প্রসঙ্গ : হিন্দুদের হিন্দু প্রতিবেশীর দেশত্যাগ
ফটোপোস্টে যেমনটা বলা হয়েছে, আপনি যদি এমনটা করেন, তাহলে আপনি কী কী সমস্যায় পড়তে পারেন বা কী কী সমস্যায় ভুগতে পারেন, সেটা বোঝানোর জন্য একটি বাস্তব গল্প বলছি-
ঘটনাটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার কোনো একটি থানার কোনো একটি গ্রামের।
তো হিন্দু পাড়ার একেবারে মধ্যস্থল, যেখানে পাড়ার মন্দির অবস্থিত, সেখান থেকে একটি পরিবার গোপনে এক মুসলমানের কাছে তার বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে ইন্ডিয়ায় চলে যায়। ওরা যাওয়া মাত্র মুসলমানরা এসে বাড়ি দখল নেয় এবং তারপর তুলসীর গাছ উপড়ে ফেলে দিয়ে গরুর রক্ত এনে বাড়ির মধ্যে এবং বাড়ির চারপাশে ছিটিয়ে ওদের চিন্তাভাবনা মতে বাড়িকে পাক পবিত্র করে নেয়।
পাড়ার মধ্যে এই ধরণের ঘটনায় পাড়ার হিন্দুরা ভীষণ ক্ষুব্ধ। কারণ, সে যদি চাইতো তাহলে হিন্দুদের কাছেই বাড়ি বিক্রি করে যেতে পারতো, কেননা তার পাশের বাড়ির লোকজনই যথেষ্ট ধনী, তারাই বাড়িটি কিনে নিতে পারতো। কিন্তু সে কাউকে তার বাড়ি বিক্রি করার পরিকল্পনার কথা না জানিয়ে গোপনে মুসলমানের কাছে বাড়ি বিক্রি করে চলে গেছে এবং তারপর আগত মুসলমানের কাণ্ডকারখানা দেখে পাড়ার হিন্দুরা, ইচ্ছে মতো তাকে গালি গালাজ করতে থাকে এবং অভিশাপ দিতে থাকে, তাদের গালি গালাজ ছিলো এরকম- হারামজাদা, তুই ভাত পাবি না, মরলে মাটি পাবি না, তোর আবার এই দেশে ফিরে আসতে হবে, কিন্তু এই গ্রামে তুই ঠাঁই পাবি না, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।
কথায় বলে- মানুষের মুখেই জয়, আবার মানুষের মুখেই ক্ষয়। বিশেষ করে নির্দোষ কোনো মানুষ যদি কষ্ট পেয়ে অভিশাপ দেয়, সেটা কখনো ব্যর্থ হয় না। পাড়ার লোকজন যা যা বলে গালি দিয়েছিলো, কয়েক বছর পর ঐ ব্যক্তির জীবনে ঠিক সেসব ঘটনা ই ঘটতে থাকে। ভারতে গিয়ে সে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নি, কাজ কর্মে স্যুট করতে না পেরে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া সব টাকা নিঃশেষ করে ফেলেছে, অভাব ও কষ্টের তাড়নায় বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে সে আবার দেশে ফিরে আসে, কিন্তু গ্রামের লোক তাকে আর গ্রামে ঢুকতে দেয় নি। শেষ পর্যন্ত সে অন্য গ্রামে অবস্থিত তার কোনো এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে উঠে এবং দিনমজুরী করে কোনো রকমে দিন কাটায় এবং সবচেয়ে নির্মম ব্যাপার হলো- অভাব ও দারিদ্রে ভুগতে ভুগতে এমন সময় তার মৃত্যু হয়, যখন চারেদিকে বন্যার জলে থৈ থৈ, তাকে যে মাটি দেবে তার কোনো উপায় ছিলো না, শেষ পর্যন্ত তাকে নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দিতে হয়। এই ভাবে সেই ব্যক্তি তার ভুলের মাশুল অবর্ণনীয় যন্ত্রণা ভোগ করে দিয়ে যায়।
