Saturday, 23 May 2020

শ্রীকৃষ্ণ কি ঈশ্বর, না যোগী পুরুষ ?


শ্রীকৃষ্ণ কি ঈশ্বর, না যোগী পুরুষ ?

(এই প্রবন্ধটি  Ajay Dey এর পোস্টের জবাবের দ্বিতীয় অংশ, ফটো হিসেবে যেগুলো পোস্ট করেছি।)

#Ajay_Dey,

শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর নয়, এটা প্রমাণ করার জন্য আপনি রেফারেন্স দিয়েছেন যজুর্বেদের ৪০/৮ নং মন্ত্রের, যেখানে আপনি ফোকাস করেছেন জন্মরহিত এবং শরীররহিত শব্দদুটির উপর এবং এর মাধ্যমে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন যে- ঈশ্বর কখনো জন্মগ্রহন করেন না বা শরীর ধারণ করেন না। এখন দেখা যাক শ্রীকৃষ্ণ গীতায় এ ব্যাপারে কী বলেছেন -

গীতার ৪/৬ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন-

"আমার জন্ম ও মৃত্যু নাই। আমি সকলের ঈশ্বর। আমি নিজ প্রকৃতিকে আশ্রয় করিয়া নিজ মায়া বলে নিজেকে সৃষ্টি করিয়া থাকি।"

আমার জন্ম ও মৃত্যু নাই ব'লে শ্রীকৃষ্ণ যজুর্বেদের ৪০/৮ মন্ত্রের বিষয়টিই বলেছেন। কিন্তু ঈশ্বরের পক্ষে যেহেতু অসম্ভব কিছু নেই এবং প্রয়োজনে তিনি শরীরও ধারণ করতে পারেন, সে কথা বলেছেন গীতার চতুর্থ অধ্যায়ের ৭ ও ৮ নং শ্লোকে এবং তাঁর এই জন্ম যে সাধারণ জন্ম নয়, দিব্য জন্ম এবং তাঁর সেই দিব্য জন্ম ও কর্মের প্রকৃতরহস্য যিনি জানেন, তিনিই যে মোক্ষলাভ করেন, সে কথা শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন গীতার ৪/৯ নং শ্লোকে এভাবে-

"হে অর্জুন, যিনি আমার এই দিব্য জন্ম ও কর্ম প্রকৃতভাবে জানেন, দেহত্যাগ করিলে তাঁহার আর জন্ম হয় না, তিনি আমাকেই প্রাপ্ত হন।"

শ্রীকৃষ্ণ যখন গীতার ১৬/২৪ এ বলেন- শাস্ত্র না মানলে কারো মুক্তি নেই, সেটা আপনারা মানেন; কিন্তৃ শ্রীকৃষ্ণ যখন গীতার ৪/৬,৭,৮ এ বলেন যে তিনিই ঈশ্বর এবং তিনি প্রয়োজনে শরীরধারণ করেন, তখন সেটা মানেন না! এই সব ভণ্ডামি বাদ দেন, না হলে ইতিহাসে পরিণত হতে আপনাদের বেশি সময় লাগবে না, যেমন ইতিহাসে পরিণত হয়েছে ব্রাহ্মসমাজ; যারা, আপনাদের মতোই শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর মনে করতো না।

আপনি বলেছেন, "যিনি মহান ঈশ্বর তাকে কখনো একটি ক্ষুদ্র যোনির মধ্যে আবদ্ধ হতে হয় না । তিনি সর্ব ব্যাপক অর্থাৎ তিনি সর্বত্রই আছেন ।।"

-আপনারা এমনটা ভাবেন; কারণ, আপনারা শ্রীকৃষ্ণকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করেন এবং শ্রীকৃষ্ণের জন্ম যে দিব্যজন্ম, যেটা তিনি গীতার ৪/৯ এ বলেছেন, সেটাকে স্বীকার করেন না। আবার এটাও বলেছেন, " এবং মূলকথা হলো শ্রীকৃষ্ণ বহু জায়গায় দাবি করেছেন যে তিনি ঈশ্বর, কারণ তিনি তখন যোগ যুক্ত ছিলেন ।"

