নমস্তে, আমি রূপক রয় বা আশুতোষ কুমার দাস-
শুরু করছি মহামূর্খ আর্য বিক্রম বর্মনের উদ্দেশ্যে এই প্রবন্ধ। আর্যদেরকে আমি মূর্খ বলি কেনো জানেন " এরা পিতার এক কর্মকে মানে, কিন্তু অন্য কর্মকে মানে না। যেমন- ৩৫৫ জন জ্ঞাত এবং আরো কয়েকজন অজ্ঞাত ঋষির উপলব্ধিজাত বেদ মন্ত্রগুলো এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এখানে ছিলো। তারপর আদিদেব বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের আরেক রূপ মহর্ষি বেদব্যাস, সেই বেদমন্ত্রগুলোকে সংগ্রহ করে চারভাগে লিপিবদ্ধ করেন এবং এই বেদব্যাসই শ্রীকৃষ্ণের জীবনীসহ সৃষ্টিতত্ত্বের আরো নানা বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকখানা পুরাণ লিখেন, কিন্তু আর্যরা শুধু বেদব্যাসের বেদ সংকলনকে স্বীকার করে, কিন্তু বেদব্যাস রচিত পুরাণগুলোকে স্বীকার করে না, তাহলে এদেরকে কী বলবেন ? এরা বেদব্যাসের এক কর্মকে স্বীকার ও মূল্যায়ণ করে, অন্যকর্মকে করে না। কিন্তু বেদব্যাসের মূখ্য কর্মই ছিলো মহাভারতসহ পুরাণগুলো রচনা করা, আর তার গৌনকর্ম ছিলো বেদ সংকলন করা, যদিও বেদব্যাস, বেদ সংকলন না করলে বেদ নিয়ে আর্যদের এত লাফালাফি বা ফটর ফটর কিছুই থাকতো না; কারণ, সেগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যেতো। এখানে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারে, বেদ সংকলন ও ভাগ করা যদি বেদব্যাসের গৌণ কর্ম হয়, তাহলে এই কাজ অনুযায়ী তাঁর নাম উপনাম বেদব্যাস হলো কেনো ? এই কাজ ইনি প্রথমে করেছিলেন, তার এই কর্ম অনুযায়ী ইনি বেদব্যাস নামে পরিচিতি পেয়েছেন।
যা হোক, আর্যরা শুধু বেদ এবং বেদ সংশ্লিষ্টগ্রন্থগুলোকে সনাতন ধর্মের শাস্ত্রগ্রন্থ বলে মনে করে, কিন্তু রামায়ণ মহাভারতসহ পুরাণগুলোকে তারা সনাতনী ধর্মগ্রন্থ বলেই মনে করে না, এর কতকগুলোকে তারা ইতিহাস গ্রন্থ, কোনোটাকে দর্শন গ্রন্থ, আবার কোনগুলোকে গাঁজাখুরি কাহিনী কাব্য বলে মনে করে; কিন্তু এগুলো যে সবই এক জনের হাতে রচিত, সেটা বেদব্যাসের, সেই খেয়াল তারা করে না।
বিক্রম, তার পোস্টের এক জায়গায় লিখেছে, "এদের মধ্যে একজন বিখ্যাত পৌরাণিক আবাল অনার্য হলো #rupok_roy যিনি মুসলিমদের কাল্পনিক নিয়ে কথা বলে কিন্তু নিজেদের যে বিনোদন প্রতিমা পূজা গুলো আছে , কাল্পনিক পুরান কাহানি গুলো আছে সেগুলো সব ঠিক এই আবাল এর মতে।"
-শোন বিক্রম, আমি মুসলমানদের কাল্পনিক ধর্মের সমালোচনা করি, কিন্তু হিন্দুদের মূর্তি পূজার প্রশংসা করি এজন্যই যে, মূর্তি পূজা মানুষকে বাস্তবতার শিক্ষা দেয় এবং তোরা শুধু আর্যরা নয়, পৃথিবীর সকল মানুষ জেনে বা না জেনে এই মূর্তি পূজার শিক্ষা অনুযায়ীই জীবনকে পরিচালিত করে।
বিক্রম আরো লিখেছে," ধর্ম গ্রন্থে কখনো ইতিহাস কাহানি থাকেনা সেখানে শুধুই ধর্মের কথা থাকে কারো চরিত্র কাহানি ধর্ম গ্রন্থ নয় ।"
-কৃষ্ণদ্বৈপায়ণ যখন বেদ সংকলন করেন, তখন সেটা আর্যদের মতে ধর্মগ্রন্থ; আর যখন তিনি দেব-দেবী ও মানুষদের কাহিনী নিয়ে মহাভারত রচনা করেন, তখন সেটা আর্যদের মতে ধর্মগ্রন্থ নয় ইতিহাসগ্রন্থ ! এদের কথা শুনলে তো শুধু কুত্তা নয়, শুয়োরও হাসবে।
এরপর বিক্রম লিখেছে,
"আর্যরা নাকি বেদ ছাড়া কিছুই মানেনা, কতবড় মিথ্যা বাদী হলে এইটা বলা যায় ভাবুন ! এই মহা অনার্য প্রাণী গুলো কিভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দেখুন !"