১৯৪৬ সালে নোয়াখালিতে হিন্দু গণহত্যার পর থেকে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের ইন্ডিয়ায় চলে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। পরবর্তীতে অমানুষ মুসলমানরা আরো বহু ঘটনার জন্ম দিয়েছে, যা হিন্দুদেরকে দেশত্যাগে বাধ্য বা উদ্বুদ্ধ করেছে। যারা বিভিন্ন কারণে বাধ্য হয়েছে, তারা ছাড়াও অনেক হিন্দু প্রবণতাবশত দেশ ত্যাগ করেছে বা এখনও করছে, যার কোনোই প্রয়োজন নেই। যত কষ্টই হোক, আর যে পরিস্থিতিই সৃষ্টি হোক, জন্মভূমিতেই সবাইকে টিকে থাকতে হবে, এখানেই লড়াই করতে হবে, প্রয়োজনে প্রিয়া সাহার মতো আমেরিকায় গিয়ে নালিশ জানিয়ে এদেশের মুসলমানদের প্রেস্টিজ পাঞ্চার করে দিতে হবে, কিন্তু থাকতে হবে দেশেই। কারণ, আত্মহত্যা যেমন কোনো সমাধান নয়, তেমনি দেশত্যাগও সমাধান নয়।
যা হোক, উপরে যে হিন্দুর গল্প বললাম, সে দেশত্যাগ করেছিলো মুসলমানদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে নয়, প্রবণতাবশত; বিভিন্ন কারণে অনেকে গিয়েছে, যাচ্ছে, তাই সেও শখের বশে গিয়েছে। কিন্তু ভুলটা সে করেছে বাড়ি বিক্রির বেলায়। শুধু বাড়ি বিক্রির বেলায় ই নয়, চাষের জমি বিক্রি করলেও পাশের জমিওয়ালাদেরকে আগে জানাতে হয়। আর বাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রে তো এটা আরো বেশি সত্য। যদি এমন হয় যে নিকটতম প্রতিবেশীর সাথে তার শত্রুতা এবং তার কোনো আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েই সে দেশত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাহলে তাকে না ব'লে পাড়ার অন্য হিন্দুদেরকে তো সে সেই কথা বলতে পারতো বা নিকটতম প্রতিবেশির কাছে বিক্রি না করলেও পাড়ার অন্য হিন্দুদের কাছে তা বিক্রি করতে পারতো; তাহলে তো বাড়িটা মুসলমানরূপী জানোয়ারদের কাছে যেতো না এবং ঐ হিন্দুরা তাকে ঐভাবে অভিশাপ দিতো না এবং তার ঐ করুণ পরণতিও হতো না।
এখন কোনো হিন্দু প্রতিবেশী যদি তার বাড়ি কোনো মুসলমানের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যায়, তাহলে থেকে যাওয়া হিন্দুরা কোন ধরণের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে তা বোঝানোর জন্য নিচে আরেকটি বাস্তব গল্প বলছি-
এই ঘটনাটা বাংলাদেশের মাগুরা জেলার।
প্রতিবেশী হিন্দু, বাড়ি মুসলমানের কাছে বিক্রি করে দেশত্যাগ করে চলে গেছে। তাই পাশের বাড়িতে মুসলমান এসে উঠেছে। সেই মুসলমানের ছিলো একটি যুবক ছেলে, আর পাশের হিন্দু বাড়িতেই ছিলো একটি যুবতী মেয়ে। পাশাপাশি থাকতে থাকতে দুজনের ভাব হয়ে গেছে এবং এক পর্যায়ে সেই হিন্দু মেয়েটি মুসলমান ছেলের সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। মুসলমানদের কাজই হলো তো তাদের ছেলে মেয়েদের দিয়ে হিন্দু ছেলে মেয়েদের শিকার করা। এই কাজে কোনো মুসলিম ছেলে মেয়ে যখন সফল হয়, তখন তাকে পুরো মুসলিম সমাজ তাকে বাহবা দেয় এবং সব রকম সাহায্য করে। যা হোক, শেষ পর্যন্ত দু চারদিন এখানে সেখানে লুকিয়ে থেকে পরিস্থিতি একটু ঠাণ্ডা হলে ঐ মুসলিম ছেলে, হিন্দু মেয়েটিকে নিয়ে এসে তার বাড়িতে এসে উঠে; তখন মেয়েটির শশুড় বাড়ি আর বাপের বাড়ি পাশাপাশি। রাত পোহালেই হিন্দু পিতা মাতাকে দেখতে হচ্ছে মুসলমান হয়ে যাওয়া মেয়ের মুখ, কষ্টটা একবার চিন্তা করুন।
