United Hindu Concern এর নিরামিষ ভাবনা :
United Hindu Concern,
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মানুষের চারিত্রিক ও শারীরিক বৈশিষ্ট্য এবং ঘোড়ার চারিত্রিক ও শারীরিক বৈশিষ্ট্য একরকম নয়। বিবর্তনের ধারায় যখন পৃথিবীতে ঘোড়ার প্রথম উদ্ভব হয় তখন ঘোড়ার আকার ছিলো বর্তমানের শেয়ালের মতো, কিন্তু ঘোড়ার স্বভাব ছিলো সব সময় ছুটে বেড়ানো এবং সেটা দ্রুতগতিতে, এই বৈশিষ্ট্যের ফলে ঘোড়ার শরীর আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং বর্তমানে ঘোড়ার যে সাইজ পাওয়া যায়, সেই সাইজে পৌঁছায়। স্থির হয়ে বসে না থাকা এবং সব সময় ছুটে বেড়ানো শক্তির একটা চর্চা, যে শক্তির চর্চা, ঘোড়া তার স্বভাবজাত কারণেই করে চলেছে এবং এই চর্চা প্রায় ৫ কোটি বছর ধরে করার ফলে ঘোড়া বর্তমানের পর্যায়ে এসেছে, যার কারণে বিশ্বের সকল শক্তির একককে হর্স পাওয়ারে গণনা করা হচ্ছে।
স্থিরতায় যে শক্তির নষ্ট হয় বা শক্তি কমে যায়, এই জ্ঞান, মহাভারতেও, হুনুমান, ভীমকে দিয়েছিলেন। যে জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ভীম, দুর্যোধনকে পরাস্ত করতে পেরেছিলো।
সুতরাং নিরামিষ খেয়েও কেউ বা কোনো জাতি যে শক্তিশালী হতে পারে, এটা অসম্ভব কিছু নয়, কিন্তু শর্ত হচ্ছে তাকে স্বভাবজাত কারণেই প্রতিনিয়ত নিজের শক্তির চর্চা করে যেতে হবে।
ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দ ছিলেন একজন নিরামিষ আহারী ব্যক্তি, তিনি ছোটবেলা থেকেই সাধনা করতেন, তাই কখনো বীর্যক্ষয় করেন নি এবং প্রতিদিন দুই বেলা নিয়ম করে ব্যায়াম করতেন, ফলে তার শরীরে জমা হয়েছিলো অসাধারণ শক্তি, যার ফলে তিনি একটি ছোট নৌকাকে ছাতার মতো করে মাথার উপর ধরে নিয়ে দৌড়াতে পারতেন, এছাড়াও তার শারীরিক শক্তি এতটাই ছিলো যে, তার জীবদ্দশায় তার এলাকার মুসলমানরা তার নামে ভয়ে কাঁপতো এবং জন্মগতভাবে ক্রিমিনাল মুসলমানরাও তার এলাকার হিন্দুদের কোনো ক্ষতি করার কথা স্বপ্নেও ভাবতো না। তাঁর এই শক্তি ছিলো তার নিরন্তর শক্তি চর্চার ফল।
কিন্তু বাঙ্গালি বৈষ্ণব বা হিন্দুরা কি তাদের জীবনাচরণের কোনো ক্ষেত্রে প্রতিদিন শক্তির এই চর্চা করে ?
করে না।
তাহলে তাদের সাথে ঘোড়ার তুলনা টানা কি মূর্খামি নয় ?
এছাড়াও যার দৈহিক শক্তি ঠিক থাকে, তার যৌনশক্তিও ঠিক থাকে। দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া এমন কোনো মানুষ নেই, যাদের দৈহিক শক্তি পর্যাপ্ত, কিন্তু যৌনশক্তিতে দুর্বল।। যে কারণে প্রতিটি দৈহিক শক্তি কাজে লাগানো খেলোয়াড়ের থাকে সন্তোষজনক যৌনশক্তি; তার মানে যৌনশক্তিও দৈহিক শক্তির সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত, এই সূত্রে ঘোড়াকে যে সেক্স সিম্বল হিসেবে মানা হয়, সেটা কি অযৌক্তিক কিছু ?
উপরের আলোচনা থেকে এটা স্পষ্ট যে কেউ যদি স্বভাবজাত কারণে প্রতিদিন দৈহিক শক্তির চর্চা করে, নিরামিষ খাবার তার জন্য কোনো সমস্যা নয় এবং যেহেতু দৈহিক শক্তির সাথে যৌনশক্তি রিলেটেড, সেহেতু দৈহিক ফিটনেস ঠিক থাকলে যৌনশক্তিও ঠিক থাকা অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু মানব সমাজের ৭৫% মানুষ তো স্বভাবজাতভাবে অলস, তাই মানব সমাজের সাথে ঘোড়ার সমাজের তুলনা করা কি মূর্খামির পরিচয় নয় ?