- আমি বলেছি আর্যরা বেদ ছাড়া কিছুই মানে না, এটা আবার মিথ্যা হলো কেমনে ? আর্যরা বেদ ছাড়া কি রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, পুরাণগুলো মানে ? মানে না। তো আমি আবার মিথ্যা বললাম কোথায় ? বিক্রম তার পোস্টে, আর্যরা যেসব গ্রন্থকে মানে তার একটা তালিকা দিয়েছে, যেগুলো, তার কথামতো সবই বেদানুকূল গ্রন্থ, বেদানুকূল গ্রন্থ মানেই তো বেদ। তো আমি ভুল বললাম কোথায় আর বিভ্রান্তিই বা ছড়ালাম কোথায় ? এ আবার কোন ধরণের গাণ্ডু চিন্তা করুন।
বিক্রম আমার সম্পর্কে আরো বলেছে,
"প্রকৃত ধর্ম তো প্রচার কোনোদিন ও করতে পারবে না কিন্তু অপ্রচার করবে এদের ই নাম হিন্দু !"
-আমি নাকি ধর্ম প্রচার কোনোদিনই করতে পারবো না। ধরে নিলাম আমি ধর্ম প্রচার কোনোদিন করতে পারি নি, তো তুই এবং তোর আর্য সমাজ, প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কী উপড়েছিস, একটু হিসাব দিস তো। আর শোন, গত চার বছরে শুধু ফেসবুকে লিখে ধর্ম সম্পর্কে হাজার হাজার হিন্দুর আত্মবিশ্বাস আমি ফিরিয়ে এনেছি, এই সংখ্যা লক্ষাধিকও হতে পারে; শত শত হিন্দু ছেলে মেয়েকে কট্টর হিন্দুতে পরিণত করেছি, এই সংখ্যা হাজারও হতে পারে; কয়েকশত হিন্দু ছেলে মেয়েকে ধর্মান্তরের হাত থেকে ফিরিয়ে এনেছি। যারা আমার লেখা উপকৃত হয়েছে, সবাই তো আর বিভিন্ন কারণে আমাকে জানায় নি বা কমেন্ট করে নি, যারা নিজের আবেগকে কন্ট্রোল করতে না পেরে আমাকে জানিয়েছে বা আমার বিভিন্ন পোস্টে কমেন্ট করেছে, এরকম কয়েকশত কমেন্ট আমি কপি পেস্ট করে রেখে দিয়েছি, সেগুলো যদি তোকে দিই, সেগুলো পড়তেও অন্তত তোর ঘন্টা দুয়েক সময় লাগবে, সেগুলো পড়লে তুই জানতে পারবি, গত চার বছরে শুধু লিখে হিন্দুসমাজকে আমি কিভাবে নাড়া দিয়েছি বা জাগিয়ে তুলেছি, আরো জানতে পারবি, সেই কমেন্টগুলো যারা আমাকে করেছে, তারা শুধু আমার একান্ত ভক্তই নয়, অনেকে আমাকে গুরু বলে মানে, অনেকে তার চেয়েও বেশি কিছু মনে করে, আর অনেকে তো আমার জন্য নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত, যদি আমি ধর্ম ও সমাজের জন্য কিছুই না করতে পারি, তাহলে তারা কি আমাকে এমনি এমনি মূল্যায়ন করে ? এর বিপরীতে তোরা আর্যরা ধর্ম ও সমাজের জন্য কী করতে পেরেছিস, সেটা একটু ভেবে আমার সমালোচনা করিস।