কোন পাপে ঐ হিন্দু পরিবারটির এই কষ্ট, এবার সে ব্যাপারে একটু আলোচনা হয়ে যাক-
কথায় বলে- হাজার পাপে পুড়ে বাড়ি, আর লক্ষ পাপে অন্ধ হয় চোখ। তাই কারো বাড়িতে যেমন এমনি এমনি আগুন লাগে না, এমনি এমনি চুরি ডাকাতি হয় না; তেমনি এমনি এমনি কোনো দুর্ঘটনাও ঘটে না। বহু পাপের ফলে কোনো বাড়িতে কষ্টদায়ক কোনো ঘটনা ঘটে।
কয়েক মাস আগে আমার গ্রামের একটি এস.এস.সি দেওয়া হিন্দু মেয়ে, তার সহপাঠী এক মুসলিম ছেলের সাথে পালিয়েছিলো, কিন্তু মেয়ের বংশের প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকায় কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে বাড়িতে আনা সম্ভব হয়। এই মেয়ের বংশের কেস হিস্ট্রি ঘাঁটতে গিয়ে দেখলাম- মেয়ের দাদু ছিলো নং ওয়ান লম্পট, এই লম্পটের ছিলো ৫ পুত্র; বড় পুত্রও ছিলো লম্পট, বিয়ের আগে যুবক বয়সে সে এক মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করে মুসলমান হয়ে কিছুদিন কাটিয়েছিলো, পরে সেই মেয়ের সাথে ছাড়াছাড়ি হলে আবার হিন্দু সমাজে ফিরে আসে, তারপর তাকে হিন্দু মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে হিন্দু বানিয়ে রাখা হয়। এই লম্পটের দুই মেয়ে এক ছেলে। বড় মেয়ের বিয়েটা ভালো ভাবে হলেও ছোট মেয়েটা এক মুসলমানের সাথে পালিয়েছিলো, যেটা পাড়ার লোকও তেমন জানতো না; কারণ তারা কোনো হৈচৈ করে নি, সপ্তাহখানেক পরে মেয়েটা এমনিই বাড়িতে ফিরে আসে, তখনও কেউ হৈচৈ করে নি। কিন্তু মূল ঘটনা দু চারজন টের পেয়েছিলো, মেয়েটাকে বিয়ে দিতে হবে বলে তারাও বিষয়টি চেপে গিয়েছিলো, পরে মেয়েটার বিয়ে হলেও, মেয়ের আগের কুর্কীতি তার শশুড় জেনে ফেলেছিলো, এর জন্য মেয়ের সংসার ভাঙারও প্রায় উপক্রম হয়েছিলো, কিন্তু সনাতনী কালচারে সংসার ভাঙা সহজ নয় বলে সেই যাত্রায় মেয়েটি বেঁচে গিয়েছিলো। যা হোক, এই লম্পটের ছোট ছেলে ইন্টার পড়া অবস্থায় একা একা এক দরিদ্র নীচু বংশীয় মেয়েকে বিয়ে করে গ্রামজুড়ে সমালোচনার পাত্র হয়। মানে যেমন কোম্পানি, তেমনই তার প্রোডাক্ট।
যা হোক, ঐ ব্যক্তির দ্বিতীয় পুত্রও লম্পট, সেও বাড়ি থেকে অনেক দূরে অন্য এক জেলায় এক মুসলিম মেয়ের সাথে কিছু ঘর সংসার করে, তার মধু খাওয়া শেষ হলে সেখান থেকে পালিয়ে এসে পরে এক হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে হিন্দু সমাজে স্থান করে নেয়।
তৃতীয় পুত্রের ব্যাপারে তেমন কোনো খারাপ কিছু শোনা যায় নি, তাই তার মেয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও কোনো মুসলিম ছেলেকে ভালোবাসে নি বা তাদের সাথে পালিয়ে যায় নি, বাপ মায়ের ঠিক করা ছেলেকে বিয়ে করে এখন সুখে শান্তিতেই আছে বলে শুনতে পাচ্ছি। চতুর্থ পুত্র হলো সেই মেয়ের পিতা, যে মেয়ে বাড়ি থেকে মুসলমান ছেলের সাথে পালিয়েছিলো, এর কাহিনী বলবো শেষে।