নিরামিষ খেয়েও দৈহিক শক্তির চর্চা করলে যে শক্তিশালী হওয়া যাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সমস্যা আছে অন্য জায়গায়, নিরামিষ ভোজীরা স্বভাবজাত কারণে নির্বোধ হয় এবং নির্বুদ্ধিতার কারণে তারা অন্যের দাসত্ব করে। খেয়াল করে দেখুন, জঙ্গলের যে সকল প্রাণী নিরামিষ ভোজী, তারা দৈহিকভাবে শক্তিশালী হলেও মানুষ তাদেরকে পোষ মানাতে পেরেছে, তারা মানুষের দাসত্ব করছে, কিন্তু যারা মাংসাষী, সেই বাঘ-সিংহকে কিন্তু আজও মানুষ পোষ মানাতে পারে নি।
নিরামিষ ভোজীদের এই নির্বুদ্ধিতার কারণেই তাদের দেহে প্রচণ্ড শক্তি থাকলেও সেই শক্তিকে তারা যথা সময়ে কাজে লাগাতে পারে না, তাই প্রচণ্ড দৈহিক শক্তি নিয়েও তারা মানুষের দাসত্ব করে। তো সেই শক্তির কী মূল্য, যে শক্তি নিজের আত্মরক্ষা এবং স্বাধীনতায় কোনো ভূমিকা রাখে না বা রাখতে পারে না ?
নিরামিষভোজীরা যে নির্বোধ হয়, তার একটি উদাহরণ স্বামী প্রণবানন্দ। স্বামী প্রণবানন্দ ছিলেন শিবের আশীর্বাদধন্য, একারণে তার জীবনধারণ এবং জীবন কাহিনী সাধারণ ছিলো না। কিন্তু হিন্দু সমাজের সবাই কি তার মতো শিবের আশীর্বাদ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে ? করে না। তাহলে তিনি কিভাবে হিন্দু সমাজের সবার জন্য নিরামিষ আহারের বিধান দিয়ে গেলেন ? তিনি কি এটা ভেবেছিলেন যে তার মতো জীবন যাপন করে সবাই কি তার মতো শক্তিশালী ও ব্রহ্মচারী হবে ? এটা কি কখনো সম্ভব ? সম্ভব নয়। এজন্য তিনি তার প্রতিষ্ঠিত আশ্রমের ছাত্রাবাসে হিন্দু ছাত্রদেরকে নিরামিষ খাওয়ানোর নির্দেশ দিয়ে হিন্দু জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি করে গিয়েছেন, যে ক্ষতি ভারত সেবাশ্রম সংঘের বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে এখনও হয়ে চলেছে। যে কারণেই সম্ভবত ভারত সেবাশ্রম সংঘের হিন্দু ছাত্রাবাসে বাস করা একজন হিন্দু ছাত্রও আজ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য কিছু করে দেশে হিন্দু জাতির নাম উজ্জ্বল করতে পারে নি।
প্রণবানন্দ চেয়েছিলেন, নিরামিষ খাইয়ে সব হিন্দু পুরুষকে তার মতো ব্রহ্মচারী বানাতে, এজন্য ভারত সেবাশ্রম সংঘের আশ্রমবাসী কোনো পুরুষ বিয়ে ও সংসার করতে পারে না, যদি সব হিন্দুপুরুষ তাঁর আদর্শ গ্রহণ করতো এবং সবাই ব্রহ্মচারী হয়ে যেতো এবং এখনও যদি সব হিন্দু পুরুষ ব্রহ্মচারী হয়ে যায় এবং কেউ বিয়ে শাদী না করে সন্তানের জন্ম না দেয়, হিন্দু সমাজ কয়দিন টিকে থাকবে ? প্রণবানন্দের আদর্শ গ্রহণ করলে ১০০ বছর পরই তো "গুরুদেব দয়া করো দীনজনে" বলে তার উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করার কেউ থাকবে না। ফলে সাধারণভাবে অলস হিন্দুজাতিকে নিরামিষ খাওয়ানোর চেষ্টা এবং তাদেরকে ব্রহ্মচারী বানানোর অপচেষ্টা যে সমাজ সংসার রক্ষার জন্য একটি নির্বোধ ধারণা, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