বিক্রম আরো বলেছে, "পৌরাণিক দের কাজ হলো গীতার বাণী বিকৃত করে কিভাবে কৃষ্ণ কে ঈশ্বর বানানো যায় ।কিন্তু একটা কথা ভুলবেন না গীতার বিকৃত অর্থ করলেই গীতা স্ববিরোধী হয়ে যাবে ।"
-গীতার বাণীর সরল ব্যাখ্যা মতেই শ্রীকৃষ্ণ ঈশ্বর। তোরা গীতার বাণীর বিকৃত ব্যাখ্যা করিস বলেই শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর মনে করিস না।
বিক্রম আরো বলেছে, "গীতায় কৃষ্ণ শাস্ত্র( বেদ)মানতে বলেছে বারবার কিন্তু আবাল গুলো পুরান কাহানি মেনে চলবে ও হলো আবাল গান্ডু ,গীতায় কোনোদিন পুরান খুঁজে পেয়েছেন ?"
-গীতার মতে শাস্ত্রবিরোধী কোনো কিছুই ধর্ম নয়, তাই শাস্ত্র না মানলে কারো মুক্তি নেই, কিন্তু আর্যরা বোধহয় শাস্ত্র বলতে শুধু বেদকেই বুঝে থাকে, তাই বিক্রম শাস্ত্র শব্দ লিখে তার পাশে ব্র্যাকেটের মধ্যে বেদ লিখেছে এবং বিক্রমের মতে, গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বেদকেই মানতে বলেছে, কিন্তু গীতার ২/৪২,৪৩,৪৪ এবং ৯/২০ নং শ্লোকে শ্রীকৃষ্ণ স্পষ্টতই বেদ বিরোধী কথা বলেছেন; কারণ, এগুলোতে বলা আছে-
"কতগুলি অল্পবুদ্ধি লোক বেদের কর্মকাণ্ডের স্বর্গকলাদি প্রকাশক প্রীতিকর বাক্যে অনুরক্ত, তাহাদের মতে ইহা ছাড়া অন্য তত্ত্ব নাই। জন্ম কর্ম ফলপ্রদ, বহুক্রিয়াযুক্ত ভোগৈশ্বর্যে তাহারা সর্বদা কামনাপরায়ণ ও স্বর্গকামী হয়। ইহাতে মুগ্ধ ভোগৈশ্বর্যে আসক্ত ব্যক্তির বুদ্ধি ঈশ্বরে স্থির থাকে না।… ত্রিবেদী যাজ্ঞিকেরা যজ্ঞাদি দ্বারা আমার পূজা করিয়া যজ্ঞ শেষে সোমরস পানে পাপ হইতে মুক্ত হইয়া স্বর্গলোক প্রার্থনা করেন, তাহারা পুন্যফলে স্বর্গে গিয়া দিব্য স্বর্গসুখ ভোগ করেন।"
কিন্তু গীতার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হচ্ছে মোক্ষলাভ। গীতায় শ্রীকৃষ্ণ যেখানে মোক্ষলাভের বিষয়ে কথা বলেছেন এবং বেদের বিরুদ্ধে বলেছেন, সেখানে বিক্রম আর্য খুঁজে পেয়েছে শ্রীকৃষ্ণ নাকি সবাইকে বেদ মেনে চলতে বলেছেন। এ নিশ্চয় মাতব্বর শ্রেণীর মূর্খ হবে, আপনারা কী বলেন ?