এই মেয়ের কাকা অর্থাৎ ৫ম পুত্র বিয়ে করার পর শশুড় বাড়ির এলাকায় গিয়ে থাকতো, নিজ বাড়ির সাথে তার সম্পর্ক তেমন ছিলো না। এ চায়ের দোকান করতো, তো ছেলে মেয়ের জন্ম হয়ে যাবার পরেও সে এক মুসলিম মেয়ের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং তাকে নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যায়, সেখানে বছর খানেক মুসলিম হিসেবে থাকার পর কোনো কারণে আবার নিজের স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে, বর্তমানে সে হিন্দু হিসেবেই বাস করছে।
যা হোক এই পলাতক মেয়ের বাপ, নিজের বিয়ের আগে থেকেই এক মুসলিম মেয়ের সাথে প্রেম করতো, সেটা টের পেয়ে বাড়ির লোকজন তাকে অন্য এক হিন্দু মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে হিন্দু সমাজে ধরে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু এই হারামজাদা, যার বর্তমানে ষোল বছর বয়স্কা একটি মেয়ে আছে এবং ২২/২৩ বছর বয়স্কা একটি ছেলে আছে অর্থাৎ যার নিজের বিয়ের বয়স প্রায় ২৫ বছর, তারপরও সেই মুসলিম মেয়ের সাথে সম্পর্ক রেখে চলেছে এবং এই বিষয়টি এখনও তার স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে এমনকি পাড়ার লোকজনও জানে এবং তা অনেকটাই প্রকাশ্য। এই লম্পটের চিন্তাভাবনাও মুসলমানদের মতো, এই যুগেও তার চার চারটি ছেলে মেয়ে, অথচ তার পরিবার দারিদ্রে জর্জরিত, গ্রামের যেখানে প্রায় সবারই ইটের বাড়ি, সেখানে তার বাড়ি জরাজীর্ণ, ঝড় বৃষ্টি শুরু হলেই তার স্ত্রী ছেলে মেয়েদের নিয়ে পাশের বাড়িতে গিয়ে বসে থাকে, যদি ঝড়ে বাড়ি উড়ে যায়, সেই ভয়ে এবং বর্তমানে যেখানে প্রায় শতভাগ বাড়িতে বিদ্যুত সুবিধা আছে, সেখানে তার বাড়িতে কোনো বিদ্যুত সংযোগ নেই, এছাড়াও মন মানসিকতায় সে সম্পূর্ণ চিটার, তার কোনো কথাকে বিশ্বাস করা অসম্ভব ব্যাপার, যে তার কথাকে বিশ্বাস করেছে, সেই মরেছে। এই রকম পরিবারের মেয়ে মুসলমানের সাথে পালাবে না তো কে পালাবে ? সে নিজে যেমন দরিদ্র পরিবারের সন্তান, তেমনি সে এমন একটি ছেলের সাথে পালিয়েছিলো যার পিতাও একজন দিনমজুর, মানে যেমন চিন্তা, তেমনই পছন্দ।
এই কাহিনীটা আপনাদেরকে এজন্য বললাম যে- কোনো বাড়িতে যখন কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, সেই দুর্ঘটনা ঘটার পেছনে বহু যৌক্তিক কারণ থাকে, এমনি এমনি হুট করে কিছু ঘটে না, সেটা ঘটার জন্য বহু বছর থেকে তার পরিবেশ তৈরি হয়। এই মেয়ের দাদুর লাম্পট্য তার ছেলেদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়েছে এবং ছেলেরা সেই লাম্পট্য উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়ে একের পর এক ঘটনা ঘটিয়েছে, আর সমস্ত ঘটনার ফল স্বরূপ সেই বংশের এই মেয়ে এক মুসলমানের সাথে পালানোর মন মানসিকতা অর্জন করেছে। তাই কেউ যখন কোনো বিষয়ে দুঃখ কষ্ট পায়, হয় সেটা তার পূর্ব পুরুষদের কর্মের ফল অথবা তার নিজেরই কর্মফল। এজন্য কোনো বিষয়ে দুঃখ কষ্ট পেতে না চাইলে এবং ভবিষ্যতে নিজের বংশে কলঙ্কজনক কোনো ঘটনা না ঘটুক, এটা চাইলে নিজেকে ভালো হতে হবে, সততার সাথে জীবন কাটাতে হবে, আপনার আদর্শ দেখেই আপনার ছেলে মেয়েরা খারাপ কিছু করতে পারবে না বা করার সাহস পাবে না, পরিবার-বংশ-সমাজের ক্ষতি হতে পারে এমন কোনো বিষয় ঘটানোর আগে সে ১০ বার চিন্তা করবে, আর যে, কোনো বিষয়ে ১০ বার চিন্তা করে, সে খারাপ কিছু ঘটাতে পারে না, সে সঠিক সিদ্ধান্তই নেয়।