-এই যে আপনারা শ্রীকৃষ্ণের যোগযুক্তের কথা বলেন না, এটা আসলে আপনাদের একটা ধারণা, বাস্তবে যার কোনো ভিত্তি নেই। গীতার কোন কথা শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত আর কোনো কথা যোগমুক্ত অবস্থায় বলেছেন, সেই ব্যাপারে কোনো পরিসংখ্যান কি আপনাদের কাছে আছে ? আর শ্রীকৃষ্ণ কিভাবে যোগযুক্ত হন বা কিভাবে যোগমুক্ত হন, সেই পদ্ধতি সম্পর্কেও কি আপনাদের কোনো ধারণা আছে ? যোগযুক্ত বা যোগমুক্ত থিয়োরিকে স্বীকার করে নিলেও, এটা ধরে নিতে হবে যে- শ্রীকৃষ্ণ গীতার কথা হয় যোগযুক্ত অবস্থায় বলেছেন, নয়তো যোগমুক্ত অবস্থায় বলেছেন। একটি বাণী বা কিছু বাণী যোগযুক্ত অবস্থায় বলেছেন, আবার পরক্ষণেই এক বা একাধিক শ্লোক যোগমুক্ত অবস্থায় বলেছেন, এমনটা তো হতে পারে না। আগে আপনারা ক্লিয়ার করেন যে গীতার কোন কোন বাণী যোগযুক্ত এবং কোনো কোন বাণী যোগমুক্ত অবস্থায় বলা, তারপর এ ব্যাপারে আমার নিজের বক্তব্য পেশ করবো।

আবার আপনারা এটা মনে করেন যে শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগীপুরুষ, ঈশ্বর নন; এই প্রেক্ষাপটে- গীতার কিছু শ্লোক আমি উল্লেখ করছি এবং সেই সাথে কিছু প্রশ্ন, ক্ষমতা থাকলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট সেগুলোর জবাব দেবেন-

গীতার ৬/৪৭ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"যিনি শ্রদ্ধাযুক্ত হইয়া মদগতচিত্তে আমার ভজনা করেন, যোগীদের মধ্যে তিনিই আমার সহিত যোগে সর্বাপক্ষো অধিক যুক্ত।"

- শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর না হয়ে সাধারণ যোগী পুরুষ হলে কি তিনি অপর কোনো যোগী পুরুষ সম্পর্কে এই ধরণের মন্তব্য করতে পারেন ?

এরপর গীতার ৭/১ নং শ্লোকে বলেছেন-

"হে অর্জুন, তুমি আমাতে নিবিষ্টচিত্ত ও একমাত্র আমার শরণাপন্ন হইয়া যোগযুক্ত হইলে যেভাবে আমার সমগ্র স্বরূপ জানিতে পারিবে, তাহা বলিতেছি শোনো।"

-একজন যোগী পুরুষ কি অপর একজন যোগীকে, তাতে নিবিষ্টচিত্ত এবং তাঁর শরণাপন্ন হতে বলতে পারেন ?

এরপর গীতার ৭/২৫ নং শ্লোকে বলেছেন,

"আমি যোগমায়ায় সমাচ্ছন্ন থাকায় সকলের কাছে প্রকাশিত হই না। তাই মূর্খেরা জন্মমরণরহিত আমাকে পরমেশ্বর বলিয়া জানিতে পারে না।"

-যোগ মানে ভগবানের সংকল্প, আর ভগবানের বশবর্তিনী যে মায়া, তাই যোগমায়া। পুরাণের বিষ্ণুই সনাতন ধর্মে বর্ণিত ঈশ্বর, আর বিষ্ণুর কল্পিত নারীশক্তি হলো লক্ষ্মী, তাই লক্ষ্মীর অপর নাম হলো যোগমায়া। বিষ্ণু যখন রাম রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন, তখন তার সহায়ক রূপে যোগমায়া এসেছিলেন সীতা রূপে। আবার বিষ্ণু যখন শ্রীকৃষ্ণ রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন (গীতা, ১১/২৪,৩০), তখন যোগমায়া একই সাথে- যশোদার শিশুকন্যা, পরে সুভদ্রা এবং রুক্মিণীরূপে এসে শ্রীকৃষ্ণের সহায়ক হন বাস্তবতার নিরীখে বা প্রয়োজনে। যোগমায়ায় সমাচ্ছন্ন থাকার মানে হলো- ঈশ্বরভাবে থাকা; তো কোনো সাধারণ পুরুষের পক্ষে কি এই কথা বলা সম্ভব যে- আমি যোগমায়ায় সমাচ্ছন্ন থাকি ?