আবার বিক্রমের মতে গীতায় নাকি পুরাণ নাই! অবতার তত্ত্বই তো পৌরাণিক, তাহলে গীতায় কি শ্রীকৃষ্ণ বলেন নি, ধর্মের প্রয়োজনে পৃথিবীতে তার অবতার রূপে আবির্ভূত হওয়ার কথা ? তাহলে গীতায় পুরাণ থাকলো না কিভাবে ? কোনো বিষয়ে কোনো মন্তব্য প্রকাশ করতে হলে সম্পূর্ণ বিষয় ভেবে কথা বলতে হয়, আংশিক বিষয় ধারণ করে কথা বললে হয়তো আর্যসমাজী হওয়া যায়, কিন্তু সনাতনী হিন্দু হওয়া যায় না।
বিক্রম আর্য আবার রমেশ চন্দ্র দত্তকে বেদ বিশেষজ্ঞ বলে মানে না।
-যে লোকটা বাংলায় সর্বপ্রথম ঋগ্বেদকে অনুবাদ করেছে, যে কাজ আজ পর্যন্ত দ্বিতীয় কেউ করতে পারে নি, এমনকি যে আর্যরা বেদ নিয়ে এত লাফালাফি করে, তাদরেও মুরোদে কুলোয় নি বাংলায় বেদকে অনুবাদ করার, তারা আবার রমেশ দত্তের কাজ নিয়ে সমালোচনা করে। যে কাজ করে তারই ভুল হয়; ধরে নিলাম, রমেশ দত্তের অনুবাদে কিছু ভুল ত্রুটি আছে, কিন্তু তোরা কী করেছিস ?
যে ব্যক্তি আমার জ্ঞানের সমালোচনা করবে, তাকে যেমন আমার চেয়ে জ্ঞানী হতে হবে, তেমনি যে ব্যক্তি আমার কাজের সমালোচনা করবে, তাকেও আমার চেয়ে বড় কাজ করে দেখাতে হবে। আর্যরা রমেশ দত্তের বেদ অনুবাদ নিয়ে টিটকারী করে, কিন্তু আর্য সমাজ কী বালটা উপড়িয়েছে ? রমেশ দত্তের বেদ অনুবাদ যদি শুদ্ধ না হয়, তাহলে তারা একটি শুদ্ধ অনুবাদ বের করতে পারে নি কেনো ? আর্যরা এটা স্বীকারও করে যে বাংলায় বেদের শুদ্ধ অনুবাদ এখনও বের হয় নি, তাহলে বাঙ্গালি আর্যরা কোন বেদ নিয়ে লাফালাফি করে ? আর্যরা কি মায়ের পেট থেকেই সংস্কৃত শিখে আসে যে, জন্মের সাথে সাথেই তারা বুঝে যায় সংস্কৃত বেদের বিষয়বস্তু ? হাতের কাছে যা পাওয়া যায়, সেটা নিয়েই মানুষ লড়াই করে বা তাকেই গ্রহণ করে, বাজারে হরফ প্রকাশনীর বেদ পাওয়া যায়, তাই আমি সেটা নিয়েই কথা বলি, হরফ প্রকাশনীর বেদ যে শুদ্ধ অনুবাদ নয়, সেটা আমিও স্বীকার করি, কিন্তু যতক্ষণ না বেদের কোনো শুদ্ধ অনুবাদ বের না হচ্ছে, ততক্ষণ নাই মামার চেয়ে কানা মামাই কি ভালো নয় ?
