ফটোপোস্টে যে রথযাত্রার একটি ছবি দেখছেন, এটা ইসকন কর্তৃক প্রযোজিত এবং আয়োজিত 2019 সালের রথযাত্রার একটি ছবি। খুব ভালো করে খেয়াল করে দেখুন রথের মধ্যে যিনি বসে আছেন, তিনি ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা প্রভুপাদ। এই রথযাত্রায় কৃষ্ণ, বলরাম, সুভদ্রা নেই; তাদের পরিবর্তে আছে প্রভুপাদ, তার মানে প্রভুপাদই ইসকনিদের মতে ঈশ্বর।
হিন্দুরা যেমন নির্বোধ, তেমনি তাদের সহ্য বা ধৈর্য শক্তিও সীমাহীন। না হলে এই ধরণের অশাস্ত্রীয় কাজ কিছু হিন্দু নামধারী ব্যক্তি করেই বা কেনো, আর কিছু হিন্দু তা সহ্য করেই বা কেনো ?
ইসকন নামধারী এই ব্যবসায়ী সংগঠন- একদিকে বাংলার হিন্দুদের জন্য কোনো কাজ না করে তাদের পকেট ফাঁকা করছে, অন্যদিকে কিছু নির্বোধ ছেলেদের ব্রেইনওয়াশ করে তাদেরকে সংসার থেকে বিচ্যুত করে সেই পরিবারের স্বপ্নের বিনাশ এবং হিন্দু সমাজের ক্ষতি করছে। এভাবে ইসকনের মাধ্যমে বাংলার হিন্দু সমাজের আস্তে আস্তে ক্ষতি হলেও খুব কম হিন্দুই এ ব্যাপারে সচেতন, কিন্তু ইসকন এবার একেবারে হিন্দুদের মাথায় আঘাত করেছে কৃষ্ণের স্থলে প্রভুপাদকে বসিয়ে। এখনই যদি হিন্দুরা একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ না করে, তাহলে এক সময় ইসকনিরা প্রচার করবে যে প্রভুপাদই পূর্ণব্রহ্ম, সুতরাং প্রভুপাদ প্রবর্তিত ইসকন ধর্মই হিন্দুদের জন্য একমাত্র আদর্শ এবং পালনীয়।
ইসকনিরা একদিকে প্রভুপাদকে ভগবান বানাচ্ছে, অন্যদিকে এরাই আবার নকল ভগবানের সিরিয়াল নামে বই প্রকাশ এবং তা প্রচার করছে, যেখানে তারা স্বঘোষিত ভগবান- অনুকূল, হরিচাঁদ প্রভুতির সমালোচনা করছে । অথচ বর্তমানে বাঙ্গালি হিন্দু সমাজে সবচেয়ে প্রভাবশালী নকল ভগবান হলো চৈতন্যদেব, সে সম্পর্কে তারা কোনো কথা বলে না, আবার এই চৈতন্যদেবই তাদের আদর্শ, যে চৈতন্যদেবের আদর্শ মানলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস হতে বাধ্য।
যা হোক, একদিকে নকল ভগবান চৈতন্যদেবকে তারা আদর্শ হিসেবে মানছে, অন্যদিকে আবার আরেক নকল ভগবান প্রভুপাদের জন্ম দিতে চলেছে, যার ট্রেলার তারা এবারের রথযাত্রায় দেখিয়েছে। সারা রাংলায় সব ইসকন মন্দিরে তারা এই ট্রেলার তারা দেখায় নি, দেখিয়েছে একটি মন্দিরের অধীনে এবং আমার ধারণা এই ট্রেলার দেখিয়ে তারা এটা বোঝার চেষ্টা করছে যে প্রভুপাদকে যদি তারা ভগবান হিসেবে চালায়, সেটা লোকজন খাবে কি না ? এই প্রচেষ্টায় যদি তারা সফল হয়, এবং হিন্দুদের মধ্যে থেকে যদি এর প্রতিবাদ না উঠে, পরের বছর তারা আরো বেশি জায়গায় এই ট্রেলার শো করবে, এভাবে তারা আস্তে আস্তে তাদের সমস্ত মন্দিরে এই শো চালাবে এবং প্রভুপাদকে এভাবে আস্তে আস্তে ভগবান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে এবং বলবে প্রভুপাদ প্রবর্তিত ধর্ম হলো ইসকন ধর্ম এবং এটাই সকল হিন্দুর ফলো করা উচিত, কিছু বলদ হিন্দু তা ফলো করবেও।
ইসকন একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং এই ঘটনা যে ইসকনের কোনো একটি মন্দির বিচ্ছিন্নভাবে করেছে, এটা আমি মনে করি না। ইসকনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ফলেই যে তারা এই ট্রেলার শো করেছে, তাতে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তাই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদও বিচ্ছিন্নভাবে করলে চলবে না, বাংলার সমস্ত হিন্দু সংগঠনকে সমস্বরে এর প্রতিবাদ করতে হবে, তাহলেই ইসকন এই অপতৎপরতা থেকে বিরত হবে, না হলে এরা আস্তে আ্স্তে প্রভুপাদকে ভগবান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার কাজ করেই যাবে, এভাবে ১০০/১৫০ বছর পর আমাদেরই পরবর্তী প্রজন্ম, আমাদেরই উদাসীনতায় বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে যে হ্যাঁ, প্রভুপাদ ভগবান, তার পূজো অর্চনা করলেই চলবে, আমাদের আর অন্য কিছু করার দরকার নেই; যেমন- ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে বর্তমানের কিছু হিন্দু- অনুকূল, হরিচাঁদ, জগদ্বন্ধু, চৈতন্যদেবকে। ঠিক একইভাবে প্রভুপাদকেও আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করবে, যদি এখনই আমরা এই নকল ভগবানের চারাকে উপরে ফেলে দিতে না পারি।
গ্রামের ভেতরে রাতের অন্ধকারে যখন চুপিচুপি চোর ডাকাত প্রবেশ করে তখন রাস্তার কুকুরগুলো ঘেউ ঘেউ করে চিৎকার করে গ্রামবাসীকে ঘুম থেকে জাগানোর চেষ্টা করে এবং চোর ডাকাত সম্পর্কে সচেতন করে। কুকুর মানুষের জন্য উপকারী প্রাণী, তাই কুকুর মানুষের এই উপকার করার চেষ্টা করে, কিন্তু কুকুরের ঘেউ ঘেউকে যদি কোনো মানুষ পাত্তা না দিয়ে ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে শেষ পর্যন্ত চুড়ান্ত ক্ষতি হয় সেই মানুষদেরই, চোর ডাকাত তাদের সর্বস্ব লুটে নিয়ে যায়। আমি কুকুরের ভূমিকা পালন করে প্রচলিত নকল ভগবানের সাথে সাথে উদীয়মান নকল ভগবান সম্পর্কেও হিন্দুদেরকে সচেতন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি, যদি আপনার আমার এই উদ্যোগ পছন্দ হয়, আমার সাথে সুর মিলিয়ে আমার স্বরকে আরও বেগবান করুন, আপনার এই সচেতনতার জন্য আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম সঠিক ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে মরে নিজের আত্মার উদ্ধারের পাশাপাশি আপনার আত্মাকেও উদ্ধার করতে সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি।
No comments:
Post a Comment