এরপর শ্রীকৃষ্ণ গীতার অষ্টম অধ্যায়ে বলেছেন-

"বেদবিদগণ যাঁহাকে অক্ষর বলেন, অনাসক্ত যোগীগণ যাঁহাতে প্রবেশ করেন, যাঁহাকে লাভ করিবার জন্য ব্রহ্মচারিগণ ব্রহ্মচর্য অনুষ্ঠান করেন, আমি তোমাকে সংক্ষেপে সেই পরম পদ প্রাপ্তির উপায় বলিতেছি।"- (গীতা, ৮/১১)

"হে অর্জুন, যে যোগী অনন্যমনা হইয়া চিরদিন নিরন্তর আমাকে স্মরণ করেন, সেই সমাহিত যোগীর পক্ষে আমি সুলভ জানিবে।"- (গীতা, ৮/১৪)

"মাহাত্মারা আমাকে পাইলে পরম সিদ্ধিলাভ করেন, তাই তাঁহারা আর এই দুঃখময় অনিত্য সংসারে পুনর্জন্ম প্রাপ্ত হন না।"- (গীতা, ৮/১৫)

"হে অর্জুন, ব্রহ্মলোক পর্যন্ত সমস্ত লোক হইতেই জীবসকল ফিরিয়া পুণরায় জন্মগ্রহন করে, কিন্তু আমাকে পাইলে আমার পুনর্জন্ম লইতে হয় না।"- (গীতা, ৮/১৬)

৮/১৪ তে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "যে যোগী অনন্যমনা হইয়া চিরদিন নিরন্তর আমাকে স্মরণ করেন, সেই সমাহিত যোগীর পক্ষে আমি সুলভ জানিবে।"

- শ্রীকৃষ্ণ একজন যোগীপুরুষ হলে কি তিনি অন্য যোগী সম্পর্কে এই ধরণের কথা বলতে পারতেন ?

৮/১৫,১৬ তে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, তাকে লাভ করলে কাউকে আর পৃথিবীতে পুনর্জন্ম নিতে হয় না। এতে বোঝা যায় শ্রীকৃষ্ণ নিজেই মুক্তিদাতা ঈশ্বর এবং মোক্ষ হলো পৃথিবীতে জন্ম না নেওয়া, বেদ মোতাবেক মৃত্যুপাশ ছিন্ন করা নয়, এরপরও কি আপনার মনে হয়- বেদে মোক্ষের বিষয়ে কিছু বলা আছে, যেখানে গীতার৯/২১ এ বলা হয়েছে- যাগযজ্ঞাদি বেদোক্ত ধর্ম অনুষ্ঠান করিলে মোক্ষলাভ হয় না ?

আবার শ্রীকৃ্ষ্ণ গীতার ৯/২৭,২৮ নং শ্লোকে বলেছেন-

"হে অর্জুন, তুমি যাহা যাহা কার্য কর- ভোজন, হোম, দান, তপস্যা সে সবই আমাতে সমর্পণ করো। এই রূপে শুভ ও অশুভ ফলযুক্ত বন্ধন হইতে মুক্ত হইবে এবং আমাতে সর্বকর্ম সমর্পণরূপ যোগে যুক্ত হইয়া কর্মবন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া আমাকেই প্রাপ্ত হইবে।"

-এখানে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, "আমাতে সর্বকর্ম সমর্পণরূপ যোগে যুক্ত হইয়া কর্মবন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া আমাকেই প্রাপ্ত হইবে।"

অর্থাৎ ঈশ্বরে সর্বকর্ম সমর্পণ করাই হলো যোগে যুক্ত হওয়া এবং শ্রীকৃষ্ণ বলছেন তার সাথে যোগে যুক্ত হতে, শ্রীকৃষ্ণ শুধুমাত্র একজন যোগী পুরুষ হলে কি তিনি অর্জুনকে তার সাথে যোগে যুক্ত হতে বলতে পারতেন ?