তাই যদি দেখেন যে কোনো পরিবারের মেয়ে মুসলমানের সাথে পালিয়ে গেছে বা কোনো পরিবারের ছেলে মুসলিম হয়ে গেছে, তাহলে ভাববেন, এটা ঐ পরিবারের বহু পাপের ফল, যে ফলে বর্তমানে তারা জর্জরিত।
ফিরে আসি প্রতিবেশীর দেশত্যাগের প্রসঙ্গে-
প্রতিবেশী যদি দেশত্যাগ করে, তাহলে, উপরে বলা গল্পের মতো যে শুধু আপনার মেয়েকেই হারাতে পারেন, এমন নয়; আপনার ছেলেকেও হারাতে পারেন প্রতিবেশী মুসলমানের মেয়ের প্রেমের ফাঁদ দ্বারা। এই ছেলে মেয়ে হারানো হলো চুড়ান্ত ক্ষতি। এটা ছাড়াও, আপনার প্রতিবেশী যদি মুসলমান হয়, তাহলে আপনি নানা ধরণের যন্ত্রণার শিকার হবেন, যেমন- সে তার বাড়িতে গরুর মাংস রান্না করবে, তার ঘ্রাণ আপনার নাকে এসে লেগে আপনার বমির উদ্রেক হবে। কুরবানী এলে আপনার বাড়ির পাশে আপনার বাড়ির খলায় গরু ছাগল জবাই করবে, আপনি কিছু বলতে পারবেন না। সন্ধ্যায় আপনার বাড়িতে শঙ্খ বাজালে, তাদের নামাযের ক্ষতি হচ্ছে বলে তারা বিরক্ত প্রকাশ করবে বা অভিযোগ জানাবে। মুসলমানদের তো নামায আর আজানের শেষ নেই, এজন্য আপনার বাড়িতে ইচ্ছে মতো গান শুনতে পারবেন না বা টিভিও দেখতে পারবেন না। আপনার বাড়ি সংলগ্ন যদি মন্দির থাকে, সেখানে স্বাধীনভাবে পূজা পার্বন করতে পারবেন না।
এগুলো ছাড়াও মুসলমানদের রয়েছে চিরন্তন দখল মনোবৃত্তি, ওরা আপনার বাড়ির ভিটা একটু একটু করে দখল করবে, প্রতিবাদ জানালেই আপনার সাথে ঝগড়া করবে, মারামারি করবে, যেখানে আপনি প্রতিবারই পরাজিত হবেন; এমনই চলতে থাকবে বছরের পর বছর, শেষে বিরক্ত হয়ে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবেন যে, না এই জংলী জানোয়ারদের সাথে একত্রে বাস করা যাবে না, তখন আপনি নিজেই আপনার বাড়ি ঐ মুসলমান বা অন্য মুসলমানের কাছে বিক্রি করে দিয়ে দেশত্যাগ করে চলে যাবেন। কারণ, আপনার বাড়ি যেহেতু মুসলমানের বাড়ির পাশে, সেহেতু আপনার বাড়ি কোনো হিন্দু কিনবে না। মুসলমানদের সাথে বা পাশে কেউ যে শান্তিতে বাস করতে পারে না, পৃথিবী জুড়ে এর বহু উদাহরণ আছে। ইউরোপ আমেরিকার বহু জায়গা আছে, যেখানে মুসলমানরা বাস করে বলে অন্যরা স্বেচ্ছায় অন্য এলাকায় চলে গিয়েছে, যাচ্ছে। তাই মুসলমানদের সাথে বা পাশে শান্তিতে অন্য ধর্মের লোকের বাস, এককথায় অসম্ভব। এমনকি অনেক মুসলমানও, মুসলমানদের সাথে বা পাশে একত্রে শান্তিতে থাকতে পারে না, তাদের মধ্যে সমস্যা লেগেই থাকে, কিন্তু যেহেতু তারা একই ঝাড়ের বাঁশ, তাই টিকে যায়, কিন্তু হিন্দুরা তো বাঁশের মতো শক্ত নয়, তাই মুসলমানদের পাশে হিন্দুরা অসহায়।
