষণ শেষে তাদেরকে বাজারে যৌনদাসী হিসেবে বিক্রি করছে, যেই কাজগুলো করেছে মুহম্মদ এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা ১৪০০ বছর আগে, এই ১৪০০ বছর পরেও কি সেগুলোর কোনো পরিবর্তন আছে ? আছে মুসলমানদের সভ্য হওয়ার কোনো উপায় ? 

জয় হিন্দ।

উপরে উল্লেখ করা একটি হাদিসের রেফারেন্স :

যৌনকর্মের সময় ‘আল্লাহর ইচ্ছা’ বললেই জন্ম নেবে পুত্র সন্তান (Sahih Bukhari 4:52:74)

No comments:

Post a Comment