এরপর শ্রীকৃষ্ণ গীতার ১০ম অধ্যায়ের ৭ নং শ্লোকে বলেছেন-

"আমার এই বিভূতি ও যোগৈশ্বর্য যাঁহারা যথার্থরূপে অবগত, তাঁহারা নিশ্চয়ই যোগযুক্ত হন এবং আমাতেই সমাহিতচিত্ত হন, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নাই।"

-শ্রীকৃষ্ণ একজন সাধারণ যোগীপুরুষ হলে তিনি কি এটা বলতে পারতেন যে- তাঁহারা নিশ্চয়ই যোগযুক্ত হন এবং আমাতেই সমাহিতচিত্ত হন ? খবরদার, এই কুযুক্তি দেবেন না যে, এই সময় শ্রীকৃষ্ণ যোগযুক্ত অবস্থায় ছিলেন; কারণ, গীতার কোনো বাণী যোগযুক্ত অবস্থায় বলা আর কোন বাণী যোগমুক্ত অবস্থায় বলা, এর সমাধান কিন্তু এখনও আপনারা দিতে পারেন নি। যে বিষয়ে যারা অজ্ঞ, সে বিষয়ে তাদের মন্তব্য করার কোনো অধিকার নেই বা অধিকার থাকে না।

যা হোক, গীতার ১২/১১ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বলে যে, "আমাতে কর্মার্পণরূপ যোগ আশ্রয় করিয়া সংযত চিত্ত হইয়া সকল কর্মের ফল ত্যাগ করো।"

-একজন যোগী পুরুষ কি অপর কোনো যোগী পুরুষকে এই ধরণের নির্দেশ দিতে পারেন ?

এই একই ধরণের নির্দেশ শ্রীকৃষ্ণ দিয়েছেন ১৮/৫৭ নং শ্লোকেও, এভাবে-

"তুমি মনে মনে সমস্ত কর্ম আমাতে সমর্পণ করিয়া মৎপরায়ণ হইয়া, সাম্য বুদ্ধির যোগ অবলম্বণ করিয়া, সর্বদা আমাতে চিত্ত রাখো এবং যথাধিকার কর্ম করিতে থাকো।"

তাই এসংক্রান্ত প্রশ্নও আগেরটার মতোই- -একজন যোগী পুরুষ কি অপর কোনো যোগী পুরুষকে এই ধরণের নির্দেশ দিতে পারেন ?

এরপর গীতার ৯/২২ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"যাঁহারা অন্য কামনা ত্যাগ করিয়া অনন্য চিত্তে আমারই চিন্তা করেন এবং আমারই উপাসনা করেন, সেই ভক্তদের জন্য আমি নিজে যোগ ও ক্ষেম বহন করিয়া থাকি।"

- একজন যোগীপুরুষ কিভাবে অন্য যোগীর যোগ বহন করতে পারে ?

যা হোক, গীতার ১১/৪ নং শ্লোকে, অর্জুন- শ্রীকৃষ্ণকে "যোগেশ্বর" বলে সম্বোধন করেছে; আবার ১১/৯ নং শ্লোকে সঞ্জয়ও শ্রীকৃষ্ণকে যোগেশ্বর বলেছে, এর মানে কি শ্রীকৃষ্ণ একজন সাধারণ যোগীপুরুষ, যিনি যোগযুক্ত হয়ে নিজেকে ঈশ্বরের পর্যায়ে উন্নীত ভেবেছিলেন ?