বেদ বিশেষজ্ঞ (!) বিক্রমের বাংলা গদ্য লেখারই সঠিক জ্ঞান নেই, সে দাড়ি কমার ব্যবহারও ঠিকমতো জানে না, তাই তার অনেক বক্তব্য উপলব্ধি করাই যায় না, তাই তার অনেক কথার জবাব দেবারই প্রয়োজনবোধ করছি না; কারণ, পাগলের প্রলাপের জবাব দিয়ে কে তার সময় নষ্ট করতে চায় ? নিচে দেখে নিন বিক্রমের সেরকম কিছু কথা এবং দেখুন এগুলো ঠিকমতো বুঝতে পারেন কি না-
"আর কৃষ্ণ নাকি ঈশ্বর এই হলো কৃষ্ণ ভক্ত ঈশ্বর জন্ম এবং আবাল অবতার বাদ খন্ডন করা হয়েছে যুক্তি এবং শাস্ত্র দিয়ে । আর খন্ডন দেখার পরে তবুও যদি মহা আবাল এর মতো ঈশ্বর এরজন্ম জন্ম করো তাহলে কৃষ্ণ একটা ডাহা মিথ্যা বাদি ছিল পোষ্ট লিং"
যা হোক, বিক্রম তার পোস্টের শেষের দিকে কিছু প্রশ্ন করেছে, আমার কথা হচ্ছে আর্যরা যদি এতই সনাতনী সমাজের জ্ঞানের উন্নতি চায়, তারা এইসব বিষয়ের উপর প্রবন্ধ লিখে অনলাইনে বা অফলাইনে প্রকাশ করে হিন্দুদেরকে বেদ বিষয়ে জ্ঞানী করে তোলার চেষ্টা করে না কেনো ? আমি সেই বিষয়ে ভাবি এবং লিখি, যে বিষয়গুলো নিয়ে হিন্দু বিরোধীরা নানা রকম প্রশ্ন তুলে হিন্দুদেরকে বিভ্রান্ত ক'রে হিন্দুদেরকে অন্য ধর্মে ধর্মান্তরের মাধ্যমে হিন্দু সমাজকে বিলুপ্ত করতে চায় । আমার উদ্দেশ্য ও কাজ প্র্যাকটিক্যাল, আমি ভাবের কথা বলি না, কিন্তু বিক্রমের প্রশ্নগুলো ভাবের, যেগুলো মানুষের না জানলেও চলবে, তবে জেনে থাকা ভালো। যেমন মানুষ তখনই গায়ে সুগন্ধি মাখে, যখন তার খাওয়া পরার অর্থাৎ অস্তিত্ব রক্ষার কোনো চিন্তা থাকে না, কিন্তু যেখানে হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষাই এখন বড় সমস্যা, সেখানে এই ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবা বিলাসিতারই নামান্তর; যা হোক, দেখে নিন বিক্রমের প্রশ্নগুলো-
১) কার কার মাধ্যমে ঈশ্বর এই জগৎ তৈরি করলো ?
২) সৃষ্টির আগে আত্মা কোন অবস্থায় ছিল ? আত্মা এবং পরমাত্মা ছাড়া আর কিছু ছিল? না ছিলনা ? যদি থাকে তা কি ছিল ?
৩) ঈশ্বর কিভাবে এই জগৎ তৈরি করলো ? একটু বলবেন বেশি নয় ।
৪) এই ব্রহ্মান্ডের সর্বাধিক গতিশীল পদার্থ কোনটি??
৫) বৈদিক পঞ্চভূতের স্বরূপ কি??
৬) সংসারের সর্বপ্রথম ভাষা বা জ্ঞানের উৎপত্তি কি ভাবে হয়েছে??
৭)ঈশ্বরীয় সৃষ্টির প্রত্যেক ক্রিয়া কিভাবে সঞ্চালিত হয়??
৮) ওম্ ঈশ্বরের মূখ্য নাম কেন? এই ধ্বনি এই ব্রহ্মান্ডের কি ভূমিকা পালন করে থাকে???
৯) Force,time,mass,charge,space,energy, gravity,gravtion,Dark Energy, Dark matter,mass,vacuum,Energy, Mediators particles অাদির বিস্তৃত জ্ঞান কি?? ইহার স্বরূপ কি?? ঈশ্বর সর্বপ্রথম কি ভাবে এ সকল বানায়?? সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় ইহার যোগদান কি???