শক্তির সার্থকতা তখনই, যখন সেটা কাজে লাগে। আপনার অনেক জ্ঞান, কিন্তু সমাজকে সেই জ্ঞান দিলেন না, তাহলে সেই জ্ঞানের কী মূল্য ? আপনার অনেক দৈহিক শক্তি, কিন্তু সেই শক্তি দিয়ে সমাজের মানুষকে অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলেন না বা রক্ষা করলেন না, আপনার দৈহিক শক্তির মূল্য কী ? একইভাবে নিরামিষভোজী প্রাণীর দেহে শক্তি থাকলেও সেই শক্তি তাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য কোনো কাজে লাগাতে পারে না, তাই সেই শক্তির বাস্তবে কোনো মূল্যই নেই।
আপনি যেহেতু নিরামিষ খাওয়া ঘোড়ার যৌনশক্তির কথা বলেছেন, সেহেতু আরেকটি বাস্তব উদাহরণ না দিয়ে পারছি না-
স্বভাবজাত দৈহিক শক্তির চর্চা ছাড়া, শুধু নিরামিষ খেলেই যদি যৌনশক্তি ঠিক থাকতো বা বাড়তো, তাহলে কি চৈতন্যদেবের দুই স্ত্রীর জীবন নষ্ট হতো ? কোনো পুরুষের যৌনশক্তি ঠিকঠাক থাকলে তার পক্ষে কি সম্ভব, বিয়ের পর পরই স্ত্রীকে ফেলে দূরে কোথাও চলে যাওয়া ? অথচ চৈতন্যদেব ঠিক তা ই করেছিলেন; প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মী প্রিয়াকে বিয়ের কিছুদিন পরই তিনি তাকে ফেলে নদীয়া থেকে পূর্ববঙ্গ অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে চলে এসেছিলেন, যার ফলে কয়েক মাসের মধ্যেই লক্ষ্মী প্রিয়া স্বামীর বিরহে নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে জীবন যন্ত্রণা সইতে না পেরে গঙ্গার জলে ডুবে ইহলীলা সাঙ্গ করেছিলো। আর দ্বিতীয় স্ত্রী বিষ্ণু প্রিয়াকে তো চৈতন্যদেব ঘুমন্ত অবস্থায় বিছানায় ফেলে বাড়ি ত্যাগ করেছিলো। একজন সক্ষম যৌনশক্তিসম্পন্ন পুরুষের পক্ষে কি এই ধরণের আচরণ করা সম্ভব ?
দুইজন স্ত্রী থাকলেও চৈতন্যদেবের কোনো সন্তান ছিলো না এবং তার স্ত্রীসঙ্গ পরিহার করার আপ্রাণ চেষ্টায় এটা অনুমিত হয় যে তার কোনো যৌনশক্তিও ছিলো না। এই চৈতন্যদেব ছিলো আজীবন নিরামিভোজী, যে কারণে তার আদর্শে অনুপ্রাণিতরা নিরামিষ খাওয়ার ঘোর পক্ষপাতী, তো এই নিরামিষভোজী চৈতন্যদেবের সাথে কি নিরামিষভোজী ঘোড়ার যৌনশক্তির তুলনা করা যাবে ?
বিষয়গুলো গভীরভাবে ভাববেন এবং তারপর নিরামিষের পক্ষে সাফাই গা্ইবেন, অন্যথায় আপনাদেরকে নির্বোধ এবং নপুংষক ভাবতে কারো দেরী হবে না।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ
------------------
উপরে ঘোড়ার উৎপত্তি সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছি, সে সম্পর্কে অল্পকিছু জানতে পারবেন নিচের অনুচ্ছেদে, এছাড়াও বিস্তারিত জানতে হলে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে জানতে পারবেন।
"হাইর্যাকোথেরিয়াম বা ইওহিপ্পাসঃ প্রায় ৫৫ মিলিয়ন বছর আগে ঘোড়ার আদিতম পূর্বপুরুষ হাইর্যাকোথেরিয়াম-এর আবির্ভাব ঘটে। একে ঊষাকালের ঘোড়া ( dawn horse) বলে অভিহিত করা হয়। এদের আকার ছিল শেয়ালের মতো ও উচ্চতা ছিল প্রায় ২৮ সেমি। এদের অগ্রপদে ৪টি ও পশ্চাদপদে ৩টি করে আঙুল ছিল। শরীরের তুলনায় মাথা, গলা ও পা ছোটো ছিল। প্রাণীটি বনের গাছ-গাছালির মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারত।"
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%98%E0%A7%8B%E0%A6%A1%E0%A6%BC%E0%A6%BE
No comments:
Post a Comment