যা হোক, মুসলমান সম্পর্কিত এই সমস্ত ঘটনা ঘটবে, যদি হিন্দু প্রতিবেশীর সাথে আপনার সম্পর্ক খারাপ হয়, প্রতিবেশী রেগে গিয়ে আপনাকে শায়েস্তা করার জন্য কোনো মুসলমানের কাছে বাড়ি বিক্রি করে চলে যায়। তাই প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক অবশ্যই ভালো রাখতে হবে, সেটা নিজের স্বার্থেই, এজন্য যদি একটু ছাড় দিতে হয়, সেটাও দিতে হবে; কারণ, আপনি জ্ঞানী, আপনি ভবিষ্যত সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারণা করতে পারেন, তাই ছাড় আপনাকেই দিতে হবে। যে মূর্খ, সে তো এসব বুঝবে না, তাই তার ছাড় দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই, তার মূর্খামির ফল সে অন্যভাবে পাবে, তাতে অন্তত আপনি এফেক্টেড হবেন না।
বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যাওয়ার ভূত যাদের মাথায় আছে, এবার তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা-
এখন যদি আমি বলি, এই মূহুর্তে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা - ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দেশত্যাগ করে যেখানে আপনারা যাবেন বলে আমি মনে করি, সেই - পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে দ্বিগুন ভালো এবং অন্যান্য সব দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে বাংলাদেশ অন্তত ২০ বছর এগিয়ে, তাহলে সেটা আপনাদের বিশ্বাস নাও হতে পারে; কারণ, আপনারা বাস্তবে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের তুলনা করেন নি। কিন্তু এটা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা, তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, স্থায়ীভাবে পশ্চিমবঙ্গে চলে যাওয়ার আগে, অন্তত ছয় মাস অস্থায়ীভাবে সেখানে আগে বাস করে দেখুন, সেই জায়গার আর্থ সামাজিকতার সাথে আপনি খাপ খাওয়াতে পারবেন কি না ? আর এটা আপনি তখনই বুঝতে পারবেন, যখন আপনি সেখানে থাকার উদ্দেশ্যে যাবেন। মনে রাখবেন, ঘুরতে গিয়ে প্রকৃত অবস্থা আপনি কখনোই উপলব্ধি করতে পারবেন না। আর মুসলমানদের হাতে নির্যাতনের কথা ভাবছেন ? বাংলাদেশের হিন্দুদের চেয়ে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা বর্তমানে মুসলমানদের হাতে মার খাচ্ছে বেশি, যদি আপনি নেট ফেসবুকে নিয়মিত হন, তাহলে আমার কথার সত্যতার প্রমাণ পাবেন। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ থেকে যে আর্থ সমাজিক অবস্থান নিয়ে আপনি পশ্চিমবঙ্গে যান না কেনো, সেখানে গিয়ে আপনাকে হতে হবে দিনমজুর, এইটা ভাববেন না যে আমি তো শিক্ষিত, আমার কিছু শিক্ষা দীক্ষা আছে, সুতরাং সেই হিসেবে আমি কাজ পাবো ? যে অবস্থাতেই হোক, আপনি যদি দেশত্যাগ করেন, আপনার এক পুরুষ পিছিয়ে যাবে। পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে আপনার সন্তান সন্তুতি যদি স্কুল কলেজ পড়াশোনা করে, তারা সেখানে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে বা সম্মানজনক জীবন পেতে পারে, যদি ভাগ্য খুব ভালো হয়, বা বিজেপির হাতে ক্ষমতা গিয়ে যদি আগামী ১৫/২০ বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ভাগ্যের উন্নতি হয়, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গকে আমি মনে করে ভিখারী রাজ্য, সেখানে গিয়ে যদি আপনি ভিক্ষাও করেন, ভিক্ষাও ঠিক মতো পাবেন না। তবে এই অবস্থার উন্নতি হবে বিজেপি ক্ষমতায় এলে, কিন্তু তাতে বর্তমান বাংলাদেশের মতো আর্থ সামাজিক অবস্থায় আসতে আরো ১০/১৫ বছর লাগবে, ততদিন বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে। তাই কোনো কিছুতেই বাংলাদেশ ত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে আপনি বাংলাদেশের মতো লাইফ পাবেন না, এটা গ্যারান্টি।
এই সব বিষয় মাথায় রেখে, জন্মভূমি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত বাদ দেওয়াই আমার মতে শ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত। তাই প্রতিবেশীর সাথে মিলেমিশে বাস করুন, যতই মনোমালিন্য থাক বিপদে আপদে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসুন বা যান। মনে রাখবেন, নিজের শক্তিতে কখনো কখনো আত্মরক্ষা করা যায় না, তখন সমাজের শক্তির প্রয়োজন হয়, আর এই সমাজের শক্তি তখনই আপনার পাশে দাঁড়াবে, যখন সমাজের সকলের সাথে আপনার সদ্ভাব থাকবে, আর এজন্য প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক থাকা ভীষণ জরুরী; কারণ, আপনার বিপদে আপদে প্রথম যে ব্যক্তি আপনার পাশে দাঁড়াবে সে হলো আপনার প্রতিবেশী, আবার প্রথমেই আপনাকে যে বিপদে ফেলতে পারে, সেও হলো আপনার প্রতিবেশী।
যা হোক, প্রতিবেশীর দেশত্যাগ কিভাবে আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে, সেই গল্প উপরেই বলেছি- তাই ছাড় দিয়ে হলেও প্রতিবেশীর সাথে সদ্ভাব রাখুন, এতে আপনি বড় ধরণের বিপদের হাত থেকে বেঁচে যাবেন। আর কেউ যদি প্রতিবেশীকে শায়েস্তা করতে মুসলমানদের কাছে বাড়ি বিক্রি করে চলে যান, তার পরিণতি কী হতে পারে, সেই গল্পও উপরে বলেছি। একটা কথা মনে রাখবেন- মানুষের আশীর্বাদ ছাড়া ভালো থাকা যায় না, তাই কোনো কাজ করতে বাধ্য হতে হলে কাজটি এমনভাবে করুন, যাতে কেউ মনোক্ষুন্ন না হয় বা কষ্ট না পায়। কারণ, আপনার কারণে পাওয়া মানুষের কষ্ট, আপনাকে ধ্বংস করে দিতে পারে। যেসব ছেলে মেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে, তারা জীবনে এই কারণেই সুখ পায় না, কারণ তাদের জীবনে পিতা মাতা বা বয়োজ্যেষ্ঠদের আশীর্বাদ থাকে না। তাই জীবনে সুখে থাকতে হলে, ভালো থাকতে হলে মানুষের আশীর্বাদ অর্জনের চেষ্টা করুন এবং এমনভাবে কাজ করুন, যাতে কারো কোনো রকম অসুবিধা না হয়। যদিও দেশত্যাগের কোনো প্রয়োজনই নেই, তথাপি যদি আপনি দেশত্যাগ করতে চান, আপনার বাড়ি কোনো হিন্দুর কাছে বেচে যাবেন, এতে যদি কিছু টাকা আপনি কম পান, তবু ভালো, কারণ, তাহলে পাড়ার হিন্দুদের অভিশাপ থেকে আপনি মুক্ত থাকবেন, যা আপনার জীবনকে সুন্দর করবে।
শেষে ঈশ্বরের আশীর্বাদে সব হিন্দু জীবন সুন্দর হোক। এই কামনায় বলছি-
জয় শ্রীকৃষ্ণ।
No comments:
Post a Comment