বিক্রম প্রশ্ন করতে গিয়ে অনেক জায়গায় "কি" শব্দের ব্যবহার করেছে, কিন্তু সে "কি" এবং "কি" এর পার্থক্য বোঝে না, বিরাম চিহ্নের যে ব্যবহার জানে না, সেটা তো আগেই দেখিয়ে দিয়েছি, এই বিক্রম আবার আসে বেদ সম্পর্কে আমাকে জ্ঞান দিতে, এই কথা শুনলে তো শিয়াল কুত্তাও হাসবে।
যা হোক, শেষে, বিক্রমের করা এই প্রশ্নগুলো সম্পর্কে, আগের করা প্রশ্নটা আবার করছি, আর্যরা এই সকল প্রশ্নের বেদভিত্তিক উত্তর জানার পরও সেগুলো সাধারণ হিন্দুদেরকে জানানোর পরির্বতে নিজেদের ভেতর পুষে রেখেছে কেনো ? এদের বিপরীতে আমার বৈশিষ্ট্য হলো- আমি যখনই যে বিষয়ে জ্ঞান লাভ করি, তখনই সেটা সকলের জানার জন্য অনলাইনে পাবলিশ করে দিই, যেন সকল হিন্দু সেই বিষয়টা জানতে পারে।
আমি যে বলেছি ৩৫৫ জন জ্ঞাত এবং আরো কয়েকজন অজ্ঞাত ঋষি মিলে বেদের মন্ত্রগুলো রচনা করেছে, বিক্রম সেটা স্বীকার করে না, তাই বেদ কিভাবে রচিত হলো, সে সম্পর্কে বিক্রম যা লিখেছে, সেগুলো তুলে দিচ্ছি নিচে, দেখুন তো বিক্রমের কথার মাথামুণ্ডু কিছু বুঝতে পারেন কি না-
"কিভাবে বেদের জ্ঞান ঋষিরা পেলো :?
উঃ-
#পরমাত্মারকৃপায় চার ঋষি বেদ জ্ঞান লাভ করেছিল।ঋষিঃ- বৃহস্পতিঃ।। দেবতা- জ্ঞানম্।।ছন্দঃ- নিচৃৎ ত্রিষ্টুভ।।।। যজ্ঞেন বাচঃ পদবীয মাযন্তা মন্ববিন্দ ত্রিৃষিষু প্রবিষ্টাম্। তামা ভৃত্যা ব্যদধুঃ পুরুত্রা তাং সপ্ত রেভা অভি সং নবন্তে।। (ঋক ১০/৭১/৩)।।বাক বৈ বৃহস্পতি।। জ্ঞানম্ বৈ মনস্তত্ব।।
#পদার্থঃ- ( যজ্ঞেন) পরম্ত্মার ( বাচঃ) পরা, পশ্যন্তি বানী রূপ সূক্ষ রশ্মি মনস্তাতিক ফ্লাকচুয়েশন ( পদবীযম্) অাকাশ মার্গে ভাসমান এবং গতি যুক্ত তরঙ্গ রূপে বিরাজ করে (অাযন্) সর্বত্র সদা ব্যাপ্ত তথা প্রাপ্ত (ঋষিষু প্রবিষ্টাম্) সেই বেদ রূপি ছন্দ রশ্মি অাদি চার ঋষির হৃদয় মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাসের ন্যায় স্বাভাবিক ভাবে প্রবেশ করে ( তাম্) সেই ছন্দ রশ্মি রূপি বেদ বানীকে ( অন্ববিন্দন) সকল ঋষির মধ্যে অনায়াসে প্রবেশ করিবার শক্তি পরমাত্মাই প্রদান করে ( তাং অামৃত্যা) সেই বেদ বানীকে উত্তমতায় ধারন করে তাহাকে ( পুরুত্রা) পৃথিবী পৃষ্ঠের বহু স্থানে ( মে ব্যদধুঃ) প্রচার করে ( তাম্) সেই বেদ বানীকে ( সপ্ত রেভাঃ) ঋষিরা সাত ছন্দরূপ তরঙ্গে বেদ রূপি অক্ষর রশ্মি এবং ছন্দরশ্মি অাকারে (অভিসংনবন্তে) ধারন করে ।।