আমার এই প্রশ্ন আর্য সমাজীদের উদ্দেশ্যে নয়, তাই এর ব্যাখ্যা আমি নিজেই দিচ্ছি-

গীতার ২/৫০ নং শ্লোকে বলা হয়েছে- "যোগঃ কর্মসু কৌশলম" অর্থাৎ 'কর্মে কৌশলই যোগ'। এই কর্মে কৌশলে যিনি অঘটন ঘটন পটিয়সী, অর্থাৎ যিনি সব করতে পারেন, অর্থাৎ যিনি ঈশ্বর, তিনিই যোগেশ্বর। তাই যোগেশ্বর মানে যোগীর ঈশ্বরভাব ধরা নয়, ঈশ্বরের সকল কিছু করার ক্ষমতা।
এরপর আপনি বলেছেন, "যোগ যুক্ত হওয়া এমন একটি অবস্থা যে অবস্থায় আত্মা এবং পরমাত্মা মিলিত হয় এবং আত্মা তখন পরমাত্মার সাথে একাত্ম বোধ করে । এরকম যোগযুক্ত অবস্থা উপনিষদে বেদে বিভিন্ন জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়" এবং তারপর আপনি ঋষিকা বাক, ঋষি সনৎকুমার এবং ঋষি ত্রিশঙ্কুর উদাহরণ দিয়ে বলেছেন যে, ইনারা যোগযুক্ত অবস্থায় নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে বর্ণনা করেছেন, সেই হিসেবে গীতার বর্ণনা মতো শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর, হলে এঁরাও ঈশ্বর।

-আপনি যদি ঋষিকা বাক, ঋষি সনৎকুমার এবং ত্রিশঙ্কুর পরিচয় জানতেন, তাহলে এই কথা বলতে পারতেন না বলেই আমি মনে করি।

গীতার ১০/৩৪ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন,

"রমনীদের মধ্যে আমি কীর্তি, শ্রী, বাক, স্মৃতি, মেধা, ধৃতি ও ক্ষমা"

১০/৬ নং শ্লোকে বলেছেন, "ভৃগু প্রভৃতি সপ্তমহর্ষি, তাঁহাদের পূর্ববর্তী চারিজন মহর্ষি এবং চৌদ্দজন মনু- ইহারা সকলেই আমার প্রভাবযুক্ত এবং মানসজাত।"

এই চারিজন মহর্ষির একজন হলেন সনৎকুমার।

আর রামায়ণের বালকাণ্ড অনুযায়ী ত্রিশঙ্কু নিজে শুধু ঋষি নয়, দেবতাও; আর সকল দেব-দেবীই যে শ্রীকৃষ্ণের শক্তি বা অংশ, সেটা তো গীতার ৭/২১ এবং ৯/২৩ নং শ্লোকেই বলা আছে। তাহলে- ঋষিকা বাক, ঋষি সনৎকুমার এবং দেবর্ষি ত্রিশঙ্কু যদি নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে বর্ণনা করে তাহলে সমস্যা কোথায় ? রাষ্ট্রপ্রধান দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো মন্ত্রী কি নিজেকে সরকারের অংশ বলে ভেবে কোনো সরকারী কাজের নির্দেশ দিতে পারে না ? সুতরাং সনাতন ধর্মে বর্ণিত কেউ যদি নিজেকে ঈশ্বর হিসেবে বর্ণনা দিয়ে থাকেন, তিনি যদি শাস্ত্রানুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের কোনো রূপ হন, তাহলে কোনো সমস্যা নেই, এতে সনাতন ধর্মের একেশ্বরবাদের বিপরীত হয় না।

শেষে আপনি বলেছেন, আমি যদি বেশি লাফাই, আমাকে ল্যাংটা করে নাচাবেন।

- আমি লাফাই না বা লাফিয়ে পথ চলি না, আমি পথ চলি বীরদর্পে এবং আমার সামনে আমাকে বাধা দিতে যারা আসে, তাদের দমন করেই আমি সামনে এগিয়ে যাই, এভাবেই ২০১২ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনলাইনে টিকে আছি, বাজারে চলা হাতিকে দেখে যেমন বহু কুকুর ঘেউ ঘেউ করে, তেমনি আপনার মতো বহু ব্যক্তি আমার চলা দেখে ঘেউ ঘেউ করেছে এবং তারা হারিয়েও গেছে, কিন্তু আমি এখনও রাস্তায় হাঁটছি হাতির মতো, যদি আপনার ক্ষমতা থাকে তো আমার প্রত্যেকটি কথার পয়েন্ট টু পয়েন্টপ জবাব দিয়ে আমাকে মূর্খ প্রমাণ করবেন, শুধু শুধু আমাকে মূর্খ বললেই যেমন আমি মূর্খ প্রমাণিত হয়ে যাবো না, তেমনি আমাকে বালক বা গাধা বললেই আমি যে আপনাদের সারিতে সেটাও প্রমাণিত হবে না।

শেষ অনুচ্ছেদে যা বললাম, আশা করছি সেটা মনে রাখবেন।

জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।

No comments:

Post a Comment