#ভাবার্থঃ-পশ্যন্তি ওম্ রশ্মির দ্বারা মমনস্তত্বের মধ্য ঘটা প্রাণ রশ্মি এবং ছন্দ রশ্মির কম্পনই বেদ রূপি ঋচা। পরমাত্মার কৃপায় অগ্নি ঋষি,বায়ূ ঋষি,অঙ্গিরা ঋষি এবং অাদিত্য ঋষি পরমাত্মার পরা, পশ্যন্তি বেদ বানী তরঙ্গকে তথা সাত ছন্দযুক্ত অক্ষর রশ্মি তরঙ্গকে স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহনের ন্যায় অাকাশ থেকে গ্রহন করে নেয়। সমগ্র অাকাশেইবেদ মন্ত্র ভরা অাছে। পরে সেই বানীকে মানব সমাজে বৈখরী বানীর অাকার দিয়েঅন্য ঋষিদের মাঝে প্রচার করেন।। "
যে যা ঠিক মতো বুঝে, সে তা অন্যকে ঠিক মতো বোঝাতেও পারে। আমি যা বুঝি, তা সুন্দরভাবে লিখে অন্যকে বোঝাতেও পারি, এটা আমা্র একটা ক্ষমতা এবং আমি মনে করি যে এই ক্ষমতা আমার জন্য ঈশ্বরের বিশেষ দান, আমার জ্ঞানকেও আমি ঈশ্বরের বিশেষ দান বলেই মনে করি। তো শুধু বিক্রম নয়, কোনো আর্যর মধ্যেই সেই ক্ষমতা নেই কেনো ? নেই এজন্যই যে, প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধি করতে না পারায় শ্রীকৃষ্ণকে তারা ঈশ্বর হিসেবে মানে না, সেজন্য শ্রীকৃষ্ণ তাদেরকে সেই ক্ষমতা প্রদান করে নি। এছাড়াও এটা নিয়ে আমি গর্ব করতে পারি যে, আমার পোস্টে পাঠকদের কমেন্ট এটাই প্রমাণ করে যে- বাংলা ফেসবুক জগতে আমার লেখা প্রবন্ধই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং হিন্দুদের মনোজগতকে আলোড়িত করার জন্য প্রভাবশালী, কোনো আর্যর এই ক্ষমতা নেই কেনো ?
যা হোক, বিক্রম তার পোস্টের মধ্যে অনেক জায়গায়, আমাকে এবং শ্রীকৃষ্ণের ঈশ্বরত্বে বিশ্বাসীদেরকে আবাল বলে সম্বোধন করেছে, এ প্রসঙ্গে বিক্রমকে বলছি-
আমি যদি আবাল হই, তুই হলি গিয়ে বাল, অপ্রয়োজনীয় মনে করে যে বালকে মানুষ প্রতিসপ্তাহেই তাদের যৌনাঙ্গের এলাকা থেকে সাফ করে নর্দমা বা ডাস্টবিনে ফেলে দেয়। বালের ন্যায় তোর মতো আর্যরাও হলো এই সমাজের জন্য অপ্রয়োজনীয়, তোদেরকে তুলে ফেলে দিলেও বা তোরা না থাকলে এই হিন্দু সমাজের কোনো ক্ষতিই হবে না, কিন্তু এই সমাজের পেছনে আমার ভূমিকা কী, আমার কর্মের শেকড় এই সমাজের কত গভীরে প্রোথিত, আমাকে এই হিন্দু সমাজ থেকে তুলে ফেলা যে সম্ভব নয়, সেটা আমার পোস্টের কমেন্ট থেকে বুঝে নিস।
জয় হিন্দ।
জয় শ্রীরাম, জয় শ্রীকৃষ্ণ।
------------------------------------
যারা আমার বিরুদ্ধে লিখা বিক্রমের পোস্টটি দেখতে চান, তারা দেখতে পারেন নিচের এই লিঙ্কে গিয়ে-
https://mobile.facebook.com/story.php?story_fbid=127852981667293&id=100033277748750&_rdc=1&_rdr

No comments:
Post a Comment